দপ্তরি সাহেব

দপ্তরি সাহেব

আচ্ছা আপনে আমার দিখে এভাবে থাকিয়ে আছেন কেনো?[ম্যাডাম] না ম্যাডাম এইতো আপনার জন্য নাস্তা নিয়ে আসছিলাম।[দপ্তরি] আচ্ছা টেবিলে রেখে যান। আচ্ছা মনে করে খেয়ে নিয়েন। কথাটা বলার পর দপ্তরি চলে গেলো তার হয় তো আরেকটু ইচ্ছা ছিলো ম্যাডামের কাছে থাকতে কিন্তু কিছুই করার নেই তাই চলে যেতে হলো। ম্যাডাম কে দেখার পর দপ্তরি সাহেবের কেমন যানি হয়। সে এক পলকে চেয়ে থাকে। চোখি ফেরানো যায়না ম্যাডামের দিখ থেকে। এ যেনো এক অপরুপ ভালোবাসা,ম্যাডাম দপ্তরির ভালোবাসা। দপ্তরি সাহেব সারাক্ষণ ম্যাডামের আশেপাশে থাকতে চায়।কিন্তু প্রিন্সিপ্যাল এর জন্য আর থাকা হয়ে উঠে না। তারপরো যত টুকু সম্ভব ম্যাডামের পাশে থাকে।

আচ্ছা সেলিম ভাই আপনার কি আর কাজ নাই? শুধু আমার ক্লাসেই ঘুরঘুর করেন কেনো?[ম্যাডাম] ইয়ে মানে আসলে [সেলিম দপ্তরি ] কি শুধু ইয়ে মানে মানে করছেন, নাকি আমার জন্যই আপনাকে রেখেছে প্রিন্সিপ্যাল স্যার? না মানে বিষয় টা ঠিক এরকম না। তাহলে সেলিম ভাই বিষয়টা কি রকম? এই আপনাকে একটু বেশি কেয়ার করি তাই আরকি। তাই নাকি তাহলে বেশি কেয়ার কেনো করেন। আপনে কিসের ম্যাডাম বলেন তো এটুকু বুঝেন না। কি বুঝবো সেলিম ভাই? [হাসতে হাসতে বললো] বুচ্ছি আপনে ফাজলামি করছেন যান আর শুনতে হবে না আমি চলে যাচ্ছি? সেলিম ভাই দাঁড়ান রাগ করেন কেনো? আমি আর ফাজলামি করবো না হি হি হি। ধুর ভাল্লাগেনা। দপ্তরি সাহেব একটু অভিমান করেই সেদিন চলে গেলো আসলে রাগ করারি কথা ম্যাডামো সেদিন একটু বেশি ফাজলামি করে ফেলেছিলো। সেদিন দপ্তরি সাহেবের রাগ করাটা মনে হয় উছিত হয়নি। রাগ না করলে মনে হয় আরেকটু সময় থাকতে পারতো নাদিয়া ম্যাম এর সামনে। হয়তো আরেকটু কথা ও বলতে পারতো। আসলে রাগ করে সেলিমের লসি হলো।

সেদিন কলেজ ছুটি হলো ম্যাডাম ও বাসার দিকে যাচ্চে এমন সময় পিছন থেকে দপ্তরি সাহেবের চিৎক্ষার নাদিয়া ম্যাডাম দাঁড়ান আপনার ফোন রেখে গেছেন চার্জে।  অহ্ তাই তো সেলিম ভাই আপনে এতো ভালো কেন?[নাদিয়া ম্যাডাম] ধুর এভাবে বলবেন না লজ্জা করে [সেলিম] তাই নাকি তয় এত লজ্জা নিয়ে আপনে কি করে থাকেন বলেন তো? আবার শুরু করলেন পাজলামি? না ভাই সত্যি বলছি বলেন না। আর একটা কথা আমারে এত ভাই ভাই কইরেন নাতো? কেন সেলিম ভাই আমি ভাই বললে কি হয়? এই দরেন আপনার ফোন আমি বলতে পারবো না আমি এখন যাই আমার কাজ আছে? আরে ভাই কই যান দাঁড়ান না? আবার ভাই?  তয় কি বলবো বলে যান? আপনার যা খুশি বলতে পারেন? বলতে বলতে দপ্তুরি সাহেব চলে গেলো। দপ্তরি সাহেব কে একটু খুশি খুশি লাগছিলো যাবার সময়।

কি সেলিম মিয়া এতো খুশি কেন? [প্রিন্সিপ্যাল স্যার] সার আসলে আমি বিয়া করুম তো তাই। কি সেলিম তুমি বিয়া করবা আর আমাদের যানাও না। পাত্রি কে?কি করে? স্যার এখন তো বলবো না কেন সেলিম কি হইছে শুনি না। স্যার আমি এখন যাই কাজ আছে। আচ্ছা যাও কিন্তু দাওয়াত দিতে যেনো মনে থাকে। হাসতে হাসতে বললো রাত হয়ে আসলো কিন্তু দপ্তরি সাহেবের চোখে ঘুম নাই। কেনো যানি আজ বার বার নাদিয়া ম্যাডামের কথা মনে হচ্ছে। বার বার তার কাছে যেতে ইচ্ছা করছে। আজ ম্যামের সাথে কথা বলতে অনেক বেশি ইচ্ছা করছে। কেনো যানি বার বার ম্যামকে বেশি বেশি মিস করতেছে। প্রতিদিনিতো কলেজে ম্যামের সাথে কথা হয় তাহলে আজ কেনো এরকম লাগছে? বার বার মনে হচ্ছে আজ ম্যামের সাথে কথা না বলে দপ্তরি সাহেব কিছুতেই শান্তিতে ঘুমাতে পারবে না।

আর ম্যম কে কি ভাবে ফোন দেবে প্রতি দিন ফোন দিতে দিতে তার সব অজুহাত ও আজ শেষ। আজ সে কোন অজুহাতে ফোন দেবে কিছুই বুঝতেছে না দপ্তরি সাহেব। তাই সেলিম চিন্তা করলো যে ভাবেই হোক ফোন দেবে ম্যামের কাছে হ্যালো ম্যাম কি করছেন? এই’তো কিছুনা। আপনে কি করছেন সেলিম ভাই? ম্যাম একটা কথা বলি? হুম বলেন। ম্যাম আপনে কি এখন ফ্রি আছেন? হুম, কিন্তু কেনো? ম্যাম চলেন না বাহির থেকে ফোসকা খেয়ে আসি? সেলিম ভাই বিষয়টা কি বলেন তো আপনে আমাকে ফোসকা খাওয়াতে চাচ্ছেন কেনো? আরে বিষয়টিষয় কিছু না একা খেতে ভালো লাগছিলো না তাই বলছিলাম। আচ্ছা আসেন আমি রেডি হচ্ছি? ম্যাম তাড়াতাড়ি আসেন আমি আপনার বাসার নিছে দাড়াঁনো। সেলিম ভাই আমার বাসার নিছে কি করেন? আরে বইলেন না কথা বলতে বলতে কখন যে চলে আসছি জানি না  আপনে আসলেই একটা পাগল। হুম, কিন্তু আপনার জন্য। এসব কথার মানে কি সেলিম ভাই? বাদ দেন’তো সব কথার মানে জানতে হয়না। আচ্ছা বাদ দিলাম।

কিছুক্ষণ পর নাদিয়া ম্যাম চলে আসলো ম্যাম কে দেখে যেনো চোখের পলকি পরছিলো না দপ্তরি সাহেবের।লেম্পোষ্টের আবছা আঁলোতে ম্যামকে রাজকন্যার মতো লাগছে। ম্যাম আপনে এভাবে চলে আসলেন যে? কিভাবে সেলিম ভাই? এই যে কোনো সাজুগুজু ছাড়াই। আমি সাজুগুজু করছিতো। তাহলে মেকাপ নিলেন না কেনো? সেলিম ভাই আপনে এটা কি বললেন? আপনে জানেন না আমি মেকাপ করি না। এই জন্যই তো আপনাকে বেশি ভালো লাগে। আপনার কালো কেশে যখন হালকা বাতাসা লাগে আর আপনার শেম্পু করা চোল যখন সুগন্ধ ছড়ায় তখন বার বার আপনার প্রেমে পরতে ইচ্ছা করে।

সেলিম ভাই পিসপিস করে কিছু বলছেন? না কিছু না। তাহলে চলেন? ম্যাম রিক্সা নেই? না চলেন আমরা হাটি। ঢাকা শহরে রাতে হাটতে অনেক ভালো লাগে। হুম চলেন। কিছুক্ষণ হাটার পর নাদিয়া ম্যাম আর দপ্তরি সাহেব চলে আসলো ফোসকার দোকানে। সেলিম ভাই ফোসকা টা কেমন হলো খেতে? রাতের বেলায় আপনার মতো রমনি যার পাশে বসে ফোসকা খাবে তার কি আর খারাপ হতে পারে খাবার টা। সেলিম ভাই আপনে আসলেই একটা পাগল। হুম আমি একটা পাগল। বিল টা কিন্তু আমি দেবো সেলিম ভাই? আমি আপনাকে নিয়ে আসলাম আর আপনে বিল দেবেন? আচ্ছা তাহলে আমি আপনাকে একটা প্রস্তাব দেবো আপনে রাখবেন? হুম বলেন? সেলিম ভাই আপনে আজ রাতটা আমায় নিয়ে ঢাকা শহরের রাস্তা দিয়ে ঘুরবেন। আসলে আমি তো সেটাই চাইছিলাম ম্যাম। মানে কি? কিছুনা ম্যাম। সেলিম ভাই আপনে যে মাঝে মাঝে কি বলেন না কিছু বুঝি না  বুঝতে হবে না চলেন। কিছুক্ষণ হাটার পর ম্যাম একটা কথা বলি।

হুম বলেন সেলিম ভাই? ম্যাম আমি কি আপনার হাতটা একটু ধরতে পারি। হাত ধরবেন? হুম শুধু হাতটা। আচ্ছা ধরেন, কিন্তু শুধু মানে? এত মানে মানে করেন কেনো?ম্যাম একটা কথা বলি? হুম বলেন শুনতেছিতো। ম্যাম আমি আপনাকে ভালোবাসি। ভালো কথা তো আমি কি করতে পারি? ম্যাম আমি কিন্তু সিরিয়াস। আরে সেলিম ভাই আমিও সিরিয়াস। ম্যাম কেনো বুঝতে চাইছেন না আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি। কে ভলছে বুঝি না বুঝি তো। ম্যাম আপনে কি ফাজলামু করছেন। না’তো। ফাজলামু করবো কেনো? তাহলে কেনো বুঝেন না আমি আপনাকে ভালোবাসি। সেলিম ভাই আপনে আসলেই বোকা। কেন আমি কি করছি? আমার যদি আপনাকে ভালো না লাগতো তাহলে আপনার পাগলামি কেনো মেনে নিতাম। কেনো বার বার আপনার সাথে রাতের পর রাত কথা বললতাম।আপনি বলার সাথে সাথে কেনো এতোরাতে রাস্তায় চলে আসলাম ফোসকা খেতে।

আর আপনি যখন কলেজে বার বার আমার ক্লাসে যেতেন কাজ না থাকার পরো। সেটা কেনো আমি প্রিন্সিপ্যাল স্যার কে জানাই নি। আমি কেনো কলেজে আপনার সাথে হেসে হেসে কথা বলতাম। আমি কি আপনার পাগলামির জন্য কখনো বকা দিছি। তাহলে কেনো আমার আপনাকে বলতে যেতে হবে আমি আপনাকে ভালোবাসি বুঝেন না কিছু।
আপনিতো বলতেন আমি কিছু বুঝি না এখন তো দেখছি আপনে বুঝেন না। বোকা একটা লোক।  ম্যাম আপনার কথা শেষ? হুম, আর এখনো ম্যাম বলছেন কেনো? আমি কি আপনাকে একটু ঝরিয়ে ধরতে পারি? আপনি না আসলেই একটা পাগল। এতক্ষণে দপ্তরি সাহেব ম্যডামকে ঝরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। সেলিম ভাই কাঁদেন কেনো? ম্যাম আপনি আমায় এতটা ভালোবাসেন? কেনো বিশ্বাস হয়না। নাহলে আমার চোখের দিখে একবার থাকিয়ে দেখেন?

দপ্তরি সাহেব ম্যামের চোখের দিকে থাকিয়ে দেখে চোখ দুটো বেজা। ম্যাম আপনে কাঁদছেন কেনো? আপনাকে কাছে পেয়ে। ম্যাম ছেড়ে যাবেন নাতো কখনো। কখনো না তবে একটা শর্ত আছে। কি শর্ত? আপনাকে দপ্তরি সাহেব বলে ডাকবো। ঠিক আছে কিন্তু আমিও আপনাকে ম্যাম বলে ডাকবো। হুম হইছে এখন ছাড়েন দপ্তরি সাহেব ব্যথা পাচ্ছি তো। না ম্যাম ছাড়বো না।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত