কিছু স্বপ্ন কিছু আশা

কিছু স্বপ্ন কিছু আশা

জয়– Sorry sorry আমার আসতে দেরি হবার জন্যে ।
সামিয়া– ( মুখ ভার করে) তুমি তো সব
সময়ই দেরি করে আসো।
এটা আবার নতুন কি।

জয়–আচ্ছা রাগ করেছো।
sorry বললাম তো বাবু।
সামিয়া–আচ্ছা ঠিক আছে।
জয় –এখন বলো কেনো ডাকলে।
সামিয়া– ( চোখে পানি নিয়ে) বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে।

আজকে বাবা বাসার সবাইকে জানালো। আমি মাকে বলেছি আমি বিয়ে করবো না। জয় প্লিজ কিছু করো।
আমি তোমাকে ছারা অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবো না। প্লিজ জয়।

জয়-(জয় চুপ করে রইলো)
সামিয়া– কি হলো কিছু বলো।
জয়– কি বলবো।
সামিয়া– কি বলবা মানে।
জয় — আচ্ছ আমাকে একটু ভাবতে দাও।
সামিয়া– জয় আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে আর তুমি এখন ভাববে।
তুমি তো বলছো সব সময় তুমি আমার পাশে থাকবে।

জয়– থাকবো তো।
একটু ভাবতে দাও।
আচ্ছা এখন চলো উঠি,,
আমার একটা কাজ আছে।
বিকালে আমি তোমার সাথে দেখা করবো।
তখন বলবো কি করবো কেমন।
এখন চলো।

তারপর জয় চলে গেলো। আমি জয়কে ভালোবাসি।
অন্য কাউকে বিয়ে করার,,,
কোনো ইচ্ছা নেই আমার।
আমি ভেবে রেখেছি,,,
আমি জয়কে বাবার কাছে নিয়ে
যাবো ।
আমি বলবো আমাদের ভালোবাসার কথা।
তারপরেও যদি বাবা রাজি
না হয় তাহলে আমি জয়ের সাথে
চলে আসবো।

আর তা ছারা জয়ের ফ্যামিলিতে
আমাকে নিয়ে কোনো প্রবলেব
হবে না।
কারন জয়ের বাবা মা আর ভাইয়া
সবাই আমাদের রিলেশনের কথা
জানে।
তারা তো আমাকে খুব,,,
পছন্দ করে।

যাই হোক আমার এখন,,,
কিছুই ভালো লাগছে না।
আমি জয়কে হারাতে চাই না।
আমার সব স্বপ্ন গুলো জয়কে,,
নিয়েই সাজানো।
আমি জানি জয় আমাকে অনেক,,,
ভালোবাসে।
জয় নিশ্চয়ই কিছু,,,
একটা ভেবে আমাকে জানাবে।

কারন জয় তো আমাকে হারাতেই,,
দেবে না।
জয় তো আমাকে কথা দিয়েছিলো।
ও সব সময় আমার পাশে থাকবে।
আমাকে ওর বউ বানাবে।
এগুলো ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে এলাম।
বাসায় এসে দেখি আমার বিয়ের,,,
তোরজোর শোরু হয়ে গেছে।
আমার এগুলো দেখে ভালো,,
লাগলো না।

আমি দরজা বন্ধ করে শুয়েছিলাম।
বিকালে যখন বের হবো।
তখন জয়ের কাছে ফোন দিলাম।
কিন্তু জয়ের ফোনটা বন্ধ বললো।
অনেকবার ফোন দিলাম।
তারপরও বন্ধ পেলাম।
ভাবলাম ফোন বন্ধ করে চার্জে রেখে
দিয়েছে।

যাই হোক আমি জয় এর
বড় ভাই এর কাছে ফোন দিলাম।
সামিয়া- হ্যা আসসালামু আলাইকুম।
ভাইয়া– অলাইকুম আসসলাম কে সামিয়া?
সামিয়া– হুম ভাইয়া।
ভইয়া– কি খবর তোমার।
সামিয়া– ভালো। ভাইয়া
ভাইয়া– হুম বললো।
সামিয়া– জয় কোথায়।
মানে ওকে অনেবার ফোন দিলাম।
কিন্তু ফোনটা বন্ধ পাচ্ছি।
ওকি বাসায় আছে।

ভাইয়া– না ওতো এই মাত্র বাসা থেবে বেরিয়ে
গেলো।
মনে হলো পারার ক্লাবের দিকে গেছে।
সামিয়া– ও আচ্ছা।
ঠিক আছে ভাইয়া পরে কথা হবে।
আসসালাম আলাইকুম।
রাখি।

তারপর ফোনটা কেটে দিলাম।
আমি ভাবলাম আমি নিজেই,,,,
ওর ক্লাবের দিকে যাই।
যেই ভাবনা সেই কাজ।
মনটা ছটফট করছে।
কখন জয়ের ডিসিশনের কথা জানবো।
আমি রেডি হয়ে বের হলাম।
জয় জানে না আমি ওর ক্লাবের,,,
আসতেছি।

আমি ক্লাবে ডুকলাম।
চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম,,,
জয় ওর ফ্রেন্ডস দের নিয়ে,,
কেরাম খেলছে।
দুর থেকে দেখে মনে হলো,,
খুব আনন্দে আছে জয় ।

সামনে এগোতেই শুনতে পেলাম,,,
ওরা আমাকে নিয়েই কথা বলছে।
আমি দাড়িয়ে গেলাম।
ওরা কি বলছে শোনার জন্যে।
জয়ের এক বন্ধু মানে সোহাগ
ভাই বললো..

সোহাগ –কিরে জয় সামিয়াদের বাড়িতে
শুনলাম বিয়ে।
তুই কি কিছু জানিস।
জয়– আরে হ্যা জানি।
আজকে সামিয়া বলছে আমাকে
ওর নাকি বিয়ে ঠিক করেছে।
আমাকে বললো কি করবে এখন।
আমাকে হাাড়াতে চায় না এগুলো বললো।

সোহাগ — তা তুই কি বললি।
জয়– কি আর বলবো।
বলছি আমি ভেবে নিয়ে তোমায় জানাবো।
সোহাগ- ওহ তা কি ভাবলি।
জয়– আরে কি আর ভাববো।
ভাবার কিছু আছে নাকি।
দেখছিস না ফোনটা অফ রেখেছি।

সোহাগ- মানে।
জয়—আরে মানে টানে কিছু না।
প্রেম করেছি বলে কি বিয়ে
করতে হবে নাকি।
কতো মেয়ের সাথেই তো প্রেম করেছি,,
তাই বলে কি ওদের বিয়ে করেছি নাকি।

আর সামিয়া চায় আমাকে বিয়ে করতে।
আর এমুহুর্ত আমি কোনো
বিয়ে করতে পারবো না।
আমার বিয়ের বয়স
হইছে নাকি বল।
সোহাগ – দোস তাই বলে সামিয়ার সাথে
এমন টা করবি।
জয়–আরে কি করলাম আবার।
আমি কি ওর কোনো ক্ষতি করছি
নাকি।
প্রেম করেছি ওর বাড়ি থেকে বিয়ে
ঠিক করেছে।
ব্যাস এখন ব্রেকআপ।

আমার পক্ষে ওকে নিয়ে পালানো
সম্ভব নয়।
তাছারা আমি শুধু প্রেম করেছি।
তবে কখনো ভাবিনি যে ওকে আমি বিয়ে করবো।

সোহাগ—- দোস কি বলছিস এসব।
সামিয়া তোকে কতো বিশ্বাস করে
কতো ভালোবাসে।
দেখ সামিয়ার সাথে এমনটা
করিশ না ।
এই সময় ওর পাশে তোর থাকা উচিত।
আর তাছারা তোর পরিবারে সবাই,,
তো সামিয়াকে পছন্দ করে।
তুই সামিয়াকে বিয়ে করলে তোর,,,
কোনো প্রবলেম হবে না।

জয়— আরে বাদ দে দোস।
ভালো করে কেরাম খেল।
একটা গেলে একটা পাবো।
বিশ্বাস কর সামিয়াকে বিয়ে করার
কোনো ইচ্ছা নেই আমার।
ভালো লেগেছে তাই প্রেম করেছি।
তাই বলে বিয়ে করে লাইফটা নষ্ট করতে
চাই না।
আমার লাইফে এখনো কতো কিছু
করার বাকি আছে।

জয় এর এই কথা গুলো
শোনার পর বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো।
এতোদিন তাহলে আমি মরিচিকার পিছন
ছুটে বেরিয়েছি।
এতোদিন আমি একটা টাইমপাসের
গুটি ছিলাম।
আমার চোখ গরিয়ে পানি পরতে রইলো।
আমি চলে যেতে রইলাম।
কিন্তু না এভাবে চলে যাওয়া ঠিক হবে না।
জয়কে কিছু বলা উচিত।

আমি জয়ের সামনে গিয়ে দাড়ালাম।
আমার চোখ ভরা পানি।
সামিয়া– বাহ জয় বাহ খুব ভালো ছিলো
তোমার অভিনয়।
আমি এতোটাই বোকা যে তোমার
অভিনয়টা এতোদিন ধরতে পারিনি।

আমি তোমার জন্য আমার বাবাকে
ছেরে আসতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু সেই ভুলটা আমি আর
দ্বিতীয় বার করবো না।
তোমাকে একটা কথা না বলে পারছি না।
আরে তুমি তো আমার থেকেও বোকা।
তুমি কি হারালে তা তুমি
নিজেও জানো না।
ভালো থেকো।

আর হ্যা আমার মতো করে
অন্য কাউকে এভাবে ধোকা
দিও না।
তোমায় আমি ক্ষমা করবো কিনা জানিনা।
তবে আল্লাহ তোমায় ক্ষমা করলে হয়।
আজ থেকে জয় নামটা আমার জীবন থেকে
মুছে ফেললাম।

আমি তোমাকে ঘৃনা করি জয়।
I hate you
I just hate yoy.
কথা গুলো বলে চলে এলাম।
নিজেকে বড় অসহায় মনে হচ্ছে।
ইচ্ছা করছে কিছু একটা করে
নিজেকে শেষ করে ফেলি।

কিন্তু জয়ের ঐ কথা গুলো মনে,,,
পরে তখন মনে হয় যে।
না ওর মতো প্রতারক এর জন্য,,,,
মরে যাওয়াটা হবে বোকামি।
আমি এতোটাও বোকা হতে চাই না।
খুব কষ্ট হচ্ছিলো আমার।

আকাশের দিকে তাকিয়ে
আল্লাহ বলে একটা চিৎকার দিয়ে
বললাম কি দোস ছিলো আমার।
আমার সাথে কেনো এমনটা
হলো।
তুমি আমায় নিয়ে যাও।
আমার আর ভালো লাগছে না।

আমি এতোটাও বোকা হতে চাই না।
খুব কষ্ট হচ্ছিলো আমার।
আকাশের দিকে তাকিয়ে
আল্লাহ বলে একটা চিৎকার দিয়ে
বললাম কি দোস ছিলো আমার।

আমার সাথে কেনো এমনটা
হলো।
তুমি আমায় নিয়ে যাও।
আমার আর ভালো লাগছে না।
পৃথিবীটা খুব অচেনা মনে হতে,,
লাগলো।
মনে হলো এতোটা বোকা,,,
আমি কি করে হলাম।
আমার ভালোবাসায় তো,,
কোনো খাত ছিলো না।
তাহলে কেনো আমার সাথে
এমনটা হলো।

ওকে তো নিজের চেয়েও বেশি
বিশ্বাস করেছিলাম আমি।
আর আজ আমি সে বিশ্বাস এর ফল
পেলাম এভাবে।
চোখের পানি মুছে বাসায় এলাম।
বাসায় অনেক মানুষ।
কিছু কিছু মেহমান এখন থেকেই আসা
শুরু করলো।

বাসায় আসতেই কতোগুলো কাজিনরা
আমাকে গিরে ধরেছে।
তারা আমাকে বিভিন্ন কথা বলছিলো
দুলভাই দেখতে কেমন আরো বিভিন্ন
কথা।

আমি কারো কথার কোনো জবাব দিলাম না।
চুপ করে রইলাম।
জবাব দিবো কি করে আমি তো
ঐ ছেলেটার মুখই দেখেনি।
কেমন দেখতে তাতো জানি না।
মা আমাকে পাত্রের একখানা,,
ছবি দিয়েছিলো।
আমি ছবিটি দেখিনি।

আর দেখবো বা কি করে,,
আমি তো ওই ছেলে কে নিয়ে।
ঘর বাধার স্বপ্ন দেখি নাই।
স্বপ্ন তো দেখেছিলাম জয় কে নিয়ে,,
সে আজ সব কিছু এতো সহজে ভুলে গেছে।
থাক এসব কথা।
তারপর আমি আমার ড্রয়ার থেকে,,,
ছবিখানা বের করে দিয়ে।
বোনদের হাতে দিয়ে চলে এলাম।

বাসা ভর্তি মেহমান।
তাই একটু একা থাকার জন্য
ছাদে চলে এলাম।
রাত হয়ে গেছে।
আকাশটাতে অনেক মেঘ জমেছে।
একটু পরেই বৃষ্টি নামলো।
বৃষ্টির সাথে আমিও কাঁদতে রইলাম।
ভাগ্যে হাতে আমি জীবনটাকে
ছেরে দিলাম।
ভাবতে রইলাম।
যা হবে নিশ্চই ভালোই হবে।

জয়ের জন্য নিশ্চয়ই আল্লাহ আমায়
সৃষ্টি করেনি।
যার জন্য পৃথিবীতে
আসা সে নিশ্চয়ই আমার জন্য
এতোকাল অপেক্ষা করেছে।
আমি আর ভুল করবো না।
আমি তাকে ভালোবাসার
চেষ্টা করবো।

আমি আর জয়ের কথা ভাববো না।
কথাগুলো ভাবতে রইলাম।
জয় এর জন্য তো বাবা মা সব,,
ছারতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু সেই জয় সবার আগে,,
আমায় ছেরে দিলো।

নিজের পছন্দ করে তো,,
জীবনে অনেক বড় ভুল করলাম।
এখন বাবার পছন্দের ছেলে কে,,
বিয়ে করে দেখি কি আছে কপালে।

এরপর দেখতে দেখতে,,
দিন গুলো চলে যাচ্ছিলো।
বাবা মা সবার সাথে বাকি দিন গুলো,,
হাসি খুশি তে থাকতে চাচ্ছি।

জানি না কতোটা খুশি থাকতে পেরেছি,,
তারপর ও ভালো থাকার অভিনয় টা।
দিন দিন ভালোই শিখে গেছি।

তারপর কিছুদিনের মধ্যে
আমার বিয়ে হয়ে গেলো।

আজ আমার বাসর ঘর।
আমি অচেনা একটা বাড়িতে
ফুল সাজানো একটা খাটে
অনেক সেজে গুজে বসে আছি।
যা হচ্ছে তা আমি চাইনি কখনো।
গোমটার মধ্যে চোখের পানি অনুভব
করলাম।

একটু পর রুমে কেউ ডুকলো।
আমি চোখের পানি মুছে
ফেললাম।
দরজা বন্ধ করার শব্দ পেলাম।
তারপর একটু হাটার শব্দ
পেলাম।
বুঝতে রইলাম।
লোকটা আমার কাছেই আসছে।
আমার কাছে এসে বসলো।

আমাকে বললো
আবির — তুমি তোমার ঘোমটা টা খুলতে পারো।
আমি ঘোমটা খুললাম।
আমার সামনে যে বসে আছে।
সে এতো সুন্দর।
আমি আমার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিনা।
আল্লাহ কতো সুন্দর করে
ওকে বানিয়েছে।
নীল পাঞ্জাবিতে ওকে
একদম রাজকুমার এর মতো
লাগছিলো।

তারপর ও বলে উঠলো
আবির– তোমার নাম কি? ?
আমি ওর কথা শুনে কিছুটা
অভাক হলাম।
যাকে বিয়ে করলো
তার নাম জানে না।
অবস্য আমিও তো ওর নাম জানিনা।
আমি নাহয় অন্য কারনে ওর নাম
জানি না।

কিন্তু ও কেনো জানে না।
এভাবে ভাবতে রইলাম।
তারপর ও আবার বলে উঠলো।
আবির — কি হলো তোমার নামটা বলো।
সামিয়া– ওহ হ্যা সামিয়া আমার নাম সামিয়া।
আবির– আমার নাম আবির।
সামিয়া– ওহ।

আবির– আচ্ছা তুমি ঘুমিয়ে পরো।
অনেক জার্নি করে এসেছো।
এখন ঘুমিয়ে পরো।
আমাদের বাসায়
আবার খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হয়।
সামিয়া– আচ্ছা ঠিক আছে।

আবির– আর হ্যা তোমার যদি ভারি
গহনা শারি পরে ঘুমাতে কষ্ট
হয় তাহলে এগুলো খুলে ঘুমাতে পারো।
সামিয়া — আচ্ছা ঠিক আছে।
কিন্তু আপনি ঘুমবেন না।
আবির– ঘুমাবো তুুমি ঘুমাও আমি পরে ঘুমাবো।
আর হ্যা তুমি আমাকে তুমি করে
বলতে পারো।
সামিয়া– ওকে

তারপর আমি শুয়ে পরলাম।
মনে মনে ভাবতে রইলাম
আবির মনে হয় খুব ভালো
ছেলে।
আল্লাহ আমায় বেষ্ট একটা
স্বামি উপহার দিলো।
আমি কিছুটা হলেও খুশি হয়েছি।

গল্পটি পড়ার জন্য অনুরোধ রইলো,
আশা করি ভালো লাগবে…

তারপর আমি শুয়ে পরলাম।
মনে মনে ভাবতে রইলাম
আবির মনে হয় খুব ভালো ছেলে।
আল্লাহ আমায় বেষ্ট একটা স্বামি উপহার দিলো।
আমি কিছুটা হলেও খুশি হয়েছি।

আবির এর কথা মতো শুয়ে পরলাম।
খাটের চারিপাশ রজনিগন্ধা ফুল
দিয়ে সাজানো।
পুরো ঘরে ফুলের গন্ধে ভরে উঠেছে।
আমার জয়ের কথা মনে পরে গেলো।
জয় সব সময় বলতো আমাদের,,,
বাসর ঘরটা রজনিগন্ধা ফুল,,,
দিয়ে সাজানো হবে।

কারন জয় জানতো আমি,,,
রজনিগন্ধা ফুল খুব পছন্দ করি ।
তাই ও এগুলো সব সময় বলতো।
আর আমি বলতাম রোজ রাতে,,,
যখন তুমি কাজ শেষে বাসায় ফিরবে।
তখন আমার জন্য রজনিগন্ধা,,,
ফুল নিয়ে আসবে।

আমি আমাদের বিছানার মাথার,,,
কাছে ফুলের টপে সাজিয়ে রাখবো।
আর জয় ঠিক রাজি হয়ে যেতো।
তখন তো বুঝি নি।
ওগুলো ছিলো আমাকে,,,
পটানোর জন্য জয়ের ধান্দা।
জয় ওগুলো মন থেকে বলেনি।
তা তখন যদি একটু বুঝতে পারতাম।
তাহলো আর ওর দেখানো স্বপ্নগুলো
আমি আর দেখতাম না।

কথাগুলো ভাবতেই চোখের বেহায়া,,,,
পানি গুলো বালিসটাকে ভিজিয়ে দিলো ।
কাঁদতে চাই না আমি।
আমি ভালো থাকতে চাই।
জয়ের কথা ভাবতো চাই না আমি।
এভাবে এটা সেটা মনকে বলতে রইলাম।

হঠাৎ সিগারেট এর গন্ধে ঘরটা
ভরে গেলো।
আমি উঠে বসলাম।
দেখলাম বেলকুনির দিক থেকে,,,
ধোয়া আসছে।
আমি বেলকুনির দিকে গেলাম ।
গিয়ে দেখি আবির বসে বসে সিগারেট
খাচ্ছে ।

আমি বলে উঠলাম
সামিয়া– শোনোন ??
আবির আমার কথা শোনে
হতচোকিয়ে দাড়িয়ে পরে। ।
আর হাত থেকে সিগারেটা ফেলে দেয়।

তারপর বললো
আবির– একি তুমি ঘুমাও নি???
সামিয়া– না ঘুম আসছিলো না ।
আবির–ওহ
সামিয়া– একটা কথা বলবো।
আবির– বলো
সামিয়া– আচ্ছা আপনি সিগারেট খান কেনো।

আবির– কেনো খাই তা তো জানিনা।
সামিয়া– আমার বাবা কি বলে জানেন।
আবির– কি বলে।
সামিয়া–বাবা বলে যারা ধুমপান করে,,,
তারা ভালো লোক হয়ে না।
তারা পচা লোক।
আবির– তাই।
সামিয়া– হুমম।
জানেন সিগারেট এর,,,
ধোয়াতে আমার শ্বাস কষ্ট হয়।

আবির— ওহ। ।
আচ্ছা Sorry আর কখনো,,,
তোমার সামনে সিগারেট খাবো না।
সামিয়া– ঠিক আছে কিন্তু? ?
আবির– আবার কিন্তু কিসের।
সামিয়া–আপনারও তো সিগারেট খেলে ক্ষতি হবে।
আমি জানি সিগারেট মৃতু্ ঘটায়।

আবির– আমি বেঁচে থাকলে খুব বেশি
যে ভালো হবে তাতো নয়।
সামিয়া– মানে
আবির — ও কিছু নয়।

তারপর তোমার কথা বলো।
কোন ক্লাসে পরো তুমি।
সামিয়া– সে কি আপনি তা জানেন না।
আবির– নাহ মানে ব্যস্ততার,,,
কারনে জানা হয়নি।
সামিয়া– আমি ভর্সিটিতে পরি ফার্স্ট ইয়ার
আবির– ওহ খুব ভালো।
সামিয়া– আচ্ছা আপনি কি করেন? ?
আবির– আমি ডাক্তার।
সামিয়া– কি? ?

আবির– কেনো তোমার ডাক্তার স্বামি
পছন্দ নয়।
সামিয়া– না একদম পছন্দ নয়।
আবির– তাহলে।
সামিয়া–আমার তো অগুছানো ছেলে খুব
পছন্দ।
তার চুল গুলো সব সময় এলোমেলো থাকবে।
আর আমি আমার হাত দিয়ে,,,
তার চুৃল গুছিয়ে দিবো।
সে পারা ধাপিয়ে বেরাবে।
ঘুরি উরাবে।
মাঝে মাঝে তার বাইকে করে আমায়,,,
সমুদ্র দেখাতে নিয়ে যাবে।

সে প্রতিদিন আমার জন্য,,
রজনিগন্ধা ফুল নিয়ে বাসায় ফিরবে।
কথা গুলো বলতেই চোখ গরিয়ে পানি
পরতে রইলো।
আমি পিছন ফিরে দেখি আবির কার,,,,
সাথে যেনো ফোনে কথা বলতেছে।
তার মাানে এতোক্ষন ও আমার কথা
শোনেনি।
আমি চোখের পানি মুছে রুমে চলে এলাম।
একা একা কাঁদতে কাঁদতে,,,,
ঘুমিয়ে পরলাম।

সকাল বেলা আবির এর
ডাকে ঘুম ভেংঙে গেলো।
আবির– এই যে এই মেয়েটা।
ধুরো নামটাও তো মনে পরছে না।
এই যে মৌমাছি না,,
না প্রজাপতি ধুর।
এই মেয়ে উঠো।
আমি আবির এর এই,,,
এলোপাথাড়ি কথা শুনে জেগে গেলাম।
আমি উঠে বসলাম।

আবির বললো নামাজ পরবে না।
সামিয়া– হ্যা পরবো।
সকাল হয়ে গেছে।
আবির– হ্যা সকাল হয়ে গেছে।
আমি তো নামাজ পরতে যাচ্ছি,,,
তাই ভাবলাম তুমিও যদি নামাজ,,
পরো তাই তুলে দিলাম।

সামিয়া– আচ্ছা আপনি নামাজ পরতে
যান।
আমিও ফ্রেস হয়ে নামাজ,,
পরে নিছি।
আবির– ওকে।
আচ্ছা দরজাটা বন্ধ করে রাখো।
আমার আসতে দেরি হবে।
সামিয়া– আচ্ছা।

আবির চলে গেলো।
এভাবে কখনো সকাল বেলা,,,
ঘুম থেকে উঠা হয়নি আমার।
আমি নামাজ পরলাম।
নামাজ শেষে বেলকুনিতে,,,
গিয়ে দাড়ালাম।
হালকা রোধে চারদিক
যেনো সূর্যের চাদরে ঢেকেছে।
আমি রান্না ঘরে এলাম।
সবার জন্য সকালের নাস্তা
তৈরি করতে রইলাম।
আমার শাশুরি নামাজ শেষে
রান্না ঘরে আমাকে দেখে খুব
অভাক হলো।

তবে বুঝতে পেরেছি সে খুব খুশি
হয়েছে।
আমি খুব ভালো চা বানাতে পারি।
আমার শাশুরি বললো আমার শ্বশুর,,,
বসার ঘরে বসে পেপার পরছে।
তাকে চা দিতে বললো।

আমি আমার শ্বশুরকে চা দিলাম।
একটুপর আমার ননদ ঘুম
থেকে উঠে এলো।
আমি তাকেও চা দিলাম।
আমার ননদের নাম আরফা।
আরফা তো আমার হাতের চা
এর অনেক প্রশংসা করলো।
সবাই খুব অল্প সময়ের মধ্যে,,,
আমাকে আপন করে নিলো।
আমার মনে মনে ভাবতে
রইলাম কতো ভালো এই পরিবারের
মনে হয় মা এর কথা আবির এর সহ্য হয় না।
আর মা এর সাথে বেশি কথাও
বলেনা আবির।
কিন্তু কেনো? ?
ব্যাপারটা আমার চোখে
ভালো লাগলো না।
নাহ হয়তো আমি ভুল কিছু ভাবছি।
যাক গে ..

আবির তারপর বেরিয়ে পরলো।
বাইরে বের হবার আগে অবস্য
ও আমার ফোন নাম্বারটা
নিয়ে গিয়েছিলো।
আমি বেলকুনিতে গিয়ে দাড়ালাম।
হঠাৎ আমার ফোনটা বেজে উঠলো।
ফোনের স্কিনে জয়ের নামটা ভেসে
উঠলো।

জয় ফোন দিয়েছে।
না আমি জয়ের ফোন ধরবোনা।
ও একটা প্রতারক।
আমি ওর কন্ঠটাও শুনতে চাই না।
ঘৃনা করি আমি ওকে।
আমি ফোনটা অয়াস রুমে নিয়ে
এসে পানির বালতির ভেতর ফেলে
দিলাম।

না থাকবে আমার ফোন আর
না জয় পারবে আমায় কল দিতে।
সারাদিন একা একা কাটিয়ে দিলাম।
মাঝে মাঝে মা এর রুমে গিয়ে মা এর সাথে
গল্প করেছি। দিনটা কেটেই গেলো।
রাতে আবির বাসায় আসলো।

এসে আমায় বললো
আবির– এই যে তোমার নামটা যেনো কি।
সামিয়া– মানে
আবির– আরে কি যেনো তোমার নাম।
মৌমাছি নাকি প্রজাপতি।
আমি মলিন মুখে একটুখানি হাসি
দিয়ে বললাম।

সামিয়া– ভুলে গেলেন আমার নাামটা।
আচ্ছা কোনো ব্যাপার না।
আজ থেকে আপনি আমাকে একটা
নাম দিয়ে দিন।
আমার আগের নামটা না হয় তোলা রইলো।
আবির– ওকে..
আমি তেমাকে প্রজাপতি নামটা
দিলাম।
এটা বলেই ডাকবো।
সামিয়া– আপনার যা ইচ্ছা।

আবির—ওহ হ্যা তোমার ফোনটা
অফ ছিলো কেনো। বাসায়
একটা ফাইল রেখে গেছিলাম ।
তাই তোমায় ফোন দিলাম।

আজ থেকে আপনি আমাকে,,,,
একটা নাম দিয়ে দিন।
আমার আগের
নামটা না হয় তোলা রইলো।
আবির– ওকে..
আমি তেমাকে প্রজাপতি নামটা
দিলাম।
এটা বলেই ডাকবো।

সামিয়া– আপনার যা ইচ্ছা।
আবিট—-ওহ হ্যা তোমার ফোনটা,,
অফ ছিলো কেনো।
বাসায় একটা ফাইল রেখে গেছিলাম,,
তাই তোমায় ফোন দিলাম।

কিন্তু পেলাম না।
সামিয়া– নাহ মানে ফোনটা পানিতে,,
পরে গেছে।
ওটা আর কাজ করছে না।
আবির– ওহ।
তারপর সবাই রাতের
খাবার খেতে এলো।

আরফা বললো
আরফা– ভাবি তোমার মনটা
কি খারাপ।
সামিয়া– নাতো।
আরফা– তাহলে কি ভাবছো।
সামিয়া,– কই কিছু নাতো।
আরফা–শোনো সবাই কাল আমার কলেজে
ফাংশন আছে।
আমি ভাবছি ভাইয়া ভাবি সেখানে যাবে।
আমার বন্ধুদের সাথে তোমাদের আলাপ
করিয়ে দিবো।

আবির কথাটা শোনে এক কথায় বলে দিলো
যাবে না।
কিন্তু আরফার জোরা জোরিতে,,
যেতে রাজি হলো।

তারপর রাতে আবির আমাকে বললো,,
তোমার কি ইচ্ছে আছে।
আরফার কলেজ যাবার।
সামিয়া– হঠাৎ এই কথা কেনো বললেন,,
আবির — কারণ তোমার মন টা অনেক,,,
খারাপ দেখছি তো তাই।

সামিয়া – ওহ তেমন কিছু না,,
আমি যাবো।

পরে দিন আমরা ফাংশনে এলাম।
কলেজে আসার পর আরফা ওর,,
বন্ধুদের সাথে আলাপ
করিয়ে দিলো।
আরফা তারপর বন্ধদের সাথে চলে গেলো।
আবির আর আমি বসে আছি।

একটু পর আবির বললো এখানে,,
ভালো লাগছে না চলো অন্য।
কোথায় গিয়ে ঘুরে আসি।
আমিও ওর সাথে সাথে চলে এলাম।
সামিয়া– বাহ জায়গাটা তো খুব সুন্দর।
আবির– হুম।
তাইতো তোমাকে দেখাতে
নিয়ে এলাম।
সামিয়া– হুম।

আবির– আচ্ছা তুমি কি সব সময় চুপচাপ
থাকো।
সামিয়া– কই নাতো।
আবির– আমাকে কিন্তু তুমি
তোমার বন্ধু ভাবতে পারো।
সামিয়া– বন্ধু
আবির– হুম বন্ধু আমার মতে আমাদের,,
স্বামি স্ত্রী সম্পক গরে তোলার।
আগে বন্ধু সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত।

তাহলো দুজন দুজনকে ভালো,,,
করে বুঝতে পারবো।
আবির এর মুখে কথাটা শুনে খুব
ভালো লাগলো।
সত্যি ও কতো ভালো।

আবির- এই যে প্রজাপতি আমি কি
তোমার বন্ধু হতে পারি।
সামিয়া– হুমম পারেন।
আবির– কিন্তু প্রজাপতি তুমি আমাকে
আপনি করে বলছো কেনো।
তোমাকে তো বলেছি আমাকে তুমি করে
বলতে পারো।

সামিয়া– ঠিক আছে।
আবিট– কি ঠিক আছে? ?
সামিয়া– তুমি করে বলবো।
আবির– এই গুড গার্ল।

এভাবে দিন চলতে থাকে।
এখন আবিরকে আমার ভালোই লাগে।
ও বাসা থেবে বেরিয়ে গেলে ওকে খুব মিস
করি আমি।
আবির নার্সিংহোমে পৌছে রোজ,,
আমাকে ফোন করে।
আবির আমাকে নতুন ফোন,,
নতুন সিম কিনে দিয়েছে।
আমার পৃথিবীটা বদলে যেতে লাগলো।

আবির জন্য দুপুরে খাবার পাঠানো।
রাতে আবির এর জন্য না খেয়ে বসে
থাকা।
এগুলো যোনো অভ্যাস হয়ে গেছে।
মনে হতে লাগলো আমি আবার প্রেমে
পরেছি।
প্রেমে না পরে কি কোনো উপায়
আছে।

আবির সারাক্ষন আমার,,,
কেয়ার নিতে থাকে।
সে দিন আমার সবজি কাটতে গিয়ে,,
হাত কেটে গিয়েছিলো।
আমার সাথে সে কি রাগ,,
বলে যে কাজ করার সময়।
খেয়াল রেখে কাজ করতো পারো না।
আর তোমাকে কে বললে কাজ করতে।

সামিয়া– বা রে আমার বাড়ির কাজ,,
আমি করবে না তো কে করবে শোনি।
আবির– দরকার নাই তো তোমার কাজ করার,,
কাজ করতে গেলে নিজের একটু ও খেয়াল রাখো না।

সামিয়া– আমি হাজার বার কাজ করবো।
তারপর আবির আমার হাতে,,
মলোম লাগিয়ে দিয়ে বলেছিলো।

আজ থেকে যেনো সাবধানে কাজ করি।
এইএই ছোট ছোট কেয়ার গুলো,,,
আমায় ওর প্রতি দুর্বল করে তুললো।

আমি এই পরিবারটাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
আরফার মতো ছোট বোন পেয়েছি।
সারাদিন আমি আরফা আড্ডা দিতে থাকি।

মাও মাঝে মাঝে আমাদের, ,,
আড্ডায় শরিক হয়।
সব মিলে ভালোই আছি আমি।
তারপর একদিন,,,,,

আজ থেকে যেনো সাবধানে কাজ করি।
এই ছোট ছোট কেয়ার গুলো আমায়,,
ওর প্রতি দুর্বল করে তুললো।
আমি এই পরিবারটাকে,,,
ভালোবেসে ফেলেছি।

আরফার মতো ছোট বোনপেয়েছি।
সারাদিন আমি আরফা আড্ডা দিতে থাকি।
মা ও মাঝে মাঝে আমাদের আড্ডায়,,
শরিক হয়।
সব মিলে ভালোই আছি আমি।

তারপর একদিন,,
হঠাৎ একদিন আবির বাসায়,,,
ফিরতে দেরি করছে।
প্রতিদিন ও ৯ টা ১০ টার
মধ্যে চলে আসে ।
আজ কেনো এতো দেরি
করছে।

সারে ১১ টা বেজে গেছে এখনো,,,
আসছে না কেনো।
ফোনেও পাচ্ছি না।
ফোনটা ব্যন্ধ বলতেছে।
আবির ঠিক আছে তো।
বাজে চিন্তা মাথায় চাপলো।
একটু পর ১২ টা বেজে যাবে।
কি হলো ওর এখনো আসছে না কেনো।

বুকের ভেতরটা থর থর করে কাঁপতে
রইলো।
আমার স্বামি ঠিক আছে তো।
আমি ভাগ্য করে ওর মতো স্বামি পেয়েছি।
যদিও আমাদের মাঝে স্বামি স্ত্রীর,,,,
কোনো সম্পর্ক নেই।
আমরা খুব ভালো বন্ধু।

কিন্তু আমি আবিরকে অনেক,,,
ভালোবেসে ফেলেছি।
ওর কোনো ক্ষতি হোক আমি চাই না।
কেনো ও এখনো আসছে না।
আমি বার বার ঘড়ির দিকে তাকালাম।
১২ টা পেরিয়ে গেলো।
এখনো আবির আসছে না।

না এভাবে আর থাকা যাচ্ছে না।
নিশ্চই ওর কোনো বিপদ হয়েছে।
ফোনটাও কেনো ধরছে না।
কি করবো আমি এখন।
আমার চোখ গরিয়ে পানি পরতে
রইলো ।

আমার এখন বাসার সবাইকে জানানো উচিত।
মা তো ঐষধ খেয়ে শুয়ে পরেছে।
বাবাও তো অসুস্থ।
আমার তাদের ডাকাটা কি ঠিক হবে।
না না আবির এখনও ফিরছে না
তাদের ডাকা উচিত।
যদি ও কোনো বিপদ হয়।

আমি বাবা মা এর রুমের সামনে,,
গিয়ে নক করতেই হঠাৎ কানের,,,
কাছে ভেসে এলো কলিং বেলের শব্দ।
আমি আনন্দে দু চোখ বেয়ে,,,
পানি পরতে রইলো।
না শুধু আনন্দ নয় অনেক খানি,,,
অভিমানও জমেছে বুকে।
আমি আর কোনো কিছু না ভেবে
দরজা খুললাম।

আমার চোখের সামনে আবির দাড়িয়ে আছে।
আমি নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি।
আমি ওকে গিয়ে জরিয়ে ধরে কেঁদে
ফেললাম।
আমার ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না,,,
বারতেই রইলো।
আর বলতে রইলাম।

সামিয়া— এতোক্ষন কোথায় ছিলে তুমি।
আমার কতো চিন্তা হয়েছে জানো ।
আমার মনে হয়েছিলো তোমার
কোনো বিপদ হয়েছে।
তোমার কিছু হয়ে গেলে আমার কি হতো বলো। ।
আবেগের তারনায় মনে যা আসছিলো
তাই বলে দিলাম।

একটুপর মনে হল কি করতেছি আমি এসব।
ওর তো কোনো বিপদ হয়নি।
ও তাহলে ইচ্ছা করেই আসেনি।
ওর সাথে আর কথাই বলবো না আমি।
এগুলো মনে মনে ভাবতে ভাবতে,,,
আবিরকে ছেরে দিয়ে রুমে।
এসে বসে বসে কাঁদতে রইলাম।
আর চোখের পানি মুছতে রইলাম।
ও তো আমাকে টেনশন দেবেই।
ওতো জানে না আমি ওকে কতো
ভালোবাসি ।

মনে মনে এগুলো বলতে রইলাম।
আবির আমার পাশে এসে বসলো।
আমার গায়ে হাত দিতেই আমি হাতটা
ছিটকে ফেলে দেই আর বলি।

সামিয়া– ধরবা না তুমি আমাকে (( কেঁদে কেঁদে))
আবির– একি বউ তো দেখছি আমার খুব রাগ করেছে
সামিয়া–যাও তুমি এখান থেকে।
আমার সাথে কথা বলবা না।
আবির– আচ্ছা আমার সাথে কথা না
বলে তুমি থাকতে পারবা।

সামিয়া– আর কথা বলবো না তোমার সাথে।
কখনই বলবো না।
আবির—-আচ্ছা বলো আমার অপরাধ কি।
সামিয়া– অপরাধ কি মানে এতো রাত করে,,,
বাসায় এসেছো।
আবার বলছো অপরাধ কি।
আমার কতো টেনশন হয়েছিলো জানো।
আমার মনে হয়েছিলো তোমার কোনো
বিপদ হয়েছে।

এই তো দুদিন আগে পাশের বিল্ডিং এর,,,
বাড়িয়ালার ছেলেটাকে মৃতু্ পাওয়া
গিয়েছিলো।
আমার শুধু এসব কথাই,,
মনে পরছিলো।
তোমার কিছু হয়ে,,,
গেলে আমার কি হতো।

আবির– তোমার কি হতো মানে।
তার মানে তুমি আমাকে …
সামিয়া— না না তুমি ভুল ভাবছো।
আবির — আমি ভুল ভাবছি না।
এই দেখো কি করি।
আবির আমাকে কোলে তুলে নিলো।
তারপর বেলকুনির কাছে নিয়ে গেলো।
আর আমার গালে দু হাত দিয়ে বলতে
রইলো।

আবির– বিশ্বাস করো তোমাকে কষ্ট,,,
দিতে চাই নি আমি।
আমি শুধু দেখতে চেয়েছি
তুমি কতোটা আমাকে মিস করো।
তুমি আমাকে কতোটা ভালোবাসো।
কিন্তু আমার এই পরিক্ষা করতে হবে না।
আমি বুঝে গেছি।

আমি যদি তোমাকে,,,
ছেরে পৃথিবির অপর প্রান্তেও থাকি।
তাহলেও আমি বুঝতে পারবো।
কেউ একজন আছে সে আমার,,,
জন্য অপেক্ষা করছে।
সে আমার জন্য কাঁন্না করছে।
আমার জন্য কষ্ট পাচ্ছে।
আর সেই মেয়েটা আর কেউ না।
সেই মেয়েটা হলো আমার বউ ।
আমার প্রজাপতি।

আমি আবির এর মুখের দিকে তাকিয়ে,,,,
ওর কথা শুনছিলাম।
আর আমার চোখ বেয়ে পানি পরছিলো।
আমি চাঁদের আলোতে আবির এর,,,
চোখে পানি দেখতে পেলাম।
আবির তারপর আরো বললো।

আবির– আজকে এই চাঁদের সামনে দাড়িয়ে,,
এই ভরা পূূর্নিমায় যদি এই ছেলেটা।
এই প্রজাপতি মেয়েটার কাছে দাড়িয়ে,,,,
বন্ধু সম্পর্কের বাধ ভেংঙে যদি।
স্বামি হয়ে পাশে থাকতে চাই,,,
ভালোবাসতে চাই তাহলে কি।
এই প্রজাপতি মেয়েটা কি,,,,
আমাকে ভালোবাসতে দেবে।
আমাকে কি তার স্বামির অধিকার
দিবে।

আমি আর কোনো কিছু না,,,,
ভেবে আবিরকে শক্ত করে
জরিয়ে ধরি।
আর কেঁদে কেঁদে বলি,,
সামিয়া– হুম দিবো।
আমি তোমাকে অনেক
আগেই ভালোবেসে ফেলেছি ।
সামিয়া– আমিও। i love u.. ♥
আবির– i love u too … ♥

তোমার মনে আছে একদিন,,,
তুমি বলেছিলে তোমার রজনিগন্ধা ফুল
অনেক প্রিয় ।
তুমি চাইতে তোমার স্বামি প্রতিদিন,,,
তোমার জন্য ফুলটা নিয়ে আসুক।
আমি তোমার অনেকগুলো,,,
রজনিগন্ধা ফুল এনেছি।

এসো আমার সাথে দেখবে।
আমি আবির এর সাথে রুমে এলাম।
আবির বাইরের ঘর থেকে ফুলগুলো
নিয়ে এলো।
আমার বিছানার পাশে পুরু ঘরের টপে ফুল
গুলো আবির নিজের হাতে সাজালো।
তারপর আমি আবির এর জন্য,,,
খাবার নিয়ে এলাম।
আবির নিজের হাতে খেতে চাইলো না ।
আমি নিজের হাতে ওকে খাইয়ে দিলাম।

আবির— বাহ বউ এর হাতে খাবার তো,,,
অনেক মজা।
আগে জানলে মিস করতাম না,,
সামিয়া– খাওয়া শেষে শুয়ে পরলাম।
আবির বললো এই,,
প্রজাপতি বউ এখনো কি।
এই কোলবালিসটা আমাদের মাঝখানে
থাকবে।
আবির কোল বালিসটা
ফেলে দিলো।

আর আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।
আজ ভালোবাস যেনো আমাদের পুরো,,,
ঘরটা জুরে উপছে পরছে।
আজ আমি পুরোপুরি ভাবে,,,
কারো অর্ধাংগিনি হয়ে গেলাম।
সুখ যেনো বিধাতা সব আমায় দিয়েছে।
এই ভালোবাসাটা যেনো বিধাতার
দেওয়া কোনো উপহার।

সারারাত ভালোবাসার চাদোরে
ঢাকা ছিলাম আমি।
সকাল যখন হলো তখন,,,,
আবির বুকে আমার মাথা।
আর আবির আমাকে শক্ত,,,
করে ধরে রেখেছে।
সুখ যেনো বিধাতা সব আমায় দিয়েছে।
এই ভালোবাসাটা যেনো বিধাতার,,,,
দেওয়া কোনো উপহার।

আজকের সকালটা অন্য রকম।
আমি আবিরকে
বললাম এই ডাক্তার সাহেব।
এখন আমাকে ছারুন।

সামিয়া—সকাল হয়ে গেছে।
আবির — (( ঘুম ঘুম চোখে) ) ইমম ছারবো না।
আর একটু ঘুমাতে দাও।
সামিয়া– আচ্ছা বাবা তুমি ঘুমাও আমাকে
ছেরে দাও।
আবির– না তুমি যাবে না আমাকে,,
জরিয়ে ধরে শুয়ে থাকো।

সামিয়া– মা ঘুম থেকে উঠে গেলে,,,
কি মনে করবে বলোতো।
আবির– মনে করবে আমি আমার বউকে,,,
নিয়ে শুয়ে আছি ………………..

সামিয়া:- এই ডাক্তার সাহেব।
এখন আমাকে ছারুন।
সকাল হয়ে গেছে।
আবির– (( ঘুম ঘুম চোখে) ) ইমম ছারবো
না।
আর একটু ঘুমাতে দাও।
সামিয়া– আচ্ছা বাবা তুমি ঘুমাও আমাকে ছেরে দাও।
,আবির — না তুমি যাবে না আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে থাকো।

সামিয়া– মা ঘুম থেকে উঠে গেলে
কি মনে করবে বলোতো।
আবির — মনে করবে আমি আমার বউকে,,
নিয়ে শুয়ে আছি।

বুঝছি এভাবে তুমি আমাকে ছাড়বে না,,,
অন্য কিছু করতে হবে।
আমি জানি আবির এর পায়ে অনেক
শুরশুরি।
তাই আমি আমার পা এর নখ দিয়ে,,,
আবির এর পা এ শুরশুরি দিতে
থাকি।
আবির লাফিয়ে উঠে বসে,,,
পা দুটো সরিয়ে ফেললো।
আর আমি তারতারি খাট থেকে
নেমে গেলাম।

তারপর আবির বলতে লাগলো
আবির — এটা কিন্তু ঠিক করলে না তুমি।
সামিয়া– বেশ করেছি।
আবির — বেশ করেছো তাই না।
এর ফল কিন্তু পরে সুধে আসলে
মিটিয়ে নিবো।

সামিয়া– তোমার যা খুশি তাই করো ।
আমি গেলাম।
তারপর আমি ফ্রেস হয়ে রান্না
ঘরে গেলাম।
সবার জন্য নাস্তা তৈরি করলাম।
আজ আমার মনটা অনেক ভালো।
মনে হলো সব আছে আমার।
আমি খুব সুখি ।

একটু পর নাস্তার টেবিলে
সবাই এলো।
আবিরও এলো।
আবির আমার দিকে তাকাতে,,
তাকাতে চেয়ারে বসলো।
আর আমি ওর দিকে তাকিয়ে,,,
মুচকি মুচকি হাসছিলাম।
আমার শাশুরি বুঝতে পারলো।
আবির আর আমার মাঝে ভালো
একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।

মা আমাদের বললো।
মা– বৌমা এভার আমি আর তোমার,,,
শ্বশুর নাতি নাতনির মুখ।
দেখে মরতে চাই।
মা এর কথা শোনে,,,
আরফা বলে উঠলো।
আরফা– মা একদম ঠিক কথা বলছে ভাবি ।
এখন আমাদের ঘরে একটা বাবু দরকার।
সারা ঘর ঘুরে বেরাবে।
আর আমাকে মিষ্টি ফুপি বলে ডাকবে।
কত্তো মজা হবে।

সবার কথা শুনে আমি লজ্জা পেলাম।
আবির মুচকি হেসে আরফা কে
বললো।
আবির— তুই চুপ করবি খুব পাকা হইছিস তাই না।
মা ওর জন্য ছেলে দেখতে হবে।
ওকে বিয়ে দিতে হবে।
আরফা– নাহ মা ভাইয়ার কথা শুনবা না।
আমি বিয়ে করবো না।
আবির– কি বিয়ে করবি না ।

ঠিক আছে ডাক্তার শুভকে,,,,
বলে দিবো যে তুই বিয়ে করবি না।
তাহলে বেচারা অন্য কাউকে বিয়ে
করে নিবে।
আরফা– মা ভাইয়াকে চুপ করতে বলবা।
সামিয়া– না আরফা তুমি চিন্তা করো না।
আমি তো আছি নাকি। ।
আরফা– ভাবি তুমিও।
সবাই হাসছে আর আরফা,,
নাক ফুলিয়ে আছে।
খাবার শেষে আবির,,,
আমায় ইশারা করলো।
যাতে আমি তারাতারি রুমে যেতে পারি।

আমি কাজ শেষে রুমে গেলাম।
সামিয়া– একি তুমি এখনো রেডি হওনি।
আজ কি নার্সিংহোমে যাবে না।
আবির — যাবো।
সামিয়া– তাহলে এখনো রেডি হলে না কেনো।
আবির– চুপ করো তুমি।
এখন সময় হলো তোমার আসার।
কখন আসতে বলছি
আর আসছো এখন।

সামিয়া– ওহ তাই রাগ করেছো।
আচ্ছা সরি দেরি করে আসার জন্যে।
আবির– সরিতে হবে না।
সামিয়া– তাহলে কিসে হবে শুনি।
আবির–জরিয়ে ধরতে লাগবে।
সামিয়া– না না না তা হবে না।
আবির– হবে না মানে।

তারপর জোর করে আবির আমাকে জাপটে
ধরলো।
শেষ মেষ আমার দুষ্টু বরটা আমাকে,,
জরিয়ে দিয়েই ছারলো।
এইভাবে চলতে থাকে আমাদের,,
ভালোবাসার দিন গুলো।
আজ কয়েক দিন যাবত
শরিলটা খারাপ যাচ্ছে।
আবিরও বাড়িতে নেই।
একটা কাজে দু দিনের ঢাকার বাইরে গেছে ।

আমি রান্না ঘরে এলাম।
বাবার জন্যে সাগুর পায়েস বানাতে।
নাহ আর দাড়িয়ে থাকতে পারছি না।
চোখে সব কিছু জাপসা লাগছে।
চারদিক ক্রমশো অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে।
মাথার ভিতর চক্কর মারতে রইলো।
নাহ আর দাড়িয়ে থাকা যাচ্ছে না।
কখন যে মাথা ঘুরে পরে গেলাম
টেরি পেলাম না।

যখন জ্ঞ্যান ফিরলো তখন দেখি
আমি রুমে শুয়ে আছি।
আমার পাশে মা।
আরফা দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাসছে।
ডাক্তার আংকেল কে
দেখতে পেলাম বাবা ডাক্তার
আংকেল কে এগিয়ে দিয়ে আসতে গেলো।
আমার জ্ঞ্যান ফেরায়।
আরফা ওহ ভাবি ভাবি বলে,,,
এসে আমায় জরিয়ে ধরলো।

আরফা- তুমি আমার মিষ্টি ভাবি।
মা বললো এখন থেকে,,,
তোমাকে আর রান্না ঘরে যেতে
হবে না।
এখন থেকে সিমাই সব,,
কাজ করবে কেমন।
আমি কৌতুহল মুখে বললাম।
কিন্তু মা কেনো।

মা– কেনো আবার আমার নাতি নাতনি
আসছে যে।
সামিয়া– কি??
মা– হুম।
আমি লজ্জা পেলাম।
মাথা নিচু করে মুচকি মুচকি হাসতে রইলাম।
আরফা সিমাকে দিয়ে রান্না ঘর থেকে,,,
কতো গুলো ফল আর এক গ্লাস
দুধ নিয়ে এলো।
আরফার হুকুম আমাকে সব
খেতে হবে।

সামিয়া– কিন্তু আরফা আমি তো এতো,,,
খাবার কখনো এক সাথে খাইনি।
আরফা– দেখো ভাবি আমি তোমাকে খাওয়াচ্ছি না।
আমি আমার ছোট বাবা বা মা টাকে খাওয়াচ্ছি।
তোমার মাঝেই তো আমার একটা পুচকি,,
বাবা মা বড় হয়ে উঠতেছে।
আমি মুচকি হাসলাম।
আমাকে জোর করে মা আর আরফা,,,
দুধ আর ফল খাইয়েই ছারলো।

আমি ফোনটা হাতে নিলাম,,,
আবিরকে ফোন দিবো।
না ফোন দিবো না।
ও আসলে আমি ওকে সারপ্রাইজ দিবো।
আমি ও এ কথাটা শুনে অনেক খুশি হবে। ।
আমাকে এখন সবাই যত্ন করছে।
রান্না ঘরের চার পাশে তো আমাকে যেতেই,,
দেওয়া হচ্ছে না।

এটা আমার কাছে একদম শাস্তি মনে হচ্ছে।
যাই হোক আজ আবির আসবে।
আজ আমি একটা হলুদ শাড়ি
পরেছি।
চোখে কাজল পরেছি।
আমি সব সময়ই আবির বাসায়
আসার আগে একটু যত্ন করে,,,
সেজেগুজে থাকি।

কারন আমি প্রত্যেক স্বামিই বাসায় ফিরে,,,
একটা সুন্দর গুছানো বউ দেখতে চায়।
তাহলে তাদের সারাদিনের ক্লান্তি,,
দুর হয়ে বুকের মাঝে এক হ্রাস।
ভালোবাসা জন্মায়।

দুদিন আবির বাড়িতে ছিলো না।
মনে হলো দু বছর ওকে দেখিনি।
এতোটা ভালোবাসবো আমি ওকে,,,
সেটা আমি কখনোই কল্পনা করি নি।
মানুষ বারবার প্রেমে পরতে পারে।
প্রেমে পরার কোনো নির্দিষ্ট সময়
লাগে না।

একটু যত্ন পেলে ভালোবাসা,,
সেখানে নেতিয়ে পরতে চায়।
হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলো।
আবির এসেছে নিশ্চই ।
আরফা দরজা খুলতে গেলো।
আমি আরফাকে ডেকে বললাম,,,
আমি দরজা খুলবো।

আরফা বললো ঠিক আছে।
আমি দরজা খুললাম।
আরে আবির কোথায়।
আবিরকে দেখতে পাাচ্ছি না।
তবে একটা লোক দাড়ানো।
কোমর থেকে মাথা অবধি।
বেবিদের খেলনা পিকচার আর,,,
অনেক গুলো ফুল।
মুখটাই তো দেখা যাচ্ছে নাা ।
ফুলের একটা ফাকা দেখে,,
দেখতে পেলাম এটা আমার আবির ।

আবির বাসায় ঢুকলো ।
হাত থেকে ও গুলো সব নিচে রাখলো ।
আর ঘরের সবার সামনে আমাকে কোলে
তুলে নিলো।
আর চিৎকার করে বলতে লাগলো,,,
হে হে আমি বাবা হবো।
আমি শুধু বললমা ছারো মা বাবা
দেখছে তো ।
না না আমি ছাড়বো না,
আজ আমি অনেক খুশি।
সামিয়া– আরে আরে ছারো ছারো,,
একটু পর আমাকে ছেরে দিলো।

আর বললো ও আমি খুব খুশি।
আমাদের বেবির জন্যে অনেক,,
খেলনা অনেক পোশাক আর আমার।
জন্যে সারা ঘরে ফুল সাজাবে।
কতো গুলো বেবির পোস্টার,,
যাতে আমি যেদিকে তাকাই।
সে দিকেই অনেক সুন্দর সুন্দর,,
বেবি দেখতে পাই।

এগুলো সব আমার রুমে সাজেনো হয়েছে।
আবির রুম সাজাতে সাজাতে বললো,,,
আমার একটা মেয়ে হবে।
ঠিক তোমার মতো।
নাহ আমাদের ছেলে হবে..
ঠিক তোমার মতো।
নাহ আমাদের ছেলে হবে..
ঠিক তোমার মতো।

আবির আমার কথা মাানতে রাজি নয়।
ওর একটা মেয়েই চাই।
আমি রাগ করে অন্যদিকে মুখ,,
ফিরিয়ে নিলাম।
আবির আমাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে,,
বললো ঠিক আছে ছেলে হবে।

এখন খুশি।
আমি হেসে দিয়ে আবিরকে,,
জরিয়ে ধরে বললাম হুম।
এখন খুশি আবির বললো,,
শোনো আমাদের যদি।
ছেলে হয় নাম রাখবো।

মেঘ আর মেয়ে হলে বৃষ্টি

আবির রুম সাজাতে সাজাতে বললো ,,
আমার একটা মেয়ে হবে।
ঠিক তোমার মতো।
নাহ আমাদের ছেলে হবে..

ঠিক তোমার মতো।
নাহ আমাদের ছেলে হবে..
ঠিক তোমার মতো।
আবির আমার কথা মাানতে রাজি নয়।
ওর একটা মেয়েই চাই।

আমি রাগ করে অন্যদিকে মুখ,,
ফিরিয়ে নিলাম। আবির আমাকে।
পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বললো,,
ঠিক আছে ছেলে হবে।

এখন খুশি।
আমি হেসে দিয়ে আবিরকে,,,
জরিয়ে ধরে বললাম হুম এখন খুশি।
আবির বললো ছেলে হলে নাম রাখবো
মেঘ আর মেয়ে হলে বৃষ্টি

আমি খুব খুশি হতে লাগলাম।
এতো ভালোবাসা আমি কোথায় রাখবো।
এ ভালোবাসা আবার ফুরিয়ে যাবে নাতো।
আমার বেবি ধিরে ধিরে বড় হতে
লাগলো।

ডাক্তার বলেছে আমার টুইন
বেবি হবে।
আমাকে খুব সাবধানে থাকতে হবে।
ডাক্তার প্রতিদিন আমাকে চেক আপ করে
যাচ্ছে।
দেখতে দেখতে নয় মাস কেটে গেলো।
আমার শরিলটা তেমন ভালো যাচ্ছে না।
সে দিন রাতে আবির,,
দেরি করল বাসায় ফিরতে ।

আমি ওকে ফোন করবো ফোনটা,,,,
মাথার কাছ থেকে আনতে গিয়ে।
আমি খাট থেকে পরে গেলাম।
শুধু একটা চিৎকার দিয়ে উঠলাম।
আমার পেইন বারতেই রইলো।
আরফা ছুটে এলো।
মা বাবা সবাই তারাতারি
এম্বুলেন্স নিয়ে এলো ।

আবিরকে আরফা ফোন করে জানালো।
আমি এখনো কথা বলতে পারছি।
কিন্তু নিজের শরিলের যন্ত্রনা আরো,,
তিন গুন বেরে উঠলো।
মা হওয়া বড় কষ্টের কাজ ।
আমি মনে হয় আর বাঁচবো না।
আমাকে ওটিতে নেবার আগে,,,
আমি একবার আবির এর,,,
মুখটা দেখতে চাই।

ওর সাথে একটু কথা বলতে চাই।
আমি আরফাকে বললাম আবির,,,
আবির কোথায়।
আরফা বললো এখনি চলে আসবে।
কিন্তু এখনো আসছে না কেনো।
রাত তখন এগোরোটা বাজে।
আমার কষ্ট বারতেই রইলো।
ডাক্তার আমাকে ওটি
তে নিয়ে যেতে লাগলো।

আমি শতো যন্ত্রনার মাঝে,,,
আমার সন্তানদের বাবাকে
খুজে যাচ্ছি।
ডাক্তারকে বললাম আমার সন্তান,,
ঠিক আছে তো।
ওদের কোনো ক্ষতি হয়নিতো।
ডাক্তার আমার কান্নাভরা মুখটার দিকে,,,
তাকিয়ে বললো এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না।
আল্লাহকে ডাকুন।

আমি যন্ত্রনায় চিৎকার করতে লাগলাম।
আবির চলে এসেছে।
আবির কারো অনুমতি ছারাই ওটিতে ডুকে গেলো।
আবিরকে কেউ কিছু বললো না।
আমি আবিরকে দেখে দু চোখের পানি ছেরে
দিলাম।
কথা বলার কোনো শক্তি পাচ্ছি না।
ডাক্তারা আবিরকে বাইরে নিয়ে
গেলো ।

আর ওকে বোঝাতে লাগলো।
আমার সিজারের অপারেশন শুরু হলো।
আমার মেঘ বৃষ্টি পৃথিবিতে এলো ।
আমি ওদেরকে অনেক আদর করলাম।
ওরা হয়তো ওদের মা এর আদর আর
পাবে না।

ডাক্তার আমাকে বলেছিলো।
আপনাকে বাঁচাতে হলে সন্তান,,
বাঁচানো যাবে না।
আবির সাহেব বলেছেন ওনি,,,
তিন জনকেই জিবিত দেখতে চান।
আর আমি কি চাই।
আমিও তো আমার দু সন্তানকে কোলে,,
নিয়ে বাসায় ফিরতে চাই।
তারপরেও ডাক্তারকে বললাম,,,
আমার যা হয় হোক আমার সন্তানের,,
যেনো কিছু না হয় ।

কোনো মা হয়তো সন্তানকে মেরে নিজে,,,
বাঁচতে চাইবে না।
আমার দু সন্তান এখন আমার দু পাশে,,,
শুয়ে আছে।
আমি ওদের বার বার আদর করতেছি।
আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হতে লাগলো।
আবিরকে রুমে ঢুকতে দেওয়া হলো ।

আমি সব আবছায়া দেখছি।
আবির আমাকে এসে জরিয়ে ধরলো।
বাচ্চাদের মতো কাঁদতে রইলো।
আমি বললাম দেখো এই,,,
আমাদের মেঘ বৃষ্টি।
তুমি ওদের যত্ন নিও।
আমার সময় ফুরিয়ে আসছে।
তুমি ওদের আর্দশ মানুষ রুপে গরে তুলো।

আরফা মা বাবা আমার বাবা মা সবাই এসেছে।
মা আমাকে ধরে কেঁদে দিলো।
আমি আরফার হাত ধরে বললাম।
আরফা ননদিনী আমার।
আমার বাচ্চা দুটোকে একটু দেখে রেখো ।
ওদের মানুষ এর মতো মানুষ করে তোলো।
আবির আমাকে সবার সাামনে,,,
জরিয়ে ধরে বললো তোমার কিছু হবে না।

আমরা দুজন মিলে ওদের বড় করবো।
আমি বললাম আমার যে সময় ফুরিয়ে এসেছে।
আমি যে আর নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।
তুমি ভালো থাকবা কেমন।

আমার বেবিদের মাঝে আমায় খুঁজে নিবা।
তোমাকে বাঁচতে হবে।
আমার বেবিদের জন্যে তোমাকে বাঁচতে হবে।
প্লিজ নিজের খেয়াল রেখো।

তারপর চারপাশ,,
ঝাপসা হতে লাগলো।
শেষবার আবির এর বুকে মাথা রেখে,,
কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি টেরি পাইনি।
সবাই কাঁদছে।
কান্না তাদের বারতেই থাকবে।
আমার বেবি দুটোও কাঁদছে।
হাত পা ছিটিয়ে কাঁদছে।

আবির ওদের খুদা লেগেছে ওদের,,
খাবার নিয়ে এসো।
কেউ শুনছে না আমার কথা।
আবির চিৎকার করতে লাগলো।
আমার নিথর শরিলটা বুকে চেপে
কাঁদতেই রইলো।
আমি জানি না আমাকে ছেরে,,,
তুমি কেমন করে থাকবে।
কিন্তু তোমাকে যে থাকতেই হবে।
আমার বেবিদের জন্যে,,
বাঁচতে হবে তোমাকে।

সে দিনের সেই মেয়েটি আজ
আকাশের তারা।
মেয়েটি দুর থেকে সবাইকে দেখছে।
বছর এর পর বছর সেই,,,
মেয়েটির কবরে আবির একগুচ্ছ।
রজনিগন্ধা ফুল দিয়ে সাজিয়ে
দিয়ে আসে।

মেয়েটি রজনিগন্ধা ফুল
খুব পছন্দ করতো।
আবির এর সাথে দুটো ছোটো ছোটো বাচ্চা,,,
মেঘ বৃষ্টি ছোট ছোট পায়ে হেটে।
আসে তাদের মা এর কবরে ফুল দিতে।

তারাও তাদের বাবার কাছ থেকে,,,
জেনে গেছে তাদের মা রজনিগন্ধা।
ফুলে সুভাষ ছারা ঘুমাতে পারে না।

আবির এর চোখের পানি মুছে,,
দেবার জন্যে সেই মেয়েটির দু
সন্তান আছে।

মেয়েটি দুর থেকে তাদের দেখছে।
দুর থেকে তাদের দোয়া করছে।

………………………….. সমপ্ত……………………………..

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত