অপরিচিতা

অপরিচিতা

মা–তাহলে তুই বিয়ে করবি না!
–না!
–কারণ কি?
–কতবার বলব, ইচ্ছে নেই
–তা হবে কখন, শুনি
–জানি না!
–শেষবার বলছি
–না
–তুই করবি, তার বাপ করবে
বাবা এসে হাজির
বাবা–এর মাঝে আমাকে টানলে কেন? এই বয়সে বিয়ে করলে মানুষ কি বলবে?
–তুমি চুপ করবে,,
বাসা হতে বের হয়ে এসেছি,,,
আমি শেখ আফরান, মাস্টার্স শেষ করে সবেমাত্র একটা চাকরীতে জয়েন করেছি।

এর মাঝে শুরু হয়ে গেল আমার গলায় ফাসি (মানে বিয়ে) দেয়ার জন্য।
তবে আমি যে কাউকে ভালবাসি বলে বিয়ে করছিনা,
তা কিন্তু নয়, আবার কখনও কাউকে ভালবাসিনি তা
কিন্ত নয়।
ভালবেসে ছিলাম একজন কে, তখন আমি কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছিলাম। কোনো এক অপরিচিতা কে দেখে
ভালবাসতে ইচ্ছে হয়েছিল। যা প্রকাশের পর থেকেই
আমার এ অবস্থা। সেই অপরিচিতার কঠিন উত্তরে
আজও আমি ব্যাচেলার,প্রেমহীন একটা মানুষ।
আপনারা ভাবছেন যে অপরিচিতা কি এমন বলল, যে আমাকে এমন একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হল,,,
শুনুন তাহলে,,,,,,
–আমি আপনাকে ভালবাসি,
–ভাল!
–ভাল দিয়ে কি হবে, ভালবাসেন কি না সেটা বলেন?
–নিন পানি খান (গ্লাসটা এগিয়ে দিয়ে)
–উত্তর
–কতটুকু চিনেন আমাকে
–সেটা না জানলে হবে,,
–ওহ, করেন কি?
–ছাত্র
–তার মানে বাপের হোটেল
–হুম,
–তাহলে প্রেম করে বাবার টাকা পয়সা নষ্ট করবেন কেন?তার চেয়ে নিজে রুজিরোজগার করেন, তারপর প্রেম করবেন
–সত্যি, এটা তো ভাবিনী কখনও
–এখন থেকে ভাবুন
আর সেই থেকেই ব্যাচেলার,
আগে তো বাবার টাকা নষ্ট করব না বলে, প্রেম করতে পারিনি, আর এখন নিজের টাকা নষ্ট করব না বলে প্রেম করিনি। ইচ্ছে সরাসরি বিয়ে।
কিন্তু বিয়ে করে আরো একটা সমস্যা বাড়ানোর কি দরকার। তাই করব না বলেই একটু আগ মুহূর্ত পর্যন্ত
ঠিক ছিল। কিন্তু এখন দেখতেছি করতেই হবে,
সন্ধা ভেলা, বাসায় এসে ঢোকার সাথে সাথে অপরিচিতা কাউকে দেখে থমকে দাঁড়াতে হল।
এ আবার কোন গোডাউনের,এখানে কোথা থেকে উৎপত্তি হল,,,,,,
নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালাম, পিচে ফিরে চেয়ে দেখি অপরিচিতা মিটমিট করে হাসছে,
কিন্তু কেন??
নিজের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে, বসে পড়লাম টেবিলে,
কিন্তু ডায়েরী গেল কোথায়,,,,,,
নিজের রুমটা তন্নতন্ন করে খোঁজে ও যখন ডায়েরীর অস্থিত পেলাম না,
যেই মা কে ডাকতে যাব ,তখনই অপরিচিতা এসে হাজির,
–আপনার ডায়েরী (এগিয়ে দিয়ে)
–আপনি কোথায় পেলেন
–টেবিলেন উপর
–সেটা তো রেখে গেছিলাম। কিন্তু আপনার হাতে গেল কিভাবে?
–কেন, আমি নিয়েছি
–আপনি আমার রুমে ঢুকেছেন
–হ্যা, না ডোকে, এটা নেব কিভাবে
–অনুমতি দিল কে?
–অনুমতি কে দিবে,আমার রুম আমি যখন খুশি ঢোকব।
–কি
–হ্যা,
–মানসিক হাস্পাতালে যান,
–কি
-হ্যা,
কেঁদে কেঁদে আমার রুম পদত্যাগ করল,
কিছুক্ষণ পরেই মায়ের আওয়াজ,,,,,
–তোমার আবার কি হল
–তুই মেয়েটাকে কি বলেছিস
–কোন মেয়ে
–কেন, আমাদের বাসায় যে তর ফুফাতো বোন, তাকে
–ওহ,তাহলে ফুফাতো বোন
–হ্যা, ওকে কি বলেছিস
–বলেছি মানসিক হাস্পাতালে যেতে
–কেন?
–কারণ,এখানে এসে যা ইচ্ছে তাই বলছিল,আমার রুম
না কি ওর রুম।
–ঠিক বলেছে
–কি বল ? আমার রুম, ওর রুম হয় কিভাবে,
–কেন, বিয়ে করলে তো দুজন একই রুমে থাকতে হয়, না কি!
–কি? বিয়ে মানে
–আনিকার সাথে বিয়ে, এতে অবাক হওয়ার কি আছে,
–করব না
–কি বললি
তখনই বাবা এসে হাজির __
বাবা– বাবা রাজি হয়ে যা, এ বয়সে আমি আর পারব না,
বাবার অসহায় মুখের দিকে চেয়ে হ্যা বলতেই হল,
মা — তাহলে বিয়ে আজই হবে,
–মা
–হ্যা,
–ফাঁসিতে তো ঝুলতে হবে,সেটা না হয় কয়েকদিন পর ঝুলি,
–না, আজ এক্ষণি।
অজ্ঞতা বিয়েটা আমাকে করতেই হল,
তাও আবার এক কাপড়ে, এমন একটা মেয়ে যার নাম পর্যন্ত আমি জানি না,
ভাবতেই অবাক লাগে
একটু আগে যে ছেলেটা ব্যাচেলার ছিল,এখন সে অন্যের স্বামী।
রাত প্রায় ১টা বাজে,
নিজের রুমে ঢোকব, কি ঢোকব না, এসব ভাবতে ভাবতে রুমের দিকে পা বাড়ালাম, যা হবার হবে——–>
মাথায় ইয়া মোটা একটা ঘুমটা দিয়ে অপরিচিতা বসে আছেন,আমি রুমে ঢোকার সাথে সাথে, উঠে এসে সালাম করল,
তারপর,,,,,,—–
এক ধাক্কায় বেডে ফেলে দিল,
— আমি মানসিক রোগী
–না!
–তাহলে
–, আমিই মানসিক রোগী, কিন্তু আপনি কে?
–অপরিচিতা
— নামটা তো বলুন,
–থাক না কিছুটা অজানা,,,,,,,,

———->অসমাপ্তি <————–

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত