অসমাপ্ত ভালবাসা

অসমাপ্ত ভালবাসা

_আচ্ছা আমাদের ছেলে হবে না মেয়ে?? (মিথিলা)
_তুমিই ভাল জানো,আমি ক্যামনে বলব?? বাচ্চাটাতো তোমার পেটে খেলা করে আমি কি করে বুঝবো?? (অনিক)
_তুমি আসলেই একটা স্টুপিড কিচ্ছু বুঝো না,আচ্ছা বলতে হবে না,তুমি শুধু এইটুকু বলো ছেলে হলে কি নাম রাখবে আর মেয়ে হলে কি নাম রাখবে??
_ছেলে হলে অমি,মেয়ে হলে অথি।
_এইগুলা কেমন নাম? পাশের বাসার ভাবির বাচ্চার দেখ কত্ত কিউট নাম রাখছে আর তুমি কি সব আবল তাবল নাম বলতেছো??
_আরে বুঝলে না?? অনিকের অ,মিথিলার মি =অমি, আর অনিকের অ, মিথিলার থি অথি!
_এইভাইবেতো ভেবে দেখিনি,বাহ অনেক সুন্দর হইছে।
,
কথা হচ্ছিল অনিক আর মিথিলার সাথে,তারা দুজন স্বামী স্ত্রী। তাদের সারাদিন কাটে খুনসুটি আর ভালবাসা দিয়ে।
মিথিলা সারাদিন শুধু বায়না করে আইসক্রিম খাবে আর চকলেট খাবে,যেন সে একটা বাচ্চা।
আর অনিক সেই আবদার গুলো পূরণ করে মিথিলার।কিন্ত মাঝে মাঝে বকা দেয় মিথিলাকে কারণ মিথিলা শুধু আইসক্রিম খায় এই দিকে মিথিলা আবার প্রেগন্যান্ট, অনিকের ভয় যদি মিথিলার ঠান্ডা লেগে যায়!! তাই আইসক্রিম খেতে বারণ করে কিন্তু মিথিলা খুব জেদি মেয়ে সে খাবেই।
মেয়েটার এত জেদ,অনিকের সাথে ওর বাবা মিথিলার বিয়ে দিতে রাজি হয়নি বলে মিথিলা জেদ করে বাড়ী ছেড়ে চলে এসেছে অনিকের কাছে!!
দুজন দুজনকে হেব্বি ভালবাসে তাই তারা দুমিনিটের জন্য কেউ কারো চোঁখের আড়াল হয়না।
,
কিন্তু হটাৎ মিথিলা চিৎকার দিয়ে উঠলো, অনিক নিজেকে সামলে নিয়ে মিথিলাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে অনিকের মাকে ডাকতে লাগলো, অনিকের মা দৌড়ে ছুটে এসে বুঝতে পারলো কি হচ্ছে??
অনিকের মা এম্বুলেন্স ডাকতে বলল,অনিক এম্বুলেন্স নিয়ে আসলো,সবাই হসপিটালে পৌছে গেল।
অনিক ডাক্তার ডাক্তার বলে চিল্লাতে লাগলো,ডাক্তার দৌড়ে এসে মিথিলাকে নিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটারে।
কিছুক্ষণ পর ডক্তর অনিককে বলল আপনি খুব শিগ্রই বাবা হতে যাচ্ছেন।
তখন অনিক একটু চিন্তামুক্ত হয়ে ভাবতে লাগলো……
,
এই মিথিলার জন্যই আমি বেচে আছি,মেয়েটা কই ছিল আর আজ কোথায়?
কিভাবে তার জীবনে এলো!!
মেয়েটা যে কেন এত ভালবাসলো অনিককে অনিক আজও বুঝতে পারলো না।হটাৎ তার এক অনেক পুরনো বান্ধবী অনিককে ডাক দিলো,…
_কিরে তুই এখানে?? (বান্ধবী)
_হুম মিথিলাকে নিয়ে এসেছি (অনিক)
_মিথিলা কে?
_আমার বউ,ও তোকেতো বলাই হয়নি আমি বিয়ে করেছি,আসলে আমার ফোনটা চুরি হয়ে গিয়েছিলো তাই তোকে বলতে পারিনি,আর তর নতুন বাসার ঠিকানাও জানা নেই তাই তোকে ইনভাইট করতে পারিনি,সরি রে!!
_আরে ঠিক আছে ব্যপার না,ভাবিকে নিয়ে এখানে কেন তাই বল!!
_আমাদের বেবি হবে!!
_বলিস কিরে মিষ্টি কই??
_চল যাই তোকে মিষ্টি খাওয়াই
_না এখন না,আগে বল তর মত মনমমরা ছেলে হটাৎ বিয়ে করলি ব্যাপারটা কি?? যে তুই তর লাইফ থেকে তর প্রেমিকা চলে যাওয়ার পর প্রেমই করবিনা বলছিলি সেই তুই কিভাবে বিয়ে করলি তাই বল?
_শুনবি??
_হুম বল!
_আচ্ছা শুন….
তুইতো জানিস আমার গফ আমার লাইফ থেকে চলে যাওয়ার পর আমি coc আর ফেবুতেই বেশি থাকতাম,ফেবুতে আমার গফকে নিয়ে একটি গল্প লিখেছিলাম
# Romantic_love_story_গল্প পেইজে সেই থেকে পেইজটা আমার খুব ভাল লাগে তাই ঐ পেইজের গল্পগুলা পড়তাম আর দুএকটা কমেন্ট করতাম!
সেইখান থেকে একটা মেয়ে আমায় রিকু পাঠায়,সে আমায় বার বার লেখক বলে,আমি তাকে বার বার বলি যে আমি লেখক নই তবুও সে বার বার একই কথা বলে।
যাইহোক সেইখান থেকে আমাদের বন্ধুত্ব হয়,আমি আমার সব কিছু ওরে খুলে বলি,আমার এক্স গফ সমন্ধেও।
ও আমার ছ্যাকা খাওয়ার গল্প শুনে প্রেমে পরে যায় এবং প্রপোজ করে,আমি ওরে বার বার ফিরিয়ে দিতে দিতে একদিন আমিও ওর প্রেমে পরে যাই।
তারপর ফোনে কথা বলা দেখা করা।মান অভিমান, ঝগড়া ভালবাসা এভাবেই চলতে থাকে!!
হটাৎ একদিন মিথিলা ফোন দিয়ে বলতেছে অনিক তুমি কই??
আজকে আমায় দেখতে আসছিলো তুমি তারাতারি আমার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাও।
আমিও আমার ফ্যামিলির মতামত নিয়ে আমার ফুফাতো ভাইকে নিয়ে গেলাম ওদের বাসায়।
গিয়ে প্রস্তাব দিলাম কিন্তু ওর বাবা রাজি হল না,কারণ আমি বেকার ছিলাম।
তারপর মিথিলা আমার সাথে চলে এল ওর ফ্যামিলি ছেড়ে তারপর বিয়ে করলাম এখন হসপিটালে….
,
হটাৎ কান্নার আওয়াজ আসলো ভিতর থেকে,ডক্তর বলল মি. অনিক আপনার মেয়ে হয়েছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় আপনার স্ত্রীকে আমরা বাচাতে পারলাম না।
,
এক বছর পর….
_বাবা তুই আবার বিয়ে কর (মা)
_না মা এ হয়না,আমার পক্ষে সম্ভব না (অনিক)
_কেন বাবা??তুই অথির কথা একবার ভেবে তুই আবার বিয়ে কর!!
_মা! আমি পারব না এ সম্ভব না।আমিই অথির মা,আমিই ওর বাবা।
তুমি দেখ অথির কোন কষ্ট হবে না।
(ওলে আমার বাবু শোনা,আমার আম্মু!! মা! মা! তুমি দেখেছো অথি একদম ওর মায়ের মত হয়েছে!! ওলে ওলে আমার পুচকি আম্মু!!)
,
এভাবেই অনিক বেচে থাকতে চায় মিথিলার শেষ স্মৃতি অথিকে নিয়ে!

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত