অশ্রু বালিকা

অশ্রু বালিকা

অনেক দিন পর আজ ক্যাম্পাস এ গেলাম। শুনলাম রুপকথা বেশ কিছুদিন যাবত ক্যাম্পাস এ আসছে না।মেয়েটি নিয়মিত ক্যাম্পাসে আসে। সেদিন রাতে আমার সাথে কথা বলার সময় রুপকথা অনেক কেঁদেছিল তারপর থেকে ওর ফোন টাও বন্ধ। ওকে ফেসবুকে নক করেও পাচ্ছি না। আমি ওদের বাসায় চলে গেলাম।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ওদের বাসা। এই এলাকায় সব ধনীদের বাস। ওদের বাড়িটা খুব সুন্দর। আমি এই বাড়িতে অনেক বার আসছি কিন্তু বাড়িটা যত দেখি ভালোই লাগে। ডু-প্লেক্স বাড়ি চারপাশ ফুল গাছ দিয়ে সাজানো।

আমি ভিতরে গেলাম কলিং বেল দিতেই কাজের মেয়েটা দরজা খুলে দিলে। মেয়েটা আমাকে চেনে কারণ আমি অনেক বারই আসছি। আন্টি বললো কে আসছে? মেয়েটা বললো নাদীম ভাইয়া আসছে।

আমি ভিতরে গেলাম আন্টি কে সালাম দিলাম বললাম, ‘আন্টি রুপকথা কোথায়? ক্যাম্পাসে যাচ্ছে না আবার ওর ফোনও অফ?’
– কিছু দিন যাবত কারো সাথে তেমন একটা কথা বলে না। সারাদিন দরজা বন্ধ করে ওর রুমে থাকে। রাত জাগে তার জন্য ঠাণ্ডা লেগেছে সাথে জর। মেয়েটা খুব জেদি ওর আব্বুর ছাড়া কারো কথা শুনে না।
-আংকেল কোথায়?
-তোমার আনকেল ইন্ডিয়া গেছে আগামি শুক্রবার দেশে আসবে।
– ও আন্টি আমি কি রুপকথার সাথে একটু কথা বলতে পারি।
-তুমি তো ওর বন্ধু কথা বলার জন্য অনুমতি লাগে নাকি? ও ওর ঘরে আছে যাও।ন

আমি ওর রুমে চলে গেলাম রুপকথা বেলকনি তে বসে বাহিরের পানে তাকিয়ে আছে। আকাশ টা মেঘলা হয়ে আছে মনে হচ্ছে হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি নামবে। এই বৃষ্টির আর একটা নাম আছে আউলা ঝাউলা বৃষ্টি।

রুপকথাদের বেলকনী টা বেশ বড়। চেয়ার গুলো সুন্দর ভাবে সাজানো। ওর বাবা খুব সৌখিন। খুব সুন্দর ভাবে বাড়িটা সাজিয়েছে। আমি ওর পাশের চেয়ার এ বসলাম। রুপকথার গাল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরছে। এই মেয়ের একটা নাম দেয়া যায় অশ্রু বালিকা। আমি একটা অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ্য করলাম আমার সামনের বালিকাটি কান্না করলে ওর মুখে এক অদ্ভুত সৌন্দর্য ফূটে ওঠে। বৃষ্টি নামবে খুব বাতাস হচ্ছে বাতাসে রুপকথার চুল গুলো উড়ছে। সৃষ্টিকর্তা মনে হয় এই বালিকা কে পৃথিবীর সব থেকে রুপবতী করে সৃষ্টি করছে।

-কেমন আছো রুপকথা?
-ভাল।
-আন্টি বলল ঠিক মত খাবার খাচ্ছ না, সারাদিন তোমার রুমে থাকো। ক্যাম্পাসে যাচ্ছ না। আমি ফোন দিলাম ফোন বন্ধ। ফেসবুকের মেসেজ ও চেক করছো না। তুমি এমন করছো কেন? তুমি কি প্রমান করতে চাও?
-আমি কিছু প্রমান করতে চাই না। আমার জন্য কাউকে মায়া দেখাতে হবে না।

কাজের মেয়েটা চা নিয়ে রুমে আসলো। আমাকে বলল চা নেন ভাইয়া। আমি চা নিলাম। চায়ে চুমুক দিতে দিতে বললাম।

– এই সব পাগলামির মানে কি রুপকথা? তুমি সবাইকে কষ্ট দিচ্ছ কেন?
-আমি তো কাউকে আমার জন্য কষ্ট পেতে বলি নি।

আমি রুপকথার হাত টা ধরলাম। মেয়েটা চোখ দিয়ে জল পরছে। বৃষ্টিজলের আচ লাগছে আমাদের গায়ে। আমি বললাম…

-আমি যদি এই ধরি কখনো ছেড়ে দিবা না তো?
রুপকথা আমাকে জড়িয়ে ধরে অশ্রুসিক্ত চোখে/

-নাদিম আমি তোমার কাছে কিছুই চাই না আমি শুধু চাই তোমাকে ভালবাসতে। তোমার বুকে মাথা রেখে কান্না করতে। অনেক ভালবাসতে চাই তোমায়? আমি চাই তুমি আমাকে একটু ভালবাস।
-আরে পাগলি আমি তোমার চোখে কখনো জল আসতেই দিব না।

কেন জানি মনে হচ্ছে আমার চোখ অশ্রু তে ভিজে যাবে। আমি দেরি না করে ওর কাছ থাকে বিদায় নিয়ে বের হলাম এখনো বৃষ্টি হচ্ছে অনেক দিন হল বৃষ্টি তে ভেজা হয়নি।আমি হেটে চলছি বৃষ্টি পরছে আমার আমার চোখে জল বৃষ্টিজলের সাথে মিশে যাচ্ছে।…

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত