পিছুটান

পিছুটান

-চেহারা দেখেতো বুঝাই যায় না আপনি ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারেন!

আমি:জ্বি! আপনি আমাকে কিছু বলছেন?

,রাগী চোখে মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে!মনে হচ্ছে চোখের সামনে দেশলাইকাঠি ধরলে ধপ করে জ্বলে যাবে!কিন্তু আমি তার রাগ হওয়ার কারনটা বুঝতে পারলাম না!তাই কৌতুহল বসত এগিয়ে গেলাম তার দিকে।
অনন্যা:জ্বি,হ্যা! আপনাকেই বলছি!
কি? মনে করেন কি আপনারা নিজেদের?
আপনাদের মত মানুষদের আমি হারে হারে চিনি!

আমি:আপনার সমস্যটা কি সেটাতো আগে বলবেন?
অনন্যা:সমস্যা আমার নয়! সমস্যাটা আপনার! গত দশ মিনিট ধরে আপনি আমার পিছু নিয়েছেন! কেন? আমাকে কিডন্যাপ করবেন নাকি?
পাচার করবেন অন্য দেশে?

-এরকম কথা হঠাৎ শুনবো বলে আশা করিনি! মনে হচ্ছে পাচারকারীদের সঙ্গে মেয়েটার পুরনো শত্রুতা আছে।
যাইহোক ব্যপারটা সিরিয়াস হওয়ার আগে মিটিয়ে ফেলতে হবে।
না হলে মেয়েটার মতিগতি ভালো লাগছেনা শেষমেষ কিনা পুলিশ ডেকে নিয়ে আসে।

আমি:কেন আমাকে দেখে কি আপনার সেরকম মনে হচ্ছে?

অনন্যা:কোন মনে টনে না! একদম সিওর হয়েই বলছি! হলুদ পাঞ্জাবী,খালি পা নিজেকে সাধু সাজিয়েছেন? তাহলে এক কাজ করতেন গলায়ও মালা পরতেন আরো ভালো লাগতো।
আপনাদের মত এই সাধু টাইপের ছেলেরাই মেয়েদেরকে কিডন্যাপ করে।আমি জানি তো!

আমি:দেখুন আপনি কি জানেন, আর না জানেন তা দিয়ে আমার কোন দরকার নেই!আমার দেড়ি হয়ে যাচ্ছে আমাকে যেতে হবে।

অনন্যা:কি? আপনি আমাকে মসলা লাগাচ্ছেন? আমাকে কি আপনার বেকুব মনে হয়? যেই ধরা পরেছেন ওমনি দৌড় দেয়ার চিন্তা ভাবনা তাই না!
আপনার নাম বলুন আমি আপনাকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেবো।

-এতো মহা মুসকিল! এ মেয়ে সত্যিই আমাকে পুলিশে দেয়ার চিন্তা ভাবনায় আছে কিছু একটা করতে হবে!

আমি:আচ্ছা বেশ! আপনি আমাকে পুলিশে দিয়েন! তার আগে আপনি আমাকে এমন পাঁচটি শব্দ বলেন যেটা দু অক্ষরের এবং প্রথম অক্ষরে আকার এবং চন্দ্রবিন্দু থাকতে হবে।আমি দুটো পেয়েছি যেমন-দাঁত,তাঁত ইত্যাদি।
এখনও তিনটে বাকি আপনি আমাকে বলে দিয়ে পুলিশের হাতে দিয়ে দেন।

অনন্যা:মানে? দাঁত,তাঁত এগুলো কি?

আমি:এটা একটা খেলা। আমাকে এই রকম পাঁচটি শব্দ বের করতে হবে।না পারলে আমাকে হেরে যেতে হবে।তাই বাকি শব্দগুলো পাওয়ার জন্য সামনের ঐ লাইব্রেরীতে যাচ্ছিলাম।আর আপনার খপ্পরে পড়লাম।

অনন্য:আপনার নাম কি?

আমি:হিমু

অনন্যা:এটা আবার কেমন নাম?

আমি:হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা একটি চরিত্র।

অনন্যা:আপনি কি তাহলে নিজেকে বইএর হিরো মনে করেন?

আমি:জ্বি,না! আমি হিমু হতে চেষ্টা করি!

অনন্যা:কেন,হিমু হলে কি লাভ?

আমি: কোন পিছুটান থাকে না!
আমার দেড়ি হয়ে যাচ্ছে! আমাকে যেতে হবে!

অনন্যা:কই যাবেন আপনি?

-আমি আর জবাব দিলাম না সোজা হাটা দিলাম।কারন এখনই সুযোগ এখান থেকে কেটে পরা নইলে এই মেয়ের ঠিক নাই। আবার চিল্লাচিল্লি করবে।

-মেয়েটা পিছন থেকে ডাক দিলো।আমি পিছনে তাকালাম না।কারন হিমুদের পিছন ফিরে তাকানো নিষেধ।এতে পিছুটান বাড়ে যা হিমুদের জন্য ক্ষতিকারক..

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত