ব্রিলিয়েন্ট গার্লফ্রেন্ড ২

ব্রিলিয়েন্ট গার্লফ্রেন্ড ২

সকালের আরামের ঘুম হারাম করার জন্য একটা শত্রুুর দরকার নেই বরং একটা ভাল বন্ধু এই কাজটা খুব ভালই করতে পারে। তেমনই সকালে ঘুমিয়ে আছি আর দেবিকার ফোন এসে হাজির। ভাবছিলাম রাতে মোবাইল বন্ধ করে ঘুমাবো তবে আমার বাসার নাম্বারও ওর কাছে আছে। আর দেবিকা আমার খুব ভাল বন্ধু।ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে কোন রকমে ফোনটা রিসিভ করলাম হ্যা দেবিকা বল। কিরে কি করছিস?

এই তো বিশ্ব ব্যাচেলারর দিবস পাওয়ার জন্য আন্দোলন করছি। ও তার মানে এখনে ঘুমাচ্ছিস। তোরে তো আমার এই জন্যই এত্তো ভাল লাগে, কিছু বলার আগেই বুঝে যাস। হইছে এবার থাম। ঘুম থেকে যেহেতু উঠলি তাহলে এখন ফ্রেশ হয়ে পরতে বস। আজ তো ক্লাস ১০ টা থেকে আর এখন মাত্র ৭ টা বাজে। এখন কি পড়ার সময় নাকি।

পড়ার জন্য কোন সময়ের দরকার হয় না বুঝলি। এবার বল তো গত সপ্তাহে যে এনভায়রন্টমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ক্লাসে একটা এসাইনমেন্ট দিছে ” জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে আমাদের অবস্থা কেমন হবে? ” এটা লেখছিস? না তো তবে ভেবে রাখছি কি লেখতে হবে?

শুনি তো বাদর সাহেবের ধারনা। দোস্ত যদি জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় তাহলে আমাদের অবস্থা রান্না ঘরে হবে কারন বড় ঘরে তো মেয়েদের পাওয়ার থাকবে তাই আমাদের মত বড়মুখী শিশু গুলো রান্না ঘরে জায়গা পাবে। খুব ভাল। তোরে তো ২০ থেকে – ২০ দিতে বাধ্য গাধা একটা। কেন কি সমস্যা হলো?

আসলে স্যার সম্পূর্ণ পৃথিবীর মাঝে জনসংখ্যার প্রভাব জানতে চাইছে। শুধু তোর ঘরের না। আরে গাধা সারা দিন লেখাপড়ার বদলে ফেসবুকে ছেলে বড় না মেয়ে বড় পোস্ট পরতে পরতে তোর মাথাটাই গেছে। হুমম হয়ত বা যাই হোক এবার তুই বলে দে কি লেখবো? ফোনে বলতে পারবো না। আজ আমি এসাইনমেন্ট টা জমা দিবো। এর আগে তুই ছবি তুলে নিয়ে যাস আর বাসায় করে কাল জমা দিস।

এর থেকে ভাল হবে তুই আমার এসাইনমেন্টও করে দে। তুই মনে হয় কাল রাতে গল্পের জগতে ছিল আর তোর নেশা এখনো কাটে নি। গল্পে ছেলেদের এসাইনমেন্ট মেয়েরা করে দেয় বলে আমিও যে করবো এটা ভাবিস না। হুমম বুঝলাম তুই আমায় এতো সকালে ঘুম থেকে উঠালি পড়ার জন্য। হুমম বুঝলি আর শুনে রাখ যে আজ ভার্সিটি আসার আগে চুল দাড়ি গুলো ছোট করে আসিস। কেন রে? না কেমন যেন বড় বড় লাগে। হি হি চুল আর দাড়ি বড় রাখনা রহস্য তুম কেয়া জানো রমেশ বাবু। ওই আমি রমেশ বাবু হলাম কবে? তুই আমার জান্টু ফ্রেন্ড না তাই। হইছে এবার পরতে বস আর ১০ টার আগে ক্লাসে চলে আসিস।

ওকে জানু বা বায় দেবিকাকে বায় দিয়ে আর শুয়ে না থেকে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। তারপর বাসায় বসে ১ ঘন্টার মত পড়লাম আর ১ ঘন্টা দুষ্টামী করে কাটিয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। প্রায় ১০ মিনিট লেট করে ভার্সিটি আসলাম। ভার্সিটি এসেই দেবিকাকে ফোন দিলাম কিন্তু ও ফোন ধরছে না। তারপর আর লেট না ক্লাসের উদ্দেশ্যে গেলাম কিন্তু মহারাণী তো হেব্বি সামনে বসে স্যারের লেকচার শুনে। স্যার আসতে পারি। আরে রাজ যে, তা আজকেও বুঝি লেট। সরি স্যার আসলে একটু পারশনাল সমস্যা ছিল। তোমার কত্তো সমস্যা থাকে। যাও পিছে গিয়ে বসো। ওকে।

কোন রকমে স্যার বকা গুলো সহ্য করে পিছনে গিয়ে বসলাম। ওরে দেবিকা আমার জন্য তো একটু জায়গা রাখতে পারতি। তাছাড়া এই স্যার আমাকে একটু বেশিই চাপ দেয়। কারন, একবার আমি বন্ধুদের সাথে ট্রোথ বা ডিয়ার খেলায় বলছিলাম ডিয়ার। আর তখন এই স্যার টয়লেটে যাচ্ছিল তখন এক বন্ধু বলল যে এই স্যারের টয়লেটের দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে দিতাম আর আমিও তাই করলাম।

যদিও স্যার কারো থেকে জানতে পারে নি কাজটা কে করছে? কিন্তু দেবিকা স্যারকে সব বলে দেয় আর আমার হয়ে মাফও চায়। কি দরকার ছিল এইসবের বুঝি না বাপু। আমি যখন দেবিকার কাছে জানতে চাইলাম যে কেন ও স্যারকে শুধু শুধু সত্যিটা বলে আসলো তখন দেবিকা শুধু বলল ” পরিবার আর শিক্ষকের আশির্বাদ যদি মাথার উপর না থাকে তাহলে জীবনে কখনো উন্নতি করা সম্ভব না “।

আমি শুধু ভাবি আমার কপালে এমন নীতি বাক্য মার্কা মেয়ে কেমনে জুটলো।তবে মন্দ হয় নি কারন ও আপাতত আমার জি এফ আর বন্ধু দুইটার জায়গা জুড়েই আছে। ওরে কত কথার ছলে যে বুঝাতে চেয়েছি আমি ওরে ভালবাসি তবুও ও বুঝার নাম নেই। কোন রকমে স্যারের বোরিং ক্লাসটা শেষ করেও বসে আছি। ইচ্ছে করছে চলে যেতে কিন্তু আজ আরো দুইটা ক্লাস আছে। তাই চুপচাপ আরো দুইটা ক্লাস শেষ করে একা একা চলে আসলাম। একটু দূরেই আসতে পিছন থেকে ডাক পরলো আমাকে না নিয়ে একা একা চলে যাবি? ও মা তুই ভার্সিটি এসেছিস, আমি তো জানতামই না।

দেখ দোস্ত আমি তোর ভালোর জন্যই তোর জন্য ওয়েট করি নি। কারন আজ কিছু থিউরি স্পেশাল ক্লাস ছিল।যদি আমিও মিস করতাম তাহলে তোকে অন্যজনের কাছ থেকে বুঝতে হতো। এর থেকে ভাল না দুইজনের একজন ক্লাস করলাম। হুমম এবার চল। কিরে রাজ রাগ করেছিস আমার উপর? তোর উপর কি রাগ করা যায় নাকি। তোর উপর রাগ করলে তো আমায় বাসায় গিয়ে বলবি কোন মেয়ের সাথে আমার ব্রেকআপ হইছে তাই আমি কারো সাথে কথা বলছি না। হুমম যাক বুঝলি এবার চল।

তারপর একটা রিকশা নিলাম আর দেবিকাকে ওর হোস্টেলের সামনে নামিয়ে দিয়ে আমি চলে আসলাম। ওরে আমি অনেকটা পছন্দ করি কারন ও সব সময় আমার খেয়াল রাখে। তবে সব থেকে ওর যে জিনিসটা ভাল লাগে তা হলো ও মাঝে মাঝে আমার ফোনে কি যে ম্যাসেজ পাঠায়। গতকাল রাতে ও ম্যাসেজ দিলো ” রাজ মনে কর তোর নাকের উপর ইয়া বড় একটা ফোড়াঁ হলে কি করবি রে? ” আর এটা পরে আমি হাসতে হাসতেঁ ম্যাসেজ দিছিলাম ” যদি এমনই হয় তাহলে তোরে বিয়ে করে নিবো আর তুই আদর যত্ন করে আমার ফোড়া সাড়িয়ে দিবি। ”

দেবিকার মাঝে মাঝে পাগলামী গুলো খুব ভাল লাগে আমার। ওর বাড়ি ভার্সিটি থেকে ২ ঘন্টার পথ তাই এখানের হোস্টেলেই থাকে। আমরা এই বছর থার্ড ইয়ারে পড়ি আর সামনের ১টা বছর হয়ত একসাথে থাকবো। কিন্তু আমার মা তো দেবিকাকে আবার হেব্বি ভাল লাগে। কে জানে কি অাছে ভবিষ্যতে? তবে এবার ওরে একটু জ্বালাবো।কিছুদিন পরে, রাতে শুয়ে শুয়ে দেবিকার কথাই ভাবছি আর তখনই মহারাণীর ফোন আসলো। কেন জানি ওর ফোন আসলে আমার মুখে হাসি ফুটে উঠে হুমম দেবিকা বল এতো রাতে ফোন দিলি। না রে আসলে একটু আগে বাবা ফোন দিছিল।

এটা তো খুব ভাল কথা কিন্তু কি কথা হলো যে তোর মুখের ১০০ ভোল্টেজের হাসি ০.০১ ভোল্টেজের হয়ে গেল। আসলে বাবা জানতে চেয়ে ছিল আমি কোন ছেলেকে লাইক করি কি না। যদি আমি কাউকে লাইক না করি তাহলে ওনি আমার জন্য ছেলে দেখা শুরু করবে। এতে মুখ টিউবলাইট করার কি দরকার? তুই বলে দে আমার কথা, এমনিতে আমার জন্য অনেক মেয়েই পাগল। হুমম তোরে বিয়ে করি আর তোকে সবাই বলুক ” বাদরের গলায় মুক্তার মালা। ওই একদম পচাঁবি না। হি হি হি তুই আলু না পটল যে পচাবোঁ। ধ্যত তোর সাথে কথাই বলবো না। ও বাদর মশাইয়ের আবার ভাব ধরা হচ্ছে।

দেখ আমি ভাব দেখাই না আর যদি বলিস ভাব নেই তাহলে ভাব এটা আমার একটু বেশিই আছে হুমম জানা আছে। এবার বল কালকের সব পড়া কমপ্লিট হইছো তো। না রে। তা পড়া শেষ হবে কেন? ক্লাসে দুই একটা গাধা না থাকলে কি চলে? পড়া না পারলেও আমি পাশ। কেমন করে? কারন পরীক্ষার মাঝে আমার সামনের সিটে তুই আছিস তো। কোন কুলক্ষণে যে তোর পরে আমার রেজিশস্ট্রেশ করছি। হি হি হি একদম হাসবি না বাদর। ঘুষি দিয়ে দাতঁ ভেঙ্গে দিবো। সমস্যা নেই আমাদের বিয়ের পর আমার জন্য স্যুপ রান্না করিস তাহলে দাতঁ ছাড়াই খেতে পারবো।

আমার বয়েই গেছে তোকে বিয়ে করতে। এখন ফোন রাখ তো। ওকে জানু টা টা ওরে যে আমি ভালবাসি এটা পাক্কা কিন্তু ও কি আমায় ভালবাসে।ও আমার অনেক কেয়ার করে তবে ভালবাসে কি না জানি না। ভার্সিটিতে গেলে ১ ঘন্টার মাঝে কথা বলে ৫ মিনিট আর ৫৫ মিনিট মনে হয় বই পড়ে। ও যে কেমন করে আমার বন্ধু হয়ে গেল।তবে ওর মুখ থেকে আমি ভালবাসি কথাটা বার করেই ছাড়বো।

সকালে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠলাম। তবে এবার কোন ফোনের আওয়াজে নয় বরং এলার্মের আওয়াজে।এখন সাড়ে ৫ টা বাজে আর এখন যদি হেটেও দেবিকার হোস্টেলের সামনে যাই তাহলে ১৫ মিনিট লাগবে। তাই আর লেট না করে আমার ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে বেড়িয়ে পরলাম।

এখন ওর হোস্টেলের বাইরে দাড়িয়ে দাতঁ ব্রাশ করছি।মোবাইল টা বের করে ফোন দিলাম দেবিকাকে। একটু লেট করে ফোনটা রিসিভ হলো কিরে রাজ এত্তো সকালে? রাতে কি ঘুমাস নি নাকি। ঘুমাইছি। এখন আপাতত তোর হোস্টেলের বাইরে দাড়িয়ে আছি। সত্যি। হুমম। ও কথা না বলে ওর জানালার সামনে আসলো। আর আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলো।তখন আমিই বললাম দোস্ত শীতের শুরু তো হয়েই গেল। চল না শীতের নতুন হাওয়ার মাঝে একটু হাটতেঁ বার হই। হুমম কিন্তু গেটে তো তালা।

আমি যতদূর জানি তুই খুব ভাল ফল চুরি করতে পারতি গাছে উঠে। আর এই সামান্য দেয়াল টপকাতে পারবি না।ও আমার কথার জবাব না দিয়ে ফোনটা কেটে দিলো। আমি শিউর ও আসছে। ২ মিনিট পরেই ও গেটের সামনে চলে আসছে। গায়ে হালকা একটা চাদর মুড়িয়ে আসছে আর হাতে ব্রাশ। আর খুব সহজেই দেয়ালটা পার হয়ে গেলা। আমি হলেও পারতাম না এতো সহজে পার হতে। দুইজনেই পাশাপাশি হাটছি আর দাতঁ ব্রাশ করছি। ভালই লাগছে ওর পাশে হাটতেঁ। তবে ওরে তুই নয় বরং তুমি করে ডাকতে ইচ্ছা করছে। কিরে রাজ তুই বাসা থেকে ব্রাশ নিয়ে আসলি কেন?

আমাকে কে যেন বলছিল যখন আমি ফ্রী থাকবো তখন যেন ছোট ছোট কাজ গুলো করে নেই। বুঝলাম। হুমম বুঝলে বুঝ আর না বুঝলে তরমুজ। মানে? না এটা কথার কথা আর কি? ও আচ্ছা। দেবিকা তোরে একটা কথা বলার ছিল রে। কবে থেকে আমার সাথে কথা বলার পারমিশন নেওয়া শুরু করলি? আসলে কথাটা খুব সিরিয়াস। বাদর গুলো সিরিয়াস হয় কখনো, জানতান না তো। দেখ মজা করলে কিন্তু বলবোই না। ওকে আমি চুপ এবার বল।

আমি তোর মায়ের ভাইয়ের দুলাভাইয়ের ছেলের বোনের জামাই হতে চাই। হাচ্চিঁ… কি হলো রে? না মনে হয় ঠান্ডা লাগছে। কি বলছিলি আবার বল? কিছু না। চল তোরে হোস্টেলে দিয়ে বাসায় চলে যাই। আজ তো ক্লাস আবার নয়টা থেকে। বাহ্ কত্তো বুঝিস তো। চল এতখনো রিকশা চলাচল শুরু হয়ে গেছে তাই একটা রিকশা নিলাম। হয়ত দেবিকা কথাটা শুনছে আর বুঝতেও পারছে কিন্তু আপাতত ও রিলেশন চায় না তাই কোন রকমে এড়িয়ে গেছে।

দেবিকাকে নামিয়ে দিয়ে আমি বাসার উদ্দেশ্যে চলে আসলাম। কিন্তু আমি এত্তো সহজে ওর পিছু ছাড়বো না।এভাবে দিন গুলো ভালই কাটছিল তবে দেবিকার প্রতি আমার ভালবাসা বাড়ছিল। কিন্তু ওরে বুঝাতেই পারছিলাম না। তবে এবার একটু মজা করবো। দেখি ও আমায় কতটা বুঝতে পারে। রাতে শুয়ে আছি তাই ভাবলাম দেবিকাকে একটা ফোন দেই। ও কখনো প্রথম রিং এ ফোন ধরে না তাই একটু লেট করেই ফোনটা ধরলো হুমম রাজ বল। তোরে একটা নিউজ দেওয়ার জন্য ফোন দিলাম।

হুমম বল। কাল আমি অর্পিতার সাথে দেখা করবো। অর্পিতা এটা আবার কে? ও তোরে তো বলায় হয় নি। অর্পিতা এই ভার্সিটিতেই পড়ে তবে আমাদের জুনিয়র। আমার সাথে ফেসবুকে পরিচয়। তো দেখা করার কি দরকার? না একটু বুঝার চেষ্টা কর তো।

সামনের বছর ফাইনাল ইয়ারে পরীক্ষা দিবো আর এতো দিনে একটা প্রেম করতে পারি নি। তাই ভাবলাম একটা প্রেম করি। প্রেম করবি তুই কিন্তু আমায় কেন ফোন দিলি? ভার্সিটির কোন কাজে আমি একা কোথাও গেছি তুই বল? তো আমি কি করবো? কাল আমার সাথে যাবি। পারবো না। এটা তুই বলতে পারলি। আমার মত শিশুর কপালে একটা জি এফ জুটলে তো অন্তত এক সাথে বসে হরলিক্স খেতে পারতাম। ওকে যাবো। এমন ছাগলামী বাদ দে। এই জন্যই তো তোরে এত্তো ভালবাসি।

ভালবাসিস নাকি ছাই। ভালবাসিস বলেই অন্য মেয়ের সাথে দেখা করতে যাবি। কিছু বললি? না তুই ফোন রাখ আর আমায় পড়তে দে। নিজে তো পড়ার নামে বাদরামী করিস। হুমম বায়। ফোনটা রেখে দিলাম। মোবাইলটা থেকে কেমন যেন পুড়া পুড়া গন্ধ পাচ্ছিলাম। আরে না, ফোনের ওপাশ থেকে কারো রাগের পুড়া পুড়া গন্ধ পাচ্ছিলাম। যাই হোক, আপাতত এইটুকু তো বুঝলাম যে ও আমার জন্য একটু হলেও দুর্বল। আর অর্পিতা আমার খুব ভাল ফ্রেন্ড। ও জানে যে আমি দেবিকাকে প্রপোজ করবো।

সকালে ভার্সিটির গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি কিন্তু দেবিকা আসতে লেট করছে। ওরে ফোন দিয়ে বললাম আমার সাথে আজ ভার্সিটি আসতে কিন্তু ও বলল ওর নাকি কি কাজ আছে? একটু পর দেবিকাকে আসতে দেখলাম আর আমার কাছে আসতেই বলল তোর গার্লফ্রেন্ড কোথায় রে? দেখা করাবি না। একটু তারাতারি দেখা করা তো, আমার একটি তাড়া আছে। কেন কোথায় যাবি?

আসলে অনেক দিক ধরে ভাবছিলাম বাসায় যাবো কিন্তু কিসের টানে যেন যেতে মন চায় নি। তাই আজ ভাবলাম একটু যাই। ও আচ্ছা চল। দেবিকাকে নিয়ে ভার্সিটির গার্ডেনের দিকে গেলাম কারন অর্পিতাকে ওইখানেই আসতে বলছি। কাছে যেতেই দেখি অর্পিতা দাড়িয়ে আছে। হাই অর্পিতা। হ্যালো। এই যে এটা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড দেবিকা। হ্যালো দেবিকা দি। ( দেবিকা কোন উত্তর দিল না বরং ভাব নিলো) অর্পিতা শুনো যার জন্য তোমায় এখানে ডেকেছি তা তো বলতে দাও। পরে দেবিকার সাথে পরিচয় করে নিও।

হুমম বলো। আসলে আমি তোমায় ভা ঠাস (ক্রেডিট টু দেবিকার সাইড থেকে চড়টা গালে পড়লো) কিরে মারলি কেন? কিছু না সরি। আমি চলে যাচ্ছি, আর কখনো আসবো না তোদের মাঝে। আরে শুনে তো যা। কি শুনবো? আমায় মারলি কেন?

জানি না। মাফ করে দিস। মারার তো একটা কারন আছে। বলতে পারি না। কেন জানি খুব কষ্ট হচ্ছিল? তোর কেন কষ্ট হবে? তোরে এতো কেয়ার কেন করি জানিস না? প্রতিদিন কেন ফোন দিয়ে বকবক করি জানিস না। ভালবাসিস আমায়। হুমম তবে বলসি না কেন? আমি চাই না আমাদের রিলেশনের কারনে তোর পড়ালেখাটা খারাপ হোক। আমি চাই ভবিষ্যতে তুই ভাল কিছু কর।

হুমম বুঝলাম। কি বুঝলি তুই? তাই তো আজ অন্য কাউকে প্রপোজ করছিস। আমাকে আগে করে আবার আরেকটা মেয়েকে প্রপোজ করছিস তাই আমার সহ্য হচ্ছে না। ওরে প্রপোজ করতে আনি নি। তোর মুখ থেকে ভালবাসি শুনবো বলে নাটক করছি। আর অর্পিতা তোমায় ধন্যবাদ নয়ত বুঝতেই পারতাম না আমার এমন একটা ব্রিলিয়েন্ট গার্লফ্রেন্ড আছে। অল দি বেস্ট তোমাদের।

বলেই অর্পিতা চলে গেল আর দেবিকা ওর ভেজা চোখ গুলো আমার শার্টে মুছার চেষ্টা করছে। হুমম মুছো মুছো তোমার বাবার ফ্রি রুমাল তো আমি।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত