রাজপ্রাসাদ এর আত্বচিৎকার

রাজপ্রাসাদ এর আত্বচিৎকার

বৃটেনের রাজপ্রাসাদ এর কথা সবার অজানা কিছুই নয়। তবে রাজপ্রাসাদ নিয়েও যে রহস্যের গন্ধ মানুষকে আকৃষ্ট করবে তাও অস্বাভিক কিছুই নয়।

–জর্ডান দৌঁড়ে তার কক্ষে প্রবেশ করল।হাঁপাতে হাঁপাতে ক্লান্ত প্রায়।ভেতরে কেউ নেই।নিজের রুম।একা থাকেন আর কেউ না। নিজেকেই নিয়েই আচর্য সে। কী

দেখলাম এটা? অধিকবার শ্বাস নিচ্ছে নাকেমুখে। দুইজন প্রহরী দাঁড়িয়ে ছিল কক্ষের দরজায়।যদিও জর্ডান এর এমন অবস্থা তারা বুঝেছে কিন্তু অনুমিত ছাড়া তারা

ঢুকতে পারবে না রুম এটাই নিয়ম।

–প্রহরী! প্রহরী! বলে চিৎকার দিয়ে ডাকছে দুইজন মূল কক্ষে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রহরীকে। হুকুম করুন।আপনার গোলাম হাজির। এক্ষুণি গিয়ে আরও চারপাঁচজন

সৈন্যসহ রানী প্রিন্সেস এর সমাদিস্থল দেখে আসো। এমন প্রশ্নে প্রহরী তটস্ত হয়ে জানতে চাইলো

–কোনো রকম সমস্যা হয়েছে যা এই গোলাম জানতে পারে?
–তোমাকে যা বলছি তাই করো… উচ্চকন্ঠে বলল জর্ডান। প্রহরী সম্মান প্রদর্শন করে বাহিরে চলে এলো। এবং সেনানিবাসস্থ এ গিয়ে জর্ডান এর আদেশ দেয়া কথাগুলো

বলল। সৈন্যরা সাথে সাথেই রণক্ষেত্র যেতে প্রস্তুত এমন অবস্থান নিয়ে বের হলো।সেনা প্রধান ইয়েজু প্রহরীদেরকাছে জানতে চাইলো।

–কী এমন হয়েছে শুনি! যে জর্ডান এতোরাতে সৈন্য পাঠাতে চাইছেন প্রিন্সেস এর সামাদিস্থলে?

–সেনাপ্রধান কে কানের কাছে এনে নিচু স্বরে বলল “আমিও জানি না প্রধান! তবে নিশ্চই কোনো কারণ রয়েছে। তিনার মুখচোখ দেখে বুঝেছি ভয় পেয়েছেন মনে হয়।

–ওহ্ আচ্ছা আচ্ছা।তুমি এই কথাটা আর কাউকে বলো না

প্রহরী। লোকমুখে কথাটা চলে গেলে লজ্জীত হবেন জর্ডান। আর যদি কারো মুখে শুনি যে জর্ডান ভয় পেয়েছেন! তো তোমার গর্দান কেঁটে নেওয়া হবে বুঝলে? প্রহরি

ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেছে। সেনাপ্রধান হচ্ছে জর্ডান এর প্রিয় বন্ধুএবং জর্ডান এর নিরাপত্তারক্ষী। প্রিন্সেস যখন রানী ছিলেন যখন তার দ্বিতীয় পুত্র জর্ডান এর এই পদে

নিয়োজিত করেছিলেন। নিজের জীবণ দিয়ে হলেও জর্ডানকে রক্ষা করবে শপথ করেছিল। সুতরাং জর্ডানকে কেউ কুটক্তি করে কথা বলবে সেটা কখনও হতে দেওয়া

যাবে না। সৈন্যরা রওনা হলো প্রিন্সেস এর সমাদিস্থল পরিদর্শন করতে। সাথে প্রহরী এবং দশজন সৈন্য সদেস্য। আর সেনাপ্রধান গেলেন জর্ডানকে দেখবাল করতে।

–আসতে পারি আমি? ভেতর থেকে সাড়া দিল জর্ডান। হ্যাঁ আসুন। সেনাপ্রধান রুমে ঢুকেই জানতে চাইলো জর্ডানের কী হয়েছে। আপনাকে দেখে ক্লান্ত মনে হচ্ছে।

দাসী পাঠাব সেবা করার জন্যে?

–নাহ্.. আ,, আমি ঠিক আছি।

-আমাকে বলুন, আমি আপনার হুকুম শুনতে সধাপ্রস্তুত।

-প্রহরীদের বলেছিলাম সৈন্য পাঠাতে মার সমাদিস্থলে।

কী! পাঠিয়েছো?

সেনাপ্রধান বলল।তা নিয়ে আপনি চিন্তা মুক্ত থাকুন। আমি সব ঠিকঠাক করেই পাঠিয়েছি। তুমি আপাতত আসতে পারো “বলল জর্ডান। আচ্ছা।তবে আপনার প্রয়োজন

পড়লেই ডাকবেন আমাকে। আমি কিছু হয়েছে সেটা আলোচনা করে দেখছি।

হুম……….।

চলে এলো সেনাপ্রধান।

ওদিকে সৈন্যসহ ছয়টি ঘোড়া এবং একটি ঘোড়ার গাড়িসহ রাজপরিবারের সমাদিস্থলে যাচ্ছে সৈন্যদল সাথে দুই প্রহরী। রাজপ্রাসাদ থেকে দুইপাহাড় পরেই

রাজপরিবারের সমাদিস্থল। সেখানে রাজপরিবারের পূর্বের রাজা এবং প্রসাদের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কবরস্থান রয়েছে বেশ স্বযত্নে। সেনাপ্রধান জর্ডানের চিন্তায় নিজেও

চিন্তিত। কী হয়েছে তা আদৌ জানে না সে।আর জর্ডানও বলেনি কিছু। সেনাপ্রধান কী হয়েছে তার প্রাথমিক ধারণা পেতে ছুটে গেল প্রসাদের মূল গেইটের প্রহরিদের

কাছে। সেনাপ্রধান কে দেখে সবাই সম্মান প্রদর্শন করল। এতোরাতে সেনাপতির তলব! কোনো সমস্যা হয়েছে কী সেনাপতি ? তোমরা কী রাজপুত জর্ডান কে

আশাপাশে দেখেছিলে রাতে? হ্যাঁ দেখেছি। তিনি তো কোথা থেকে আসছিলেন। কিছুক্ষণ আগেই ঘোড়ার গাড়িসহ প্রবেশ করেছেন প্রসাদে! কী?? তোমরা কী বলছো?

আনুমানিক কতোক্ষন হবে তিনি প্রসাদে প্রবেশ করেছেন বলতে পারো? আর তার ঘোড়ার গাড়ির সাথে কী নিরাপত্তারক্ষী ছিল!! মূলগেইটের প্রহরী বলল হ্যাঁ দুইজন

সৈন্য আর ঘোড়ার গাড়িতে জর্ডান ছিলেন। আর আনুমানিক বিশ মিনিট হবে তিনি প্রবেশ করেছেন প্রসাদে। প্রহরীর কথা শুনে আচর্য না হয়ে থাকতে পারলেন না

সেনাপতি! কারণ তিনি জর্ডানের সাথে কথা বলেছেন এবং এখানে আসতে আসতেই তো বিশমিনিট শেষ। তাহলে রুমে কে ছিল?? সেনাপতি দৌঁড়ে গেলেন আবার

জর্ডানের কক্ষে। জর্ডানের দরজায় প্রহরী নাই আর জর্ডান বিছানায় ঘুমাচ্ছেন। তাই আপাতত জর্ডান এর ঘুম নষ্ট করবেন না।পরে সব জানবেন মনে মনে এসব ভেবে

চলে যাচ্ছিল সেনাপতি। সেনাপতি!! এদিকে আসো।আমার দরজার প্রহরীরা কোথায়??

সেনাপতি অবাক হয়ে গেলেন। তিনিই তো প্রহরীদের সৈন্যদের সাথে যেতে আদেশ করেছেন আবার তিনিই বলছেন প্রহরী কোথায়? আপনিই তো প্রহরীদের আমার

কাছে পাঠিয়েছেন যেন চারপাঁচজন সৈন্যসহকারে তারা যের রাজপরিবারের এর সমাদিস্থলে গিয়ে প্রিন্সেস এর সমাদিস্থল দেখে আসে। জর্ডানও অবাক সেনাপতি এমন

কথা শুনে। কী বলো তুমি? আমিই তো কিছুক্ষণ আগেই প্রিন্সেস এর সমাদিস্থল ঘুরে আসলাম। তাহলে তাদের কেন বলব? সবকিছুই রহস্যময় লাগছে এখন সেনাপ্রধান

এর কাছে। তাহলে আমি কার সাথে কথা বললাম একটু আগে? জর্ডান তখন বিছানা থেকে উঠে এসে বলল কার সাথে কথা বলেছো?

সেনাপ্রধান বলল “একটু আগেই তো আপনার সাথে কথা বলেছি।

কী??

আমি তো মাত্রই রুমে প্রবেশ করলাম।আর সমাদিস্থল থেকে এসে ইবাদতখানায় ছিলাম।আর এখন এসে দেখি প্রহরী নাই আমার দরজার পাশে! সেনাপ্রধান তখন পূর্বের

সবকিছু খোলে বলল জর্ডানকে। পূর্বের কাহিনী এবং ঘটে যাওয়া অদ্ভুত ঘটনা শুনে বেশ হতবাগ।হতাশাগ্রস্থ হয়ে গেলেন। এবং আরও কিছু সৈন্য পাঠিয়ে যারা গিয়েছে

তাদের চলে আসার আদেশ দেন। কারণ তিনি পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন। পূর্বে যে জর্ডান সমাদিস্থল যেতে আদেশ করেছেন সে হচ্ছে জর্ডানের জমজ ভাই।প্রায়

একই রকম দেখতে দুইজন। সে যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুদের আক্রমণে নিহত হয়েছিল। হয় তো তার অতৃপ্ত আত্মাই এই কাজ করেছে। এর পর থেকে মাঝেমধ্যেই জর্ডান তার

জমজ ভাইকে ঘুরাফেরা করতে দেখত প্রসাদের বাগানে। অনেকসৈন্যও দেখেছে তাকে প্রসাদের আশেপাশে ঘুরাফেরা করতে। আর প্রিন্সেস জর্ডান এর জমজ ভাই

নিহত হওয়ার কিছুদিন পর ছেলের শোকাহতে তিনিও মারা যান……..

………………………………………………….  সমাপ  ……………………………………………..

গল্পের বিষয়:
রহস্য
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত