দিল্লীকা লাড্ডু

দিল্লীকা লাড্ডু

আমি ফোনটাকে হাতের মুঠোয় সাবলীলভাবে ধরে আছি। ফোনের স্ক্রিন আমার দিকে। ফোনে রেকর্ড বাটান প্রেস করা আছে। একাজ করতে এখন আর টেনশন হয় না। শুভ্র হিয়াকে কোলে নিয়ে আমার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। কতকটা আমাদের একত্রিত মনোবলকে বোঝানোর জন্য। আমাদের বিপরীতে দাঁড়িয়ে এন্টারটেইনমেন্ট ক্লাবের লইয়ার অখিল শর্মা। বয়স ত্রিশের ছিপছিপে লম্বা গড়ন, ঠিক যেমন নর্থের দিকে হয় আর কী। ছেলেটা কথা বলতে বলতে সতর্কীকৃত দৃষ্টিতে মাঝেমধ্যেই আমার ফোনের দিকে দেখছে। কারন শুভ্রর হাতে ফোন নেই। ওর একহাত ঘুমন্ত মেয়ের পিঠের উপর আর আরেকটা হাতে কেস সংক্রান্ত কাগজ। ছেলেটির সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে স্পষ্ট ভয় লুকিয়ে। সম্ভবত এধরনের কেস ও কেন ওর ক্লাবও হয়তো ফেস করেনি কখনো। তাই প্রথমদিকে যখন ওদের

এক্সিকিউটিভকে আমরা কল করেছিলাম, কতকটা তাচ্ছিল্য দেখিয়েই কথা বলেছিল আমাদের সাথে। হাবভাবটা এমন ছিল যেন ‘কী করে নিবি করে নে’। তখনও বোঝে নি আমাদের সাথে কী মোক্ষম অস্ত্র আছে।

**************
২০১৪ সাল, ফেব্রুয়ারির শুরুর দিক। আমরা দিল্লী এন সি আরে নয়ডার দিকে কমাস হল শিফট করেছি। মেয়ে ছোট্ট। দেড় বছর মতো বয়স হবে। আধো আধো বুলি ফুটেছে। টুকটুক করে অসমান পায়ের পাতায় ভর দিয়ে হাঁটে। সারাটা সপ্তাহ ঘরের মধ্যে বন্দী থেকে ছুটির দিনে একটু টোটোকোম্পানি করার জন্য আদরে আদরে বাবাকে ভরিয়ে তোলে। যদিও শুভ্রকে অতো উসকাতে হয় না। ও নিজেও ছুটির দিনে ঘরে থাকতে খুব একটা পছন্দ করে না। বিয়ের পর আমরা এইজন্য তিন দিনের ছুটি একসাথে পেলেই দুজনে দুটো ব্যাগ পিঠে নিয়ে কাছেপিঠে কোথাও বেরিয়ে পড়তাম। সে জয়পুর হোক বা আগ্রা, হরিদ্বার হোক বা নৈনিতাল। কিন্তু এখন মেয়ের একটুতেই পাছে শরীর খারাপ হয়, তাই সেই ভ্রমণের নেশাকে আমরা সংযত করেছি। অগত্যা উইকেন্ডগুলোতে বেরিয়েই একটু ফ্রেশ হয়ে আসি। দিল্লীতে বেরানো মানেই শপিং মলে ঢোকা আর ঘুরেফিরে সময় কাটানোর সাথে উইন্ডো শপিং করা। তো আমরা তখন নয়ডা সেক্টর ১৫ এর কাছাকাছি রেন্টে থাকতাম বলে কাছের বড় মল জি আই পি(গ্রেট ইন্ডিয়ান প্যালেস) ছিল আমাদের সেই ঘোরাফেরার জায়গা। সেখানে বিগ বাজার থাকায়, মূলত ঘরের টুকিটাকি খাওয়ার জিনিষপত্র কিনতে ঢুকতাম। মেয়েকে ট্রলিতে বসিয়ে দিয়ে শুভ্র ওর সাথে কুটকুট করে বকবক করত। আর আমি এদিকওদিকে ঘুরে দামদস্তুর বিচার করে পকেটের লিস্ট মিলিয়ে এক এক করে জিনিষপত্র তুলতাম। আর মেয়েও দিব্যি মলের ট্রলি গাড়িতে বসে পা দোলাতো।

এমনি একদিন আমি ডাল আর চিনি প্যাকেটে তুলে ওজন করাতে গেছি। দূর থেকে দেখছি একটা অল্পবয়সী ছেলে শুভ্রর সাথে কিসব কথা বলছে। ভাবলাম এস বি আই কার্ডের অফার দিতে বোধ হয়। এরকম অনেকেই তো আগেও করেছে। কিন্তু বিলিং করিয়ে বেরবার সময় শুভ্র জানাল আমি যা ভেবেছিলাম তা নয়। ছেলেটি একটি ক্লাবের কুপন দিয়েছে শুভ্রকে। আর ওর নাম্বার নোটডাউন করে নিয়ে গেছে। বিভিন্ন ক্লাবেই নাকি কিসব লাকি ড্র হয় এখন। আমার তো এ ব্যাপারে কোনো ধারনাও ছিল না তখন। আর কেন জানি সেই মুহূর্তে তেমন কোনো ইন্টারেস্টও দেখালাম না আমি। সেই সময় বুঝিনি এই ক্লাবের কুপন কাটার ঘটনা আমাদেরকে জীবনের কোন মোড়ে নিয়ে যেতে পারে।

রবিবার ঘটেছিল এই ঘটনা। আর তারপরের ঠিক তিন দিনের মাথায় মানে বুধবার সকাল সাড়ে নটার দিকে শুভ্রর ফোনে একটা অচেনা নাম্বার থেকে কল এলো। জানাল, আমাদের নাম নাকি লাকি ড্র কন্টেস্টে উইনারের লিস্টে আছে। তাই ক্লাব থেকে আমাদের ঘোরার জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় অফার দিতে চায়। সেটা নেওয়ার জন্য শীঘ্র যোগাযোগ করতে হবে ওদের এক অফিসের ঠিকানায়। শুভ্র প্রথমে বেশ উচ্ছ্বসিত হয়ে আমায় জানাল ব্যাপারটা। আমি তখনও এই ক্লাব কনসেপ্টটা ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারিনি। শুভ্র বোঝাল আমায়, এরকম বিভিন্ন ক্লাব হয়েছে এখন। যারা বিভিন্ন প্যাকেজ সিস্টেমে লোকের এন্টারটেইনমেন্টের ব্যবস্থা করে দেয়। সে দেশি বা বিদেশি ট্যুরও হতে পারে, আবার কোনো ঘরোয়া অনুষ্ঠান যেমন জন্মদিন এনিভার্সারিতে হল বুক করিয়ে এলাহি অকেশন সেট করাও হতে পারে। মনে মনে ভাবলাম, বেশ আধুনিক মনস্ক ব্যবসা তো। সত্যিতো এখনকার ব্যস্ত জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে সবাই টুকটাক ঘুরতে বেরোয়। এসব ভাবনায় আমার মনটাও নীরবে একটু ঘুরুঘুরু করে উঠল। তার উপরে অনেকদিন সত্যি সেরকম কোনো ট্যুর হয়নি আমাদের। আমি বললাম, ওদের বলো শনিবার আসছি। ওদেরকে শুভ্র এই উত্তরটা জানাতে, ওরা বেশ তাড়া দিয়ে বলল অফার সীমিত সময়ের জন্য। কেবলমাত্র প্রথমদিকে আসা কাপলরাই এটা নিয়ে এঞ্জয় করতে পারবে।

অত:পর শণিবার তাড়াতাড়ি দুপুরের স্নান খাওয়া সেরে বেরিয়ে পড়লাম সেই অফার সংগ্রহ করার জন্য। ঠিকানাটি জি আই পি মলের গা ঘেঁষে বড় রাস্তা দিয়ে সামনের দিকে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে অপোসিট ফুটের উপর গড়ে ওঠা ওয়েব মলকে ইঙ্গিত করেছে। তারপর ফ্লোর আর শপ নম্বর ট্রেস করে পৌঁছে গেলাম উক্ত জায়গায়। তিনতলায় টয়লেটের আগে একটা কোণার দিকে ছিল অফিসটি। সেখানে ঢুকতেই একটি অল্প বয়সী স্মার্ট লুকের ছেলে দ্রুতপায়ে আমাদের দিকে এগিয়ে এসে শুভ্রর দিকে সহাস্য বদনে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল ‘ওয়েলকাম স্যার। আই এম সঞ্জয়’। আর আমার দিকে হাত জোড় করে বিনীতভাবে ওয়েলকাম জানাল।

বুঝলাম এসব বিজনেস পলিসি। শুনেছিলাম, হোটেল রেসর্ট লাইনে চাকরি পেতে গেলে নাকি আগে এসব কায়দা রপ্ত করতে হয়। তারপর ছেলেটি আমাদের হিয়াকে টুকটাক আদর করে আমাদের নিয়ে বসালো চেয়ার টেবিল পেতে সাজানো একটি সুন্দর ঘরে। ঘরটি খুব বড় না হলেও বেশ সুন্দর ইন্টিরিওর করা। যেমন ওয়াল পেইন্টিং তেমনি লাইটের হাল্কা আলোর সোভারনেস। দেওয়ালের পাশ ঘেঁষে রাখা বুদ্ধ মুখাবয়ব সিমেন্টের টবে বিবিধ উচ্চতার চাইনিস পাম ট্রি লাগানো। টেবিলের উপরে রঙিন পটে বাহারি আরটিফিসিয়াল অর্কিড। আমার আবার এসব সাজানোর কৌশলে ঝোঁক বেশি বলে বেশ খুঁটয়ে খুঁটিয়েই দেখছিলাম সবটা। আর সত্যি একটা ইম্প্রেশন ক্রিয়েট করছিল ভেতরে ভেতরে। সবমিলিয়ে স্নায়ুকে অবশ করা একটা অদ্ভুত আরামদায়ক পরিবেশ তৈরা করা ছিল ঘরটার মধ্যে। এমনকি বাতাসেও যেন একটা মিষ্টি গন্ধ ছিল। সম্পূর্ণ ব্যাপারটাকে আরো সুমধুর করে তুলছিল হাল্কা টিউনে বাজতে থাকা সেতারের মিউজিক। দেখলাম আমাদের দুটো টেবিল পরের একটি টেবিলে আরেক জোড়া ইয়ং কাপল বাচ্চা নিয়ে বসে আছে। ওদেরকে একটি ছেলে বসে কীসব বলছে। আন্দাজ করলাম, ওরাও আমাদের মতো লাকি উইনারের লিস্টিং এ আছে বোধ হয়।

এরপর ছেলেটি আমাদের সামনের চেয়ার টেনে নিয়ে মুখোমুখি বসে। আর আমাদের নাম যে লাকি ড্রতে উঠেছিল, তার জন্য আমরা যে ট্যুরে গিয়ে একটা রেসর্টে ৩০% পে করে থাকতে ও ঘুরতে পারব, তা জানায়। রেসর্টটির ছবিও দেখায়। তবে সেটি আগামী পনেরোদিনের মধ্যেই করতে হবে। যথারীতি এতো অল্পসময়ের মধ্যে বাচ্চা নিয়ে অফিস ছুটি করে যাওয়াটা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। সেদিকে নেগেটিভ রেসপন্স পেয়ে ছেলেটি এবার এক এক করে বিবিধ কথাবার্তায় জেনে নেয়, আমাদের কতটা ইন্টারেস্ট আছে ঘোরাঘুরিতে, বছরে কবার ঘুরতে বেরোই, কোথায় কোথায় অলরেডি গিয়েছি, বাজেট কেমন … ইত্যাদি।

এসব প্রশ্নের উত্তরে সম্ভবত ও বেশ পজিটিভ ইঙ্গিত পায় আমাদের দুজনের থেকে। অত:পর কয়েকটা কাগজ দেখিয়ে বোঝাতে থাকে ওদের ক্লাবের বিভিন্ন ট্যুর প্যাকেজের সুবিধে। প্রথমে বছরে দু লাখ টাকার উপর দিলে কী কী করা যাবে, কোথায় কতবার কোন রেসর্টে গিয়ে থাকা যাবে এসব বোঝায়। তখন আমি আপত্তি জানিয়ে বলি যে, আমরা এতো বাজেটের ট্যুর করিনা। কম বাজেটে টুকটাক ঘুরে আসি। শুনে ছেলেটি সপ্রসংশ দৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে শুভ্রর দিকে মুচকি হেসে বলল ‘ইউ আর লাকি স্যার। ম্যমকি ডিমান্ড কম হ্যায়।’ কথাবার্তা মধ্যস্থ এই সাবলীল বাতাবরণে একজন এসে আমাদের টেবিলে তিনকাপ কফি রেখে গেল। আমি খুব ঠান্ডা ছাড়া তেমন চা কফি খাই না। ফেব্রুয়ারির শুরুতে তখনও দিল্লীতে ৬/৭ লো টেম্পারেচার চলছে। তাই কফিটা টেনে নিলাম। তবে ছেলেটির কিছু অতি ভদ্রতাজনিত আচরণে আমার মনে তখন যেন একটু সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করেছিল। যদিও সেটা জোরালো কিছু নয়। রোজ রাতে সেসময় লাইফ ওকে চ্যানেলে সাবধান ইন্ডিয়া দেখতাম। সেই থেকে অভ্যাসবশত হবে বোধ হয়।

এরপর কথা টুকটুক করে এগোতে থাকল। ছেলেটি আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে ওদের প্যাকেজ বাজেটের সিঁড়িভাঙ্গা অঙ্কে নামতে নামতে ওদের গ্লসিওর দেখাতে শুরু করল। অবশেষে এককালীন পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে পাঁচ বছরের ট্যুরের একটা প্ল্যান শুভ্রর পছন্দ হল। ছেলেটা বোঝালো, এই প্ল্যানে একবার একসাথে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলে পাঁচ বছরের প্রতিবছর একটা করে ট্যুর প্ল্যান করে দেবে ওরা। সেই ট্যুরে আমাদের পার্সোনাল শপিং ছাড়া আর কোনো খরচই থাকবে না। মানে বাড়ি থেকে বেরিয়ে শুধু এয়ারপোর্ট পৌঁছতে হবে। তারপর ফ্লাইট ফেয়ার, রিসর্টে থাকা খাওয়া এমনকি সাইড সিনিং ও ৭০% অফে করিয়ে দেবে ওরা।

এতোগুলো বড় বড় প্যাকেজ শোনার পর আমাদের কাছে কেমন যেন হঠাৎ আকর্ষণীয় লাগল এই প্যাকেজ। তবু বললাম একটু চিন্তা করে কাল জানাচ্ছি। কিন্তু ছেলেটি একটা নামের লিস্ট দেখিয়ে বলল, সেখানে আর দুটো জায়গা খালি আছে। তারপর অন্য টেবিলে বসে থাকা পাঞ্জাবি কাপলটির দিকে দেখিয়ে বলল, এরা ওই ফাঁকা থাকা দুজনে মধ্যে একজনের জায়গা নিতে ফর্ম ফিলাপ করছে। তাই, ওর ইঙ্গিতের তাড়া আমাদের ক্ষণিকের জন্য কেমন একটা লোভাতুর করে তুলল। মুহূর্তকাল অপেক্ষা করে শুভ্র জানিয়ে দিল, বেশ তবে ফর্ম ফিলাপ করেই নি। আমিও কেন জানি আগ্রহ সহকারে সম্মতি দেখালাম। ঘরের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তখন আমাদের অবচেতনেই এক সুন্দর ট্যুরে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্নে ডুবিয়ে দিয়েছে। অত:পর যাবতীয় ফর্ম ফিলাপ করা শুরু হল আমার নামের ট্যুর প্যাকেজের জন্য। ওরাই মিসেসদের নামে করাতে আগ্রহ দেখায়। আমি মেয়েকে সামলাতে সামলাতে কিছু জায়গাতে টুকটাক চোখ বুলিয়ে নিয়ে সবটা না পড়েই সইগুলো করলাম। আর শুভ্র এস বি আই ক্রেডিট কার্ডে ট্রান্সেকশন করল পঞ্চাশ হাজার টাকার। আমরা যখন এগুলো করছিলাম, তখন অলরেডি ওই পাঞ্জাবি কাপল দিল্লীকা লাড্ডু টেস্ট করে বেরিয়ে যাচ্ছে। কেন ব্যাপারটির এইরূপ নামকরণ করলাম, ক্রমশ তার বিশ্লেষণে আসছি।

ওয়েব মল থেকে বেরিয়েই, অবাক একটা অনুভব হতে শুরু করল। আমরা বড় রাস্তা ধরে এগিয়ে চলেছি নয়ডা সেক্টর ১৮ এর মেট্রো স্টেশনের দিকে। তখন বাহিরগত ও অন্তর্গতভাবে ওই স্বপ্ন ও সৌন্দর্যময়তার মাদকতায় আবিষ্ট পরিবেশের ঘোরটা থেকে আমরা ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছি। আর ভেতরে সংশয় হচ্ছে, কিছু একটা ভুল করেছি বোধ হয়। কিন্তু কেউ কাউকে তখনও সেটা ব্যক্ত করিনি। ওখানে থাকাকালীন আমাদের যে আনন্দের উচ্ছ্বাস হচ্ছিল, সেটা যেন কেমন থম মেরে গেল। তারপর মেট্রো থেকে নেমে ঘরের দিকে যেতে যেতে শুভ্র প্রথম বলে উঠল

“আচ্ছা, আমরা যে এই দুবছর ধরে এতো ট্যুর করলাম, তাতে কি তোমার মনে হয় যে পঞ্চাশ হাজার টাকায় পাঁচ বছর ধরে এতোকিছু সুবিধে দেওয়া সম্ভব?” কথাটা শোনামাত্র আমার মনে হল যেন ও আমার মনের মধ্যে ঘুরপাক করতে থাকা খটকাটাই তুলে ধরেছে। আমার সন্দিগ্ধ স্বরে উঠে এলো কিছু দ্বন্দ্ব “ফ্লাইট ফেয়ার, রেসর্ট ফেয়ার তো ভালোই কস্টলি হয়, যতই আগে থেকে বা অফসেশনে বুক করা হোক না কেন। এখন তো একটু ভালো হোটেলেই ৭০০ টাকার নিচে ঘর পাওয়া যায় না।” আমার কথার সাথে সাথে শুভ্র বলে উঠল “তার উপরে খাওয়াদাওয়া আর সাইড সিনিং”। আমি শুভ্রর দিকে চেয়ে দেখলাম, ওর কপালে সমান্তরাল রেখাগুলো ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে। আমার মনের মধ্যে কেমন যেন একটা অস্থিরতা দানা বাঁধল। বললাম “ভুল করলাম নাকি আমরা? ফ্রড নয়তো?”

শুভ্র কিছুক্ষণ থেমে থেকে বলল “তা কী করে হবে? ডেলহি এন সি আরে এমনভাবে মলে বসে অফিস করে বিজনেস করছে। ফ্রড হলে এতো সাহস হত?”

ওর কথায় আমিও কতকটা সম্মতি দেখালাম। কিন্তু কোথাও যেন মন আর মস্তিষ্ক এক হতে পারছে না। আমাদের মনের বিশ্বাস আর মাথার হিসাবগুলো জট পাকিয়ে যাচ্ছে অবচেতনেই। আর ভেতরের এক আত্মপক্ষ সমর্থনকারী সাহস চুপিচুপি অভয় দেওয়ার চেষ্টা করছে তাদের।

সেদিন রাতে অনেকক্ষণ আমরা এই বিষয় নিয়ে কথা বললাম। আর ইন্টারনেটে কিছু ক্লাবের নাম সার্চ করায় দেখলাম, নেটে ওদেরও নাম আছে। অনেক ক্লাব সত্যি এখন বিভিন্ন ট্যুর প্যাকেজ সিস্টেমে করাচ্ছে। কিন্তু সঞ্জয় ছেলেটির কথামতো এতোটা সুযোগসুবিধা দেওয়াটা সম্ভব নয়, এটাও ঠিক। তারপর অনেক চিন্তা করে আমি শুভ্রকে বললাম “একটা কাজ করি আমরা। কাল বিকালের দিকে আবার ওখানে যাই। আর উপর দিয়ে এমন ভাব দেখাই যে, দারুণ খুশি হয়েছি আমরা এই প্যাকেজটা নিয়ে। তাই উত্তেজনাবশত সামনের দুমাসের মধ্যেই আমরা গোয়া ঘুরে আসতে চাই। ওদের কথামতো ক্লাব কোম্পানির সাথে হওয়া টার্মস এন্ড কন্ডিশনগুলোর কাগজ সমেত কিট আসবে ওদের হায়দ্রাবাদের অফিস থেকে। যেটা কিনা আসতে প্রায় একমাস লাগবে। মানে ধরো মার্চ মাসের শুরুর দিক। তো আমরা মার্চের মাঝামাঝিতেই তিন দিন চার রাতের জন্য গোয়া ঘুরে আসতে পারি।”

“কিন্তু এগুলো বলে কী হবে?”শুভ্র তখনও আমার প্ল্যানিং টা ঠিক ধরতে না পেরে বিষ্ময় প্রকাশ করল।
“শোনোই না পুরো প্ল্যানিংটা। তখন তুমি কথাগুলো বলার পর আমি এক এক করে আজকে বলা টার্মস এন্ড কন্ডিশনগুলোকে একবার করে ওকে দিয়ে বলিয়ে ঝালাই করিয়ে নেব।

যেমন ধরো, আপনারাতো দুদিকের ট্রিপই ফ্লাইটে করাবেন, আমাদের টিকিট করতে হবে না। তাইতো?
আর রেসর্টে খাওয়াদাওয়ার জন্য কোনো পে করতে হবে না …

সাইডসিনিং ও তো আপনারাই ব্যবস্থা করে দেবেন?…. ইত্যাদি।”
শুভ্র তখনও ভ্রুজুগল কুঁচকে রয়েছে দেখে পুরো ব্যাপারটা এবার ক্লিয়ার করতে বললাম “আর এই সম্পূর্ণ কথোপকথনটা আমি আমার ফোনে রেকর্ড করব।”

এবার শুভ্রর ভ্রুজুগল ধীরে ধীরে টানটান হতে থাকল। আর দুজনে মিলে ঠিক করলাম পরেরদিন মেয়েকে দুপুরে ঘুম পারাবো না। একটা দুধের বোতল ওখানে ঢুকে ওর মুখে গুঁজে দিলেই ও কোলে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়বে। আর

রেকর্ডে কোনো নয়েসও আসবে না। নইলে কুটুসকাটুস করে আওয়াজ করে যাবে ও।তাতে কথাগুলো পরিষ্কার করে বুঝতে অসুবিধে হতে পারে।

অত:পর পরেরদিন মানে রবিবার প্রায় বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ আমরা পৌঁছালাম আমাদের গন্তব্যে। উদ্দেশ্যটিকে একরকম ব্যক্তিগত স্টিং অপারেশন বলা যেতে পারে। সত্যি বলতে কী আমার খুব টেনশন হচ্ছিল। আমার রেকর্ডিং স্ক্রিনটা যদি ওরা দেখতে পেয়ে যায়। শুভ্র আমায় সাহস যুগিয়ে বলল “তুমি কাউকে ঠকাতে যাচ্ছ না। নিজে যাতে না ঠকো তার ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছ।এটা অন্যায় নয় যে, তোমায় কেউ ধরে ফেললে কিছু বাজে কথা বলতে পারে। তবে হ্যাঁ, ওদের মনে পাপ থাকলে সেটা দেখে ফেললে রিএক্ট করতে পারে বৈকি। একটু সাবধানে মোবাইলটা সেট করে রেখো।”

এসব কথার মধ্য দিয়ে আমরা দুজনে নিজেদের কতকটা মনোবল বাড়ালাম। তারপর মেয়েকে ল্যাপিং ব্যাগে বসিয়ে মুখে দুধের বোতল গুঁজে দিয়ে ঢুকলাম এন্টারটেইনমেন্ট অফিসে। যথারীতি আমাদের দেখে আগের দিনের ছেলেটি গদগদ ভঙ্গিতে এগিয়ে এলো। আমাদের মুখেও টেনশনের ট্যান হাটিয়ে কৃত্তিম সাবলীল হাসি তখন। কী আশ্চর্য! আজ কিন্তু গতকালের মতো আর ওদের অফিসের সাজসজ্জা আমাদের আকর্ষণ করছে না। বা হয়তো মস্তিষ্কে অন্য হিসেব চলায়, পঞ্চইন্দ্রিয় তার সাথেই ব্যস্ত।

ছেলেটি এগিয়ে এসে বলল “এনি প্রবলেম স্যার?”

শুভ্র কৃত্রিম হাসিতে বলল “নো নো, নাথিং। একচুয়ালি উই আর ভেরি এক্সাইটেড নাউ। অর এক ট্যুর প্ল্যানিং করনি চাহতি হু আভি।”

“আভি?” ছেলেটা একটু থতমত খেয়ে।

“নেহি, মতলব আভিসে ছুট্টি কি বারেমে সোচকে হাম মার্চ মাহিনেপে গোয়া জানা চাহতি হু। ইসি লিয়ে কুছ ডিসকাস করনেকি লিয়ে আয়া আজ।”

কথাগুলো শোনার পর ছেলেটা ‘এক্সকিউজ মি’ বলে একটু ভেতরে গিয়ে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ফিরে এলো। আর আমাদের আগের দিনের ঘরটাতে না নিয়ে গিয়ে আরেকটা ছোটো ঘরে নিয়ে গেল। যেখানে একটা ছোটো টেবিলে একটা ল্যাপটপ রাখা আছে। আর আছে অল্প কয়েকটা চেয়ার। আমরা সেখানে বসলাম। আমার হাতে মোবাইলে ততক্ষণে রেকর্ডারের স্ক্রিন ওপেন করা হয়ে গেছে। শুধু অন করার অপেক্ষায়। কিছুটা নার্ভাসনেস কাজ করছে ভেতরে ভেতরে। ওরা আমাদের পরিকল্পনা বুঝে ফেললে এই মলের এককোনে কী করতে পারে … ভেবে সাবধান ইন্ডিয়ার বিভিন্ন কাহিনীগত চিত্র মাথায় আসতে শুরু করেছে।

“বোতলটা সরিয়ে রাখো। হিয়া ঘুমিয়ে পরেছে।” শুভ্রর কথায় ওর দিকে ফিরে বুঝলাম ও আমায় রেডি হতে বলছে। অত:পর চিন্তাগুলোকে ঝাঁকিয়ে মাথা থেকে নামিয়ে দিয়ে, মেয়ের মুখ থেকে বোতলটা সরিয়ে ব্যাগে ঢোকানোর অজুহাতে ফোনের রেকর্ড অন করলাম। আর শুভ্রর দিকে চেয়ে চোখের ইশারা করলাম। আমাদের পরিকল্পনা মতো কথাবার্তা পাড়তে লাগল শুভ্র। আর আমিও টুকটাক জিজ্ঞেস করতে থাকলাম আমাদের সামনের ট্যুরটাতে ওদের কি কি সার্ভিস পাওয়া যাবে সে বিষয়ে। ছেলেটি অবলীলায় আমাদের আগের দিনে বলা সমস্ত প্রতিশ্রুতিগুলো

বিনয়ের সাথে রিপিট করল। তবে গলার স্বর নিচুতে নিয়ে। মনে মনে ভাবলাম ভালোই হয়েছে। ওই ঘরে নিয়ে গেলে মিউজিকের মধ্যে এতো আসতে বলা কথাগুলোর রেকর্ড করতে অসুবিধা হত। অথবা হয়তো ওরাই ওদের সুবিধার্থে আমাদের এখানে এনে বসিয়েছে। আমাদের যে অলরেডি লাড্ডু চাখানো হয়ে গেছে। ওঘরে হয়তো এখনও দিল্লীকা লাড্ডু বাটোয়ারা করছে কেউ।

মিনিট পনেরো মতো কথা বলে আমরা বেরিয়ে এলাম ওখান থেকে। সত্যি বলতে কী ছেলেটা পরেরদিনও এতো কনফিডেন্স নিয়ে দ্বিতীয়বার সব প্রতিশ্রুতিগুলো বলল, আমাদের যেন মনে মনে ধোঁয়াশা লাগছিল। তারপর ঠিক করলাম, এবার একমাস কিটটার অপেক্ষা করব। তারপর দেখব সেখানে কী কী আছে। এখন অন্তত আমাদের কাছে এভিডেন্স আছে যে, ওই ক্লাবের এমপ্লয়ি আমাদের কী কী বলিয়ে প্যাকেজটা করিয়েছিল।

মার্চ মাসের শুরুতেই হায়দ্রাবাদ থেকে এলো সেই কিট। ওটার খাম ওপেন করার সাথে সাথেই যেন আমাদের মাথায় বাজ ভেঙ্গে পড়ল। এতো সেদিনের কথার সাথে এর মধ্যে লেখা কাগজের আকাশপাতাল পার্থক্য। ফ্লাইট ফেয়ার দূরস্থ, রেসর্টে থাকাটাও পুরোপুরিভাবে দেবে না ওরা। খাওয়াদাওয়া সাইডসিনিং সবই নিজেদের করতে হবে। সব পড়ার পর ঝটকা লাগল একটা কাগজ দেখে, যে কাগজটাতে আমি আদৌ সাইন করিনি। মোট দুটো কাগজে সাইন করেছিলাম আমি। ওরাই বোধ হয় তৃতীয় কাগজটা দিতে ভুলে গিয়েছিল সেদিন আমায়। আর সেই ভুলটা ওরা শুধরে নিয়েছিল আমার সই জালিয়াতি করে। এসব দেখে মাথা বনবন করে ঘুরছে তখন আমার। শুভ্র তৎক্ষণাৎ কল করল এস বি আই তে। ওখানে কথাবার্তার পর বুঝলাম, ক্লাবে ছেলেটি কেন পরেরদিনও খুব মাখনের মতো কথা বলেছিল আমাদের সাথে। কারন ক্রেডিট কার্ডের মধ্য দিয়ে যেকোনো ব্যাঙ্ক ট্রান্স্যাকশনের পরবর্তী ৭২ ঘন্টা থাকে কুলিং পিরিয়ড। এ সময়ের মধ্যে যদি বায়ারস সাইড থেকে কল করে কোনোরকম অবজেকশন জানানো হয় তবে, ব্যাঙ্ক তৎক্ষণাৎ মার্চেন্ট সাইডে টাকার ট্রান্স্যাকশন আটকে দিতে পারে। কিন্তু তারপর তা আর সম্ভব হয় না। তবে ব্যাঙ্ক থেকে আমাদের কিছু উপায় বলে দিল। যেমন কিছু জায়গায় মেল করে জানাতে ও ওদের কাস্টমার কেয়ারে কল করতে। আমাদের হাতে থাকা ট্যুর প্যাকেজের কিটটা তখন আমাদের কাছে দিল্লীকা লাড্ডুর মতো লাগছিল। না পারছিলাম রাখতে, না পারছিলাম এতোগুলো টাকা দিয়ে প্যাকেজ করে এমনি এমনি ছেড়ে দিতে।

এমত অবস্থায় আমরা প্রথমেই এন্টারটেইনমেন্ট ক্লাবের কাস্টমার আইডিতে মেল করে সব জানালাম। ওদের থেকে তিনদিনের মধ্যে কোনো রিপ্লাই এলো না। তখন সমস্ত ব্যাপার জানিয়ে আমরা বিগ বাজার অথোরিটিকে(যেহেতু বিগ বাজারের মধ্যে ওই ক্লাবের এজেন্ট বয়ের থেকে আমরা কুপন নিয়েছিলাম), কাস্টমার ফোরামে, দিল্লী পুলিশ

কমিশনারকে মেল করে জানালাম সবিস্তারে। মেলগুলোতে এটাচ করা হল প্রয়োজনীয় প্রমাণ। বিগ বাজারের ম্যানেজারের সাথে সামনাসামনি দেখা করে সব জানিয়ে ওই এজেন্টদের ওখানে ঢোকা বন্ধ করলাম। এককথায় নিজেদের স্বপ্ন নিয়ে ছেলেখেলা করা ফ্রড কোম্পানির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্য শক্তপোক্ত প্রতিশ্রুতি নিলাম। বিশেষ করে যখন গুগলে এদের রিভিউ দেখলাম। কত মানুষকে যে এভাবে মুড়িমুড়কির মতো দিল্লীকা লাড্ডু খাইয়েছে এরা, তার ইয়ত্তা নেই। কখনো মলের ভিতর কুপনের লোভ দেখিয়ে, কখনো মহিলাদের জুয়েলারির লোভ দেখিয়ে দেদার ঠকিয়ে গেছে এরা। কিন্তু আমরা এদের মত রিভিউ লিস্টে অসহায়তা দেখাব না। লড়ে আদায় করে নেব আমাদের খাটনির টাকাগুলোকে। আর আমার বিশ্বাস ছিল, আমরা তা পারবও। কারন আমাদের কাছে যে রেকর্ড আছে, তা কারো কাছে ছিল না।

এরপর সম্ভবত সময়ের চাকা ঘুরে দাঁড়াল ধীরে ধীরে। দিল্লী পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে পজিটিভ রেসপন্সের মেল পেলাম। এস বি আই ব্যাঙ্ক আমাদের পাশে দাঁড়াল আমাদের কনসিউমার ফোরামে কেস করতে বলে। আর গুগলে আমাদের লেখা রিভিউ এ রেসপন্স করল প্রচুর মানুষ। তাদের মধ্যে একজন আমাদের ডিটেইলস বলে দিল কিভাবে কেস সাজাব। কী কী পদক্ষেপে এগোবো।

নেমে পড়লাম সাকেত কনসিউমার কোর্ট চত্বরে, ন্যায় অন্যায়ের লড়াই এ। মার্চে কেস ফাইল করা হল এন্টারটেইনমেন্ট ক্লাবের বিরুদ্ধে। কোনো আইনজীবী রাখিনি আমরা। নিজেরাই নিজেদের বক্তব্য পেশ করেছি আদালতে দাঁড়িয়ে। আমাদের ফেবারে শুরুর দিক থেকেই ছিল কেসটা। কারন আমাদের প্রমাণ স্ট্রং ছিল আর প্রথম দুটো ডেটে ওদের তরফ থেকে কেউ উপস্থিত ছিল না। অত:পর এন্টারটেইনমেন্ট ক্লাবের লইয়ার ছেলেটি আমাদের সাথে আপোষ করতে এগিয়ে এল একদিন। দেড় বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে নয়ডা সেক্টর ১৫ থেকে সাকেতে যাওয়া আসা, অফিস কামাই, খাটনির টাকা পুনরুদ্ধার করার টেনশন সব যেন মূল্যহীন তার কাছে। আসলে এই কোম্পানির রেকর্ডে ছিল না, কাউকে ট্যুর প্যাকেজে সাইন করিয়ে তারপর টাকা ফেরৎ দেওয়া। কিন্তু আমাদের কাছে গচ্ছিত প্রমাণ অকাট্য হওয়ায়, ওরা নিরুপায় ছিল।

*************

তাই সেদিন যখন উপরের কোর্ট নিচে সেটেলমেন্ট ডিপার্টমেন্টে পাঠিয়েছিল আমাদের দুই পক্ষকে, তখন শেষ আশায় কথা বলতে এসেছিল এন্টারটেইনমেন্ট ক্লাবের লইয়ার ছেলেটি। কিন্তু ওর এবং ওর ক্লাবের সব আশাতেই জল ঢেলে দিয়ে আমরা সেদিন আদায় করেছিলাম আমাদের ট্যুর প্যাকেজের টাকাটা। তবে নিয়ম অনুযায়ী দু হাজার টাকা বাদে। তবে সেদিন আমরা জিতেছিলাম একটা ন্যায় অন্যায়ের বড় লড়াই। আর ইন্টারনেটে ফলাও করে বিজয়ী কাহিনীর রিভিউ লিখেছিলাম। যাতে আরো অনেকে উপকৃত হয়। সচেতনতা বাড়ে।

একথা সত্যি যদি ন্যায়পথে থেকে ক্ষণিকের জন্য কাজে বা চিন্তাধারায় ভুল হয়, তাও সঠিক সময়ে বুদ্ধিবল কাজে লাগালে সবক্ষতিরই ক্ষতিপূরণ করা সম্ভবপর হয়। তার জন্য লাগে মনোবল, সৎ সাহস আর প্রবল পজিটিভ ইচ্ছাশক্তি।

(সমাপ্ত)

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত