গুন্ডি মেয়ে

গুন্ডি মেয়ে

বিকেলে পথ দিয়ে হাঠছি আর সামনে যা পাচ্ছি তা পা দিয়ে লাত্থি (সট) মারছি।
হঠাৎ সামনে একটা টাইগারের বোতলে মারলাম সট। ওয়াও গুড সট। একদম রোনালদের মতো সট।
.
হায় হায় মাইরালা বোতলটা গিয়ে পড়লো একটা মেয়ের মাথায়।
মেয়েটা আমার দিকে থাকাতেই আমিতো ক্রাস খাইলাম। ওয়াও চেহারা কি চুইট। একদম ক্রাস পাগলি।
.
মেয়ে দেখি আমার দিকে আসছে।
.
মাইরালা
.
মনে মনে বললাম আদি তুই আজ শেষ। যদি জানটা বাঁচাতে চাস তাহলে পালা। নাহলে আজ তুই
পাবলিকের হাতে গন ধুলাই খাবি। ভাবতে ভাবতেই মেয়ে দেকি আমার সামনে। মেয়েতো দেখি রাগে
লাল হয়ে আছে। একেবারে ধানী লঙ্কা। পারলে আমাকে তার রাগের আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দিতো।
.
মেয়ে : এই ছেলে তুই আমার মাথায় বোতল ছুড়ে মারলি কেনো?
.
আমি ; না না কই আমি মারিনি তো। ( ডাহা মিথ্যা কথা)
.
মেয়ে : এই ছেলে মিথ্যা কথা বলবি না। আমি দেখেছি তুই মেরেছিস।
.
আমি : আসলে, হ্যা মেরেছি কিন্তু হাত দিয়ে ছুড়ে মারিনি। সট মেরেছি। একদম রোনালদের মতো সট হয়েছে তাই না।
.
মেয়ে ; এই ছেলে আমি তোর সট কেমন হয়েছে, তা বলতে আসিনি। তুই আমার
মাথায় বোতল ছুড়ে মারলে কেনো? সেটা আগে বল। ( রেগে গিয়ে চিৎকার করে বলল )
.
বুঝলাম এখানে আর থাকা যাবেনা। না হয় পাবলিকের গন ধুলাই খেতে হবে। তার আগেই কেঠে পরতে হবে।
.
আমি : আপনার পিছনে ওটা কে? আপনার
বয়ফ্রেন্ড নাকি।
.
মেয়ে পিছনে থাকাতেই। আমি রোনালদো থেকে উসাইন ভোল্ট হয়ে গেলাম। দিলাম এক দৌড়। এক দৌড়ে বাড়িতে। বাড়িতে গিয়ে ঘরে বসে হাপাচ্ছি।
.
এমন সময় ভাবির আগমন
.
ভাবি ; কি দেবরজি হাপাচ্ছো কেন?
.
আমি : কই হাপাচ্ছি নাতো?
.
ভাবি ; মিথ্যা কথা বলবে না। ব্যাপার কি দেবরজি?
.
আমি ; আরে দুর কিছু না।
.
ভাবি ; বলোনা দেবরজি!!
.
আমি ; আমি আচ্ছা শুনো। তারপর ভাবিকে সব খুলে বললাম।
.
ভাবি : ওও এই ব্যাপার। মেয়েটার নাম কি?
.
আমি : আরে দূর কতো কস্ট করে মেয়েটার হাত থেকে রক্ষা পেলাম। আর তুমি বলছো নাম কি?
.
ভাবি ; সে যাই হোক মেয়েটা মনে হয় আমার দেবরজির কিউট চেহারা দেখে ক্রাস খাইছে । ( ভাবি আমার গাল দুটো টেনে বলল)
.
আমি ; কি যে বলো ভাবি। মেয়েটাতো একেবারে মহারানী ভিক্টোরিয়া কি রাগি মেয়েরে বাবা।
.
ভাবি : আরে দেবরজি তোমার উপর ক্রাস খাবে না এমন মেয়ে আছে নাকি। আমিইতো তোমার উপর ক্রাস খাই।
.
আমি : আর কেউ ক্রাস খাক আর নাই বা খাক আমার মিষ্টি ভাবিটা ক্রাস
খেলেই হবে। আমার ক্রাস ও তো তুমি। ভাইটা কেনো যে তোমাকে বিয়ে করলো না হয় আমিই তোমাকে বিয়ে করতাম।
( দুষ্টুমি করে বললাম, আর যাই হোক ভাবি আমার খুব কিউট। সত্যি বলতে আমার ১ম ক্রাস)
.
ভাবির মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। গাল দুটো লাল আভা ধারন করলো।
.
ভাবি : যাহ, কি যে বলো?
.
আমি : সত্যি বলছি ভাবি, চলোনা পালিয়ে যাই।
.
ভাবি ; যাহ দুষ্টু। খুব পেকে গেছো তাই না। ( দৌড়ে চলে গেলো)
.
এখন আমার পরিচয় পর্বটা শেষ করি। আমি আদি। ইন্টার ২য় ইয়ারে পড়ি।
বাব মায়ের আদরের দুইমাত্র সন্তান। বড়ো একটা ভাই আছে। নাম অভি। আর ভাবি মানে আমার ক্রাস মেঘা।
.
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে কলেজে গেলাম। কলেজের গেটে যেতেই কারো ডাক শুনলাম।
.
এই ছেলে
.
পিছনে থাকাতেই আমি শেষ। কেউ আমারে ধরো আমি পড়ে যাচ্ছি।
এতো দেখি কালকের সেই মেয়েটি। চিনলেন না। আরে ঐ যে মহারানী ভিক্টোরিয়া।
.
আমি ; জি বব বলুন।
.
মেয়ে ; তোতলাচ্ছ কেনো?
.
আমি : কই নাতো।
.
মেয়ে : মিথ্যা কথা তুমি মেয়েদের এতো ভয় পাও কেনো?
.
আমি ; কই ভয় পাই না তো?
.
মেয়ে ; ওও ভয় পাও না।
( বলে মেয়েটা আমার কলার ধরে তার মুখের কাছে নিয়ে গেলো আমার মুখ। আমিতো ভয়ে শেষ)
.
আমি ; আরে কি কি ক করছেন?
.
মেয়ে ; হি হি হি এই না বললে ভয় পাও না।
.
আহ কি সুন্দর হাসি মেয়েটার। আমি ৩য় বারের মতো ক্রাস।
.
মেয়ে ; কি হলো, যাজ্ঞে আমি তন্নি। ইন্টার ২য় বর্ষ। তুমি?
.
আমি ; আমি আদি। সেইম ইয়ার।
.
কথায় কথায় জানতে পারলাম। আমরা  একই ডিপার্টমেন্ট এর।
.
মেয়ে ; আচ্ছা ক্লাসে যাও।
.
আমি ক্লাসের দিকে যাচ্ছি পিছনে থাকিয়ে দেখি তন্নি মিট মিট করে হাসছে। যাক বাবা ভিক্টোরিয়ার হাত থেকে বাঁচলাম।
.
এভাবে আস্তে আস্তে তন্নি আর আমি ভালো বন্ধু হয়ে গেলাম।
.
একদিন বিকেলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফিরলাম। তখনি পাপা ডাক দিলো।
.
আমি ; পাপ্পা ডেকেছো আমাকে?
.
পাপ্পা ; হ্যা, কাল কলেজে যেতে হবে না। কাল তোমার বিয়ে।
.
আমিতো হা হয়ে গেলাম।
.
আম্মু ; হ্যা বন্ধ কর মাছি ডুকবে।
.
আমি ; পাপ্পা আমি তো এখনো ( আর কিছু বলবার আগে পাপ্পা বলে উঠলো)
.
পাপ্পা ; কোনো কিন্তু নয়, তুমি বিয়ের পরেও পড়াশোনা শেষ করতে পারবে। তুমি যা গাধা না তোমাকে ঠিক করতে হলে বিয়ে দিতে হবে।
.
আমি আর কিছুই বললাম না।
.
পরদিন বিয়ে হয়ে গেলো। বাসর ঘরে ডুকলাম। ভয় করছে বউ না আমাকে মাইর দেয়।
.
বউ এসে আমার পা ধরে সালাম করলো।
.
আমি ; আমি আসলে এখন বিয়ে করতে চাইছিলাম না। আপনি আমার কাছে আসবেন না।
.
বউ আমার ঘুমটা তুলতেই আমিতো অবাক। আমার মনে হয় মাথা ঘুরছে। আরে এতো তন্নি।
.
আমি : আরে তন্নি!! তুমি এখানে!!
.
তন্নি : আমাকে বিয়ে করেছো আমি থাকবো নাতো কে থাকবে হুম্ম??
.
আমি : তোমাকে বিয়ে করলাম কি করে?
.
তন্নি : কেনো বিয়ের পড়ানোর সময় কনের নাম শুননি?
.
আমি : না।আচ্ছা এটা হলো কিভাবে?
.
তন্নি ; আমি তোমার আব্বুর / আমার বর্তমান শশুরের বন্ধুর মেয়ে। আমার সাথে তোমার বিয়ে আগেই
ঠিক করা ছিলো। আর আমি তোমাকে ফটোতে দেখেছিলাম। আর সেদিন যখন রাস্তায় তোমাকে প্রথম
দেখলাম সেদিনই চিনে ফেলেছিলাম। তারপর আব্বুকে বলে বিয়ে তারিখ ঠিক করলাম। তারপর ব্যাস বিয়ে হয়ে গেলো।
.
আমি ; তোমরা আমার সাথে এমন করলে। ( অভিমানী কন্ঠে)
.
তন্নি ; অলে আমাল বাবুটা অভিমান করেছেলে। ( গাল দুটো ধরে)
.
আমি ; তুমি আমার সাথে কথা বলবে না।
.
তন্নি : তাই। আচ্ছা।
( বলে ও আমার কাছে আসতে শুরু করলো)
.
আমি ; এই কাছে আসবে না।
.
তন্নি ; আমি আমার বরের কাছে যাবো তাতে কার কি?
.
আমি ; না তুমি
( আর কিছু বলতে পারলাম না)
বাকিটা ইতিহাস
.
……………………………………………সমাপ্ত……………………………………

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত