অস্তিত্বে শুধুই তুমি

অস্তিত্বে শুধুই তুমি

আমি আবির। ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রিক্যাল engineering শেষ করে এখন একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে

সাব-অ্যাসিসটেন্ট engineer হিসাবে জয়েন করেছি পাশাপাশি IUBAT থেকে EEE তে বি,এস,সি করতেছি।

দিনকাল অনেক ভালোই যাচ্ছে।অনেক হাসি খুশি আর ফানি টাইপ এর একটা ছেলে আমি।
কিন্তু রাত হলে যখন ঘুমাতে যাই তখন বুকের বাম পাশে একটা ব্যাথা অনুভব করি।ব্যাথাটা এতটাই প্রখর

যে মাঝে মাঝে নির্বাক হয়ে যাই।শুধুই দু’ চোখের পাশ দিয়ে অশ্রু ঝরে।আমার মত হাসি খুশি একটা ছেলের এমনটা

হওয়ার কারণ আজ আপনাদের কাছে শেয়ার করব।পৃথিবীতে আমার মত হাসি খুশি এমন ছেলের অনেক

কষ্টের কাহিনী মানুষের জানার অগোচরে থেকে যায়। কারণ আমার মত যারা মানুষ আছেন তারাও ঠিক আমার

মত শতকষ্ট বুকে চাপা দিয়ে বাস্তবতার সাথে তাল মিলিয়ে চলে।যাইহোক এবার আসল ঘটনায় আসি!
এক বছর আগে অনামিকা নামের মেয়েটির সাথে আমার পরিচয় গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। সে তখন ইন্টার first ইয়ার এ পড়ে।

পরিচয়টা যেভাবে হয় সেটা বলি আমি বিকেল বেলা আমাদের বাড়ির পাশে একটা পুকুর ছিল ওখানে রোজ বসে বসে গিটার বাজাতাম।।

সেখানে সচারচার কেউ যেত না।নিজর্ন একটা জায়গা।একদিন গিটার বাজাতেছিলাম আর তাহসানের

“আমি সেই সুতো হব যে তোমায় আলোকিত করে নিজেই জ্বলে যাবো”
গানটা শেষে হাত তালির শব্দ পেলাম।!!আমি একটু অবাক হলাম এখানে তো আর কেউ নাই তালির শব্দ কই থেকে আসলো।

এখানে একটা লোকই আসে মাঝে মাঝে সে আর কেউ নয় আমার ছোট বোন রিয়া।তাও আবার গান শুনতে না।

আমার গানের ইয়ার্কি মারতে। ও দিবে হাতে তালি আমার গান শুনে ইহা অসম্ভব।এটা ভাবতেই পিছে দিকে তাকিয়ে দেখলাম!

আমার বোন রিয়ার সাথে আরেকটা মেয়ে আসছে।।আমি প্রথম দেখাতেই অবাক।।জীবনে অনেক মেয়ে দেখেছি।

কিন্তু এটার মত একটাও না।বিধাতা মনে হয় মেয়েটিকে নিজ হাতে অনেক সুন্দর করে বানিয়েছে।

এই প্রথম একটা মেয়ের দিকে এতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম।রিয়ার ডাকে আমার ঘোর কাঠে।
—এই ভাইয়া! কি দেখছিস এমন হেবলার মত করে!
–না না কিছু না একটা পরি দেখছিলাম(আমি)
—হুম হইছে থাম!”পরিচয় করে দিচ্ছি এ হচ্ছে অনামিকা আপু!! আমাদের এলাকায় নতুন ঘুরতে এসছে!

আর অনামিকা আপু এ হচ্ছে আমার একমাত্র বান্দর, বিলাই, আবির ভাই(রিয়া)
—-মেজাজটাই খারাপ হলো রিয়ার ঊপর সারাদিন তো জ্বালাস এখন একটা মেয়ের সামনেও এভাবে কেউ বলে
।পৃথিবীতে বড় ভাই যতই ভদ্র আর সুন্দর হোক তার ছোটবোনের মুখে কুত্তা, বান্দর,বিলাই মনে মনে (আমি)
এমন সময়!
-হায়! (অনামিকা)
-হুয়ালো(আমি)
-কেমন আছেন!? ভালোই তো গাইতে পারেন!(অনামিকা)
–জি ভাল!থ্যাংকস।(আমি)
–আরেকটা গান গাইবেন!!এখন(অনামিকা)
–না না আমি তেমন পারি না।।(আমি)
এটা বলার পর মনে মনে ভাবলাম যাক এত্তদিনে কেউ আমার গান শুনার রিকুয়েস্ট করলো তাও আবার এমন সুন্দরী মেয়ে।
—না আপনি তো ভালই গাইতে পারেন।আমি নিজেই তো শুনলাম(অনামিকা)
—ওকে শুনাচ্ছি!(আমি)
সেদিনকার মত গান শুনা শেষে রুমে আসি।অনামিকা ও চলে যায়।পরে রিয়ার কাছে শুনলাম আমাদের পাশের বাসার আত্নীয়।।
পরদিন সকালে উঠে ফেসবুকিং করছিলাম।অনেক দিন হয় ফেসবুকে আসা হয় না।

আগে রিগুলার লেখালেখি করতাম এখন আর তেমন সময় পাই না।যাইহোক হঠাৎ!
রিয়ার আগমন!
—আস্তে পারি ভাইয়া!
–এসেই তো পড়ছিস পেত্নি
।তো কিছু বলবি?আজ আবার কি মতলব নিয়ে এসেছিস বলে ফেল!(আমি)
রিয়া–কি!আমি পেত্নি??দেখ ভাইয়া ভাল হচ্ছে না কিন্তু!নিজের বোনকে কেউ পেত্নি বলে!

ও বুঝেছি সেদিন অনামিকা আপুকে দেখে এখন সবাইকে পেত্নি লাগে তাই না

আমি—তুই তো আসলেই পেত্নি সব সময় আমার ঘাড়ের ঊপর থাকিস!!
রিয়া—টাকা দে!৫০০।নয়তো আম্মুকে সব বলে দিব!তুমি অনামিকা আপুকে পুকুর পাড়ে গান শুনাও প্রতিদিন!!
আমি মনে মনে ভাবলাম তার মানে সেদিনকার পর অনামিকাকে গান শুনিয়েছি ও সব দেখেছে!!বদের হাড্ডি এখন আবার ব্লাকমেইল।
—তোকে কোন টাকা দিতে পারবো না যা ইচ্ছা কর।এখন যা এখান থেকে!(আমি)
রিয়া—আম্মুউউউউউউউউউ………
আমি–এই শুন শুন লক্কি বোন আমার!এই নে পাচশত টাকা।
রিয়া টাকাটা পেয়েই মুচকি হাসি দিয়ে রুম থেকে প্রস্থান!.
.
রিয়া রুম থেকে যাওযার পর ভাবছি।আমি কি সত্যিই অনামিকার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছি না।

না আর বেশি দুর যাওয়া যাবে না।পড়ে দেখা যাবে মায়া লাগিয়ে দুরে চলে যাবে।তখন আবার অনেক কষ্ট হবে।

সেদিন বিকালে আবার আমার সেই প্রিয় জায়গা পুকুর পারে গিটার বাজাচ্ছিলাম।কিছুক্ষন পর খেয়াল করলাম

অনামিকা পাশে বসে আছে।আমি কিছু বললাম না।গিটার বাজা থামিয়ে চুপচাপ বসে আছি।
—কি ব্যাপার থেমে গেলেন যে আমাকে দেখে??বাজান না এইতো কয়েকদিন পর চলে যাবো বগুরা।তখন আর

আপনাক কেউ ডিসটার্ব করবে না।।(অনামিকা)
—-না আসলে সেটা নয়।মায়া জিনিসটা খুব খারাপ। তাই আমি অল্প সময়ের জন্য মায়া বাড়াতে চাই না।

আপনি কাল থেকে এখানে না আসলে খুশি হবো,(আমি)
এটা বলার পর অনামিকার ফর্সা মুখটা কেমন কালো হয়ে গেল মনে হয় আমার কথায় কস্ট পেয়েছে।

আপনাদের একটা কথা বলতে ভুলে গেছি গান শুনানোর ছলে অনেক কথাই হতো অনামিকার সাথে।

ও দেখতে যেমন সুন্দর ছিল কথাবার্তা ব্যবহারটাও ছিল অনেক ভাল।এগুলাই মুলূত আমাকে আকৃষ্ট করছিল।
—–আপনি যেটা চাইবেন সেটাই হবে।কিন্তু মনে রাখবেন মানুষের মন বড়ই অদ্ভুত।কখন কাকে ভাল লাগে সেটা বলা যায় না।

আর হুয়া আমি আপনার ব্যাপারে রিয়ার কাছ থেকে সব শুনেছি।আপনি বর্তমান রিলেশনে একদম বিশ্বাস করেন না।।

যাইহোক আপনার প্রতি কেমন জানি একটা ভাল লাগা কাজ করত।তাই রোজ বিকেলে সবার চোখ ফাকি দিয়ে

আপনার গিটার বাজানো শুনার জন্য এখানে আসতাম।।আমি কাল সকালে চলো যাবো।যদি কখনো আমার প্রতি

আপনার এমনটা ফিল হয়।চলে আসবেন আপনার জন্য আমার মনের দরজা খোলা থাকলো।বাই টেক কেয়ার ভাল থাকবেন।(অনামিকা)
কথাগুলো বলার পর অনামিকা সেদিন চলে যায় ওখান থেকে।আমিই বাসায় চলে আসি।

বাসায় আসার পর ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে টিভি দেখতে টিভি রুমে গেলাম।টিভি রুমে গিয়ে দেখি রিয়া টিভি দেখছে।

আমাকে দেখেই কি ভাইয়া কতদূর।
আমি–কি কতদূর হুম??
রিয়া–আহা মনে হচ্ছে আমার ভাইয়াটা ভাজা মাছ উল্টাই খাইতে জানে না।বুঝি বুঝি সামথিং সামথিং।
আমি–এই তুই চুপ করবি বেশি পেকেছিস না।দে রিমোটটা দে।খেলা দেখব। রাখ তোর সিরিয়াল দেখা।
রিয়া–ওকে নেও।কাল তোমার শোক দিবস তাই আজ টিভিতে যা দেখার দেখে নাও।
আমি–শোক দিবস মানে কি???
রিয়া -সেটা কাল সকাল হলেই বুঝা যাবে।
আমি বুঝলাম ও অনামিকার চলে যাওয়ার কথাই স্বরণ করে দিচ্ছে।।আমি ঐ কথাই মনোযোগ না দিয়ে খেলা দেখতে লাগলাম।

অনেক রাত পর্যন্ত খেলা দেখে ঘুমাইছি।তাই সকালে উঠতে অনেক দেরি হয়ে গেছে।সকালে উঠে ঘরির দিকে দেখে তো চোখ রসোগোল্লার মত হয়ে গেল।

এখন ১০ টা বাজে।
তার মানে অনামিকা তো ইতিমধ্যে চলে গেছে।ধুর গেছে গেছে ওকে নিয়ে ভাবার সময় নাই।এসব সুন্দরী মেয়েকে বিশ্বাস করা যায় না।

কখন যে ছেকা দিয়ে মনটা নিয়ে চলে যাবে।শুধু শুধু কষ্ট পাব।তার চাইতে যা হওয়ার হইছে ওর নাম মাথা থেকে মুছে ফেলাই ভাল।

এটা ভাবতে ভাবতে জানালার কাছে একটা চিরকুট দেখতে পেলাম।আগ্রহ নিয়ে সেটা খুললাম
চিরকুটে যা লেখা ছিল!—
আবির আমি চলে যাচ্ছি হয়তো আর কোন দিন দেখা হবে না আমাদের। তোমাকে অনেক মিচ করব।।

আর বিকাল বেলা তোমার কাছে কেউ গান শুনার আবদার করবে না।শেষ বার দেখার খুব ইচ্ছা হচ্ছিল তাই এসেছিলাম তোমায় দেখতে।

এসে দেখি তুমি শান্তিতে ঘুমাচ্ছো। তাই তোমাকে আর ডাকিনি।আমি সকালে চলে যাবো এটা হয়তো তুমি ভুলেই গেছো।

আমি জানি আমার প্রতি তোমার কোন ফিলিংস নাই।কিন্তু বিশ্বাস করো আবির আমি তোমাকে ভালবাসি কিনা জানি না।

কিন্তু তোমায় ছেড়ে যেতে খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে জীবনে কি যেন হারাচ্ছি।তাই আমার প্রতি যদি তোমার সামন্যতম ফিলিংস হয়।

চলে এসো বগুরাতে।।I wait for you abir..বাই ভালো থেকো।!!!
চিঠিটা পরে আমার সমস্ত শরীর শিঊরে উঠলো।মনের ভিতর একটা ধাক্কা খেলাম।বুঝতে বাকি রইল না অনামিকা আমাকে আপন করে পেতে চায়।

ভেতরটা শুন্য শুন্য অনুভব করলাম।সেদিনটা আসলেই আমার জন্য শোক দিবস ছিল।.সারাদিন কিছু খাইনি।

শুধু ভেবেছি মেয়েটা এত্ত কাছাকাছি থাকতো তবুও ওকে বুঝতে পারি নাই।কিন্তু আজ যখন দুরে চলে

গেছে খুব মিচ করছি কেনো জানি না খারাপ লাগছে অনেক । অনামিকার জন্য এমনটা লাগছে।তাহলে কি

আমিও অনামিকাকে ভালবেসেছি মনের অজান্তে।এসব ভাবতে ভাবতে রিয়ার আগমন।
রিয়া–কি গো ভাইয়া অনামিকা আপু চলে যাওয়ার পর দেখি আমার ভাইয়াটা দেবদাস হয়ে গেল!!!!

আগে তো পাত্তাই দিতা না এখন আবার এই অবস্থা!!আরে আমি আছি তো ভাইয়া উঠ খেতে চল।
আমি ওর কথায় খাওয়া শেষে চলে গেলাম বিকালে আবার সেই পুকুর পাড়ে।কিন্তু আজ কেনো জানি গিটার এ তালই বুনছে না।

আসলে মনের নাই ঠিক গিটারের তাল কেমনে মিলে।মন তো অনামিকার কাছে।তাকে ছাড়া এখন আমার গিটারও কথা শুনে না।

দিনগুলা কেমন জানি খারাপ যাচ্ছিল।অবশেষে ডিসাইড করলাম আমি অনামিকার সাথে দেখা করতে বগুড়া যাবো।

যেমন চিন্তা তেমনি কাজ ও চলে যাওয়ার একমাস পর যাওয়ার জন্য বের হই।কিন্তু আমি এমনই হাদারাম ওর নাম্বারটাই রাখিনি ।

ওখানে গিয়ে খুজে পাবো কেমনে এসব ভাবতেই রিয়া এসে বলল।তুমি যে যাচ্ছো ভাইয়া তা ওখানে গিয়া কিভাবে খুজে বের করবে শুনি???
আমি কিছু বললাম না।পরে রিয়া একটা নাম্বার আর এড্রেস দিয়ে বলল।এই নাও এগুলা কাল ঐ আপুর আত্নীয়দের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছি।

এবার বুঝলে ছোট বোন কেমন কাছে লাগে!!!
আমি,–এই না হলে তুই আমার লক্কি বোন।
রিয়া–হইছে হইছে যাও আর পাম্প দিতে হবে না।ওখানে পৌছার পর কি অবস্থা হয় জানাবে কিন্তু।আম্মু আব্বুকে আমি সামলে নিব
বাই।সাবধানে যেও।
আমি—ওকে বাই।
বগুড়া পৌছার পর আমি বোনের দেওয়া ঐ নাম্বারটাতে ফোন দেই।ওপাস থেকে মিষ্টি এক কন্ঠে —
কে বলছেন প্লিজ??
আমি–আবির বলছিলাম।তুমি কি অনামিকা??
—হুম আমি অনামিকা!!এত্ত দিন পর মনে পড়ল!!আমাকে??
আমি–মনে তো সব সময় থাকে।তোমাকে দেখার জন্য আমি এখন বগুড়ায়।
এটা বলার পর অনামিকা একটা ঠিকানা দেয়। সেখানে গিয়ে আমি দাড়িয়ে আছি।অনেক সময় হয়ে গেল “!কিন্তু আসছে না কেনো ধুর।
এটা ভাবতেই অনুভব করলাম আমার কাঁধে কেউ হাতে রেখেছে।পিছনে ঘুরতেই সেই চিরচেনা মুখটা মানে অনামিকা আমার সামনে।

ও একটা নীল শাড়ী পড়ে এসেছে একদম পরীর মত লাগছে।সামনা সামনি দুজনে দাড়িয়ে আছি অথচ কারো মুখ থেকে কোন কথা বের হচ্ছে না।

শুধু একে অপরের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি।দুজনের চোখের ভাষাই বলে দিচ্ছে এই দিনটার জন্য আমরা এতদিন অপেক্ষা করছিলাম।

চেয়ে থাকতে থাকতে একসময় অনামিকা কাঁদতেছিল।আমি জড়িয়ে ধরি ওকে।আর বলতো থাকি এই কাদছো কেনো।এইতো আমি এসে গেছি!!!
আর দুরে থাকবো না অনামিকা।।
অনামিকা:জানো আবির আমার বিশ্বাস ছিল। তুমি।একদিন আমার টানে ঠিক চলে আসবে।আর এই দিনটার জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম।

সত্যি আজ আমি অনেক হ্যাপি তোমাকে কাছে পেয়ে। সারাজীবন এভাবে পাশে পাবো তো তোমায়??
আমি,-হুম পাবে।
অনামিকা–আচ্ছা আবির তুমি আমাকে কতটা ভালবাসো??
আমি–আমি দু হাত প্রসারিত করে বলি অনেক ভালবাসি তোমায়।
অনামিকা–সারাজীবন অনেক বেশী থাকবে তো??
আমি–তোমায় একদিনে সবটুকু দিয়ে ভালবাসব না তোমায়।যত দিন যাবে তোমার প্রতি আমার ভালবাসা একটু একটু করে বাড়তেই থাকবে।
অনামিকা–আচ্ছা দেখা যাবে।
সেদিন ওর সাথে অনেক কথা হয়।দুপুর থেকে সন্ধা অবদি একসাথে ঘুরা শেষে রাতে ব্যাক করি আবার কুষ্টিয়ায় যেহেতু

আমারা দুরে থাকতাম তাই আমাদের ফোনে ফেসবুকে কথা হতো।মাঝে মাঝে ভিডিও কলে কথা বলতাম।আমাদের রিলেশনটা অনেক ভালই চলছিল।

একে অপরের প্রতি আস্থা,শুদ্ধা বিশ্বাস বোঝাপড়া কোন কিছুর কমতি ছিল না।আমি মাঝে মাঝে বগুড়া গিয়ে ওকে দেখে আসতাম।

ও আসতে কুষ্টিয়াতে।আমি যখন ডিপ্লোমা ফাইনাল ইয়ার এ তখন আমাদের সম্পর্কের ৯ মাস চলছিল।।

ও একদিন ফোন করে বলে ওর নাকি বাসা থেকে বিয়ে ঠিক করছে।তা আমি ওকে বুঝাই বলি তুমি আর ছয়টা মাস সময় দেও বাসায় একটু বুঝাই বল।

তারপর আমার একটা চাকরি হয়ে গেলে পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিব।।ও বাসায় বুঝিয়ে বলে।

তারপর ওকে বাসা থেকে বিয়ের জন্য আর চাপ দেয়নি।আর আমি যে অনামিকাকে ভালবাসতাম এটা আম্মুও জানতো।

আর আম্মু ছোট বোন রাজি মানে আমার পক্ষে তেমন চিন্তার বিষয় ছিল না।কিন্তু এর কয়েক মাস পর অনামিকা হঠাৎ

আমার ফেসবুক পাসওয়ার্ট চায় আমিও দিয়ে দেই।তখন আবার নিয়মিত লেখালেখি করতাম

ফেসবুকে যার কারনে আমার আইডিটা সেলিব্রেটি ছিল মোটামুটি।।যাইহোক ওকে পাসওয়ার্ট দেওয়ার পরই আমার দূরদিন শুরু।

আমি ছেলেটা ছিলাম বা এখন আছি এরকম
আমি খু্ব সহজে মানুষকে আপন করে নেই।সহজে এতটা ভাল সম্পর্ক হয়।আমার মাঝে কোন অহংকার বোধ কাজ করে না।

frndly সবার সাথে কথা বলা বা মিশতাম সেটা মেয়ে হোক আর ছেলে হোক।ফেসবুকেও তেমনই ছিলাম।
কিছু বান্ধবিও ছিল অনেক ভাল।ওদের সাথে বন্ধুত্বের খাতিরে ছবি দেওয়া নেওয়া বা ফানি টাইপ এর অনেক কথাই হতো।

এগুলা অনামিকার সহ্য হয় নি।ও আমাকে ভুল বুঝে।ও মনে করত আমার হয়তো আরো কারো সাথে রিলেশন আছে।

ও আমাকে কোন কথার সুযোগ না দিয়ে সরাসরি বলে দেয় —
আমি এত্তদিন ভুল মানুষকে ভালবেসেছি কোন রকম যোগাযোগ করার চেষ্টা করবে না।এর পর সে আমার আর কোন কথাই শোনে নি।
ফেসবুকে ব্লক করে দেয় নাম্বার ব্লক লিষ্টে রেখে দেয়।এরপর অনামিকা তার বাবা মায়ের পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করতে

রাজি হয় তাদের রেজিস্টারি হয়ে যায় বিয়ের।আর এদিকে তো আমার মাথায় আকাশ ভেংগে পড়ার মত।এত্ত স্বপ্ন এক নিমিষেই শেষ।

মেনে নিতে পারছিলাম না।ও সামন্য বিষয়ে ভুল বুঝে লাইফে এত্ত বড় সিদ্ধান্ত নিল কিভাবে।
আমার কথা একবার ও চিন্তা করলো না
একটা কথা বলারও সুযোগ।দিল না।একটা বার সামনা সামনি হতে চেয়েছিলাম সেটাই সে দেয়নি।

অনেক কষ্টে অনামিকার ফোনে অন্য নাম্বার থেকে ফোন করি।
ওর ভাই ফোনটা রিসিভ করে।আমি অনামিকার কথা জানতে চাইলে সে আমাকে বলে,,—–
ভাই অনামিকা কেমন আছে সে খবর রাখার জন্য তার husband আছে।।আপনার না জানলেই হবে।

আমি অনেক অনুরোধ করি অনামিকাকে ফোনটা দেওয়ার জন্য।কিন্তু সে ফোনটা রেখে দেয়।সেদিন রাতে অনেক কেদেছিলাম।

মা আর রিয়াকে জড়িয়ে ধরে।।এখনও কাদি। ছেলে মানুষ তো তাই চিত্কার করে কাদতে পারি না।কিন্তু ভেতরটা জ্বলে কয়লা।
আমি আর ওর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করিনি।আমি প্রায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

তিন মাস পর আমার ফোনে অচেনা নাম্বার থেকে একটা ফোন আসে।রিসিভ করতেই অনামিকা বলছি —
তুমি কি আবির!?
আমি:শুধু হুম বলি,!!ওপাস থেকে কান্নাজড়িত কন্ঠে আবির তুমি আমাকে মাপ করে দিও।আমি তোমার সাথে অন্যায় করেছি,

ভুল বুঝেছি। আমি তোমার বান্ধাবির কাছ থেকে সব শুনেছি আমি যেমনটা ভেবেছি তুমি তা নও।প্লিজ প্লিজ প্লিজ আবির তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও।
আমার বলার কিছুই ছিল না।শুধু বলেছিলাম যা হবার তো হয়েই গেছে।ভুলটা বুঝতে অনেক দেরি করেছো।!!
অনামিকা–বিশ্বাস করো আবির মোটোও সুখে নেই।প্রতিটা মুহূর্ত নিজেকে অপরাধি মনে হয়।তুমি আমাকে প্লিজ মাফ করে দিও।

নইলে সয়ং আল্লাও আমাকে ক্ষমা করবে না।
আমি শেষ একটা কথা বলি অনামিকা ভাল থেকো জীবনে যাকে পেয়েছো তাকে আমার মত ভুল বুঝো না। তাহলে আরেকটা মনের মৃত্য হবে।
এর পর নিজে থেকে কখনো ওকে ফোন করিনি কারণ আম্মুকে কথা দিয়েছিলাম ঐ মেয়েকে নিজে থেকে ফোন করব না

এবং ঐ মেয়ের জন্য নিজের জীবন নষ্ট করব না।
তাই নিজেকে অনেক কষ্টে সামলে নিয়েছি।কিন্তু দিন শেষে ঠিকই মনটা কাদে অনেক।মাঝে মাঝে কস্টটা নিতে পারি না।।

কিন্তু সকাল হলে আবার হাসি মুখে অফিস যাই মানুষের সাথে মিশি।কিন্তু ভেতরের খবরটা কেউ জানে না।
আজো অনামিকা মাঝে মাঝে ফোন করে বলে নতুন কাউকে ভালবাসতে বা বিয়ে করতে। কিন্তু আমি কোনটাই করতে পারি না।

কারণ আমার সবটা জুড়ে ছিল শুধুই অনামিকা।আমি চাইলে আরো নতুন করে রিলেশন করতে পারতাম সেই সুযোগ এখনও আছে।

কিন্তু অনামিকাকে ভালবাসার পর দ্বিতীয় কাউকে ভালবাসার ক্ষমতা হারিয়েছি।সত্যিকারের ভালবাসা শুধু একবারই হয়।

মন থেকে ভালবেসেছিলাম তাই ওকে ঘৃনা করতে পারি না।আমি শুধু সৃষ্টিকর্তার কাছে চাই একালে তো পাইনি ওকে।

পরকালে যেন আপন করে পাই।সত্যিই ভালবাসা খুব পাগল এবং অবুজ হয়।আমার পক্ষে ওকে কখনো ভোলা সম্ভব নয়,

তাই ভুলার চেষ্টাটাও করিনি।অনামিকা অন্য কারো হয়ে গেছে বলে আমার ভালবাসা শেষ হয়ে যায় নি।

আজো যখন বৃষ্টি নামে আমি বৃষ্টিতে ভিজে চিত্কার করে বলতো থাকি,–! l love you anamika”

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত