ছোট্ট উপহারে প্রাপ্তি অনেক

ছোট্ট উপহারে প্রাপ্তি অনেক

বিয়ের পর এই প্রথম জেরিন কিছু একটা চেয়েছিলো জীবনের কাছে কিন্তু অফিসের কাজের ব্যস্ততার কারণে সেদিন দিতে পারে নাই জীবন। তারপরেও সেদিন জেরিনের কোন রাগ কিংবা অভিমান ছিলোনা। একবারের জন্য জেরিন বলে উঠলো কেন এনে দিতে পারলো না বা কেন অফিস থেকে ফেরার পথে কেন নিয়ে আসলো না।

বিয়ের একটা বছর হয়ে গেলো জেরিন কখনো কোনদিন বললো না আমার এটা লাগবে, আমার ওটা লাগবে। জীবন যা এনে দেয় জেরিনও তা গ্রহণ করে নেয়। কখনো বলে নাই যে আমার পছন্দ হয়নি।জীবন মাঝেমাঝে বলতো তোমার কি এটা পছন্দ হয়েছে নাকি হয়নি। যদি পছন্দ না হয় তাহলে কালকে পরিবর্তন করে আনবো। জীবনের কথা শুনে জেরিন তখন বলে উঠতো তুমি যা এনে দিবে তাই আমার পছন্দ। আমার তুমি থাকলেই হবে।

বিয়ের আগে জীবন একবার কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলো জেরিনের সাথে।জীবন সেদিেনই বুঝেছিলো মেয়েটা অনেক ভালো ও সৎ একটা মেয়ে। কেন বুঝেছিলো জানেন?তাহলে বলেই ফেলি…

জীবন সোজাসুজি জানতে চেয়েছিলো তোমার কি কোন সম্পর্ক ছিলো কারো সাথে? জেরিন সেদিন কোন কিছু চিন্তা না করে এক কথায় বলেছিলো হুম,একটা ছেলের সাথে ২ বছর সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু সেই ছেলেটা জেরিন কে না জানিয়ে বাবা মার পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করে নিয়েছে। আজকাল কোন মেয়ে কিংবা ছেলে বিয়ে ঠিক হওয়া মানুষটার কাছে কি এরকম সত্য কথা বলতে পারে বলেন? কিংবা কেউ কি এরকম সত্য বলে, জেরিন সেদিন সহজে স্বীকার করেছিলো। জেরিন সেদিন আরো বলেছিলো বিয়ের পর আপনি আমাকে কিভাবে মানবেন আমি জািননা কিন্তু আপনাকে কথা দিচ্ছি কোন রকম কমতি থাকবেনা আমার ভালোবাসার। আমি আপনার মতো করে সবসময় চলার চেষ্টা করবো। আপনি শুধু বিয়ের পর আপনার বুকে মাথা রাখার একটু যায়গা দিবেন। কোন রকম অবহেলা করবেন না আমাকে।

জীবনও সেদিন মেয়েটার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলেছিলো আজ থেকে আর কাঁদতে হবে না। আমিও কথা দিচ্ছি সবসময় সবটুকু ভালোবাসা দেওয়ার চেষ্টা করবো।কখনো অমর্যাদা হবে না তোমার।

জীবন আজকে মেয়েটার জন্য ছোট একটা উপহার কিনে নিয়েছে। কারণ মাস শেষে হাত একদম খালি। তাই বড় কিছু নেয়া সম্ভব হয়নি।জেরিন প্রথম যে জিনিসটা আনতে বলেছিলো সেদিন সেটাই নিয়েছে আজ। কারণ আজকে যে কোন কিছু না দিলেই নয়। অফিস থেকে বাহির হয়ে জীবন কল করে জেরিনকে সুন্দর করে সেঁজে থাকতে বলে।আর দুজনের পছন্দের সব খাবার রান্না করতে বলে।

জেরিনও সেদিন সব রান্না করে টেবিলের উপর সাজিয়ে রাখে। আর জীবনের কথা মতো এত সুন্দর করে সেজে বসে থাকে।

সেদিন জীবন বাসায় প্রবেশ করেই অবাক হয়ে উঠে। জেরিন এত সুন্দর করে সেদিন সেজেছিলো বিয়ের প্রথম দিনও এত সুন্দর লাগেনি। জীবন হাত থেকে ব্যাগটা রেখেই জেরিনকে জড়িয়ে ধরে বলে শুভ বিবাহ বার্ষিকী। তারপর কপালে ছোট্ট করে একটা চুমু দিয়ে জীবন উপহার হিসেবে একগুচ্ছ কাঁচের চুরি দেয়। আর জেরিন একগুচ্ছ রেশমি চুড়ি উপহার পেয়ে অনেক খুশি হয় ।কারণ জেরিনের সেদিনের চাওয়াটা ছিলো এই লাল নীল কাঁচের রেশমি চুড়ি। তারপর তারা দুজনে তাদের প্রথম বিবাহ্ বার্ষিকী পালন করে।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত