অভিমানী ছোঁয়া

অভিমানী ছোঁয়া

→হ্যালো…
→হ্যাঁ, কি করো?
→কিছু না, শুয়ে আছি। তুমি?
→সিগারেট খাচ্ছি, আমার ফোনে
লোড দিতে বললাম। দিলানা কেন?
→আমার কাছে টাকা নাই তাই
দিতে পারিনি। বিকালে
দিবোনে।
→এখনতো টাকা থাকবে না,
ভালোই।
→ওহ হুম, তাহলে আমি কিছু বলি?
→হুম, বলো!
→সিগারেট খাওয়ার টাকা থাকে
কিন্তু ফোনে লোড করার টাকা
থাকেনা, তাই না?
→হুম, কিছু বলার ছিলো বাট বলবো
না।
→কেন?
→কারন তুমি সেটা শেষ করে
দিয়েছো।
→আমি শেষ করেছি নাকি তুমি
করছো? আর আমি না শুনলে কে শুনবে?
→যে আমার সহধর্মিণী হবে।
→ওহ তারমানে কেউ হবে? এতদিন
তো বলতে অরিন ছাড়া আর কেউ
সেই জায়গাটা পাবে না আর আজ
নতুন কিছু শুনছি। বাহ!!! তারমানে নতুন
কাউকে পেয়েছো?
→কেউ একজন আসবে তো অবশ্যই আর
পাইনি তবে পাবো।
→হুম ভালো।
→আর কিছু বলবা?
→নাহ, কেন রাখবা?
→হুম, অযথা টাকা শেষ করে লাভ
নাই। এমনিতেই অনেক টাকা
উড়িয়েছি।
→তাই!? আমি কিছু করিনি বোধহয়?
→জানিনা…

টুট………টুট……………টুট…………………… লাইনটা কেটে দিলো সুমন। ইদানিং খুব বোরিং লাগে অরিন নামের মেয়েটাকে। একমুহুর্তও সহ্য হয়না
ওকে। কোনভাবে পিছু ছাড়াতে পারলে বেঁচে যায় সুমন। আর অরিন!? মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। খুব ভালোবাসে সুমন নামের ছেলেটাকে। সুমন বলতেই সে জীবন দিতেও প্রস্তুত।

কিছুদিন আগেও সারাদিন রাত ২৪ঘন্টা ফোনালাপে ব্যস্ত থাকতো দুজন। কখনো সুমন ফোন দিতো তো কখনো অরিন। সুমন ফোন দিতো ওর
বাবার টাকা খরচ করে আর অরিন ফোন দিতো বিভিন্নভাবে ধারকর্জ করে। পরে আবার সেইধারকর্জ শোধ করতো মা’কে মিথ্যা বলে।

প্রাকটিকাল খাতার দাম যেখানে ৫০টাকা, ওর মা’কে সেই খাতার দাম ৩০০টাকা বলে বেশি করে টাকা নিতো আর ধার শোধ করতো।

যেখানে কলেজে রিক্সায় গেলে যাওয়া আসা বাবদ ১০০-১৫০টাকা ভাড়া লাগে সেখানে হয়ত হেঁটে নয়ত “লেগুনা” নামের ছোট গাড়িতে করে যাওয়া আসায় ২০টাকা খরচ করে বাকি টাকা ফোনে লোড করতো।

কিন্তু হঠাৎ সুমন কেমন যেন পাল্টে গেলো। অরিনকে একদমই সহ্য করতে পারেনা। কথায় কথায় ঝগড়া করে, উল্টাপাল্টা কথা বলে। এরকম
কিছুদিন যাওয়ার পর সুমন ব্রেকাপ করে। অরিন ব্রেকাপের কোন কারন জানতে চাইলে সুমন কিছুই বলে না, শুধু এটুকুই বলে…”ওর পক্ষে সম্পর্ক রাখা সম্ভব না।

অতঃপর সুমন নামের ছেলেটা অরিন নামের মেয়েটাকে ছেড়ে নতুন কাউকে খুঁজে নিলো জীবনসঙ্গী হিসেবে।

[বিঃদ্রঃ কখনো বাবা-মাকে ঠকানোর চেষ্টা করবেন না। এতে করে তারা নয়, আপনি নিজে ঠকবেন। বাবা-মায়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আর অন্ধ বিশ্বাসকে কখনো উল্টো কাজে লাগাবেন না। এতে করে হিসাবের খাতায় পাওয়ার থেকে হারানোর সংখ্যাই বৃদ্ধি পাবে।]

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত