এক ডাক্তারী ছাত্রের চিঠি

এক ডাক্তারী ছাত্রের চিঠি

মা, 
কতদিন বাদে যে চিঠি লিখছি, তাও আবার তোমাকে! অবশ্য কবেই বা কাকে তেমন চিঠি লিখেছি। তোমাকে তো কোনোওদিনই নয়। আজ যে কথাগুলো বলবো তোমায় মা -সেগুলো সামনাসামনি বা ফোনে তোমায় গুছিয়ে বলে উঠতে পারব না। তাই চিঠি লিখছি।

কিছুক্ষণ আগেই তুমি ফোন করেছিলে। আমি ফোনটা ধরিনি বলে আমি জানি তুমি খুব উদ্বিগ্ন হয়ে আছো মা। আমি কলকাতায় ডাক্তারী পড়তে আসার সময় থেকেই তো তোমার উদ্বেগটা সাংঘাতিক বেড়ে গেছে আমায় নিয়ে। আর এখন তো…!

আজ তিন দিন হয়ে গেল মা -আমরা আমাদের কলেজে ‘ধর্নায়’ বসে আছি! সাংবাদিক, পুলিশ, বিক্ষুব্ধ জনতা, আমাদের কলেজের প্রাক্তনী সিনিয়র-ডাক্তাররা…। চেনা কলেজের পরিবেশটা , বিখ্যাত এই হাসপাতালটার পরিস্থিতিটা খুব অচেনা এখন মা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত তো নিশ্চয়ই দেখছো – আমাদের কলেজে আমাদেরই এক সিনিয়র ইন্টার্ন ডাক্তার দাদার চূড়ান্ত হেনস্থা আর শারীরিক নিগ্রহকে কেন্দ্র করে যে আন্দোলন, তার জের ছড়িয়ে পড়েছে সারা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজগুলোতে। কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সরকারী হাসপাতালগুলোতে ডাক্তারী পরিষেবা কার্যত পুরোপুরি বিপর্যস্ত আর বন্ধ এখন। প্রতিদিন যে আউটডোর গুলোতে রোগী উপচে পড়ে, এখন সেগুলো খাঁ খাঁ করছে অসীম শূন্যতায়। ঠিক আমাদের মনের ভেতরকার মত। তোমার গানের ভাষায় বলতে গেলে-

‘ঘর ভরা মোর শূন্যতারই বুকের পরে। ‘
এই তিন দিন বিক্ষোভ ধর্নায় বসে – ডাক্তার নিগ্রহের প্রতিবাদে ,ন্যূনতম সুরক্ষার দাবীতে বারবার স্লোগান দিতে দিতে নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করছি মা –

-‘ আমাদের ভবিষ্যৎ কী? ‘
মা তোমার মনে আছে -আমার স্কুলের বন্ধু
অরিত্রর বাবা-মা দুজনেই ডাক্তার ছিলেন। যখনই শরীর খারাপ করলে কাকু বা কাকিমাকে দেখাতে যেতাম আমাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্রটাতে – তখনই প্রতিবার একটা অদ্ভুত ভালো লাগা নিয়ে বাড়ি ফিরতাম। আমি তো চিরকালই খুব চুপচাপ মা, বেশি কথা বলতে পারি না। আমার ভালোলাগাটুকু তোমাকে বা বাবাকে বলতে পারতাম না কোনোওদিন। ডাক্তার কাকু- কাকিমাকে দেখে আমার সব সময় মনে হতো – ওনারা যেন শুধু অরিত্রর বাবা-মা নন !ওনাদের স্নিগ্ধ ব্যবহারের ছোঁওয়ায় কোথাও যেন ওনারা সবাইকে বুঝিয়ে দিতেন যে ,ওনারা ‘সবার’ !শুধু অরিত্রর একার নন।
কিন্তু জানো মা ,তোমাকে আমার কখনোই মনে হয়নি যে -তুমি ‘সবার।’তুমি সব সময় শুধু আমার ছিলে ।নিজের গণ্ডির ভেতরেই ছিল তোমার বিচরণ । বাবাও তো তাই ছিল, আছে । ডাক্তার কাকু- কাকিমা কে দেখে যেন মনে হতো

– ওনারা যেন সবার সুখ-দুঃখের সঙ্গে বড্ড জড়িয়ে রাখতে পারেন নিজেদের । ছোট্ট আমি মনে মনে ভাবতাম,ডাক্তার হলে বোধহয় এমনভাবে সবার কথাই ভাবা যায় এবং কার্যক্ষেত্রে নিঃস্বার্থভাবে সবার সেবা করেও দেখানো যায় –

-‘ তোমা সবাকার ঘরে ঘরে ,
আমার ভান্ডার আছে ভরে। ‘
ঠিক সেই তখন থেকেই ডাক্তার হবার ইচ্ছেটা মনের ভেতর তৈরী হয়ে গিয়েছিল মা আমার।
কথা প্রসঙ্গে ডাক্তার কাকিমা একদিন বলেছিলেন- উনি জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার আগে ওনার ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি আর বায়োলজি টেক্সটবুক একদম আদ্যোপান্ত ঝর ঝর করে পুরোটা পড়ে বিষয় তিনটিকে আয়ত্ত করেছিলেন। ওনার তেমন কোনো প্রফেশনাল গাইডেন্স পাওয়া হয়নি জয়েন্ট এন্ট্রান্স ক্র্যাক করার আগে। টেক্সট বই খুঁটিয়ে পড়েই উনি ডাক্তারীতে চান্স পেয়েছিলেন। কথাটা মনে বড় গেঁথে গিয়েছিলো মা।

তাই আমার উচ্চমাধ্যমিকের সময়কার দু বছরে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের প্রস্তুতি নেবার সময় সারা পৃথিবী ভুলে গিয়ে আমি টেক্সট বই খুঁটিয়ে পড়বার দিকে জোর দিয়েছিলাম। আমাদের পিছিয়ে পড়া লাল মাটির জেলা বীরভূম থেকে কোনোও প্রফেশনাল কোচিং এর সাহায্য না পেয়েও কি করে কলকাতার বিখ্যাত এই কলেজটাতে ডাক্তারী পড়বার চান্স পেয়েছিলাম – সেটা অনেকের কাছে খুব বিস্ময় মা। কিন্তু আমার কাছে সেটা একটা দীর্ঘলালিত স্বপ্ন সত্যি হয়ে যাওয়া । খেলাধূলোয় কোনোদিনও ভালো নই।গান বাজনা ,আঁকা ,কবিতা আবৃত্তি কোনোওটাই তেমন পারি না। শুধু যেটা পারি ,পারতাম সেটা হল – মন দিয়ে পড়াশোনা করা আর স্বপ্ন দেখা। ওই স্বপ্ন দেখতে দেখতেই স্বপ্নের জায়গায়, স্বপ্নের বিষয় পড়বার সুযোগ পেয়ে মনে হয়েছিল -পৃথিবীটা হাতের মুঠোয় চলে এসেছে মা।

কিন্তু বাস্তবটা যে একদম আলাদা তা কলকাতায় ডাক্তারী পড়তে এসে বুঝতে শুরু করলাম। হোস্টেলের সিনিয়র দাদাদের কাছে প্রথম শুনলাম -‘কথাটা!’

-‘ আমরা ডাক্তাররা সারা ভারতবর্ষের জনসংখ্যার মাত্র এক পার্সেন্ট। তাই আমাদের ভালো থাকা, ভালো লাগা, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে কোনোও রাজনৈতিক দলের বা নেতাদের কোনোও মাথাব্যথা নেই। আমরা একটা অদ্ভুত প্রজাতি। আমাদের দেশে ডাক্তার হতে সবাই চায়, যে কোনোও ছোট ছেলে মেয়েকে – ‘তোমার বড় হয়ে কি হওয়ার স্বপ্ন ‘জিজ্ঞেস করলেই তৎক্ষণাৎ উত্তর দিয়ে দেয় তারা -‘ডাক্তার হবার! ‘কিন্তু সেই ডাক্তাররাই এখন পাড়ার পানের দোকান থেকে পার্লামেন্ট – সব জায়গাতেই চিহ্নিত

‘গণশত্রু’ হিসেবে! ডাক্তার মানেই ভিলেন, অযথা পয়সা খরচা করিয়ে টেস্ট করায়, রোগীদের হয়রানি করায়, টাকার কুমির, জোচ্চোর ,লম্পট ,বদমাইশ।

অথচ ,আমার ছোটোবেলার যেসব বন্ধুরা অন্য কোনোও স্ট্রিমএ পড়াশোনা করছে – তারা ভাবতেও পারবে না- মাত্র আঠেরো বছর বয়সে ডাক্তারী পড়তে ঢুকে অ্যানাটমির শব ব্যবচ্ছেদ করতে বুকটা কেমন কেঁপে ওঠে। ফরমালিনের গন্ধে গা গুলিয়ে উঠে নাকে রুমাল চাপা দিতে গেলেই স্যার ধমক দিয়ে বলে
উঠেছিলেন –

-”ডাক্তার হতে চলেছিস ।এই গন্ধটা সহ্য করতেই হবে। নাক থেকে রুমাল সরা।”
ফিজিওলজি প্রাকটিক্যাল ক্লাসে নিজেদের হাত কেটে রক্ত নিয়ে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয় আমাদের। পড়ার চাপে মাঝে মাঝে মনে হয় -মাথাটা ছিঁড়ে যাবে যন্ত্রণায়। প্রায় প্রতিটি দিন ছোট ছোট আইটেম পরীক্ষা দিতে হয়,

সেমিস্টার হয় কিন্তু সেগুলো শুধু রিভিশন টেস্টের মতো। সারা বছর পরে গোটা বছরের সেই পাহাড়-প্রমাণ সিলেবাস নিয়ে অ্যানুয়াল পরীক্ষা বা ‘এমবি’ দিয়ে তাতে পাশ করলে তবেই নতুন ক্লাসে ওঠার ছাড়পত্র মেলে। না, না আমি এই কথাগুলো অভিযোগ হিসেবে বলছি না কিন্তু একেবারেই মা। আমি শুধু বলছি – এত কষ্ট করে ক্লাসের পর ক্লাস উঠে শেষ পর্যন্ত যখন কেউ ডাক্তার হয় তখন -‘রোগীকে অবহেলা করে মেরে ফেলবো আর কোনোও পরিষেবা দেব না ‘-এই অসৎ ভাবনাগুলো কিন্তু তাদের মাথায় থাকে না মা। কিন্তু, সাধারণ মানুষ ভাবে – ডাক্তার মানেই কসাই আর টাকা রোজগার করবার লোভী চকচকে জন্তু। এরকম ভাবনাটা যেন কেমন ভাইরাল হয়ে গেছে মা এখন সবার মধ্যে!

ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতাম মা। তেমন খেলতে হয় তো পারতাম না ভালো ,কিন্তু খুব ইচ্ছে হতো সব সময় -প্রতিদিন বিকেল বেলা একটু ক্রিকেট খেলার। ডাক্তারী পড়ার স্বপ্নটাকে সত্যি করার জন্য নাইন ,টেন ,ইলেভেন ,টুয়েলভ এই দীর্ঘ চার বছর মাঠে খেলতে যেতে পারিনি মা। দিনরাত মুখ বুজে খালি প্রস্তুতি নিয়েছি ভালো রেজাল্ট করার। এখনো প্রত্যেক দিন বিকেল বেলা বুকের ভেতরটা কেমন মুচড়ে ওঠে আমার। সেই ছোট্ট আমিটা বার বার আমার সামনে এসে চোখে আঙুল দিয়ে আমাকে যেন বলে -‘এত কষ্ট করে ডাক্তারীতে চান্স পেয়ে এমন দিনরাত এক করে যে পড়াটা চালিয়ে যাচ্ছ -তার ভবিষ্যৎ কি হবে ভেবে দেখেছ? যে কোনোও দিন যে কোনোও লোক এসে তোমাকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারে ,তুমি জানো?
আমার মনের ভেতরে চিরকালের যে ছোট্ট

আমিটা আছে তাকে ধমকে দিতে পারিনা। তাকে চুপ করানোর ভাষাও কোনোও জানা নেই আমার। শুধু অনেক কিছু ভাবতে থাকি মনে মনে। এলোমেলো নানা ভাবনা। এই তিন দিন স্লোগান দিতে দিতে, ডাক্তারদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্ল্যাকার্ড লিখতে লিখতে – কয়েকবার ভেবেছি তবে কি সব ছেড়েছুড়ে কোনোও ডিগ্রী কলেজে ভর্তি হয়ে যাব? সেকেন্ড ইয়ারে পড়ছি। এখনই সবকিছু ছেড়ে গোটা ব্যাপারটাকে একটা দুঃস্বপ্ন ভেবে নিজের জীবনের দুটো বছর ধুয়ে মুছে সাফ করে নতুনভাবে অন্য কোনোও কিছু শুরু করাই যায়!

কিন্তু পরের মুহূর্তেই ভাবি ছিঃ! এভাবে পালিয়ে যাব? আমি তো কোনোও অন্যায় করিনি। তাহলে নিজের আশৈশব লালিত ডাক্তার হবার স্বপ্নটার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে ফেলব কেন?

গতকাল যখন তুমি ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে রাত্রি বেলা আমাকে ফোন করে বারবার বলছিলে হোস্টেলের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়তে, রাতের বেলা কোনোরকম ঝুঁকি না নিতে- আন্দোলন- টান্দোলন যে যা পারে করছে করুক ।আমি যেন আমার হোস্টেলের রুমে চলে যাই, তাহলেই তুমি নিশ্চিন্ত হবে। বিশ্বাস করো মা তোমার কথাটা শুনে আবার আমার অরিত্রর মুখটা ভেসে উঠলো মনের ভেতর। স্কুলের টিফিন বেলায় অরিত্র কখনো কখনো বলতো –

” তোর মা যেমন রোজ রাতেই তোর সঙ্গে ঘুমোয় -আমার মা কিন্তু তেমন পারে না ।আমার মাকে হাসপাতালে নাইট ডিউটি দিতে হয়। সেইদিন গুলোতে আমি বাবার সাথে ঘুমাই। আবার মায়ের মর্নিং -ডিউটি থাকলেও ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে মাকে দেখতে পাই না। বাবা আমাকে সেই দিনগুলোতে রেডি করিয়ে দিয়ে স্কুলে পাঠায়। কি আর করা যাবে -আমার মা তো ডাক্তার। ডাক্তারদের এই কাজগুলো করতেই হয়। আমার বাবাকে তো সারারাত নাইট ডিউটি করেও সকালবেলা আবার পেশেন্ট দেখতে হয় । মা তো বলে সব সময় -অসুখ তো আর বলে কয়ে আসে না। ডাক্তারদের আর যোদ্ধাদের তাই সব সময় প্রস্তুত থাকতে হয়। কখন কি কাজে লেগে পড়তে হবে কে জানে! ‘
তোমার আমাকে নিয়ে ভীষন দুশ্চিন্তা, অসম্ভব মন খারাপ,আমার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বারবার কেঁদে ফেলা

-সবকিছু ছাপিয়ে আমার বারবার মনে আসতে লাগলো অরিত্রর বলা কথাগুলো।
-“হ্যাঁ ! ডাক্তার আর যোদ্ধা! এদের সব সময় প্রস্তুত থাকতে হয়। কোনোও রোগী মুমূর্ষ অবস্থায় যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতিতে আসলে তাকে পরিষেবা দিতে হয়। ডাক্তারদের পরম ধর্ম একটাই -সেবা! ”

আমাকে নিয়ে একদম চিন্তা কোরো না মা। আমি ডাক্তারী পড়া ছাড়বো না কোনোও অবস্থাতেই। আর এখানে আমার বন্ধুদের ছেড়ে ,সহযোদ্ধাদের ছেড়ে বাড়িতে পালিয়ে যাওয়া তো কোনোও মতেই সম্ভব নয় আমার পক্ষে।

জানিনা,আমাদের এই আন্দোলন বা ধর্ণা- সত্যি সত্যি ফলপ্রসূ হবে কিনা। জানিনা, আমাদের চাহিদা মতোন প্রত্যেক সরকারী হাসপাতালে ডাক্তাররা সুরক্ষা আর নিরাপত্তার পাওয়ার ন্যূনতম আশ্বাস টুকু আদৌ পাবেন কিনা। শুধু জানি-

‘ আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে। ‘
সার্থক জনম আমার তোমায় ভালবেসে। ‘
শুধু জানি আমরা -‘বিশেষ। ‘ আর এই বিশেষ

‘আমিদের’ কাছে – ‘তোমায় ভালোবাসা’ মানে হলো – সেই সব বিপন্ন ,নিরক্ষর, দুস্থ, দুঃখী ,অসুস্থ মানুষেরা যাদের কাছে ডাক্তারবাবু আজও ‘ঈশ্বরের প্রতিভূ।’ তাই অনেকেই আমাদের যতই গালাগাল দিক আর অপমানজনক কথা-বার্তা বলুক না কেন -আমরা কিন্তু ‘বিশেষ। ‘ এই বিশেষ সুযোগ পেয়ে, মূল জনসংখ্যার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র মুষ্টিমেয় এক শতাংশের অন্তর্ভুক্ত আমরা আমাদের শ্রম, মেধা ,অধ্যাবসায় কে কাজে লাগিয়ে এমন এক শাস্ত্র পড়বার সুযোগ পেয়েছি – যা মানুষের সভ্যতাকে ধারণ -বহন করে অব্যাহত রাখার কাজে অনন্য -অদ্বিতীয়। আমরাই সেই মিডিয়েটের – যারা জীবন আর মৃত্যুর মাঝে একটা সেতুর মতো। আমাদের হস্তক্ষেপে, তৎপরতায়, সাহসে ,প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব আর সেবা পরায়ণতায় আমরা মুমূর্ষকে সাহারা দেই। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আমাদের অহর্নিশ পরিষেবা তাই বহে নিরন্তর।

তাইতো আমাদেরকে এত গালমন্দ করার পরেও – আমাদের কর্মবিরতিতে উথাল পাথাল হয়ে যায় গোটা সমাজ সংসার।

আমাকে নিয়ে চিন্তা কোরোনা মা। আমি ভালো থাকবো। আমাকে যে ভালো থাকতেই হবে। আমার যে স্বপ্ন – শুধু একটি পরিবারের মানুষের মধ্যে নয়, দশের মধ্যে নিজেকে বিলীন করে দেওয়া। ছাপোষা, আটপৌরে খুব স্বাধারণ আমি এভাবেই সেবার মধ্য দিয়ে নিজেকে ‘বিশেষ’ করে রাখতে চাই। চিরকাল যে কবিতার লাইন গুলো আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে এবং যতদিন বাঁচবো ততদিনই উদ্বুদ্ধ করবে -সেই বিখ্যাত শব্দগুলো দিয়ে চিঠিটা শেষ করছি মা।
-‘ আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী
বসুধারে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্র করি।’

এই ভয় শূণ্য চিত্ত নিয়ে – মহামানবের সাগরতীরে আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাব মা।
-তোমার বাবু।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত