বউ যখন পাত্রীর ছোটবোন

বউ যখন পাত্রীর ছোটবোন

:-আব্বু,এখন তোমার সিদ্ধান্ত কি?(আমি)

:-দেখ,যে চলে যাবার সে তো চলেই গিয়েছে।এখন ফারিয়ার বাবা বলছে,ফারিয়ার ছোট-বোন ফাহমিদা কে তুই বিয়ে করতি।তুই যদি রাজি থাকিস,তাহলে ফাহমিদার সাথে তোর বিয়ে হবে।(আব্বু)

:-আব্বু,ফারিয়ার কথা বাদ।এখন এটা বলো,তোমার মত কি?

:-আমি তো চাই,তুই বিয়েটা কর।

:-ঠিক আছে,তুমি যেটা ভালো মনে করো,সেটাই হবে।

:-তাহলে আর কি?আমি গিয়ে ফারিয়ার বাবার সাথে কথা বলে আসি।

এই বলে আব্বু ফারিয়ার বাবার সাথে কথা বলতে চলে গেলো।

“বিয়ে করতে এসেছি যখন,বিয়ে করেই যাবো”
মনে মনে এই প্রতিজ্ঞা করে নিলাম।

এছাড়া আর কি করবো বলেন?

কিছুক্ষন আগে……

:-বেয়াই সাহেব,আপনার সাথে একটু আলাদা কথা ছিলো।
আমি-আব্বু আর পাশে আমার বন্ধুরাসহ,কিছু মুরব্বি দাড়িয়ে ছিলাম।
তখনি হন্ত-দন্ত হয়ে ছুটে এসে আব্বুর উর্দেশ্য কথাটা বললো ফারিয়ার বাবা।
:-কি হয়েছে?আর আপনাকে এমন চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?(আব্বু)
:-বলছি,আপনি একটু এদিকে আসবেন?
:-হুমম চলুন।
অতঃপর ফারিয়ার বাবা আর আমার আব্বু আমাদের থেকে দুরত্ব বজায় রেখে,আড়ালে কিসব কথা বলছে?যা আমরা শুনতেই পাইনি।
কিছুসময় পর আব্বু আমাদের সামনে আসলে,
:-কি হয়েছে,আব্বু?তোমাকে এরকম চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?(আমি)
:-রাজু,আসলে হয়েছে কি,ফারিয়া কোন এক ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়েছে।(আব্বু)
:-কিইই?
:-হুমম,আমরা এখানে আসার আগেই ও পালিয়েছে।
একথা শুনার পর আমি কিছুসময়ের জন্য নিস্তব্ধ হয়ে যাই।

এরপর আব্বুর সাথে আমার উপরের এই কথাটুকুই হয়।

আপনাদের বলে রাখা ভালো যে,ফারিয়ার বাবা আর আমার বাবা বাল্যকালের বন্ধু।আর সেই বন্ধুত্বটাকে ধরে রাখার জন্য,আমার সাথে ফারিয়ার বিয়ে ঠিক করে।

অবশেষে আর কি?
ফারিয়ার বোন ফাহমিদা কে বিয়ে করে আমি আর বাকি সবাই বাড়িতে হাজির হই।
বাড়িতে আসার পর আম্মুসহ সকলে বউকে ঘরে উঠাতে ব্যস্ত হয়ে যায়।
আমি আর সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে,বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে তাদের কাছে চলে আসলাম।

রাত প্রায় বারোটার দিকে আমি বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসর ঘরের দিকে চলে আসলাম।

বিভিন্ন ধরনের চিন্তা-ভাবনা মাথা থেকে ঝেঁড়ে,রুমে প্রবেশ করলাম।
রুমে প্রবেশ করেই আমি দরজা লাগিয়ে দিয়ে ফাহমিদার দিকে তাকালাম।
আমাকে রুমে দেখে ও একটু নড়ে-চড়ে বসলো।
টেবিলের দিকে চোখ পড়তেই দেখি,ওখানে খাবার রাখা আছে।

:-খেয়েছো?
খাটে গিয়ে,ফাহমিদার পাশে বসতে বসতে বললাম,আমি।
:-না,আপনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
এই বলে ঘোমটা উঠালো ফাহমিদা।
:-তাই নাকি?
:-হুমম।
:-তাহলে আর কি?চলো খেয়ে নিই।
:-হুমম।
অতঃপর আমি আর ফাহমিদা খাবার খেতে টেবিলের দিকে গেলাম।

:-আচ্ছা ফাহমিদা,তুমি আমার সাথে এমন স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতেছো,যেন তোমার কোন আফসুসই হচ্ছে না।
খাওয়া শেষ হলে কথাটা বললাম,আমি।
:-আফসুস?(ফাহমিদা)
:-হুমম,
:-কেন হবে?
:-কেন আবার?আমার সাথে যে তোমার বিয়ে হয়েছে।সেই জন্য।আর তুমি তো মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলে না,যে আজকে তোমার বিয়ে হবে।তাও আবার আমার
সাথে।
:-আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম না,সেটা আপনাকে কে বললো?
:-তারমানে তুমি বিয়ের জন্য প্রস্তুত ছিলে?
:-প্রস্তুত ছিলাম তা ও না।
:-মানে?
:-মানে হলো,আমি কনফিউশানে ছিলাম।
:-ওহহ,
এই বলে আমি খাটে গিয়ে বসলাম।

:-আপনি আমাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছেন তো?
আমার পাশে বসতে বসতে বললো,ফাহমিদা।
আমি ওর হাতদুটি আমার দুহাতের মুঠোয় নিয়ে নিলাম।
:-তুমিই আমার স্ত্রী।এর থেকে বেশী কিছু আমি বলবো না।(আমি)
এরপর ফাহমিদা কিছু না বলে আমার বুকে মাথা রাখলো।
আমিও কিছু না বলে,ফাহমিদার মাথায় একটা চুমু খেলাম।

:-আমি কখনো ভাবি নাই যে,তোমার সাথে আমার বিয়ে হবে।আচ্ছা,তোমার আপু কেন পালালো?(আমি)
:-ও যদি না পালাতো,তাহলে আপনার সাথে আমার বিয়েই হতো না।(ফাহমিদা)
:-মানে?
:-আসলে আপুর রাকিব নামের একটা ছেলের সাথে রিলেশন ছিলো।ওই ছেলেটার সাথেই আপু পালালো।
:-ও,কিন্তু তোমার আপু,তোমার আব্বুকে বললেই তো পারতো।
:-কি করে বলবে?আব্বুতো এর আগেই আপনার সাথে ওর বিয়ে ঠিক করে পেলেছিলো।
:-তাই বলে তোমার আপুর এমনটা করা উচিত হয় নাই।
:-এছাড়া যে আর কোন উপাই ছিলো না।
:-ফাহমিদা,তোমার কথা-বার্তায় বোঝা যায়,তুমিই তোমার আপুকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছো।তাই না?
:-হুমম।আমিও কি করবো?আপুর জেদের কাছে হেরে,আমিও ওকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছি।
:-ও,তা তোমার আপু কি জেদ ধরেছিলো?
:-আপু আমাকে বললো,ও যদি রাকিবকে না পায় তাহলে ও নিজেকে শেষ করে দিবে।
:-……..(আমি)
আমি কিছু না বলে চুপ থাকলাম।

:-ফাহমিদা,তোমাকে আমি বলে রাখি,তুমিই আমার বউ।তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে।সুতরাং আমি চাই না,আমাদের মাঝে ফারিয়া নামের কারো অস্তিত্ব থাকুক।(আমি)
:-মানে?
:-মানে,আমি বলতে চাইছি,ফারিয়ার নাম আমাদের মাঝে না নেওয়াই ভালো।
:-হুমম।
:-এখন তুমি চেন্জ করে নাও।
:-হুমম।
:-কি?আমি বাহিরে যাওয়া লাগবে নাকি?
:-………..(ফাহমিদা)
একথার জবাবে ফাহমিদা কিছু না বলে লজ্জায় মাথা নিছু করে ফেললো।
:-তুমি কি লজ্জা পেয়েছো?(আমি)
:-…..(ফাহমিদা)
:-আচ্চা ঠিক আছে,আমি বাহিরে যাচ্ছি।
এই বলে আমি উটে দাড়ালাম,বাহিরে যাওয়ার জন্য।
:-না থাক,যাওয়া লাগবে না।
:-না যাই,,,,
এই বলে আমি রুম থেকে বাহির হয়ে আসলাম।
কিছুসময় পর,,,
:-আসবো?
রুমে ডুকতে ডুকতে বললাম,আমি।
:-না মানে?একি আপনি তো চলেই আসলেন।
আমার দিকে ঘুরে কথাটা বললো,ফাহমিদা।
দরজা লাগিয়ে দিয়ে,আমি ওর দিকে গেলাম।
ততক্ষনে ওর চেন্জ করা শেষ।

:-আচ্চা,আমি যদি তোমাকে এখন জড়িয়ে ধরি,তখন তোমার কি কোন আপত্তি থাকবে।
ফাহমিদার সামনে গিয়ে,দাড়িয়ে কথাটা বললাম।
:-আপনি আমার স্বামী।আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরবেন,তাতে করে আমার আপত্তি থাকবে কেন?
এই বলে ও মাথা নিছু করে ফেললো।

আমি আর কিছু না বলে ওকে জড়িয়ে ধরে,ওর কপালে একটা চুমু খেলাম।
:-রাত তো অনেক হলো,চলো শুয়ে পড়ি।
জড়িয়ে ধরা অবস্থায় বললাম।
:-হুমম,চলুন।

:-জানো ফাহমিদা,তোমাকে আমি ঐ সময় জড়িয়ে ধরে কেমন যেন,একটা ভালো লাগার ফিলিংস ফেলাম।
এই বলে আমি শুয়ে পড়লাম।
:-এখন কি সেই ফিলিংস আপনি আবার পেতে চান?(ফাহমিদা)
:-হুমম।
:-তাহলে আমায় আবারও জড়িয়ে ধরুন।
এই বলে ফাহমিদা আমার কাছে আসলো।
অমনি আমি ওকে জড়িয়ে ধরে,,,,
.
.
………………………………………………..সমাপ্ত…………………………………………..

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত