এলিয়েন

এলিয়েন

– কীরে সাহরিয়া এই রাতের বেলা পুকুর পারে কী করছিস (রাসেল)।
– আর ভাল লাগে নারে ভাই, আব্বারে কত দিন ধরে কইতেছি একটা ফোন কিনে দেওয়ার জন্য দিচ্ছেই না।
– তো ফোনের সাথে এখানে বসে থাকার কী আছে।
– দূর যা তো এখান থেকে, এমনি আছি হেব্বি রাগে, আর আসছে বুঝাইতে।

ইয়া মাবুদ কিছু একটা করে দাও। আগে শুনছি মানুষেরা নাকি জ্বীন হাজির করে যা চাইত তাই পাইত, আমি ও মেলা ট্রাই করছি
দূর সব ভূয়া, টাকা চাইলে জ্বীন ফিন সব হাওয়া।
সবাই কত দামি দামি ফোন কিনে আবার আইফোন টেন, এক্স ও নাইমা গেছে,
আমার কপালে একটা খালি আইফোন ও লেখা নাই।
কেমনে যে টাকা পাই, আল্লাহ তোমাকে কত দিন থেকে বলতেছি কিচ্ছু করতেছ না।
দুনিয়ার সবাই সালা ফকিন্নি আমি বুঝে গেছি, আরে আমাকে একটা ভাল ফোন কিনে দিলে কী হয়।।
আব্বারে বইলা লাভ নাই আর,
দূর কোন কিছুর সালা কোন ক্ষমতা নাই, তাইলে আজ আমার একটা ভাল ফোন থাকত।

– সাহরিয়া ভাত খেয়ে নে (মা)।
– খিদে নেই খামু না ভাত, আমি শুতে গেলাম।
– হুমমমম যা কোন বাপে তোরে ফোন নিয়া দেই সেটাই দেখি (আব্বা)।
– লাগব না তোমার টাকার ফোন,বলেই চলে গেলাম। এখন শুয়ে আছি।

এই হইল আমার জীবন একটা ভাল ফোনের লাইগা কী নাই না করি।
আমি সাহরিয়া গ্রাম শহরে থাকি। মনে হইল গ্রামের মধ্যে শহর বলমু শহরের মধ্যে গ্রাম সেটাই ভাবতেছি।
আচ্ছা যাই হোক একটা হলে হইল, আমার জীবনের একটাই শখ একটা ভালো মোবাইল।
সেটাই আর হচ্ছে কই,
কত কিছুই না করলাম,
দোয়া করলাম, মানত করলাম,
জ্বীন খুঁজলাম কিন্তুু সব বিফলে চলে গেল।

এখন সব আসা শেষ, একটা ভাল মোবাইল নাই এইটা কোন জীবন হইল নাকি।
এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমাই গেলাম।

হঠাৎ কেমন একটা অদ্ভুদ শব্দ, আর অনেক আলোতে ঘরটা ভরে গেছে।
রাত তখন আনুমানিক কত হবে আমি ঠিক জানি না,
তবে ভয় ভয় করতিছে সত্যি সত্যি জ্বীন চলে আসল নাকি।
যাক যাই করুক খালি একটা ভালো ফোন চামু।
– কী যানি বলতিছে কিচ্ছু বুঝতেছি না।
– ভাই আপনি কী জ্বীন।
– আবার কী বলতেছে কিচ্ছু বুঝতেছি না। ভাইজান একটু বাংলাই বলেন,
আর আপনি কোথায় দেখতেছি নাতো।

– তুমি সাহরিয়া।
– জ্বী ভাই আমি সেই ফোন পাগলা, সাহরিয়া, আপনি কে।
– আমি ভিন্ন গ্রহের প্রাণী।
– ও মা তাই তো আপনি আমার কাছে কেন আসছেন।
– আমার একটা কাজ তুমি করে দিবে।
– দিমু কিন্তুু ভাই আমারে একটা ভালো ফোন দেওয়া লাগবে।
– হুমমমম আমি যেই পাওয়ার তোমাকে দিব সেটা দিয়ে তুমি হাজার হাজার ফোন কিনতে পারবা।

– ও মা তাই নাকি।
– আচ্ছা আপনার নাম কী শুনি।
– আমি এলিয়েন।
– ভাই আপনাগো মেলা নাম শুনছি, নিজের চোখে দেখমু ভাবি নাই।
– আচ্ছা আপনি বাংলা জানলেন কেমনে,
ও হ্যা বুঝছি, আপনাদের মেলা বুদ্ধি আমি জানি। তো আমার কাছেই কেন।
– আমরা মানুষের সব উপলদ্ধি বুঝতে পারি, আর সেই দিক দিয়ে তুমি পারফেক্ট।

– আমার বাপে বুঝল না আর একটা এলিয়েন বুঝে গেল। সাহরিয়া তুছি গ্রেট হো ।।।

– তো এলিয়েন ভাই আপনারে কী কাজ করে দিতে হবে বলেন।
– তেমন কিছু না তোমার হাত পায়ের নখ গুলো কেটে দাও।
– কীইইইই ভাই গরিব বইলা হাত পায়ের নখ গুলা কেটে নিয়ে যাবেন।
– আরে নানা পুরো নখ না, ঐ যে হাতের কাঠ নখ গুলো বড় বড় কেটে সাইজ করো ঐ গুলা।
– আরে আগে বলবেন তো। এই নেন ধরেন।
– হুমমমম ধন্যবাদ।

– ভাই আমার মোবাইল।
– এই ধরো এইটা রাখ।
– দুর এইটা দিয়ে কী করমু।
– কোন জিনিসের সামনে এটা নিয়ে গিয়ে জিনিসটার নাম বলবা তোমার হাতে চলে আসবে।
– বাহ্ এইটুকু জিনিসের এত্ত পাওয়ার।
– হুমমমম, কিন্তুু তোমার নখের থেকে কম।

– কেন নখ দিয়ে কী হবে।
– আমরা একটা যন্ত্র আবিষ্কার করেছি তাতে, তোমার মতো অদ্ভুদ চিন্তার মানুষের নখ রাগবে, তো এখন থাকো আমি আসি। বলেই উধাও হয়ে গেল।

দূর ওর নখ লাগবে আর আমার মোবাইল।।
আগে সকালে দেখি এটা কাজ করে কী না।
সকালে একটা ফোনের দোকানের সামনে গিয়ে বললাম আইফোন এক্সটা আমার হাতে চাই। ওমনি হাতে দেখি আইফোন এক্স।

এবার কে পায় আমাকে। এর পরে অনেক জিনিস নিয়ে বাসাই গেলাম।
– কীরে এত্ত দামি দামি ফোন গয়না কই পেলি।
– আব্বা তোমার পোলার এই নখ কত দামি সেইটা তুমি না বুঝলে কী হইব এলিয়েন বুঝে।
– কী বলিস পাগলের মতো।
– কিচ্ছু না এবার এই গুলো ধরো, আমি গেলাম।

– কীরে ভাই আইফোন এক্স কিনলি কবে (রাসেল) ।
– এই তো আজকেই, দাঁড়া তোদের জন্য ও ফোন নিয়া আসছি এই নে ধর।
– সাহরিয়া, ভাই তুই মানুষ না ফেরেস্তা আমার বাপ তুই ভাই।
– হুমমমম চল খালি কী খাবি বল, আর একটু অন্য দিকে যাবি খাবার রেডি।
– মাম্মা এই সব কেমনে সম্ভব।
– আমার নখ এ পাওয়ার মাম্মা নখ এর পাওয়ার তোরা বুঝবি না।

রাতে বাসাই আসতেছি, আহা এমন চলতে থাকলে তো আমি রাজা হয়ে যামু, আহা ভাবতেই অবাক লাগতেছে,
হাঠাৎ সামনে দেখি কিছু পোলা পান আমাকে ঘিরে ধরছে।
– ওমনে বলে দিলাম। ওদের আমি আচ্ছা মতো পিটামু হঠাৎ কই থেকে কেমন যানি পাওয়ার আসল, কেমনে যে মারলাম।
সব গুলে কাঁতরাইতেছে রাস্তাই হি হি।
– ওই আর আর ধরবি না আমারে।
– না ভাই মাফ করে দেন।
– হুমমমম যা এবার।
– ভাবতেছি কালকে একটা বাইক চামু।
– তো পরেরদিন গেলাম দোকানের সাইটে দাঁড়াই চাইতেছি সেই কখন থেকে আসার কোন নামই নাই। ঐ বাইক আমার হাতে চলে আয়, ঐ বাইক আমার হাতে চলে আয়। মনে হয় ভারি জিনিস তাই আসতে দেরি হচ্ছে। ঐ বাইক আমার হাতে চলে আয়।
– হঠাৎ আব্বা দিছে কানের গোরাই একটা থাপ্পড়।
– হারামজাদা মোবাইল এর ভূত ছেরে আবার বাইক এক ভূত উঠছে। কী বলিস আবল তাবল।

– হায় হায় তার মানে আমি সপ্ন দেখছিলাম।
তাই তো কই আমি কপাল তো এত্ত রাজকীয় না, যাক কত স্বাধের ফোন যদি থাকত আহা কী সুন্দর সুরত।

আর কিছু কমু না থাক,,,,,,,
আহা কপাল আমার।।।।।

>>সমাপ্ত<<

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত