আড়াই প্যাচেঁর প্রেম

আড়াই প্যাচেঁর প্রেম

— তোমাকে সকালে মেয়েটা ফুল দিয়ে গেল কেন?

একটা কঠোর রাগ নিয়ে নিত্তিয়া আমাকে প্রশ্নটা করলো। আর ওর রাগ করাটা স্বাভাবিক কি না এটা নিয়ে আমি ভাবছি? অন্য মেয়ে আমায় ফুল দেওয়ায় তো ওর কিছু যায় আসে না।অবশ্য গত এক মাস আগে আমি নিত্তিয়ারে ২৩টা গোলাপ দিয়ে প্রপোজ করে ছিলাম। কিন্তু মহা রাণী এখন এতো জ্বলে কেন? কোথায় যেন শুনে ছিলাম মেয়েদের রাগালে নাকি ভালবাসা বাড়ে। তাহলে দেখাই যাক।
— আরে ওই মেয়েটা আমাকে লাইক করে তো আর কিছুদিন আগে ভালবাসা দিবস গেল না আর আমিও তো কাউকে সময় দিতে পারি নি। তাই হয়ত কষ্ট পেয়ে ফুল দিয়ে গেছে।
— ওই কাউকে বলতে মানে কি? কয়জনের সাথে এইসব চলছে।
— দেখো নিত্তিয়া আমার মনটা একটা লুকাল বাসের মত।সেখানে আমি সবাইকেই জায়গা দেই।
— ওই দেখো এইসব কিন্তু ঠিক হচ্ছে না।
— ও মা তুমি এতো জ্বলো কেন?
— আমি জ্বললে তোমার সমস্যা কি? তুমি তো সব সময়ই আমাকে জ্বালাও।
— হুমম আজ বুঝলাম সবাই আমাকে কেন হাইড্রোজেন বলে?
— কেন?
— আসলে রাজ নিজে জ্বলে না বরং অন্যকে জ্বলতে সাহায্য করে। পুরোপুরি ভাবে হাইড্রোজেনের কাহিনী।
— ওই আবার কাকে তুমি জ্বালাও।
— ও মা বললাম না আমার মনটা লুকাল বাসের মত।
— চুপ করো। আজকের পর থেকে কারো হাত থেকে ফুল নিলে তোমার খবর আছে?
— আচ্ছা কয়টার খবর?
— তুমি না…
— কি আমি??
— ধ্যাত তোমার সাথে কথা বলাটাই অযুক্তিগত।
আর কথা না বাড়িয়ে নিত্তিয়া আমার রুম থেকে চলে গেল। নিত্তিয়া আর আমরা একই বাসায় থাকি তবে আমরা দুই তলায় আর ওরা ৪ তলায়। নিত্তিয়ারা যে দিন ৪ তলায় ভাড়া আসে আমি ওইদিনই নিত্তিয়াকে ইন ডাইরেক প্রপোজ করে ছিলাম। আসলে আমি মজা করে প্রপোজ করে ছিলাম কিন্তু সেই মজাটা যে এমন ভাবে আস্তে আস্তে রিয়েল হয়ে যাবে সেটা ভাবি নি। নিত্তিয়ার সাথে প্রথম দেখায় প্রপোজটা ঠিক এই রকম ছিল…..
নিত্তিয়া ছাদে দাঁড়িয়ে বাসার আশে পাশের রাস্তা গুলো দেখছিল আর আমি পিছন থেকে ওরে ডাক দিলাম।
— এই যে তুমি কি এই বাসায় নতুন?
— হুমম কিন্তু আপনি?
— আমাকে তুমি করেই বলতে পারো।
— আপনাকে আমি চিনি না আর আপনি আমার বড়ও হতে পারেন তাই তুমি ডাকবো না।
— আমি রাজ আর এই বিল্ডিংয়ে ২য় তলায় থাকি। আর আপাতত লেখাপড়া শেষ করে বাবার হোটেলের ম্যানেজারি করছি।
— ও তার মানে বেকার।
— বেকার এভাবে বলবে না। আসলে বেকার হয়ে থাকাটাও একটা আর্ট যা অন্য কেউ পারে না।
— হুমম থাক, এটা যদি আর্ট হয় তাহলে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর কয়েক লক্ষ বেকার পুরস্কার পেতো।
— যাই হোক, এখন থেকে আমায় তুমি করেই ডাকবে।
— সরি আপাতত এটা পারবো না। যখন পরিচিত হবো তখন ডাকবো কি না ভেবে দেখবো?
— ওকে আই লাভ ইউ।
— মানে?( একটা শক খেয়ে)
— আরে যদি কোন মেয়েকে খুব তারাতারি পরিচিত করতে চাও তাহলে তাকে প্রপোজ করে দাও। অন্তত এতে মেয়েটা তোমার সম্পর্কে জানতে কৌতুহলি হবে। তাই প্রপোজ করে দিলাম।
— হা হা হা এটা কেমন থিউরি।
— আপাতত এটা রাজের থিউরি।
— হুমম আপনি থাকেন আমি গেলাম নয়ত পাগল করে ছাড়বেন।
— হুমম যাও কিন্তু একদিন তুমিই আমায় তুমি করে ডাকবে।
আর কোন কথা না বলে নিত্তিয়া চলে গেছিল। অবশ্য এরপর আস্তে আস্তে পরিচয় হতে হতে নিত্তিয়া আমায় তুমি করেই ডাকে।তবে তখন মজা করে প্রপোজ করাটা এখন ও হয়ত আমায় ভালবাসে আর আমিও মন থেকে ভালবাসি কিন্তু সব কিছু ভেবে প্রপোজ করা হয় না। তবে ২য় প্রপোজ করে ছিলাম গত মাসে নিত্তিয়ার জন্মদিনে। কিন্তু কিছুই লাভ হয় নি।
.
সকালে নিত্তিয়ার ছোট ভাই নিলয়ের সাথে বাসার বাইরের খেলছিলাম। তখন নিত্তিয়াও সেখানে আসলো। আমাকে দেখে একটা ভাব নিয়ে বলল….
— ব্যাট ধরতে পারো নাকি যে ক্রিকেট খেলছো।
— না তো পারি না। তুমি একটু শিখিয়ে দাও না।
— দাও দাও ব্যাট টা দাও।
— নাও (ওর দিকে ব্যাট টা বাড়িয়ে দিলাম)
নিত্তিয়ার ভাই নিলয়ের হাত থেকে বলটা নিয়ে নিলয়কে চলে যেতে বললাম। তারপর নিত্তিয়াকে বললাম…
— নিত্তিয়া তুমি রেডি তো।
— একদম।
আমি বল না করে বলটা নিচ তলার জানালায় মেরে এক দৌড় আর নিত্তিয়া ব্যাট হাতে দৌড়ে পালাতে গিয়েও ধরা খেয়ে গেল। তারপর যা হয় আর কি? বিচার গেল নিত্তিয়ার ফ্ল্যাটে আর বকাও খেলো।
.
বিকালে ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এক ফ্রেন্ডের সাথে মোবাইলে কথা বলছিলাম। তখনই মহা রানীর আগমন। আমার দিকে এমন একটা ভাব নিলো যে আমায় চিনেই না।ও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে চলে যাচ্ছে তখন আমি ওরে ডাক দিলাম।
— এই যে মহা রাণী কেমন লাগলো সকালের বকা গুলো?
— হুহ কারো হাসির জন্য বকা খাওয়াও একটা আর্ট। যা তুমি বুঝবে না।
— তাই বুঝি।
— হুমম আচ্ছা রাজ আমার একটা কাজ করে দিবে?
— কি কাজ?
— যদি বলো করে দিবে তাহলে বলবো?
— ওকে করে দিবো এবার বলো।
— আসলে আমার ক্লাসের কিছু এসাইন্টমেন্ট করা হয় নি। একটু করে দিবে।
— ও এই ব্যাপার এই গুলো তো আমার বাম হাতের কাজ।
— কেন তোমার ডান হাত বুঝি ভাঙ্গা?
— আরে না, এটা তো কথার কথা।
— আচ্ছা তুমি তাহলে রুমে যাও আমি এসাইন্টমেন্ট গুলো নিয়ে আসছি।
— ওকে।
আমি আর না দাঁড়িয়ে রুমে চলে গেলাম। প্রায় ১০ মিনিট পর নিত্তিয়া আসলো। ওর হাতে ৫টা বই আর অনেক গুলো পেজ। মনে তো হচ্ছে গত ছয় মাসের এসাইন্টমেন্ট করাবে আমাকে দিয়ে। আমার তো গলার পানি শুকাতে শুরু করেছে আর মন বলছে ” রাজ এবার তোমার হয়ে গিয়েছে। এবার সামলাও সকালের বাঁশ”। কেন যে সকালে মেয়ের পিছনে লাগতে গেলাম।
— হুমম রাজ এই গুলো করে দাও না।
— কয়টা এখানে?
— মাত্র ২৫টা।
— ২৫টাই।
— হুমম আজ রাতেই শেষ তারিখ। আর কালই জমা দিতে হবে। একটা বজ্জাত ছেলের প্রেমে পরে লেখাপড়া আর করা হয় নি তাই সব এসাইন্টমেন্ট জমে গেছে।
— সেই মহান ছেলেটা কে?
— তুমি।
— ও আমি, ভাল ভাল। ওই আমি মানে? তুমি কি বলছো এইসব?
— হুমম ঠিক বলছি এবার একটু কষ্ট করে এগুলো করে দাও। বয়ফ্রেন্ড দিয়ে এসাইন্টমেন্ট লেখানোর সৌভাগ্য কয়টা মেয়ে পায় বলো তো। আমি তো কাল ভার্সিটি গিয়ে জোর গলায় বলবো আমার বয়ফ্রেন্ড বিয়ের আগেই আমার কাজ করে দেয় আর বিয়ের পর কত কাজ করে দেবে আহা্..।
— পারবো না। যার বিয়ে তার খবর নাই,…. ( কথাটা শেষ করতে না দিয়ে নিত্তিয়া বলল)
— এক মাত্র রাজের ঘুম নাই। আর তোমাকে পারতেই হবে কারন তুমি আমায় কথা দিয়েছো কাজ গুলো করে দিবে।
— সেটাই তো, কেন যে না শুনে কথা দিলাম।
— হুমম লেখো বাবু লেখো। আমি তোমার জন্য গরম কফি নিয়ে আসছি। আজ তো আমার জন্য সারা রাত তোমায় জাগতে হবে।
— Don’t show আলগা পিড়িত।
— ওকে তুমি কাজ করো আর আমি চুলে তেল দিয়ে আসছি। কাল ভার্সিটি যাবো একটু রূপ চর্চা তো করতেই হবে।
— হুমম যাও।
নিত্তিয়া হাসতে হাসতে চলে গেল। আমি আজ পর্যন্ত এতো গুলো এসাইন্টমেন্ট নিজের জন্যও করি নি। এখন তো আমার সাড়ে সাতি লেগে গেল। এই কান ধরছি আর কোন দিন নিত্তিয়া কেন কোন মেয়ের পিছনেই লাগবো না ।
.
সব লেখা শেষ করতে করতে আমার ৪টা বেজে গিয়ে ছিল। আর এর মধ্যে আমি ৮ কাপ কফি খেয়ে ছিলাম। সব কিছু ঘুছিয়ে রেখে ভোরের দিকে ঘুমিয়ে পরি।
সেই ঘুম থেকে উঠি দুপুরে, তাও কারো পানির ছিটায়। তাকিয়ে দেখি নিত্তিয়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আরে এই মুসিবত রাতে আমায় ঘুমাতে দেয় নি আর এখন এখানে কি?
— কি হলো এখন আবার ঘুম ভাঙ্গালে কেন?
— আরে তোমায় ধন্যবাদ দিতে এসেছি।
— হুমম এবার যাও।
— ওকে।
তারপর আবার ঘুমিয়ে যাই। তারপর বিকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে ছাদে যাই। তারপর খেয়াল করে দেখি নিত্তিয়া চোখ মুছতেছে। আমি ওর সামনে যেতেই ও আমার থেকে ওর মুখটা পিছনে লুকিয়ে নেয়।
— কি হলো কান্না করছো কেন?
— কই না তো?
— আমার থেকে কিছু লুকাতে চাইলেও পারবে না লুকাতে।
— হুমম ঠিকই বলছো। তবে কিছু কিছু জিনিস চোখের সামনে পেয়েও বুঝতে পারো না।
— ঠিক বুঝলাম না।
— আজ আমাদের ভার্সিটিতে আমাদের বিভাগে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল আর তার সাথে এসাইন্টমেন্ট জমা দেওয়ারও শেষ তারিখ ছিল। তাই সকালে শাড়ী পড়ে ভার্সিটি গিয়ে ছিলাম। সবাই অনেক অনেক কথা বলল কিন্তু যাকে দেখানোর জন্য শাড়ী পরে ছিলাম সেই তো ঘুমিয়ে ছিল। কিন্তু যখন দুপুরে তাকে পানির ছিটা দিয়ে ঘুম থেকে তুলে ছিলাম তখনও সে খেয়াল করলো না। এটাই হয়ত আমার প্রাপ্য ছিল। আসলেই মেয়েদের মন কেউ বুঝে না এইটা বলবো না। তবে হ্যা মেয়েদের বুঝার চেষ্টাই কেউ করে না।
— আসলে আমি তো ঘুমিয়ে ছিলাম। আর তাছাড়া ঘুম চোখে তো এতো কিছু বুঝা যায় না।
— ওই আমি কি একবারও বলেছি তোমাকে দেখাবার জন্য আমি শাড়ী পরে ছিলাম।
— কিন্তু আমিই তো ঘুমিয়ে ছিলাম।
— দুপুরে কি তুমি ছাড়া অন্য কেউ ঘুমায় না?
— তাও তো ঠিক।
— তুমি সত্যি একটা উজবুক।
— হুমমম মানে….
নিত্তিয়া আর ছাদ না দাড়িয়ে চলেই গেল। শেষ বলে গেল উজবুক। আচ্ছা উজবুক মানে কি?যাই হোক, এটার মানে তো আমি জানি না তাই যেটাই হোক আমার কি?তবে ও কাকে দেখাবার জন্য শাড়ী পরে ছিল।
.
রাতে সবার সাথে বসে ডিনার করছি তখন বাবা বলল…
— কিরে আর কতদিন বেকার থাকবি? এবার কিছু একটা কর?
— বাবা চাকরীর পরীক্ষা তো দিচ্ছি কিন্তু টিকলেও টাকা ছাড়া চাকরী হয় না।
— তাহলে আমার ব্যবসায়ও তো বসতে পারিস।
— হুমমম
— তাহলে কাল সকালে আমার সাথে যাবে।
— হুমম
বাসায় বাবার উপর একটা কথাও বলতে পারি না। তাই চুপ চাপ মেনে নিলাম।
.
রাতের কথা মত সকালে ঘুম থেকে উঠে বাবার সাথে চলে গেলাম। সারা দিন বাবার সাথে থেকে ব্যবসার নিয়ম শিখতে লাগলাম। আসলে বাবাও যে কি পরিমান কষ্ট করে তা আজ বুঝলাম। তবে সারা দিনের ফাঁকে একজন মানুষকে মিস করতে লাগলাম। আর সেই মানুষটা হলো নিত্তিয়া।
আমার তো কাজ করার তেমন অভ্যাস নেই তাই বাবা আমাকে সন্ধ্যায় বাসায় পাঠিয়ে দেয়। বাসায় আসতেই দেখি নিত্তিয়ার মা আমার মায়ের সাথে কথা বলছে। কিন্তু নিত্তিয়ার মা তো টেনশনে আছে মনে হচ্ছে। আমি ওদের সামনে যেতেই।নিত্তিয়ার মা আমার সামনে আসলো।
— রাজ বাবা তুমি কি নিত্তিয়াকে দেখেছো?
— না তো কেন?? ও কোথায়?
— দুপুরে বাসা থেকে বের হয়েছে কিন্তু এখনো বাসায় ফিরে নি।
— ওরে ফোন দিছেন।
— হুমম কিন্তু ওর মোবাইলটা বন্ধ আসছে।
ওনার কথা শুনে আমারই তো টেনশন হচ্ছে। একা একা কোথায় গেল মেয়েটা?
— আচ্ছা আন্টি নিত্তিয়া কোথায় যাবে কিছু বলে গেছে?
— বলল তো ভার্সিটিতে যাবে।
— ওকে আমি আসছি।
আমি আর না দাঁড়িয়ে ভার্সিটির দিকে পা বাড়ালাম। কিন্তু আমি বাসার গেটের সামনে যেতেই দেখি নিত্তিয়া গেট দিয়ে আসছে। ও আমাকে দেখে একটা হাসি দিয়ে আমার সামনে আসলো।
— বাব্বা রাজ সাহেব বাসায় এসেছে? তা কাজের প্রথম দিনটা কেমন ছিল?
— ঠাস ( জোরে মেরে বসলাম) নিজেকে কি ভাবো হে? কোথায় যাও একটু বলে যেতে পারো না আর তাছাড়া মোবাইলটাও তো অন রাখতে পারো। বাসার সবাইকে টেনশন দিয়ে কি মজা পাও হে?
— তোমাকে আজ আমার বরের মত লাগছে?
— মানে?
— মানে কাজ থেকে ফিরে আমায় না দেখে যেন কষ্ট পেয়েছো।
— তুমি কি একটু বুঝবে না? আমার কথা বাদ দাও। আন্টি কতটা টেনশন করছে এটা তো একবার বুঝার দরকার ছিল।
— যাক বুঝতে তো পারলাম কেউ আমায় ভালবাসে।
— চুপ করো তো। এখন বলো কোথায় গিয়ে ছিলে?
— তুমি একটু দাঁড়াও আমি আসছি।
— কোথায় যাচ্ছো?
— দাঁড়াও তো
— ওকে।
নিত্তিয়া দৌড়ে উপরে চলে গেল। আর ৫ মিনিট পরই আবার আমার সামনে আসলো। আর বলল…
— ওই চলো।
— আরে কোথায়?
— চলো তো আর মাকে বলেও এসেছি আমি তোমার সাথে আছি।
— হুমম চলো।
নিত্তিয়া একটা রিকশা নিলো। তারপর রিকশাচালক কে বলল হাসপাতালে নিয়ে যেতে। আমি জানতে চাইলে কিছু বলে নি।
হাসপাতালে এসে রিকশা থামতে ও বলল…
— চলো।
— হুমম।
এরপর নিত্তিয়া আমার হাতটা ধরে “মা ও শিশু কল্যান” ভবনে নিয়ে গেল। সেখানে নবজাতক শিশুদের জন্ম হয়। তারপর একটা কেবিনে নিয়ে গেল। সেখানে একটা গরীব মহিলা নিত্তিয়াকে বলল…
— মা তুমি এখনো বাসায় যাও নি। রাত হয়েছে তো।
— আমার কথা ছাড়ো। দেখো তোমাদের কে দেখতে এসেছে?
আমি ওদের সামনে গেলাম। মহিলাটি হয়ত ভাবলো আমি নিত্তিয়ার স্পেশাল কিছু লাগি।
— বাবা তুমি খুব ভাগ্যবান যে এমন একটা মেয়ে পাইছো।
— হুম।
তারপর নিত্তিয়া আমার কোলে একটা ছোট বাচ্চাকে তুলে দিলো। বাচ্চাটা আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। তারপর সবার সাথে কথা বলে যখন বেড়িয়ে আসলাম তখন নিত্তিয়া আমায় বলল…
— আসলে আমি তিন মাস পর পরই রক্ত দেই। আজ ওদের রক্ত দিয়ে ছিলাম। তাই বাসায় যেতে একটু লেট হয়ে গেছে।
— নিত্তিয়া…
— হুমম বলো।
— কিছু না চলো।
আমি নিত্তিয়ার হাতটা ধরে হাটতে লাগলাম। আমি ওর হাতটা ধরতেই ও আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। সত্যি আমি লাকি এমন একটা মেয়েকে ভালবাসতে পেরে। যে শুধু নিজের জন্য নয় বরং অন্য কারো জন্যও ভাবে। আমি তো শুধু ভাবতাম ও আমায় জ্বালায় কিন্তু এখন তো ঠিক উল্টো নিত্তিয়া।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত