সুপ্ত ভালোবাসা

সুপ্ত ভালোবাসা

গল্পের শুরুতেই পরিচয় পর্বটা সেরে নিই।আমি আকাশ।সবে মাএ এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। বাকিটা গল্পের সাথে থাকলেই জানতে পারবেন।

এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে কিছুটা ঝামেলাহীনভাবে দিনযাপন করছি।বাপের হোটেলে খাই আর ঘুমাই পাশাপাশিদুইটা টিউশনি করে দিন ভালোই কেটপ যাচ্ছে।কিন্তু কথায় আছে,ভালো সময় বেশিদিন থাকে না।আমার দশাও তাই হলো।।।।

একদিন টিউশনি থেকে আমি আর আমার দুই বন্ধু ঋত্বিক আর শামীম বাসায় ফিরছিলাম।এমন সময় আমার চোখটা রাস্তার পাশে থেমে যায়।আমি একদম থ হয়ে দাঁড়ায় ছিলাম,,,কি, বুঝলেন না তো কেনো থ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম??আসলে সেখানে একটি পরী দাঁড়িয়ে ছিলো।মানে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।সাদা ড্রেস,খোলা চুল,চোখে চশমা,,এককথায় একটাপরী,,,,,আমাকে থ মেরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ঋত্বিক বললো

ঋত্বিকঃকিরে দোস্ত,,,,,,

আমিঃকি

ঋত্বিকঃমনে তো হয় তুমি এবার ফাইসা গেছো,,

আমিঃমানে??

ঋত্বিকঃমানে, তুমি তো ক্রাশ খাইছো,,,[আসলে ওদের সবার গফ আছে,,শুধু আমার ছাড়া।তাই আমার জন্য গফের ব্যবস্থা করার জন্য,তারা রেডি]

আমিঃকি কস,,আমি কেনো ক্রাশ খাইয়াম??[একটু রাগি ভাব নিয়া ]

ঋত্বিকঃআহা,,ক্রাশ না খাইলে পাক্কা ২ মিনিট তাকায় ছিলি ক্যান??  [শালা ঠিকই খেয়াল করছে।বলেনতো এবার কি করি]

আমিঃদোস্ত ঠিকই কইছোস,,

ঋত্বিকঃমেয়েটা কিন্তু সেই,,তুই কোনো চিন্তা করিস না,, কালকের মাঝে সকল খবর পাইয়া যাবি

আমিঃওকে দোস্ত,,

পরেরদিন সকাল ১১ টায় ঋত্বিক ফোন দিয়ে আমাকে বললো বিকালে যেনো নদীর পাড়ে দেখা করি।আমিও খুব খুশি হয়ে রাজি হয়ে গেলাম।কেননা আমি জানতাম শালা সকল খবর নিয়ে এসেছে।আর প্রথম দেখাতেই মেয়েটাকে আমার ভালো লেগে যায়।কেনই বা লাগবে না বলুন তো??একজন ছেলেকে আকর্ষন করানোর সকল কিছুই ছিলো তার মাঝে,,,আর তাইতো প্রথম দেখাতেই মনের মাঝে ঠিকঠাক মতো জায়গা করে নিল।তো বিকালে গেলাম দেখা করতে।

ঋত্বিকঃদোস্ত,মেয়েটার নাম মেঘা [কাল্পনিক নাম।তবে নামটা আমার খুব পছন্দের]

আমিঃভালো,,,আর কিছু? শামীমঃআসলে, দোস্ত সবকিছুই ভালো কিন্তু একটাই সমস্যা।

আমিঃকোনো বফ আছে??

ঋত্বিকঃআরে বফ থাকলে তো আমরাই সামলে নিতাম।

আমিঃতাহলে??

শামীমঃআসলে মেয়েটা মুসলিম।[ও আপনাদের তো বলাই হয়নি আমি হিন্দু।]

কথাটা শুনে কিছুটা দমে গেলাম।মনটাও খারাপ হয়ে গেলো। যাই হোক না কেনো হারামীগুলা সকল খবর আনছে,,মেয়েটা আমাদের স্কুলেই ১০ ম শ্রেনিতে পড়ে।আমাদের স্কুল মানে যে স্কুল থেকে আমরা এসএসসি দিয়েছি।আমাকে মেঘার এফবি আইডিও দিয়া দিলো শামীম তো আমার ফোনটা নিয়া ওরে রিকুও পাঠাই দিলো।,আরো কিছুক্ষণ পর ওখান থেকে বাসায় চলে আসি।কিছুই ভালো লাগছিলো না।প্রথম বার কাওরে দেখে ভালো লাগলো কিন্তু,,,,,,,,,,,,,

রাতে শুয়ে ফেবু চালাচ্ছি এমন সময় দেখলাম মেয়েটা রিকু একসেপ্ট করেছে।একটু হলেও মনটা ভালো লাগলো।আমিই প্রথমে নক করলাম।রিপ্লাইও আসলো।একটা সময়ের পরে দুজনের মাঝে অনেক কথা হতো।কিন্তু ও আজ পর্যন্ত আমাকে দেখে নি।কিন্তু আমি প্রতিদিনই ওকে দেখতাম,,,কখনো প্রাইভেটের সামনে কখনো স্কুলের সামনে।তো এমনি করতে করতে একদিন ও আমাকে দেখে ফেললো।এরপর থেকে প্রায় দিনই দেখা হতো কিন্তু কেউ কোনোদিন কথা বলিনি অনলাইন ছাড়া।কি জানি একটা ভালো লাগা কাজ করতো ওকে দেখার মাঝে।ও আমাকে খুবই গুরুত্ব দিতো।একটা সময়ের পরে আমি বুঝতে পারলাম আমি ওর প্রতি খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছি।নিজের মনকে বুঝালাম আমি যা চাইছি সেটা কখনোই সম্ভব না,,, তাই নিজের থেকেই যোগাযোগ করাটা কমিয়ে দিলাম।

আমাদের মাঝে ফোন নাম্বারও আদান প্রদান হয়েছিলো।কিন্তু কখনোই কল দেওয়া হয়ে উঠেনি।আসলে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ধর্মই প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়া। এরপর থেকে খুবই কম কথা বলতাম,,ওর কথা শুনে মনে হতো আমাকেও সে ভালোবাসে।কিন্তুপরক্ষণেই মনকে বলতাম এটা হতে পারে না।হয়তো আজও ওকে আমি ভালোবা। কিন্তু সকল পরিনতি চাইলেও মনের মতো হয় না,,,,,আমার এই ভালোবাসার কথা হয়তো কেউ জানবে না।না ই বা জানলো,,,কিছু কিছু জিনিস অপ্রকাশিত থাকাই বাঞ্ছনী। আমার মনের গভীরেই চিরকাল বেঁচে থাকবে আমার এই ভালোবাসা।আমার কাছেই থাক আমার এই সুপ্ত ভালোবাসা,,,,,,,,,,,

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত