বলিনি তোমায়

বলিনি তোমায়

সত্য বলবো নাকি কোন খারাপ সপ্ন বুঝতে পারছি না! কারণ এই বাস্তবতার সামনে দাড়ানোর মতো শক্তি আমার নেই। আমরা তখন বাসা বদলি করে নতুন বাসায় উঠেছি। তো বেশ কিছুদিন হয়েও গেল আমার মা আবার বেশ মিশুক স্বভাবের খুব সহজেই সবার সাথে মিশে যায় পাশের রুমে আরেকটি ফ্যামিলি ছিল তাদের সাথেও মায়ের বেশ ভাল সর্ম্পক ছিল এখান থেকেই আমার গল্পের শুরু। ওদের রুমে খুব সুখি একটা পরিবার ছিল যা আমার বেশ ভাল লাগতো সেই ছোট্ট সুখি পরিবার টিতে একটি মেয়ে ছিল যার নাম র্সণা। সে প্রায় আমাদের ঘরে আসতো মায়ের সাথে দেখা করার জন্য,কখন বা ক্রাম র্বোড খেলত,কখন বা গল্প করতো মায়ের সাথে কেনো যেনো ওর প্রতি একটা ভালো লাগা তৈরি হলো। ও একটু দুষ্টু ছিল আমার সাথে যেদিন প্রথম কথা হয় সেদিনই কেনো যেনো বলে বসলো আমি আপনাকে দাদা বলে ডাকবো আমিও কিছু বলিনি আর ওর এসব দুষ্টুমিতে আমি মোটেও রাগ হতাম না। একদিন রাতে হঠাৎ এসে বললো
র্সণা: এই দাদা আপনি ফেসবুক আইডি খুলতে পারেন?
আমি:হ্যা পাড়ি।
র্সণা: আমাকে একটা আইডি খুলে দিবেন?
আমি:ঠিক আছে দিব মোবাইল দিন দিল আইডি খুলছে না।
র্সণা:কেনো…?
আমি:এই নম্বর থেকে আগে আইডি খোলা হয়েছে।
র্সণা:তাহলে কি খোলা যাবে না?
আমি:যাবে জিমেইল খুলতে হবে ভেজাল আছে সময় লাগবে।
র্সণা: থাক তাহলে ভেজাল করতে হবেনা।
আমি: ঠিক আছে।
এ বলে চলে গেলো আবার কিছুক্ষন পড় এসে বলছে এবার খুলে দিন। তারপর দিলাম একটা ফেসবুক একাউন্ট খুলে তারপর চলে গেল আমি ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে ছিলাম পড় দিন সকালে দেখি আমার নটিফিকেশন বারে আমার সব পোস্ট গুলোত ওর লাইক ! ২-১ দিন পর ওর আইডিতে লগিন করলাম পার্সওয়াড জানা ছিল আমার আর আমার সামনে বের হয়ে এলো আমার জিবনের এক অপ্রিয় সত্য ওর বয়ফ্রেন্ড আছে ! যদিও আমার বন্ধু এ ব্যাপারে আমাকে বলেছিল আমি এসবে কান দেই নি। কিন্তু ওর একাউন্টে ঢুকে দেখলাম ওর বয়ফ্রেন্ডকে ছবি পাঠিয়েছে মেসেজ এ ব্যাপারটা আমার কাছে মোটেও ভালো লাগে নি। তখনো ওকে ভালোবাসি কি না নিশ্চিত ছিলাম না তখনো ওর উপর আমার তেমন কোনো ফিলিংস কাজ করতো না মাঝে মধ্যে ছাদে দেখা হতো ওর সাথে বেশ হাসিখুশি ছিল ও এভাবেই কখন যেনো ভালো লাগাটা ভালোবাসায় মোর নিল বুঝতে পারিনি। তো একদিন কাজ শেষে বাসার পথে যাচ্ছি লাম হঠাৎ ওকে দেখতে পেলাম আচাড় ওর খুব পছন্দ রাস্তায় আচাড় কিনছিলো হঠাৎ আমায় দেখে বলে উঠলো এই দাদা আচাড় খাবেন আমি বললাম আমি আচার খাইনা বলে চলে আসলাম। কেনো যেনো ওর সামনে থাকতে পারতাম না ওর চোখে চোখ রেখে কিছু বলতে পারতাম না কেমন যেনো একটা অস্থিরতা কাজ করতো ওর সামনে গেলে। এভাবেই চলছিল আমার এক তরফা ভালোবাসা একদিন আমার বন্ধু আমাকে বললো তোর সাথে আছে আমি বললাম কি কথা ও বললো ওই যে মেয়েটা র্সণা না কি যেনো নাম মেয়েটা কিন্তু সুবিধান না দেখ দোছ এখন সময় আছে তুই ভুলে যা এই মেয়েকে আমি বললাম এতো সহজ না রে! ভালোবাসা এমনিই হয় আগুন জেনেও আমরা তাতে হাত বাড়াই কারন ওটাতেই আমরা শান্তি খুজে পাই। এভাবেই নিঃর্সাথ ভাবে ভালোবাসা চলেছে তার নিজ নিয়মে। যাই হোক র্সণা আর আমার রুম পাশাপাশি থাকায় আমি জানতাম ও কি গান শুনতে ভালোবাসে তাই সেই গান গুলো আমার প্লে লিস্টে জায়গা করে নেয় ওগুলো তখন আমারো পছন্দের হয়ে যায়। তাই ভলিউম বাড়িয়ে ওর পছন্দের গানগুলো ছেড়ে দেই যাতে ও শুনতে পারে কিন্তু আমি ছিলাম বোকা ! কেনো জানেন আমি যাকে গান শোনাচ্ছি ভাবছিলাম সে বাসার সিড়িতে বসে বয়ফ্রেন্ডের সাথে জমিয়ে কথা বলছে সত্যিকার অর্থে আসল ভালোবাসাগুলো সবার চোখে পড়ে না এভাবেই অসর্ম্পূন থেকে যায়। ওকে নিয়ে অনেক রঙ্গিন সপ্ন ছিল আমার ! তাই কিভাবে ওকে ইম্প্রেস করা যায় সেই পরিকল্পনা করতে লাগলাম। দুই বন্ধু মিলে আমার বন্ধুর মাথায় একটি আইডিয়া এল আমি জানতে চাইলাম কি ও বললো দেখ মেয়েটা আচাড় পছন্দ করে আর তুই ভালো রান্না করতে জানিস তুই এক কাজ কর ওকে একদিন আচাড় বানিয়ে খাওয়া দেখবি শিয়োর পটবে আমি হেসে বললাম প্রয়োজনে তাই করবো। কিন্তু আমরা দেড়ি করে ফেলেছি যেদিন এই প্লান টা করেছি পড়ের দিন ওরা বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছে অন্য কোথাও কি করবো কিছু বুঝতে পারছিলাম না মাথা কাজ করছিলো না। এই দিকে বাবা কাজের বিষয়ে আমাকে এক জায়গায় পাঠিয়ে দিল কিছুতেই কাজে মন বসলো না জলদি ছুটে চলে এলাম বাসায় উদ্দেশ্য ছিল যাওয়ার আগে ওর সাথে একবার দেখা করা। এসে দেখি গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে আমি মনে মনে ভাবলাম নিজেকে শক্ত করতে হবে তাই কথা না বলে ছাদে চলে গেলাম আমার বন্ধু আর আমি ছাদে ছিলাম আমার করার মতো কিছু ছিলো না কারন ওকে আটকানোর কোনো অধিকার আমার নেই। এভাবে চলে গেল। আমার বাবা ওর ভাবিকে জিজ্ঞেস করলো কোথায় বাসা নিয়েছেন এখন…? ওদের কথোপকথনের মাধ্যমে বাসার এড্রেসটা আমার জানা হয়ে গেলো। ২ দিন পর আমি র্সণার মতো কাউকে দেখে পিছু নেই কিন্তু ওটা র্সণা ছিল না। তারপর একটা চায়ের দোকানে বসলাম আর একটু পর দেখলাম ও একটি ছেলের সাথে হেসে হেসে কথা বলতে বলতে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে ! হয়তো এটাই দেখার ছিল ওর জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতাম অনেক কষ্ট হতো তবু একবার ওকে দেখলে সব ভুলে যেতাম যে মানুষ সকাল ১০ টার আগে ঘুম থেকে উঠতে পারতাম না সেই আমি খুব সকালে উঠতাম ও যখন স্কুল যাবে তখন যেনো একবার দেখতে পারি কিন্তু ও আরেক জনকে নিয়ে সুখি আমি ও চাই ও সুখে থাকুক হোকনা সেটা অন্য কাউকে নিয়েএসব আমার কাছে কোনো বিষয় না কারন আমি ওকে ভালোবাসি ওর হাসিতেই আমি খুজে নেবো আমার সুখ এভাবেই কেটে যাবে আমার দিন তোমার সৃতি নিয়ে। আর আগের মতোই দাড়িয়ে থাকবো একবার দেখার জন্য তুমি থাকবে আমার হৃদয়ে।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত