অভিনয়

অভিনয়

ভালই আছি তবুও যেন কিছু একটার ঘাটতি।
মেসে উঠার পর থেকে কষ্ট কি তা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছি।

এর আগে মায়ের কাছা কাছি থাকতাম কিছু হলেই বাসাই চলে যেতাম কিন্তু এখন তা হয় না। থাকার কষ্ট কিছুই না।কষ্ট টা হচ্ছে খাওয়া নিয়ে।
রান্নার জন্য বুয়া পাওয়া যাই নি। তাই বাইরে খেতে হয় নয়ত বাসাই চিড়া ভিজিয়ে অথবা নুডুলস রান্না করে খেয়ে দিন পার হচ্ছে। কালকে নুডুলস রান্না করেছিলাম।তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে লবন দিতে ভুলেগেছিলাম।

নুডুলস রান্না করে জানলার কাছে নিয়ে বসে মা কে কল দিলাম।
নুডুলস আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে কথা বলতে পারলে হয়ত কাঁদতে কাঁদতে বলত “আমাকে খেতে পারবি???”
ফোন কানে লাগিয়ে বসে আছি। ফোন রিসিভ করেই আমি সালাম দিলাম।

মা-কেমন আছিস??
আমি-ভালই আছি।আপনি কেমন আছেন??
মা—আমিও ভাল আছি।সকাল থেকেই ভাবছিলাম তোকে কল দিব।
আমি-কেন??
মা—রাতে স্বপ্ন দেখলাম তোর শরীর খারাপ
ঠান্ডা লাগিয়ে দিয়েছিস মাথা ব্যথা করছে।
কাশি আটকিয়ে বললাম কই না তো কিছু হয়নি। আমি ভাল আছি।
মা—ভাল থাকলেই ভাল।কি খেয়েছিস??
আমি-এইতো একটু আগে ভাত খেয়ে আসলাম নিচে থেকে।
মা—ঠিক মত খাবি ভাল ভাবে থাকবি ঠান্ডা লাগাস না। বেশী রোদে যাবি না তোর আবার রোদে গেলেই
মাথা ব্যথা করে সাবধানে থাকবি।
আর নামাজ পড়ছিস তো??
আমি-হ্যা আম্মা নামাজ পড়ছি এইটা বাদ দেয়া যাই।
মা—আচ্ছা ভাল থাক।আর একটা কথা হরতালের মধ্যে বাইরে যাস না কিন্তু।
আমি—আচ্ছা আম্মা যাব না।
মা—আচ্ছা থাক তাহলে।
ফোন টা রেখে নুডুলস খেতে শুরু করলাম।
চোখে পানি চলে আসছে।তবুও ছেলেদের কাঁদতে হয়না নয়ত মায়েরা ভেঙ্গে পড়ে। সত্যি শরীর টা খারাপ।ঠান্ডা লেগেছে অল্প, আর প্রায় মাথা ব্যথা করছে।
মাকে কিছু বলেনি।নয়ত সারাদিন না খেয়ে চিন্তা করবে।
আমি ভাল আছি শুনলে মা ভাল থাকে তাই মা কে মিথ্যা বলি আমি ভাল আছি। আমি খেয়েছি শুনলে মা-এর পেট ভরে যাই তাই মা কে মিথ্যা বলি আমি খেয়েছি।

আমার শরীর ভাল আছে শুনলে মায়ের শরীর ভাল থাকে তাই মাকে মিথ্যা বলি আমার শরীর ভাল আছে।

মাকে মিথ্যা বলি কারন এই মিথ্যা গুলো শুনে মা ভাল থাকে আর মা ভাল থাকলে আমিও ভাল থাকি।

গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত