রাগী বাবুনি

রাগী বাবুনি

রাত প্রায় ১২:২৩ বাজে রিহানের ফোনে কল আসে কিন্তু ওই সময় রিহান তার এক বন্ধু রায়হানের সাথে কথা বলতেছিলো । তার পাগলী ছিলো একটা, ওই পাগলীকে রিহান বাবুনি বলেই ডাকে । পাগলী তখন কল দেয়, যখন রিহান তার বন্ধুর সাথে ফোনে কথা বলছে । এতো রাতে ফোন ওয়েটিং পেয়ে বাবুনি তো রেগে আগুন । রাগাটা স্বাভাবিক, কারণ রিহানের থেকেও মেয়েটা তাকে বেশি ভালোবাসে ।
.
বন্ধুর সাথে কথা শেষ করে রিহান তার বাবুনিকে কল দেয় । কিন্তু একি ফোন তো রিসিভ করছেনা । রিহানের বুঝতে বাকি রইলো না, বাবুনি রাগ করেছে । ৭ বার কল দেয়ার পর ফোন অফ করে দেয় মেয়েটা ।
.
রিহান মনে মনে ভাবে কি করবে এখন, কিছুই তো মাথায় আসছেনা, ধুর ছাই । যাক প্রায় ৩০ মিনিট পর ফোন অন করে বাবুনি । এবার প্রথমবার কল দেয়ার পরই রিসিভ করে। রিহান ভালো করেই যানে ওর ভালোবাসার মানুষ, ওর সাথে বেশিক্ষণ থাকতে পারেনা রিহানেরও একই অবস্থা। । একি রিসিভ করার পর মনে হচ্ছে ফোনের ওপাশ থেকে আগুনের তেজ আসছে ।
.
কল দিছেন কেন (বাবুনি)
জানি ওয়েটিং পেয়ে রাগ করে আছো (রিহান)
এতো রাতে আমার ফোন ওয়েটিং পেলে কি করতেন আপনি (বাবুনি)
এক বন্ধুর কল আসছে, তাই ওর সাথে কথা বলছি (রিহান)
কথা বলার অনেক মানুষ আছে,আমাকে কল না দিলেও থাকতে পারবেন , বাই (বাবুনি)
.
এই বলেই ফোন কেটে দিয়ে বন্ধ করে দিলো বাবুনি । যখন বাবুনি রাগ করে, তখন রিহানকে আপনি করেই সম্ভোধন করে । বাবুনির মুখে এই আপনি করে বলাটা আবার রিহানের খুব অপছন্দ ।
.
যাক তারপরও এখন সব সহ্য করতে হবে । কারণ খুব রাগী মেয়ে । একটু থেকে আরেকটু হলেই হাত কাটবে, খাওয়া বন্ধ করে দিবে । এদিকে রিহান তার বাবুনিকে খুব ভয় পায় । তাই রাগ উঠলে যাই হোক, রিহান কিছু বলেনা । চেষ্টা করে কিভাবে সহজে রাগ ভাঙ্গানো যায়।
.
প্রায় ৬ মাস আগে তাদের পরিচয় হয় । এই অল্প সময়ে একজন আরেকজনকে খুব ভালোবেসে ফেলেছে। এক মুহুর্ত কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারেনা । মনে হয় ওদের মধ্যেই পৃথিবীর সব ভালোবাসা। একে অন্যের জন্য এই ভালোবাসা উজাড় করে দেয় সব সময় । দুইজন দুইজনার খুব কেয়ারিং করে সব ব্যাপার। এভাবে কেটে যাচ্ছে তাদের দিন ।
.
একটু দুষ্টামি, হাসি ঠাট্টা, রাগ অভিমান । আবার একজন রাগ করলে আরেকজন ভাঙ্গানো এটাই তাদের কাজ । দেখা হলেই হাতে হাত রেখে কথা বলা, বাবুনির সেই মিষ্টি হাসিটার প্রেমে বারবার পড়া, সবকিছু খুব ভালোভাবে কাটছে ।
.
যাক সবকিছুর পর ফোন অন করে একটা মেসেজ দেয় বাবুনি । মেসেজ টি হলো, রাতে খাওয়া খেয়ে ঘুমাই যাইয়েন তাড়াতাড়ি ।
.
তার মানে বাবুনির রাগ কিছুটা কমেছে এই চিন্তা করে খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ে রিহান। বাবুনির কথা না শুনলে আবার কপালে দুঃখ আছে আমার। তাই ওর কথা মতো খাওয়া খেয়ে ঘুমাইলাম ।
.
সকালে আরেকটি মেসেজ আসলো । ঘুমঘুম চোখে মেসেজ দেখে লাফ দিয়ে উঠলাম । কারণ বাবুনির মেসেজ । তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে কলেজের সামনে দাঁড়াও ।
.
তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম কলেজের সামনে, কিন্তু ১ ঘন্টা দাঁড়াই থাকার পর উনি আসলো এবং এত্তোগুলো বকা দিলো । চুপচাপ দাঁড়িয়ে শুনে গেলাম । সব বকা শেষ করে বললো “আই লাভ ইউ” এবং হাত ধরে কলেজের পুকুরপাড়ে গিয়ে দুজন পাশাপাশি বসলাম ।
.
তখন মনে হলো আমিই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষ । পৃথিবীর সব ভালোবাসা আমার জন্যই ।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত