প্রমিস

প্রমিস

-“আরে এসব ডে টে সব বাজে কথা! এসব কিচ্ছু না, শুধু মেয়েগুলোর ছেলেদের কাছ থেকে জিনিসপত্র হাতাবার ফন্দি!”- হাই বেঞ্চে বসে বসে পা দোলাতে দোলাতে লেকচার ঝাড়ছি, আর সামনে বসে রাণা আর সমুদ্র মাথা নেড়ে নেড়ে শুনছে।

-“কীরকম কীরকম? মানে মেয়েগুলো কীভাবে হাতায়, ডিটেইলসে বল তো! ভালোই লাগছে শুনতে!”

আজ অব্দি রাণাকে আমার কোনো কথা এত মন দিয়ে শুনতে দেখিনি। দ্বিগুণ উৎসাহে বললাম-“আরে ধর ওই রোজ ডে, ওটা কি আর ডে ফে কিছু, বাংলায় বললে ওটা হলো গোলাপ দে! আবার ধর টেডি ডে, চকলেট ডে এগুলো সব পাতি পুতুল দে, চকলেট দে এইসব!”

-“ওওও!”- ঠকঠক করে ওপর নিচে মাথা দোলালো সমুদ্র। ভ্রূজোড়া একটু ওপরে তুলে বললো-“প্রপোজ ডে টা কী তাহলে?”
-“ওটা…মমম…কেন, ওটা বলে দে! প্রপোজ ডে মানে সোজাসাপটা বলে দে! দেখছি তো মেয়েদের। নিজেরা বলবে না, ছেলেরা কতক্ষণে বলবে তাই ভেবে ভাও খেয়ে বসে থাকে!”

-“আচ্ছা!!! অনেক জ্ঞান দেখছি তোমার!”- গলাটা শুনে আমার এতক্ষণের লেকচার ঝাড়া রাজা রাজা মেজাজটা ফুস করে তালপুকুরের পাঁকে ডুবে গেল! লাফিয়ে বেঞ্চ থেকে নেমে ঘুরে তাকালাম। রাণা ফিকফিক করে হাসতে শুরু করেছে! এরা বন্ধু! ব্যাটারা ওকে আমার এসব আজেবাজে কথা শোনানোর জন্যই আমাকে দিয়ে এত বলাচ্ছিলো! আর মেয়েটাও বাবা! তুই ছেলেদের কথা পেছন থেকেই বা কেন শুনবি! যদি দু’চারটে খিস্তি দিয়ে দিতাম! ভাগ্যিস!

-“অনেক জ্ঞান দেখছি তোমার! কোন ডে কী মিন করে সব জানো তুমি! এই বয়সেই অনেকগুলো প্রেম হয়ে গেছে মনে হচ্ছে!” – চোখ নাচিয়ে আবার বললো শৈলী।

-“আরে না না, এই রাণা বল না…আমি তো একেবারে সিঙ্গল…এরা জানে। ইচ্ছে করে মুখ খুলছে না! এই সমু, বল না!”

-“ওদের কেন খোঁচাচ্ছো?”

-“না মানে তুমি যা ভাবছো তা নয়! জিজ্ঞেস করো ওদের! আমি একেবারে সিঙ্গেল। আজ অব্দি কোনো মেয়ের পাল্লায়, স্যরি, মানে কোনো মেয়ের সাথে প্রেম করিনি! জিজ্ঞেস করো!”

-“সমুদ্রদা, ও ঠিক বলছে?”

-“হ্যাঁ হ্যাঁ!”- দুদিকে মাথা নেড়ে বললো সমুদ্র-“প্রেম ও কোনোকালেই করেনি। শুধু ওই এইবারে সরস্বতী পুজোর সময় রিয়ার সাথে একটু ওই আর কী আর ওই আগের বছর দুর্গাপুজোয় ওই যে সোহিনী বলে ওর ওই পাড়ার বান্ধবীটার সাথে…”

সমুদ্রর কথা শেষ হওয়ার আগেই ঝাঁপিয়ে পড়লাম ওর উপর। জেনেশুনে, একেবারে ইচ্ছে করে আমার প্রেমে ভাংচি দিচ্ছে। বন্ধুর নামে কলঙ্ক এরা!

-“রিয়া কে জানিস না তুই? রিয়ার নামে কেন বলছিস? ও আমার সেই ছোটবেলার বন্ধু! ওর নামে কেন! আর সোহিনীর কথা কী বলছিস! তোরা জানিসনা ও আমার শুধু বন্ধু! প্রত্যেকবার রাখীতে ওর জন্য আমার কত টাকা চলে যায় চকলেট কিনতে! জানিস না না? আর এই যে তুমি…” ঘুরে দাঁড়িয়েই থমকে গেলাম। কেউ নেই! চলে গেছে!

সমুদ্র আর রাণা হেসেই চলেছে! গা জ্বলে যাচ্ছে আমার! এরা নাকি বলেছিলো সঙ্গে থাকবে! একরাশ বিরক্তি, রাগ নিয়ে সামনের বেঞ্চে একটা লাথি মেরে বললাম-“ভাগ সব আমার চোখের সামনে থেকে!”

শৈলী! কলেজে সদ্য সদ্য আসা রাগী, মেজাজি, গম্ভীর একটা মেয়ে। এই যে আমরা, ওর সিনিয়র, একটু ভয় ভক্তি দেখলে? আরে বাবা দেখবে কী করে, থাকলে তো! কলেজে যারা প্রথম আসে তারা বেশ ভয় পেয়ে থাকে সিনিয়রদের। আর এ মেয়ে! উল্টে আমাদেরই ভয় পাইয়ে দেবে!

জিজ্ঞেস করতেই পারো তাহলে আমার ভালো লাগলো কেন! হুঁ হুঁ, ভালো প্রশ্ন! ব্যাপারটা হলো, শৈলী আসলে রাগী, মেজাজি হলেও বড্ড ভালো! একটু নিজের মতো থাকে, ইনট্রোভার্ট, কিন্তু বড় ভালো। সাজগোজ একেবারেই করতে পারে না, কোঁকড়া চুল বাঁধতে পারে না সুন্দর করে, কেমন যেন এলোমেলো হয়ে কলেজ চলে আসে। আর কেন জানি না, এরকম এলোমেলো মানুষই আমার খুব পছন্দ হয়। কেমন যেন মনে হয়, এরা খুব একা, এরা অনেক ভালো, এরা বাহুল্য দিয়ে আসলটুকু ঢাকার বিলাসিতা করতে চায় না। তার উপর যখন দেখলাম মেয়েটা অসম্ভব সাহিত্যপ্রেমী, টুক করে প্রেমে পড়ে গেলাম।
আমিও খুব ভালোবাসি কিনা পড়তে। এরপরও যদি কেউ বলো, ‘এই দেখে প্রেম হয় নাকি!’, তো সোজাসাপটা জবাব দেব, আমি বাপু অত জানিনা। ভালো লাগে মানে লাগে ব্যস! কেন লাগে অত কারণ বলতে পারবো না, বুঝতে পারিনা আমি অত।

এমনিতে আমার সাথে কথা যে বলে না তা না! প্রায় দিনই কথা হয়। তা বলে কেমন আছো, কী খেলে এসব কথা হয় না খুব একটা। তবে ওই যে, মাস দুয়েক আগে একবার আমার জ্বর হয়েছিলো, তখন ও খুব খেয়াল রাখতো আমার। ঘন্টায় ঘণ্টায় ফোন, খোঁজ নেওয়া। কিন্তু জ্বর ভালো হতেই আমার সেই পুরোনো রূপ। সেই রাগী রাগী, কেমন কেমন। বয়সে বছর দেড়েকের ছোট হলে কী হবে, তোমাদের বলতে লজ্জা নেই, ওকে বেশ একটু ভয় পাই আমি, সমঝে চলি।

সেই মেয়ের সামনে এই কেস! রাণা আর সমুদ্রটা পুরো ডুবিয়ে দিল আমাকে। এই তো কদিন আগেই ভ্যালেন্টাইন উইক নিয়ে আলোচনা হলো, সেণ্ট ভ্যালেন্টাইনকে নিয়ে কথা হলো, কী থেকে কী হয়েছে সেসব নিয়ে আলোচনা হলো। তখন কত সিরিয়াস হয়ে সব কথা শুনলাম, বুঝলাম, বললাম! আর আজ… ছি ছি ছি!

-“কথা শোন ভাই! বলে দে গিয়ে!”
রাণা আর সমুদ্রটা আবার পেছনে পড়েছে। সত্যি বলতে কী আমিও ভেবেছিলাম এবারেই বলে দেব! প্রপোজ ডে টা ভাবতে ভাবতে পেরিয়ে গেল। এখন সামনে রেখেছিলাম ভ্যালেন্টাইনস ডে টা। সেটাও বোধহয় গেল। এই পরস্থিতিতে বলা যায় নাকি!

-“এখন আর ভাই ভাই করিস না! দিলি ওর সামনে প্রেস্টিজে জল ঢেলে…”

-“তুই ওকে অত বোকা ভেবেছিস, ও আমাদের মজাটা ধরতে পারবে না! যা তো, বলে দে গিয়ে!”

-“ধুত্তোর! যা তো সব!”- ওদের ছেড়ে এগিয়ে এসে সামনে রেলিং ধরে দাঁড়ালাম। আজ কলেজে তেমন ক্লাস থাকে না। অনেকেই আসে না আজ। তার উপর এই আধঘণ্টা কোনো ক্লাস ছিলো না। এখন আবার একে একে ষ্টুডেণ্টরা ক্লাসে এসে ঢুকছে। শীত প্রায় শেষ। ঝকঝকে রোদ উঠেছে কলেজ ক্যাম্পাস জুড়ে। দূরের বিল্ডিংটায় আমাদের লাইব্রেরী। এই ক্লাসটার পরেই ক্লাস শেষ আজ, তারপর লাইব্রেরী যাবো। ভাবতে ভাবতেই চোখটা আটকে গেল। লাইব্রেরীর বিল্ডিং এর বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে কিছুক্ষণ আগে দেখা লাল চুড়িদার পড়া মেয়েটা। শৈলী! সঙ্গে… সুদীপ! সুদীপ! রাগে গা পিত্তি জ্বলে গেল! সুদীপ আমাদের কলেজের এক নম্বরের ফ্লার্টি ছেলে। লম্বা লম্বা চুল ঝাঁকিয়ে টুংটাং করে গিটার বাজায় আর মেয়ে পটিয়ে বেড়ায়। আর মেয়েগুলোও বাবা! কী দেখে যা যায়! কিন্তু তাই বলে শৈলী! রাগটা পড়ে গিয়ে হঠাৎ ভয় করতে শুরু করলো। শৈলী আমার প্রেমিকা না হোক, ক্ষতি নেই, কিন্তু ও যেন সুদীপের পাল্লায় না পড়ে! আস্ত একটা শয়তান ও। শৈলী যতই রাগী, মেজাজি হোক, এমনিতে ও খুবই সরল! কথার মারপ্যাঁচ, জটিলতা খুব একটা ধরতে পারে না ও। সামনে থেকে কোনো একটা জিনিস ও যেমন দেখে, সেটাকে তার চেয়ে বেশী কিছু ভাবে না ও। তাছাড়া সুন্দর করে কথা বলা মানুষজন খুব পছন্দ করে শৈলী। আর মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতে তো সুদীপের জুড়ি নেই!

কিছু একটা নিয়ে হাসাহাসি করতে করতে এদিকেই এগিয়ে আসছে ওরা। শৈলী কারোর সাথে এত হেসে কথা বলে না। কী হচ্ছে কেসটা! ওরা দেখতে না পায় এমনভাবে সরে গেলাম টুক করে। শৈলীকে আটকাতে হবে। সুদীপের সঙ্গে কিছু ব্যাপার হলে আটকাতে হবে ওকে।

পায়ে পায়ে ক্লাসে গিয়ে ঢুকলাম। ভালো লাগছে না কিছু। মানুষের মনটাই বোধহয় এরকম। ভালোবাসার মানুষটা নিজের না হলে দুঃখ হয় ঠিকই, কিন্তু তাকে অন্য কারোর হতে দেখলে দুঃখ আরো দশগুণ বেড়ে যায়। বসে বসে ছোটবেলার অভ্যেসমতো নখ খুঁটছি দাঁতে, হঠাৎ সেই গলা-“কতবার বারণ করেছি! এবার আর কিছু থাকবে না আঙুলে। সব নখটাই পেটে ঢুকে যাবে!”

চমকালাম না। সিক্সথ সেন্স বলছিলো ও আমার সঙ্গেই কথা বলতে আসছে। বেশ মেজাজ নিয়ে ঘুরে তাকিয়ে বললাম-“তুমি কী করছো সারাক্ষণ? ক্লাস নেই? তখন থেকে এদিক সেদিক, কাজ নেই নাকি?”

এই প্রথম ওর সাথে এরকম গলায় কথা বললাম। সুদীপ ওর পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে বোধহয় চেনেনা সুদীপ। আমি তো আর ওর মতো কলেজে কুখ্যাত নই! সুদীপই মুখ খুললো-“কাজ করেই তো বেড়াচ্ছি আমরা! আজ তো কাজ করতেই এসেছি!”

ওর জায়গায় সুদীপকে কথা বলতে দেখে মুখটা আরো তেতো হয়ে গেল। সরাসরি ওকে বললাম-“আচ্ছা! কী কাজ হচ্ছে শুনি?”

-“আজ প্রমিস ডে না! আজ আমরা সবাইকে প্রমিস করিয়ে বেড়াচ্ছি আমাদের পৃথিবীটা আরো সুন্দর করার!”

ওঃ! সুদীপের সাথে এসব ডে টে সেলিব্রেট করাও চলছে!

-“চলো, সবাই দু’টাকা করে দাও!”- বলেই ফিক করে হেসে ফেললো শৈলী।

ঘাবড়ে গেলাম। এক তো শৈলী এরকম করে কোনোদিন কিছু চায়নি, দ্বিতীয়ত আমি ওর সঙ্গে ওরকম করে কথা বলার পরেও ফিকফিকোচ্ছে!

-“কেন?”- বলতে বলতেই ট্যাড়া চোখে দেখলাম রাণা আর সমুদ্রও এগিয়ে এসেছে আমার পাশে।

-“শোনো তবে!”- সুদীপের দিকে তাকিয়ে একবার হেসে বলতে শুরু করলো শৈলী, -“সুদীপদাদা আসলে একটা স্বেচ্ছাসেবী দলের সঙ্গে যুক্ত। ওরা নিজেরাই নানারকম প্রজেক্টের উপর কাজ করে।”

-“আমাদের এবছরের এইম হলো এই শহরে অন্তত চার হাজার গাছ লাগানো!”- শৈলীকে থামিয়ে দিয়ে বলতে শুরু করলো সুদীপ-“অনেক জায়গা আছে যেগুলো এমনি এমনি পড়ে থাকে। এমনকি পথের ধারে, স্কুলের বাইরে, এসব জায়গাগুলোও এমনিই পড়ে থাকে। আমরা ঠিক করেছি এই সব জায়গায় পারমিশন নিয়ে গাছ লাগাবো। এই মূহুর্তে যে পরিমাণ দূষণ চারদিকে, তাতে যত বেশী গাছ লাগাতে পারা যায় ততই যে মঙ্গল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা তাই-ই করছি এখন। সামনের সপ্তাহে শ’দুয়েক গাছ লাগানোর মতো জায়গা পাওয়া গেছে। টাকা জোগাড় চলছে। যার খুশি জয়েন করতে পারে আমাদের সাথে। শৈলী গত সপ্তাহ থেকে কাজ করছে আমাদের সাথে।”

হাসলো শৈলী। বললো-“সুদীপদাদারা আরো কত কী করে জানোই না তোমরা! আজ প্রমিস ডে তে আমি দাদাকে প্রমিস করেছি আমি আমার সব বন্ধুকে এগিয়ে আসতে বলবো! সবসময় থাকবো সব কাজে! আর বদলে দাদা আমাকে প্রমিস করেছে…”- কথাটা শেষ না করেই ফিকফিক করে হাসতে শুরু করলো শৈলী।

-“ওকে বাবা! বলেছি তো! আর কোনো মেয়ের সাথে কোনো ফ্লার্ট নয়! যেদিন হবে, একদম সাচ্চা প্রেম হবে!”- দুহাত জোড় করে নমস্কার করলো সুদীপ।

যে কজন ষ্টুডেণ্ট ছিলাম তাদের সবাই-ই পাঁচ, দশ টাকা করে দিয়ে দিলাম। কিছু গাছ অর্ডার করা আছে, আরো কিছু করা হবে। টাকা বাড়তি হলে সেটাও জমা থাকবে। পরে আবার অন্য কোনো কাজে লাগানো হবে। এখন আর খুব একটা খারাপ লাগছে না। সুদীপ শৈলীকে সত্যিই ছোট বোনের মতো বকছে, বুঝিয়ে দিচ্ছে। সুদীপকেও খারাপ লাগছে না এখন আর। কেজানে, একটা দিক থেকে কি আর মানুষকে বিচার করা যায়! সবাইকে ব্যাপারটা আরেকবার ভালো করে বুঝিয়ে, কারোর পরিচিত ফাঁকা কোনো জায়গা আছে কিনা জিজ্ঞেস করে, জেনে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে গেল সুদীপ। শৈলীও বেড়িয়ে গেল সুদীপের পিছনে। তাকিয়ে আছি দরজার দিকে, সমুদ্র ঠেলা মারলো, “ভাই, আজ কিন্তু প্রমিস ডে! কিছু প্রমিস করতে ভুলে যাচ্ছিস না তো?”

মুখটাকে জেঠু জেঠু করে ওপর নিচে ঘাড় দোলালো রাণা, চাপা গলায় দরজার দিকে চোখ দেখিয়ে বললো-“যা!”

ম্যারাথন দৌড় লাগালাম। অনেকগুলো সিঁড়ি নেমে গেছে শৈলী। দুড়দাড় করে সিঁড়িগুলো ভেঙে হাঁফাতে হাঁফাতে বললাম-“শৈলী, আমার কিছু কথা ছিলো তোমার সাথে! একটু…”

নিচের সিঁড়ি থেকে আমার কথা শুনতে পেয়ে হেসে দু’টো করে টপকে বাকি সিঁড়িগুলো নেমে চলে গেল সুদীপ। শৈলীও কি হাসলো? কেজানে! মুখোমুখি তাকিয়ে বললো-“বলো!”

আবার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে! ওকে দেখলেই যে কী হয় বাবা আমার!

-“থাক! বুঝে গেছি!”- ডান হাতটা ওপরে তুললো শৈলী।

বুঝে গেছে! হাঁ করে একটু তাকিয়ে থেকে বললাম-“কী বুঝলে?”

আমার কথার উত্তর দিল না শৈলী। চোখ নাচিয়ে বললো-“বলো তো, তোমার সূত্র ধরে প্রমিস ডে মানে কী?”

আমার সূত্র! কেন জানি না ফট করে পিথাগোরাসের কথা মনে পড়ে গেল। ক্যাবলার মতো বললাম-“কী?”

-“প্রমিস ডে মানে হলো কথা দে! ওই যে গোলাপ দে, চকলেট দে, বলে দে-এর মতো, কথা দে! সারাজীবন রাখার মতো কথা দিতে হয় আজ!”

-“সারাজীবন রাখার মতো! পারবো আমরা কথা দিতে? যদি ভুলে যাই…”

-“চিন্তা নেই! ভুলে গেলে বছর বছর এই দিনে কথাগুলো মনে করিয়ে দেব আমি!”

-“থাকবে তো বছর বছর? অনেক বছর পরেও, আমি যখন বুড়ো হয়ে যাবো তখনও…”

মিষ্টি করে হাসলো শৈলী। গলা নামিয়ে বললো-“প্রমিস!”

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত