পেটুক স্বামী

পেটুক স্বামী

>> আপনি কেন এতো বাজার করেন?
আমি একা একা এতো রান্না করতে পারব না। আমার অসহ্য লাগে। আপনি হোটেল থেকে খেয়ে আসবেন। প্লিজ এবারের মতো আমাকে মাফ করেন।
>> আমার খেতে ভালো লাগে। আপনি আমার জন্য রান্না করবেন। আপনি খুব ভালো রান্না করেন। (নিচু স্বরে)
>> আমি ভালো রান্না করি তা আমি জানি। কিন্তু আপনি যে গরুর মতো খাঁন। আপনি কি সেটা জানেন।
>> বেশি খাঁই বলে গরুর সাথে তুলনা করবেন। আচ্ছা এখন থেকে কম খাব।
>> মনে থাকে যেন। আমি আপনার জন্য এতো কিছু রান্না করতে পারব না। আমি বলেছিলাম বাবার বাসায় যাব। সেটা কি খেয়াল আছে। না ভুলে গেছ। আমি যা বলি তা তো আপনি ভুলে যান।
>> না। মনে আছে। আপনি কয়দিন থাকবেন।
>> আমি কি আপনার চাকরানি। যে আপনাকে বলে যাব। অধিকার কাটানোর চেষ্টা করবেন না। তাইলে ফলাফল ভালো হবে না।
>> না। যত খুশি সেখানে থেকে আসেন।
আমি বরং হোটেলে থেকে খেয়ে আসবো।
>> তাও তো খাবেই।
একটা পেটুক।
.
সিয়াম ও শিশিরের বিয়ে হয়েছে আজ থেকে ১ মাস হলো। শিশির দেখতে খুব সুন্দর। যেন ডানাকাটা পরী। মুখে কথা বলার সময় টোল পড়ে। খুব মায়াবী লাগে। কিন্তু সিয়ামের জন্য এতো সুখ শয় নি। সিয়াম খুব খুশি ছিল। যখন সে শিশির কে দেখে ছিল। শিশির কে দেখতেই তার প্রেমে পড়ে যায়। সিয়াম খুব ভদ্র ছেলে। সিয়ামের সব থেকে কাছের বন্ধুর নাম হলো আবির। আবির বিয়ে করেছে। আবিরের একটা লাল টুকটুকি বাচ্চা আছে। সিয়াম খুব ভালবাসে এই পিচ্চিটাকে। সিয়াম খুব অসহায়। কারণ তার মা-বাবা কেউ নেই।
মামা মামীর কাছে থেকে বড় হয়েছিল। কিন্তু মামীর নির্যাতনে সেখানে আর বেশি থাকা হয় নি। মামী খুব লোভী ছিল। সিয়ামের বাবার ব্যাংক ব্যালেন্স জানার জন্য সিয়াম কে লালনপালন করেছিল। যেই জেনে গেল সিয়াম কে বাসা থেকে বের করে দেয়। তারপর এতিমখানায় থেকে লেখাপড়া করে। অনার্সে ভর্তি হলে এতিমখানা থেকে মেসে উঠে। মেসে থেকে লেখাপড়া করে। আর কয়েকটি টিউশনি করায় । তাতে চলে যায় সিয়ামের লেখাপড়ার খরচ। সিয়াম খুব খেতে ভালবাসতো। কিন্তু ভালো খাবার খেতে পারত না। কারণ মেসে তো ভালো খাবার হয় না। তারপর লেখাপড়া শেষ করে চাকরী পায়। আবির সিয়ামের বিয়ের জন্য চাপ দেয়। অবশেষে সিয়াম শিশির কে বিয়ে করে।
.
রাতে ঘুমানোর সময় হলো। সিয়াম অফিস থেকে এসে শুয়ে পড়েছে। সিয়াম কে খুব ক্লান্ত লাগছে। সিয়াম শুয়ার আগেই শিশির শুয়ে পড়েছিল। কিন্তু সিয়াম শুয়ার আগে একটু জোরে বলে শিশির মশারি টা কে দিবে। এরপর সিয়াম শুয়ে পড়ে।
শিশির রাগে কি করবে বুঝতে পারছে না। দুই হাত সিয়ামের গলার দিকে নিয়ে আবার মশারি আনতে চলে যায়। শিশির খুব বিরক্ত হচ্ছে। অন্যদিকে সিয়াম খুব মজা পাচ্ছে। মনে মনে হাসতে লাগলো।
.
আজ শুক্রবার। অফিস বন্ধ। সিয়াম যতই একটু দুষ্টামি করে। কিন্তু শিশির কে খুব ভয় পায়। কারণ শিশির খুব রাগি মেয়ে। এমনিতেই সিয়াম কে সহ্য করতে পারে না। সিয়াম মনে মনে ভাবে একটা রাক্ষসীকে সে বিয়ে করেছে। এই চাইতে বিয়ে না করলেও সে পারত। কি আরামের ব্যাচেলর জীবন ছিল। যা খুশি তা করা যেত।
সিয়াম পানি খাওয়ার জন্য টেবিলে গেল। জগ থেকে যেই পানি ঢালবে গ্লাস গেল পড়ে। তার সাথে সাথে শিশির হাজির। শিশির এর ভাষণও শুরু………
<> এই আপনি কি পুরুষ? একটা গ্লাস হাতে ঠিক মতে রাখতে পারেন না।
>> হিহিহিহি।
সন্দেহ হচ্ছে।
>> চুপ। আবার দাঁত বের করে হাসেন। কালি তো কাজ বাড়ান। কাজ টা কে করে। সব কাজ আমি করি। বাসায় একটা খালাও রাখেন নি। কিভাবে বিয়ের আগে ছিলেন।
>> আগে ছিল তো। রান্না করে যেত।
>> তাইলে এখন রাখেন না কেন?
>> আপনি আছেন না। আপনি ওই তো খালার সব কাজ করেন।
>> কি?
এখন থেকে আপনার কাজ আপনি করবেন। আপনি রান্না করবেন। আপনার পোশাক আপনি দুয়ে দিবেন। আমি কিছু করতে পারব না।
>> আমি তো অফিসের সব কাজ করি।
আমি কেন বাসার কাজ করব?
>> অফিসের কি আমার বাবার। যা বলছি তা করবেন। আমি আবার বলছি আমি আপনার কোনো কাজ করতে পারব না।
>> আচ্ছা আমি রাজি। কিন্তু আমি রান্না করতে পারি না। রান্না টা আপনি করতে হবে।
>> বাবা আমাকে তুমি কার কাছে বিয়ে দিলে । এই মানুষটা শুধু খাঁয় আর খাঁয়।
>> কেন?
আপনার বাবা তো। আমার কাছে বিয়ে দিয়েছেন। আপনি জানেন না।
>> দ্যাত।
পেটুক কোথাকার।
.
>> বউ ঘুমিয়ে পড়ছ? ও বউ।
>> শান্তিতে একটু ঘুমাতে দিবে না।
>> আমার না খিদা লাগছে। আমাকে কিছু করে দেও।
>> যুক্তির কথা মনে নাই।
>> কিসের যুক্তি। আপনি আমার বউ। আপনি আমাকে রান্না না করে দিলে কে করে দিবে । আপনি ছাড়া আমার কেউ নাই।
>> তাতে আমার কি? আপনাকে আমি স্বামী হিসাবে মানি না। আপনাকে আমার পছন্দ না। প্লিজ বিরক্ত করবেন না।
>> সত্যি খিদা লাগছে। প্লিজ কিছু করে দেও।
>> আমি পারব না। পারলে নিজে করে খাঁন।
.
আজ আকাশে চাঁদনি রাত। আকাশটা কে খুব সুন্দর লাগছে। ছাদে যারা দাঁড়িয়ে আছে তাদের কে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। সিয়াম ছাদে উঠতেই সে দেখতে পায় স্বামী স্ত্রী বসে গল্প করছে। তাদের খুব সুন্দর লাগছে। তাই সিয়াম ছাদ থেকে নেমে রুমে গিয়ে শিশির কে বলতে লাগলো……
>> আকাশে আজ চাঁদ উঠেছে । চলেন দু’জনে বসে গল্প করি।
>> এখন আমার কাজ আছে। আপনার শখ হলে আপনি ছাদে গিয়ে চাঁদ দেখেন।
>> আমি একা একা বসে চাঁদ দেখতে ভালো লাগে না। আর ঘরে তো বউ আছে। আমি চাই আমার বউ কে নিয়ে চাঁদ টা দেখব।
>> বউ কে?
আমি। একদম বলে দিচ্ছি । বউ বলবেন না । আমার বয়ে গেছে আপনাকে আমার স্বামী বানাব।
>> তাইলে আপনি যাবেন না?
>> না ।
>> তাইলে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। আপনি না গেলে আমিও ঘুমিয়ে পড়ি।
.
>> শিশির কোথায়?
>> ডাকেন কেন?
>> আমি আপনার জন্য কেক এনেছি। আপনার আজ জন্মদিন। আমি জানি।
>> আগে জন্মদিন পালন করতাম। কিন্তু এখন আর করি না।
>> তাতে কি হয়েছে। আমি মোমবাতিও এনেছি।
এই নেন মোমবাতি। আপনি মোমবাতি জ্বালান। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
>> তা আর দরকার নাই। আমি আপনাকে নিয়ে জন্মদিন পালন করব না।
>> কেন?
>> করব না মানে করব না। আমি এখন আমার বান্ধবীর বাসায় যাব। কিছু টাকা দেন।
>> আগে কেক টা কাটি। তারপর কেক টা কেটে আপনাকে খাঁইয়ে আমিও আপনার সাথে আপনার বান্ধবীর বাসায় যাব। অনেক দিন হলো বেড়াতে যাই না।
>> আমি আপনাকে আমার সাথে নিব না। আমি একা যাব।
>> আমি গেলে কি হয়েছে?
>> আমি মুখ দেখাতে পারব না। আমার বান্ধবীদের স্বামীরা দেখতে কেমন জানেন। কিছু জানেন না।
>> দেখতে কেমন। খুব সুন্দর।
>> সুন্দর না। খুব হ্যান্ডসাম। আপনার মতো পেটুক না। কালি তো খাঁন আর পেট মোটা করেন। একবার আয়নায় দেখছেন পেট কত মোটা হয়েছে।
এবার একটু কম খাঁন।
>> এখন থেকে কিছু খাঁব না। বাজারও কম করব। একটা কথা বলব।
>> বলেন (বিরক্তিকরভাবে)
>> না থাক। আপনি বিরক্ত হচ্ছেন।
>> দেখতেই যখন পাচ্ছেন বলেন কেন?
>> তবুও বলি। আমাকে রেখে আপনি বলেন যাবেন না। আপনি ছাড়া আমার আপন কেউ নাই। আপনাকে আমি অনেক ভালবাসি।
>> এসব কথা না বলে টাকা দেন।
>> আচ্ছা দিচ্ছি।
.
শিশির সহ ৫ বান্ধবী এক জায়গায় বসে গল্প করছে । এই ৫ জনের খুব ভালো লাগছে । যেন অনেক দিন পর তাদের সুখের সময় খুঁজে পেল। তাদের মধ্যে প্রথম বন্ধু একটু কেঁদে দিল। শিশির বলল কিরে তুই কাঁদিস কেন?
১ম বন্ধু বলল জানিস আমার স্বামীটা খুব লোভী। আমাকে শুধু বলে আমার বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাকে দিব। আমি অনেক বার বাবার কাছ থেকে তাকে টাকা নিয়ে দিয়েছি। কিন্তু এখন আবার বলে। বাবাও ছেলেটা কে হ্যান্ডসাম দেখে বিয়ে দিয়েছিলেন। আমিও খুব পছন্দ করেছিলাম। তোদের সাথে গর্ব করে বলতাম আমার স্বামী খুব হ্যান্ডসাম।
শিশির একদম চুপ হয়ে প্রথম বন্ধুর গল্প শুনল। শিশির মনে মনে ভাবে আমার স্বামী তো আমাকে কোনো দিন টাকার কথা বলে নি। শিশিরের একটু খারাপ লাগে।
সাথে ২য় বন্ধু বলে জানিস খুব ইচ্ছে ছিল আমার। আমার স্বামীটা খুব রোমান্টিক হবে। আমাকে নিয়ে ঘুরাঘুরি করবে । মাঝে মাঝে দু’জনে বসে জোৎস্না রাতের চাঁদের আলো দেখব।
তা হবে দূরের কথা অফিসের কাজ নিয়ে ওই ব্যস্থ থাকে। কোনো দিন কথা হয় আবার কোনো দিন কথা হয় না। তার কাছে আমার চেয়ে অফিসের কাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। থাক আর কি বলব।
শিশির ভাবতে লাগল। তার স্বামী ওত অফিসের কাজ করে। অফিস থেকে আসার পর তার সাথে সময় কাটাতে চায়। তার সাথে বসে জোৎস্না রাতের আলো দেখতে চায়। আর সে কিনা এসব সুযোগ পেয়েও সুযোগ হারিয়ে পেলছে।
শিশির চেয়ে আছে তার তৃতীয় বন্ধুর দিকে। তৃতীয় বন্ধু মুখটা কালো করে বসে আছে। শিশির বলতে লাগল। কি রে এভাবে মন খারাপ করে বসে আছিস কেন?
তৃতীয় বন্ধু বলতে লাগল। জানিস আমার স্বামী টা একদম আমাকে সহ্য করতে পারে না। আমি তো আমার স্বামীর ভালো চাই। জানিস ও একদম কোনো কাজ করে না। সারাদিন তার বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি করে। তার কাছে আমার কোনো কথার দাম নাই। তবুও আমি তাকে বুঝাই যে এতো ঘুরাঘুরি কর কেন?
বাবার সাথে ব্যবসার কিছু কাজ করলে বাবার কষ্ট টা কমে। এতে বাবা তোমার প্রতি খুশি থাকেন। আর তুমি এসব না করে শুধু ঘুরাঘুরি কর। এতে বাবা অনেক কষ্ট পান। সে আমাকে আর বকাবকি কর। মাঝে মাঝে মনে হয় কোথাও হারিয়ে যাই। কিন্তু তোদের ছেড়ে যেতে মন চায় না।
চতুর্থ বন্ধু হঠাৎ কেঁদে দেয়। কেঁদে কেঁদে
বলে জানিস আমার স্বামী আমাকে রেখে আরেক টা মেয়ের সাথে প্রেম করে। আমাকে ডিভোর্স দিতে চায়। আমি সারারাত বালিশে মাথা রেখে কান্না করি। এই কান্না কেউ শুনে না। একদম নিরবে কান্না করি।
শিশির কি বলবে বুঝতে পারছে না। শিশির কে সিয়াম এতো ভালবাসে কিন্তু শিশির তার কোনো মূল ওই দেয় না। শিশির তাদের কাছ থেকে চলে আসে।
.
বাসায় এসে শিশির দেখতে পায়। সিয়াম শুয়ে আছে। কোনো বাজার করে নি। যা ছিল তা খেয়ে ওই ঘুমিয়ে পড়ার জন্য খাটে গেল । শিশিরও যা ছিল তা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে । সকাল বেলা সিয়াম কোনো কিছু না খেয়ে ওই অফিস চলে যায়। শিশির নাস্তা তৈরী করেছিল কিন্তু সে নাস্তা সিয়াম খেয়ে যায় নি। শিশিরের মনটা খারাপ হয়ে গেল। শিশির বাসায় বসে আছে। তার কোনো কাজ নাই। আগে তো তরকারী করার জন্য কিছু টা কাজ করতে হতো। কিন্তু এখন তরকারীর জন্য আর কাজ করতে হয় না। সিয়াম অল্প অল্প বাজার করে। শিশির অল্প অল্প রান্না করে।
সিয়াম আগ থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মুখে দাড়ি উঠেছে। স্বাস্থ্য অনেক কমেছে। বলতে গেলে সিয়াম অনেক শুখিয়ে গেছে।
.
শিশির এখন বুঝতে শুরু করেছে। যে তার স্বামী ওই তার জন্য পারফেক্ট। কিন্তু এখন সিয়াম শিশিরের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করে না। হয়তো অভিমান করেছে। সিয়াম বসে টিভি দেখছে। রোমান্টিক দৃশ্য। শিশির কাছে আসতেই চ্যানেল টা পালটাতে যাবে। শিশির রিমোট টা তার হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো। খুব ভালো লাগছে শিশিরের। সিয়াম সেখান থেকে উঠে চলে যায়। শিশির সিয়াম উঠে যাওয়াতে মন খারাপ করে বসে থাকে। সিয়ামের অনেক খিদা লাগছে। কি করবে বুঝতে পারছে না। তাই সে রান্নাঘরে গিয়ে একটা ডিম নিল। কিন্তু ডিম ভাজি করতে তো সময় লাগে। তাই ডিম ভেংগে কাঁচা ডিম খেতে লাগতেই শিশির এসে তার হাত থেকে ডিম টা নিয়ে চুলার মধ্যে ডিমটা দিয়ে ডিম ভাজি করতে লাগল। সিয়াম শিশিরের দিকে চেয়ে আছে। সিয়ামের খুব ভালো লাগছে। যে শিশির তাকে ডিম ভাজি করে দিচ্ছে। সিয়াম কিছু বলতে চায়। কিন্তু তার মনে একটা ভয় কাজ করে। সিয়াম আগে অনেক বার তার ভালবাসার কথা স্বীকার করছে। কিন্তু শিশিরের মুখ থেকে না সূচক শুব্দ আসছে। তাই সে কোনো কিছু না বলে খেতে শুরু করল। শিশির সিয়ামের খাওয়ার দিকে চেয়ে রইল। হয়তো শিশির ভাবছে। সিয়াম আদরে করে শিশির কে খেতে দিবে । শিশির শুধু জিহ্বা টা ভিজাইতেছে। এক সময় সিয়াম তার মুখের দৃশ্য টা দেখতে পায়।
সিয়াম কি করবে ভাবতে লাগল। সিয়াম কি ডিম ভাজির কিছু অংশ শিশির কে দিবে। সিয়াম তা ভাবতে ভাবতে সব ডিম ভাজি খেয়ে ফেলেছে। শিশির তা দেখতে পেয়ে রাগে রুমে চলে গেল।
.
সিয়াম আজ একটু বেশি খুশি। কারণ বোনাসসহ বেতন পেয়েছে। তাই সে শিশিরের জন্য একটা কালো রঙের শাড়ী কিনল। অনেক কষ্ট করে কিনতে হলো। খুব পছন্দ করে কিনেছে। বাসায় আসতেই শিশির দেখতে পায়। সিয়ামের হাতে একটা প্যাকেট। শিশির জিজ্ঞাস করে…………………
>> কি এটা?
>> আপনার জন্য একটা জিনিস এনেছি। আপনার খুব পছন্দ হবে।
>> কি আগে সেটা তো দেখাবে।
>> আপনার জন্য শাড়ী আনলাম। দেখেন। খুব সুন্দর না।
>> তাইতো খুব সুন্দর। কত টাকা হয়েছে?
>> তা বেশি না। আমি আপনাকে গিপ্ট দিলাম। এইটা পড়ে আপনি আপনার বাবার বাসায় যাবেন।
>> ঠিক আছে। এখন খেতে দিবেন। অনেক খিদা লাগছে।
>> ঠিক আছে আপনি ফ্রেস হয়ে আসেন। আমি আপনার খাবার টেবিলে রেখে দিচ্ছি।
.
সকাল বেলা সিয়াম অফিস যাবে। ঠিক সে সময় তার কাছে এক অপ্সরী সামনে আসল। কি সুন্দর দেখতে । চুল গুলো খোলা। চুলের মধ্যে তেল দেওয়াতে ঝিলমিল করছে। কানের মধ্যে কানের দুল। মুখে হালকা মেকাপ। ঠোটে লিপস্টিক। চোখে কাজল। সব কিছু মিলিয়ে এক মায়াবতী। সিয়াম নিজে কে কন্ট্রোল রাখতে পারি নি।
>> বউ আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে। সত্যি আমি আপনার প্রেমে পড়ে গেলাম।
>> শিশির সিয়ামের চোখের দিকে চেয়ে আছে। কি নিষ্পাপ চোখ।
আমি তো আপনার ওই বউ। এতো ভালবাসি ভালবাসি বলার কি আছে। আমার বুঝি লজ্জা করে না।
>> সত্যি বলছ বউ। তোমার লজ্জা করে।
>> জ্বী।
>> তাইলে এতো দিন কষ্ট দিলে কেন?
>> আমি আপনার ভালবাসা বুঝতে পারে নি। তাই এতো কষ্ট দিয়েছি।
এখন প্রচুর ভালবাসা দিব।
>> হিহিহিহি।
আপনার বাবার বাসায় যাবে না??
>> না।
কয়েক দিন পর যাব। আপনার পেটের স্বাস্থ্য কমলে।
>> হিহিহি।
স্বাস্থ্য কিভাবে কমবে ?
>> আপনাকে না খাঁইয়ে রেখে।
>> তাইলে আমি তো মরে যাব।
>> প্লিজ এ কথা আর বলবেন না। আমি আপনাকে হারাতে চাই না।
>> আরে আমি তো এমনি বলাম। আপনি কান্না করছেন কেন?
>> জানেন আমরা ৫ বন্ধু। তাদের মধ্যে শুধু আমি সুখি। তারা কেউ সুখি নেই।
তাদের জন্য আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে।
>> তাদের কপালেও একদিন সুখ আসবে। টেনশন নিও না।
তারপর সিয়াম শিশিরের কপালে একটা চুমু দেয়। শিশির সিয়াম কে ভালবাসার স্পর্শে জড়িয়ে নেয়।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত