ফুল গার্লফ্রেন্ড

ফুল গার্লফ্রেন্ড

মিউউ…..মিউউউ…..মিউউউউ  সাত সকালে বিলাইয়ের ডাকে আমার সাধের ঘুমটা ভেঙে গেল ভাবছেন ঘরে বিলাই আসলো কই? আরে আমার নকিয়া ফোনের রিংটোন বিড়ালের ডাক হিহিহি ঘুম ঘুম লাগসে চোখ বুজেই ফোনটা রিসিব করে কানের কাছে ধরলাম হিলো কেডা? (ঘুম ঘুম কন্ঠে আমি) শালা আমি আজরাইল (অপর পাশে রাগি কন্ঠে মেয়েটা) তো আআআমার কাছে কি চাই? (আমি) তোর জানঠা বাইর কইরালামু (রাগ আরো উপ্রে) স্যরি আজরাইল ভাউ আমি এখন ঘুমাব পরে আসেন (আমি) ঐ শালা ১০ মিনিটের মধ্যে ভার্সিটি আসবি না কি আমি বাসায় যাবো (রাগটা এবার আওতার বাইরে) এই একটা কথাতেই আমার ঘুম বাবাজি পালাইসে না রে বইন আসা লাগবো না আমিই আইতাসি (আমি) হ আয় আর আজ তর খবর আছে (মেয়েটা) ঐ দেখ ভয় দেখাবি না কিন্তু  এমন করলে যামুই না (আমি) ইশশ লে বাবুটা ভয় কলে না আসো তুমি ভার্সিটি বলেই মেয়েটা ফোন কেটে দিল ঝড় আসার আগে যেমন পরিবেশটা শান্ত হয়ে যায় ওর কথাটাও তেমন শান্ত জানি আজ কপালে শনি রবি সোম সব আছে বিছানা ভরা আপচুচ নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।

ওওওহহ ততক্ষণে পরিচয়টা দেই কেমন আপনারা টয়লেটের দরজার ঐ পাশেই দাড়ান আমি ইয়ে করে আসি আর আমি আসিফ আহমেদ অভ্র এবার অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্র ভার্সিটির নাম কমুনা আমি খুব নম্র, ভদ্র, সভ্য, শান্ত, ইতর, ফাজিল ছেলে হিহিহি আর ঐ যে আজরাইলের সাথে থুক্কু যে মেয়েটার সাথে কথা বল্লাম ও আমার প্যারা আরে প্যারা বুঝেন না দোস্ত না মানে খালি দোস্ত না এক্কেবারে কলিজার দোস্তনাম অন্যন্যা অনু ওর কথা নাইবা কইলাম শুধু এতটুকু জানিয়া লন যে রুপ রাগ বদমেজাজের এক সংমিশ্রনে ওকে আল্লাহ বানাইছে যাই হোক এতো কথা না বলি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাস্তাটা না করেই চলে এলাম ভার্সিটি এক ঘন্টা লেট  না জানি আজ কপালে কি আছে জানি ও এখন পুকুর পাড়ের ঐ বড় গাছটার নিচে বসে তাছে তাই একপা একপা করে সেখানেই গেলাম কাছে গিয়ে দেখি অনু angry bird গেমটা খেলতেছে বুকটা ধক করে উঠলো ঢোক গিলে আস্তে করে ওর পাশে বসলাম আমার উপস্থিতি টের পেয়ে ও একবার পাশ ফিরে আমাকে দেখে আবার গেম খেলায় মনোযোগ দিলো পরিবেশ খুব শান্ত মনে মনে ভাবছি যাকগে আজ বেঁচে গে মনের কথাটাও মনে মনে পুরোটা বলতে পারলাম না তার আগেই ধুম্ ধাম কিল ঘুষি শুরু হয়ে গেল সাথে কুমিষ্টি কন্ঠে কিছু বুলি কুত্তা, হারামি, বিলাই, শালা এক ঘন্টা ধরে বসে আছি আর তোর কোন খবর নাই হ্যাহ আমি শুধু জান বাঁচাতে ব্যস্ত একটু পর অনু ক্লান্ত হয়ে কাধে মাথা রেখে বলল তোর কি কোন দিনো ঙ্গান হবে না?

এতো ঙ্গান কি করমু যে মাইরডা দিলি (আমি) কম দিসি তাই না? (অনু) হ কম দিসেন চলেন এখন ক্লাসে যাই (আমি) হ এক ঘন্টা লেট করে এখন আইছে ক্লাস করতে আজ সারাদিন আমারে নিয়া ঘুড়বি দুপুরে খাওয়াবি তারপর বিকেলে বাসায় ড্রপ করে দিয়ে আসবি (অনু) ইইইহ শখ কত রে? মনে হয় আমার গার্লফ্রেন্ড বায়না করছে (আমি) আমারো ঠ্যেকা পড়ছে তোর মত ইতরের গার্লফ্রেন্ড হওয়ার  খাওয়াইতে কইছি খাওয়াবি চল (অনু) না যামুনা (আমি) যাবিনা? (অনু চোখ বড় বড় করে) না যামুনা (আমি) ওকে তাইলে কি আর করার তোর আম্মুরে গিয়ে বলে দেব যে তুই সিগারেট খাস (অনু) কিইইইইইইহ এত্ত বড় অপবাদ তুই এমন কথা বললে আম্মু আমারে পিটাই ফুসকা বানায়া ফেলবে (আমি) তাইলে চল আমারে নিয়ে ঘুড়তে (অনু) এটা কিন্তু ব্লাকমেইল করলি হুহ (আমি) যাবি কি না ফোন লাগাবো (অনু)  না না চল চল (আমি) ওকে চল হিহিহি (অনু কটকটি মার্কা হাসি দিয়ে) কি আর করা অনুরে নিয়ে একটা পার্কে গেলাম সেখানে গিয়ে বসে আছি অভ্র দেখ ছেলেটা কি হ্যান্ডসাম তাইনারে? (অনু আঙুলের ইশারায়) হাহাহা ঐ টা হ্যান্ডসাম ছেলে!!!

হাহাহা (আমি) চুপ থাক দেখ কি দেখতে মাইরি ওয়াও  আমিতো ক্রাশ খাইছি (অনু) তোর চয়েস আছে বটে গাঁজাখোর রে তোর এত্ত ভালো লাগে ওর থেকে আমি হাজার গুনে ভালো হিহিহি (আমি) ইইইহ তুই তো একটা বান্দর (অনু) তাও ভালো গাঁজাখোর তো না হিহিহি (আমি) তাকিয়ে দেখি অনু রাগে ফুলতেসে ঐ যা ফুচকা নিয়ে আয় (অনু) টাকা দে (আমি) এটা তোর শাস্তি যা নিয়ে আয় তাড়াতাড়ি (চোখ রাঙিয়ে অনু) যাচ্ছি যাচ্ছি তবে শোন তোর কপালে বর জুটবে না যেভাবে কথা বলিস ( আমি) না জুটলে নাই তুই ই তো আছিস (অনু) ইইইহ তোর মত প্যারার বর হওয়ার চাইতে বনবাসে যামুগা (আমি) শালা আগে ফুচকা নিয়ে আয় যা (অনু) যাচ্ছি যাচ্ছি কি আর করা মনের দুঃখে ফুচকা আনলাম অনু বেঞ্চের উপর উঠে বসে এক এক করে ফুচকা গিলছে আমি একটা হাত দিয়ে নিতে যাবো ওমনি দিলো এক থাবা তুই শুধু তাকায় তাকায় দেখবি (অনু) মানেহ (আমি)  মানে আর কি? দেখবি আমার খাওয়া (অনু) আমারে দিবিনা? (আমি)  না (অনু) অনু আমারে দেখায়া দেখায়া এমন করে ফুচকা গুলা চিবায়া খাচ্ছে যেন ফুচকার চেয়ে স্বাদের কিছু নাই আমার দুঃখে মরি জাতি মন চাচ্ছে হুহুহু তারপর অনুরে নিয়ে আর একটু আড্ডা দিয়ে রেস্টুরেন্টে গিয়ে দুপুরের খাবার খাওয়ায়ে রিক্সা করে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে এলাম ঘরে এসে ধাম করে খাটের উপর শুয়ে পরলাম আর ভাবছি কোন কারণে যে এমন একটা বদ মেয়ে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হলো।

এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি জীবন তামা তামা করার জন্য এমন একটা ফ্রেন্ডই যথেষ্ঠ অনুর সাথে আমার পরিচয়টা প্রায় তিন বছর আগে তাও আবার ঝগড়া দিয়ে আর আমার মতে ঝগড়া দিয়ে যে সব সম্পর্ক শুরু হয় তা খুব শক্ত পক্ত হয় এখনো সেই দিনের কথা মনে পড়লে খুব ভালো লাগে আমি তখন অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্র আমার একটাই ফ্রেন্ড সাকিব ও  প্রায় আট মাস ধরে একটা মেয়ের পিছনে পিছনে ঘুড়ছে মেয়েটা আমাদের ডিপার্টমেন্টেই পড়ে কিন্তু সাকিব্বার ভয় লাগে বলতে তাই সামনা সামনি কিছু বলতে ভয় পায় একটাই বন্ধু আমার আর সে কিনা ভয়ের কারণে রিলেশন করবেনা এটা তো হয়না তাই নিজেই অপরেশন বন্ধ লাইট নামের একটা মিশন চালু করলাম আর আমি আগেই বলেছি যে আমি কেমন যাই হোক সেদিন ভার্সিটি গিয়ে সাকিবের ক্রাশ ধুররর মেয়েটার একটা নাম আছে মিলি তো আমি গিয়ে দেখি মিলি আর একটা মেয়ে মাঠে বসে আছে আমি গিয়েই বললাম মিলি তোমার সাথে কিছু কথা আছে হ্যা অভ্র বলো কি কথা। (মিলি)

তুমি তো জানো একটা রামছাগল কিছু দিন তোমার পিছে পিছে ঘোড়ে তবে মুখে কিছু বলতে পারেনা তবে রামছাগলটা তোমাকে অননন্নেক ভালোবাসে তাই আমাকে এই চিঠিটা দিলো তোমাকে দিতে (আমি) মিলি আমার হাত থেকে চিঠিটা নিতেই আমি দিলাম ভৌঁ দৌড় এসে সাকিব কে বলে দিলাম দেখিস খুব তাড়াতাড়ি তোর রিলেশনটা হয়ে যাবে অপরদিকে মিলির বান্ধবি অনু বলল কি রে চিঠিটা খোল দেখি রামছাগলটা কি লিখছে (অনু) তুই ও (মিলি লজ্জা পেয়ে) আরে খোল খোল (অনু) তারপর মিলি আস্তে আস্তে চিঠিটার ভাজ খুলতে শুরু কররলএকটা একটা করে ভাজ খুলছে আর বুকটা ধক ধক করছে অনু (মিলি) কি লেখা পড়ে শোনা( অনু) আরে চিঠিতে তো কিছুই লেখা নেই (মিলি) মানে মানে পুরো চিঠিটাই ফাঁকা একটা কলমের কালির দাগ ও নাই (মিলি) কিইইইইহ চল তো সাকিবের কাছে ঐ শালারে আজ মারবো (অনু) আরে থাকনা (মিলি) আরে চলতো (অনু)

অনু একপ্রকার হাত ধরে টানে টানতেই মিলিকে নিয়ে সাকিব আর অভ্রর সামনে গেল তারপর এই যে মি. রামছাগল আমার বান্ধবির পিছে তো গত আটমাস ধরে লাইন মারছেন আর ভালোবাসি বলতে পারেন না (অনু) মাম মানে (সাকিব) চুপ থাক শালা চিঠি দিলি ভালো কথা সেখানে ভালোবাসি এটুকু লিখলেই বা কি হতো (অনু) চিঠি! কিসের চিঠি! আমি তো কোন চিঠি দেইনি (সাকিব) তাহলে অভ্র যে এটা দিয়ে বলল তুমি দিছো (অনু) না আমি দেইনি (সাকিব)  ঐ ছ্যামড়া চিঠিটা কে দিছে? (অনু অভ্রকে বলল) ঐ বজ্জাত মাইয়া চিঠিটা আপনাকে না মিলিকে দিছি আর সব চিঠিতেই এতো কথা লেখা থাকবে কেন মনের কথা মন দিয়ে পড়তে হয় বুঝলেন? (অভ্র)  এহহ আইছে প্রেম পন্ডিত (অনু) ঐ মাইয়া চুপ থাক কটকটি কোথাকার (অভ্র)  কিইইইহ আমি কটকটি? (অনু  না আপনি তো চটপটি হিহিহি (অভ্র) এভাবে অনেক্ষণ ঝগড়া চলে দুজনের মধ্যে অবশেষে সাকিব আর মিলি মিলে দুজনকে থামায় এর কিছুদিন পরই অভ্রর ঠেলাঠেলিতেই সাকিব মিলিকে সরাসরি প্রপোজ করে মিলি অবশ্য সাকিবকে আগে থেকেই পছন্দ করতো তবে এতোদিন পর বলায় ভালোই অভিমান করেছে বেচারি  তবে অবশেষে ওরা প্রেম নামক বাঁশঝাড়ে প্রবেশ করে।

এরপর থেকেই শুরু হয় আমার বা লের জীবনের সাকিব আর মিলি প্রেম করতো আর আমার আর অনুর ঝগড়া চলতো অনু কিছুতেই মিলিকে একা ছাড়তে চায়না আরেবাবা প্রেম করতে যদি গার্ডিয়ান লাগে তো বাসায় গিয়ে প্রেম করলেই হয় এভাবে সাকিব মিলির প্রেম সাথে আমার আর অনুর ঝগড়ার মাঝে চলে যায় মাস কয়েক ২য় বর্ষের শুরুতেই ঘটে আরেক কান্ড মিলির নাকি বাসা থেকে বিয়ে ঠিক করেছে  কিন্তু ও সাকিবকে ছাড়া কারো বউ হবেনা কি আর করা অনেক কষ্টে আমি আর অনু মিলে ওদের পালাতে সাহায্য করি পরে অবশ্য ওদের দুজনের বাসাতেই মেনে নেয়  তবে দুজনের পড়াটাই বন্ধ হয়ে যায় এরপর থেকে আমি বড্ড একা হয়ে পরি  কারণ সাকিব ছাড়া আমি কারো সাথেই মিশতাম না ক্লাসে, ক্যাম্পাসে একা একা থাকতাম যা হয়ত অনু লক্ষ্য করেছিল তাই নিজেই এসে আমার সাথে কথা বলত এরপর থেকে আমি অনেকটা আগের মতো হয়ে যাই আর অনুর সাথে খুব ভালো বন্ধত্ব হয়ে যায় হাসি কান্না মান অভিমান আর খুনসুটির মাঝে কি ভাবে যে এক এক করে তিনটা বছর চলে যায় বুঝতেই পারিনি আমি আর অনু একে অপরের এতটাই আপন ভাবতাম যে আমাদের মাঝে অন্য কাউকে একদম সহ্যই করতে পারতাম না।

যেমন আমি যদি বলতাম যে দেখ মেয়েটা কি সুন্দর ওর প্রেমে পরে গেছি আমি তখনই অনু আমাকে কিল ঘুষি মারত আর বলত আমি থাকতে আমাদের মাঝে আর কোন তৃতীয় ব্যক্তি আসতে দেবোনা আবার যদি অনু কোন ছেলেকে দেখিয়ে বলতো দেখ দেখ ছেলেটা কি জোশ তখন আমিও বলতাম আমি থাকতে তোর মাঝে কাউকেই আসতে দেবোনা আমার মনে হতো ও যেন আমারা বন্ধু না একটু বেশিই এভাবেই হাসিখুশির মাঝে এক এক করে দিনগুলো যাচ্ছিল বিশেষ করে অনুর কেয়ার বাচ্চামিগুলা খুব ভালো লাগতো আমার আর অনু যখন আমার কাছে অন্য ছেলেদের প্রশংসা করতো কেন জানি অনেকটা খারাপই লাগতো অনু মাঝেমাঝেই বলতো জানিস তো অভ্র বিখ্যাত এক ব্যক্তির একটা কথা আছেনা একটা ছেলে আর একটা মেয়ে কখনোই ভালো বন্ধু হতে পারেনা এরা কেউ অবশ্যই একে অপরের প্রেমে পড়বেই আমি তখন হেসেই বলতাম দেখিস এই কথাটার আমরা ভুল প্রমাণ করবোই মেসেন্জারের টুংটাং শব্দে ভাবনায় ছেদ পড়লো ফোনটা নিয়ে দেখি সিমুর মেসেজ লিখেছে আবার কবে গল্প দিবা অপেক্ষা করতে আর ভালো লাগছেনা  তাড়াতাড়ি একটা গল্প দাও আমিও লিখলাম সবুরে মেওয়া ফলে।

ওহহ আপনাদের তো বলাই হয়নি আমি ফেসবুকে একটু আধটু লেখালেখি করি আর সেই সুবাদে এই সিমু মেয়েটার সাথে পরিচয় মেয়েটা খুব ভালো  আমার গল্প না পড়লে নাকি ওর ভালোই লাগেনা মেয়েটা আমার অনেক অনেক কেয়ার ও করে ভালোই লাগে মেয়েটার কথা মেয়েটার কথাতেই বুঝি আমাকে হয়ত পছন্দ করে  আর আমি ও কেন যেন মেয়েটার উপর অনেকটাই দূর্বল হয়ত মেয়েটার কেয়ারের জন্যই রাতে গল্প লিখে পোস্ট করতে করতেই ১ টা বেজে গেছে ঠিক তখনই অনুর ফোন  কিরে জান্টুস কি করিস? এইতো শুয়ে আছি তুই? (আমি)  আমিও আজ গল্প লিখছিস? (অনু) হো লিখে মাত্র পোস্ট দিলাম (আমি) ওহ আচ্ছা বাই গল্পটা পড়বো (অনু) ওকে পড় (আমি) ফোনটা কাটতেই সিমুর কমেন্ট তোমার গল্পের প্রেমে অনেক আগেই পরে গেছি তোমার গল্পের রানী হতে খুব ইচ্ছা করে কমেন্ট টা পড়েই মনের ভেতর কেমন যেন করে উঠলো আমিও সাথে সাথেই রিপ্লে দিলাম তোমার মতোএকটা পাগলিকে রানী করার খুব ইচ্ছা করে।

রিপ্লেটা দিয়েই ভাবছি আসলেই মেয়েটা যদি আমার রানী হতো তবে খুব খুব ভালো হতো কেবলই ঘুমে চোখটা বুজে আসছে অমনি ফোনটা বেজে উঠল আর মেজাজটাও একেবারে ফেটে যাচ্ছে রাগে ফোনটা তুলে দেখি অনুর ফোন এতো রাতে জ্বালাচ্ছিস কেন? (আমি) কুত্তা বিলাই তোমার রানি লাগবে না? কমেন্টে লুতুপুতুগিরি নাহ তোর খবর আছে(অনু চেঁচিয়ে)  আরে আরে বাদ দে না আমার খুব ঘুম পাচ্ছে বাই বলেই ফোনটা কেটে দিলাম সাধের ঘুম এখন আর জোর করেও হবেনা পরদিন ভার্সিটি গিয়ে দেখি অনু বসে আছে কি রে পেঁচির মতো মুখ করে বসে আছিস যে? (আমি) কি রে হঠাৎ চুপ করে আছিস কেন? (আমি) অভ্র প্লিইইইজ একটু চুপ থাক আমার ভালো লাগছেনা( অনু) ওকে থাক তাইলে আমি জাইগা  বলেই সেখান থেকে অন্যখানে চলে গেলাম তারপর মেসেন্জারে গিয়ে সিমুর সাথে চুটিয়ে কথা বলছি এই তোমার একটা ছবি দিবা কি? (আমি) ছবি কি করবা (সিমু) তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে (আমি) তো ছবি কেন চলো সরাসরিই দেখা করি মেসেজটা দেখে মনে হচ্ছিল আমি স্বপ্ন দেখছি।

আহহহহহহা তারপর দুজনে ঠিক করলাম কোথায় কবে দেখা করবো মনটা খুব খুশি খুশি লাগছে তাই ক্লাস না করেই বাসায় চলে আসলাম চলে গেল প্রায় এক সপ্তাহ সিমুর সাথে কাল দুপুরে দেখা করবো ইশশশশ ভাবতেই মনটা খুশিতে লাফাচ্ছে কাল কি করবো? কি বলবো? এসব ভাবতে ভাবতেই রাতটা প্রায় শেষ হয়ে গেল ঘুম ভেঙে চোখটা মেলে দেখি অনু আমার খাটে বসা অপলক ভাবে আমার দিকে চেয়ে আছে আমি আরমোরা ভেঙে বললাম কিরে কটকটি এই সাত সকালে আমাদের বাসাতে সাত সকাল না? ১০টা বাজে এখন (অনু) ওহহ ব্যাপার না (আমি) তাড়াতাড়ি উঠ শপিংয়ে যাবো (অনু) আজ টাইম নাই তুই একাই যা (আমি) তোকে ছাড়া আমি কখনো শপিংয়ে গেছি? আর আমার সব জামা তোর পছন্দে কেনা যা ফ্রেশ হয়ে নাস্তাটা করে আয় (অনু) দেখ তুই আজ একাই যা আমি সিমুর সাথে দেখা করতে যাবো আজ (আমি) আমি এতো কিছু জানিনা তুই আমার সাথে শপিংয়ে যাচ্ছিস এটাই ফাইনাল (অনু) আমি আজ যাচ্ছিনা (আমি) অভ্র চ তুই যাবি যাবি যা ঠাসসসসসস এক কথা কয়বার বলতে হবে?

বললাম না আমি যাবোনা তাও জোড় করছিস কোন অধিকারে? (চেঁচিয়ে আমি) গালে হাত দিয়ে অনু অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে অভ্র তুইইই আমাকে চড় মারলি? ( অনু) হ মারছি তো কি? (আমি) আমি তোকে জোড় করছি এটা আমার অধিকার না? (অনু) না না না (আমি) ঐ মেয়েটাই তোর কাছে বড়ো হয়ে গেল (অনু) হ্যা হলো তুই এখন যা তো চোখের সামনে থেকে ধুররর সকাল সকাল মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল (আমি) অনু আর কোন কথা বললো না চুপচাপ কান্না করতে করতে চলে গেল যাকগে আমার কি? সেই তিনটা বছর ধরে শাষন করছে আর ভালো লাগেনা অসহ্য ধ্যাত মুড টাই খারাপ করে দিল বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে গেছি তখনই আম্মুর বকবকানি কি রে অনু যে আসলো ও কই? চলে গেছে (আমি) চলে গেছে মানে? (আম্মু) চলে গেছে মানে চলে গেছে( আমি) তুই নিশ্চয় কিছু বলেছিস (আম্মু) বলবোনা সাত সকালে এসেই শপিংয়ে যাবো শপিংয়ে যাবো বলে কান শেষ করে দিল ও কি বাচ্চা একা যেতে পারেনা? (আমি) এই কয়টা বছর তো তোর সাথেই যায় (আম্মু) তো কি হয়েছে ধ্যাত মেজাজটাই খারাপ করে দিলা  ধুররর বলেই রুমে চলে এলাম তারপর রেডি হয়ে সিমুর সাথে দেখা করার জন্য বের হলাম এক ঘন্টা পর পৌঁছে ক্যাফেতে বসে আছি একটু পরই কালো ড্রেস পরা একটা মেয়ে এগিয়ে এসে বলল তুমিই কি অভ্র? জি আমিই আর আপনি কি সিমু? (আমি) হ্যা এরপর দুজনে বসে গল্প শুরু করে দিলাম।

ইশশশশ সিমুকে দেখতে ঠিক পরির মতো লাগছে ওর কথা বলার ধরণ অসাধারণ দুজনে অনেক গল্প করে তারপর রিক্সা করে ঘুড়ে বিকেলে ওর থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলাম রাত ১ টা কিছুতেই ঘুম আসছেনা সেই আটটা থেকে সিমুর সাথে মেসেছজে কথা বললাম তাও মন ভরছেই না  আর এখন তো ঘুম ও আসছেনা সিমুকে নিয়ে ভাবছি অনেক কিছু ভাবছি আর কখন যে ঘুমিয়ে গেছি জানিনা ঘুম ভাঙলো সকাল আটটায় উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে ভার্সিটি চলে গেলাম কিন্তু কেন জানি একা একা লাগছে সামথিং মিসিং হুম অনু আসেনি কাল সকালের পর থেকে আর একটা কথাও হয়নি ভালোই হয়েছে প্যারা মুক্ত আছি একটা ক্লাস করেই বাসায় চলে এলাম তারপর সিমুর সাথে চুটিয়ে প্রেমালাপ ওহহ আসলে আপনাদের বলাই হয়নি সেদিন দেখা করতে গিয়ে সিমু প্রপোজ করেছিল আর ওকে আমার আগে থেকেই ভালো লাগে তাই না করিনি ছয়টা দিন চলে গেল সিমুর সাথে দেখা করা খাওয়া ঘুড়াঘুড়িতে দিনগুলো বেশ কেটে গেল কিন্তু ইদানিং অনুকে খুব বেশিই মনে পরছে লজজায় ফোন করতেও পারছিনা ওকে সেদিন ওভাবে অতো কথা বলা ঠিক হয়নি  আবার চড় দেয়াটাও ঠিক হয়নি অনু আমার কত ভালো বন্ধু আর সেই আমি এমনটা করলাম অনু হয়ত অনেক অনেক কষ্ট পেয়েছে রাতে এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে যাই অপরদিকে অনু সারাটাদিন শুয়ে থাকে আর কান্না করে।

অভ্র চড় মেরেছে বলে অনুর খারাপ লাগেনা খারাপ লাগছে এজন্য যে এতটা বছর ধরেও অভ্র বুঝতেইনি যে অনু ওকে কতটা ভালোবাসে  কেন ওকে অন্য কারো সাথে মিশতে দেয়না  কেন ওর পাশে ছায়ার মতো থাকে অনু আরো অবাক হয় এজন্য যে এই কয়টা দিনে অভ্র একটা বারো খোঁজ নিলোও না যে আমি কেমন আছি না খেয়ে সারাদিন কান্না করতে করতে অনেকটা শুকিয়ে গেছে অনু প্রায় তিন সপ্তাহ হয়ে গেল আমার সাথে অনুর কথা হয়নি  এই কয়টা দিন যে কেমন করে কাটলো তা আমিই ভালো জানি ওর সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত খুব বেশি মনে পড়ছে আমাকে শেষ করে দিচ্ছে ভিতরটা কুড়েকুড়ে খাচ্ছে এই অভ্র এতো কি ভাবো? (সিমু) আমি এতটাই অনুকে নিয়ে ভিভোর ছিলাম যে ভুলেই গেছি আমি সিমুর সাথে দেখা করতে এসেছি আসলে এই কয়টা দিন আমার কেমন যাচ্ছে জানিনা শুধু একটু জানি যে আমার প্রতিটা মুহূর্ত অনুকে নিয়ে ভেবেই কেটেছে এই অভ্র কি হলো কি ভাবো এতো? (সিমু) কক কই কিছু না তো (আমি) কিছু তো একটা ঠিকই  গত কয়দিন ধরেই দেখছি তুমি সব সময় কি যেন ভাবো কি হয়েছে তোমার? ( সিমু) আরে তেমন কিছুনা ছাড়ো তো (আমি) আরে বলো কি হয়েছে (সিমু) তোমাকে তো বলেছি অনু আমার কেমন ফ্রেন্ড গত কয়েটা দিন ধরেই ওর সাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই।

আসলে দোষটা আমারই কিন্তু ইদানিং ওকে খুব বেশি মিস করতেছি সব সময় শুধু ওর কথাই মনে আসে আমি জানিনা কি হয়েছে আমার (আমি) ছি অভ্র তুমি আমার সামনে একটা অন্য মেয়েকে মিস করার কথা বলছো (সিমু) আমি ওকে মিস করছি তো বলবোনা? (আমি) যদি ওকেই এতো মিস করো সারাদিন ওর কথাই ভাবো তো আমার সাথে কেন প্রেম করলা  ওর সাথেই করতা যত্তসব (সিমু) সিমু অনু আমার খুব ভালো ফ্রেন্ড (আমি) হ্যা দেখছি তো কি ফ্রেন্ড যে সারাদিন রাত তার কথাই ভাবছো সিমু তুমি কি আমাকে সন্দেহ করছো (আমি) করবোই তো করবোনা? (সিমু) দেখো এমনিতেই মাথা ঠিক নাই তার উপর রাগ বাড়ায়ো না তো (আমি) কি করবা তুমি হ্যা কি করবা?

(সিমু) কি করবো না ওকে যা তোর সাথে ব্রেকআপ (আমি) হ্যা যা যা দরকার নাই তোর মতো বয়ফ্রেন্ডের যে কিনা অন্যকে নিয়ে ভাবে বলেই হনহন করতে করতে সিমু চলে গেল রাগে আমারো মাথাটা ঠিক নেই ঘরে এসেই ফুল স্পীডে ফ্যান দিয়ে শুয়ে আছি আর ভাবছি অনুকে এতো কেন মিস করতেছি? আগে তো এমন হতোনা অনু যতটা দিন পাশে ছিল তখন তো বুঝিনি ওর শুণ্যতা এখন খুব করে টের পাচ্ছি অনুর সাথে আমার কখনোই মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়নি আমরা একে অপরকে খুব করে বুঝতাম খুব ওকে বকার পর থেকে লজ্জাতে ফোনও দিতে পারিনি কিন্তু আমি কেন অনুকে এত মিস করতেছি আমি কি অনুকে ভালোবেসে ফেলছি  কি জানি যদি না ভালোবাসি তো মিস কেন করছি হ্যা হ্যা ভালোবাসি আমি অনুকে ভালোবাসি আসলেই খুব ভালোবাসি কিন্তু অনু তো খুব অভিমান করে আছে কি করবো এখন? মাথাটা একদম কাজ করছে না।

তাড়াতাড়ি শার্টটা গায়ে দিয়ে বাসা থেক বের হয়ে গেলাম রাত ১০টা দাড়িয়ে আছি অনুদের বাসার নিচে পকেট থেকে ফোনটা বের করে কাঁপাকাঁপা হাতে অনুকে ফোন দিলাম রিং হচ্ছে অপরপাশে এতোদিন পর অভ্রর ফোন পেয়ে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছেনা অনু কোন রকমে কান্না আটকে রেখে ফোনটা রিসিব করে অ অনু একটু তোদের বাসার নিচে আসতে পারবি কি (আমি) অনু কোন কথা বলছে না কি রে আয়না একটু নিচে প্লিইইইজ  অনেক্ষণ ধরে দাড়িয়ে আছি (আমি) অনু আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেনা ফোনটা রেখে এক দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে অভ্রর সামনে গিয়ে দাড়ায় দুজনেই চুপচাপ আমার মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হচ্ছেনা  তবুও অনেক কষ্টে বললাম স্যরি রে আসলে সেদিন তোকে ওভাবে বলাটা ঠিক হয়নি হঠাৎ কি যে হলো আর তোকে অনেক বকা দিছি বিশ্বাস কর আমি এরপর একটা দিনো ভালো থাকতে পারিনি সারাক্ষণ শুধু তোর কথাই মনে পড়েছে তাইতো আজ ছুটে এসেছি আমার কাছে কেন এসেছিস তোর সিমুর কাছে যা (অনু অভিমান করে) চুপ কর আমি আজ ওর সাথে ব্রেকআপ করে এসেছি বিশ্বাস কর অনু এই কয়টা দিন আমি একদম ভালো ছিলাম না।

আমাকে তুই যতটা বুঝিস আর কেউই ততটা বুঝেই না আমি একটা বিষয় খেয়াল করে দেখেছি রে অনু আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারবোনা আমি তোকে ভালোবাসিরে অনু তোকে খুব খুব বেশি ভালোবাসি অভ্রর মুখে এমন কথা শুনে আর অভিমান করে থাকতে পারেনা অনু এক দৌড়ে অভ্রর কাছে চলে যায় আর কান্না করতে করতে বুকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি ছোঁড়ে সাথে সেই কুমিষ্টি গালি কুত্তা বিলাই শয়তান এতোদিন আমাকে কতটা কষ্ট দিছিস জানিস হু?তুই বুঝিসনা সেই তিন বছর আগে থেকেই তোকে ভালোবাসি এই জন্য তোর পাশে কাউকে সহ্য করতে পারিনা জানিসনা তুই কুত্তা? বকুক আজ যত পারে বকুক মাইর দিক আজ আজ ওর বকা গুলা কেন যেন খুব মিষ্টি লাগছে  খুব মিষ্টি এই অভ্র ( বুকে মাথা রেখে অনু) হ্যা বল পাগলি (আমি) আমাকে প্রপোজ করবিনা (অনু) তুই তো আমাকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসিস আর প্রপোজ করে কি হবে?

(আমি) যা কুত্তা তোর সাথে ব্রেকআপ (আমাকে ছেড়ে দিয়ে অনু) ওকে বাবা প্রপোজ করতেছি করতেছি (আমি) আচ্ছা কর (অনু) আমি রাস্তার উপর হাটু গেড়ে বসে অনুর ডান হাতটা ধরে বললাম হে আকাশ হে বাতাস মাথার উপরে রুপালি সূর্য সবাইকে সাক্ষী রেখে বলছি হে বালিকা তুমি কি আমার ফুল গার্লফ্রেন্ড হবে কথা দিচ্ছি খুব ভালোবাসবো বলে উঠে দাড়াতেই অনু আবার বুকে ঝাপিয়ে পড়ে বলল হবো হবো আমি শুধু তোরই হবো আমিও অনুকে পরম ভালোবাসায় জড়িয়ে নিলাম আর ভাবছি অনুর সেই কথা আসলেই একটা ছেলে আর একটা মেয়ে কখনোই বন্ধু হতে পারেনা এরা একে অপরের প্রেমে পড়বেই তাই সুত্র অনুযায়ি আমিও পড়েই গেলাম।

(সমাপ্ত)

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত