ভালোবাসার থিউরি

ভালোবাসার থিউরি

আচ্ছা তুই সবসময় আমার উপর অকারনে রাগ করিস কেন বলতো?”
অদ্রি মেয়েটা কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। সৃষ্টিকর্তা মেয়েদের কপাল হয়তো নরম মাটি দিয়ে বানিয়েছে।বিরক্তির আভা কপালে প্রকাশ পায়। ছয়-সাতটা ভাঁজ পড়বেই।  অদ্রির বেলায়ও তাই হলো।ভালোই লাগে দেখতে। তাইতো ওর কথার জবাব না দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মতো চেয়ে চেয়ে দেখছি।

“কথা বলছিস না কেন?কথা বলবিনা?”
আর চেয়ে থাকতে পারলাম না।বিরক্তিটা রাগে রুপ নিতে পারে মূহুর্তেই।
“রাগকি সৃষ্টিকর্তা শুধু মেয়েদের দিয়েছে?
“না তা না।তবে তুই আমার উপর অকারনে রাগ করলি কেন?
“মানুষ তার উপরই অকারনে রাগ করে, যাকে সে ভালবাসে।’
“ওমা… সুন্দরতো। এটা কি তোর নতুন থিওরি?
“না।…
“তোর কাব্যিক কথাবার্তা বাদ দে। গল্প লিখতে লিখতে তোর মাথাটাই গেছে।বল রাগ করছিলি কেন?না বললে এবার আমি রাগ করবো।
“করলে করতে পারেন।আপনার রাগ ভাঙানোর জন্য কালো টি-শার্ট পরা ছেলেটা আসবে।
“ওরে আল্লাহ… তুই তাহলে সকালে অভির সাথে কথা বলতে দেখেছিলি?আরে ওতো আমার সেই ছোট বেলার বন্ধু।একই স্কুল থেকে SSC দিয়েছিলাম।
“ও… স্যরি।যে ভাবে কথা বলছিলি আমি ভেবেছিলাম…
“কি?
“কিছুনা।
“আচ্ছাা একটা কথার ঠিকমতো উত্তর দিবি?
“কি?
“আমি কোন ছেলের সাথে কথা বললে তুই এমন করিস কেন?’
……
প্রশ্নটা অনেক কঠিন ছিল।উত্তর দিতে পারতাম না।তাই বাসায় চলে এলাম।বাসায় এসে অনেক ভাবলাম।আচ্ছা ও অন্য ছেলেদের সাথে কথা বললে আমার কি? আমার খারাপ লাগে কেন? আমার হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় কেন?আমি যেমন অদ্রির ভাল বন্ধু তেমন আরো কয়েকজনও তো বন্ধু থাকতে পারে।তবে আমার কেন এতো মাথাব্যথা?
কোন উত্তর খুঁজে পাইনি।
বিকেলে রুমমেট সজীব আসলে ওর সাথে বিষয়টা শেয়ার করি।
ওর উত্তরটা ছিল এমন,
”এর নাম ভালবাসা।তুই প্রেমে পড়েছিস।একটা ছেলে যখন কোন মেয়ের প্রেমে পড়ে তখন মেয়েটার সব কিছুই ভাল লাগে।মেয়েটাকে একান্ত ভাবে কেয়ার করতে চায়।দ্বিতীয় কোন ছেলের সাথে মেয়েটাকে দেখলে ঈর্ষান্বিত হয়।গুন্ডা টাইপের ছেলে হলে ওই ছেলের মাথা ফাটিয়ে দেয়। আর তোর মতো ভদ্র ছেলে হলে নিরবে জ্বলে যায়… “তবে সজীবের কথা যুক্তি আছে।কিন্তু অদ্রিতো আমার শুধুই ভাল বন্ধু।নাহ মেলাতে পারছি না।

অদ্রি মেয়েটা কল দিয়েই যাচ্ছে…
কিন্তু কি করবো বুঝতে পারছি না।এভাবে কিছু না বলে উঠে আসা ঠিক হয়নি। নিজেকে জেল পলাতক আসামি মনে হচ্ছে। কয়েকটা কল মিস দেওয়ার পর একবুক সাহস নিয়ে কোনমতে রিসিভ করে কানে তুললাম। ওপাশ থেকে অদ্রির শান্ত কন্ঠ ভেসে এলো,
“তুই কিছু না বলে এভাবে চোরের মতো পালিয়ে এলি কেন?
“এমনি।
“এমনি না।আমি জানি তোর কাছে কোন উত্তর ছিল না।আচ্ছা সত্যি করে বলবি তুই আমাকে ভালবাসিস?”

মেয়েরা সত্যিই সৃষ্টিকর্তার তৈরী অদ্ভুত এক জীব।যেসব প্রশ্নের উত্তর হয়না সে সব প্রশ্ন বার বার করতে পছন্দ করে।উত্তর খোঁজার ব্যার্থ চেষ্টা করে। দুপাশে নিরবতা বিরাজমান। আমার কাছে কোন উত্তর নেই আর ওর কাছে হয়তো কোন প্রশ্ন নেই।নিরবতা ভেঙে ও বলল,”কিছু বলছিস না কেন?নিরবতাই কিন্তু কিছু কিছু প্রশ্নের পজেটিভ উত্তর হয়ে যায়।তার মানে আমি “হ্যা” ধরে নিবো?”জানিনা।
“আমি যা বুঝার বুঝে গেছি।তবে আমি এখন থেকে রাগ করলাম।
“আরে আরে কেন?
“আপনার থিওরি ‘মানুষ তার উপরই অকারনে রাগ করে,যাকে সে ভালবাসে।’
“তুই কি …?
“‘ তুই’ করে বলবা না।আজ থেকে ‘তুমি’ করে ডাকবা। ok???’
…মেয়েটা আমার উত্তরের অপেক্ষা না করে লাইন কেটে দিল।নাহ ভুল শুনিনি।  সত্যিই মেয়েটা রাগ করেছে। থিওরিটা খারাপ নাতো।ভালই………

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত