ভাই ও বোনের ভালোবাসা

ভাই ও বোনের ভালোবাসা

:- কিরে ভাইয়া ওঠ,
:- সকাল সকাল ঘ্যান ঘ্যান করিস না যা।
:- মা ডাকতেছে উঠ।
:- মাকে বল পারব না।
:- অনেক জরুরি কাজ আছে ঊঠ।
:- বললাম তো সকাল সকাল ঘুমের বারটা বাজাস না।
:- কি এখন সকাল না ৯:৪৫ বাজে ওঠ না ভাইয়া,
:- যা তো ভাগ এখান থেকে।
:- থাম দেখাচ্ছি মজা।

এই বলে গ্লাস থেকে পানি নিয়ে আমার গায়ে ঢেলে দিল। আমার আর কি করার উঠে বসলাম। এতক্ষনে বুঝলাম ও ডাকছে কেন উনাকে কলেজে রেখে আসতে হবে।

:- কি হইছে বল
:- মা বলছে আমাকে কলেজ রেখে আসতে হবে।
:- পারব না
:- ওকে তাইলে ঐ দিন কার ঘটনা মাকে বলে দিব
:- প্লিজ আমার লক্ষি আপু বলিস না
:- তাইলে চল আমাকে কলেজ এ ড্রপ করে আয়
:- আচ্ছা যাচ্ছি তুই যা।

বলে ফ্রেশ হয়ে বাইক নিয়ে ওকে কলেজ রেখে আসলাম। বাইক থেকে নেমেই,

:- ভাইয়া ১০০ টাকা দে
:- কেন
:- লাগবে
:- পারব না।
:- তাইলে সেই দিন কার কথা মানে ইরাকে নিয়ে মার্কেট করা কথা টা নিলিমা আপুকে বলে দিব। বুঝলাম এর সাথে পারে যাবে না কারন ও আমার সকল দুর্বল জায়গার খবর যানে, তাই কথা না বাড়িয়ে ১৫০ টাকা দিয়ে দিলাম।

:- ভাইয়া চাইলাম ১০০
:- এই ৫০ টাকা দিলাম যেন বিকালে ফিরার সময় আমারে ফোন দিবি না।
:- থ্যাংকিউ ভাইয়া বলে গালে একটা চিমটি দিয়ে দৌর দিল কলেজে।
:- এই সাবধানে যাস

বলে ওখান থেকে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। বাড়িতে আসতেই দেখি মা বাবা দুইজন কোথায় যেন যাচ্ছে।

:- ভালই হল তুই এসে গেছি (আম্মা)
:- কেন তোমরা কই যাও
:- আমার এক বন্ধুর বাড়ি। (আব্বু)
:- ফিরবে কখন…?
:- ফিরতে রাত হবে ফ্রিজে খাবার আছে। আর রাতে অবন্তিকে বলিস কিছু একটা তৈরি করে দিতে।
:- আচ্ছা

আব্বু আম্মু চলে গেল যাক আরামে একটু ঘুমের রাজ্য বিচরন করা যাবে। রুমে গিয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। হঠাৎ ফোনের শব্দে ঘুমের রাজ্যে বিচরনে সমস্যা হল। দেখি পেত্নি ফোন দিছে।

:- কিরে তোরে না ৫০ টাকা দিয়ে আসলাম
:- হুম তুই দরজা খুল আমি বাহিরে দাড়িয়ে আছি।
:- ওহ আসতেছি,

মনে মনে বললাম,আজ একটু মজা দেখাই ১৫ মিনিট হয়ে গেল আমি দরজা খুলছি না। ওহ আবার ফোন দিল,

:- কিরে ভাইয়া খুল
:- খুলতেছি তো
:- ভাইয়া দেখ ঐ ছেলেটা আমার দিকে কি ভাবে তাকিয়ে আছে।
:- কি কোন ব্যাটার এত বড় সাহস?
:- দরজা খুলতেই অবন্তি আমারে ধাক্কা দিয়ে ঢুকে পরল।
:- কিরে কে তোকে জ্বালাচ্ছে?
:- কই কেউ নাতো আমি এমনি বললাম।
:- খুব চালাক হয়ে গেছিস। আর ফ্রিজে খাবার আছে খেয়ে নিস
:- হুম বলে চলে গেল

আমি টিভি দেখতে বসলাম একটু পরে এসে বলল,

:- ভাইয়া রিমোট দে
:- পারব না
:- দিবি কি না বল
:- না দিব না
:- দে না ভাইয়া
:- বললাম তো দিব না
:- মাত্র ৩০ মিনিটের জন্য দে পরে তোকে দিয়ে দিব
:- ওকে নে
:- থ্যাংকু। কিন্তু রিমোর্ট আর পাবি না..!
:- আমি যানি। শোন আমি মাঠে যাচ্ছি তুই ভাল করে দরজা লক করে রাখবি। আর আমি ফোন না দেওয়া পর্যন্ত দরজা খুলবি না
:- হুম যা ।
:- আর রাতে কি খাবি…? রান্না করবি না আমি কিনে নিয়ে আসব।
:- না আমি রান্না করতে পারব।
:- আচ্ছা সাবধানে থাকিস।

বলে চলে আসলাম। বিকালে ক্রিকেট খেলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে অনেক রাত হয়ে যায় আমি বুঝতেই পারিনি। ফোনের শব্দে গল্পের আড্ডা থামল।

:- কিরে ভাইয়া তুই কোথায় ?
:- এই তো মাঠে
:- রাত কত হইছে, আর বাসায় বিদুৎের লাইনে সমস্যা হইছে। তুই আয় বলেই কান্না করে দিল।
:- কিরে কান্না করিস কেন ?
:- আমার ভয় লাগছে তুই আয়।
:- থাম ৫ মিনিটের মধ্য আসতেছি বাসায় ফোন দিতেই দরজা খুলে দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরল।
:- কিরে কি হয়ছে…?
:- তুই দেরি করলি কেন। আমার অনেক ভয় লাগতেছিল।
:- আচ্ছা এইবার তো আসছি।

থাম আগে দেখি বিদুৎের কি হয়েছেরকাট আউট খুলে দেখি ফিউজ পুরে গেছে।ফিউজ লাগিয়ে সেট করতেই ইলেক্ট্রিসিটি চলে আসল।

:- দেখি পাগলি কান্না করে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে।
:- কি রান্না করছিস দে খাইতে
:- হাত মুখ ধুয়ে আয় আমি খাবার দিচ্ছি।
:- হুম বলে হাত মুখ ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি ও খাবার নিয়ে বসে আছে। আলু ভর্তা আর ডাউল!
:- ভাইয়া খেয়ে নে,
:- আচ্ছা। মুখে দিতেই দেখি,ডালে হলুদ & লবন বেশি।
:- ভাইয়া কেমন হইছে….?
:- দারুন। এত ভাল রান্না কবে শিখলি
:- আম্মুর দেখে কোন রকম খেয়ে উঠে আসলাম। একটু পরে ও চিল্লাইতে লাগল,
:-কিরে কি হইছে…?
:- তুই এই ডাল কি ভাবে খাইলি
:- ক্যান কি হইছে…?
:- লবন বেশি হলুদ বেশি। আর বললি অনেক সুন্দর?
:- তাতে কি হয়েছে তোর হাতের রান্না আমার কাছে এমনি অমৃত।
:- ভাইয়া I Love you so much.
:- হইছে আর পাম দেওয়া লাগবে না।আবার ফাইটা যাব।
:- ভাইয়া তুই না বলে আমার বুকে মাথা দিল আমি বললাম
:- পাগলী কোথাকার। বিয়ে হয়ে গেলেই আমাদের ভুলে যাবি…?
:- কখনো না তোদের চেরে যাবই না
:- হুম

৪ বছর পর

আজ পাগলী অনেক বড় হয়ে গেছে। আব্বু আম্মুর পছন্দ মত ছেলের সাথে আজ ওর বিয়ে।কেমন যানি আজ বুকের মধ্য অস্তিরতা কাজ করছে।বিশাল একটা গহব্বরের সৃষ্টি হয়েছে। আজ চলে যাচ্ছে পরের ঘরে। আর কোন দিন সকালে কেউ জ্বালাবে না। কেউ বলবে না ভাইয়া ১০০ টাকা দে। বা কেউ আর ব্লাকমিল করে টাকা নিবে না। রিমোর্ট নিয়ে কারাকারি করবে না।আদর করে জরিয়ে ধরবে না…

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত