ভালবাসা দিবস

ভালবাসা দিবস

– সামনে তো ১৪ ফেব্রুয়ারি তাই না?
– হুমমম। তো??
– খুব ইচ্ছে করছে ঐ দিনটায় তোমায় নিয়ে ঘুরতে।
– শুধুই কি ঐ দিনটাই আমায় নিয়ে ঘুরতে চাও?
– তা না। কিন্তু ঐ দিনটা তো ভালবাসা দিবস। সবাই চায় ঐ দিনে সবার প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে ঘুরতে। সবাই চায় তার প্রিয় মানুষটাকে ভালবাসতে।
– কেনো ঐ দিনেই কেনো ভালবাসতে হবে?

আর কে বলেছে ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবস। শোনো আমরা মুসলিম আমাদের ধর্মে এইসব ভালবাসা দিবস বলতে কিছুই নেই। ভালবাসার জন্য শুধু ১৪ই ফেব্রুয়ারি কেনো হবে। আমি চাই বছরের ৩৬৫ টা দিনই ভালবাসা দিবস আমাদের জন্য। আর ভালবাসা শুধু আমাকে দিতে হবে এটাও বলছি না। ভালবাসা বলতে এটা বোঝায় না যে শুধু প্রেমিক-প্রেমিকাকে ভালবাসতে হবে। ভালবাসার জন্য অনেক মানুষ আছে। তুমি তোমার মা-বাবা কেও তো বলতে পারো যারা তোমাকে পৃথিবীর মুখ দেখিয়েছেন।

– হুমমম।

আসলেই রুপা তো ঠিকই বলেছে। আমরা কখনো এই কথাটা ভাবিনা যে মুসলিমদের জন্য ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবস পালন করা হারাম। আমরা তো পারতাম ঐ দিনটাতে আল্লাহ্কে ভালবাসতে শুধু ঐ দিনটা কেনো সবসময়ই পারি আল্লাহ্কে খুশি করতে। যিনি আমাদের সবাইকে সৃষ্টি করেছেন।এমনো তো হতে পারতো আমাদের মানুষ না সৃষ্টি করে অন্য কিছু সৃষ্টি করতে।

_কি হলো কি ভাবছো?
_তোমার কথা গুলোই ভাবছি।
_শোনো শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্য।

আমি চাইনা এইসব কিছু। আর শোনো কাউকে ভালবাসি বলতে ঐ দিনটাকে কেনো বেছে নেয় সবাই? আমি তোমার বউ। আমি আর তুমি দুজনে ঐ দিনে ঘুরা-ঘুরি না করে নামায পড়ে আল্লাহ্র কাছে দোয়া চাইবো যেনো আমাদের সবাইকে ভাল রাখেন।

_আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি যা চাও তাই হবে।
_মাগরিবের আযান দিচ্ছে নামায পড়ে আসো। আমিও নামায পড়বো।
_হুমমম যাচ্ছি।

নামাজ এর জন্য বের হলাম। নামাজ পড়ে বাসার আসার সময় রুপার কথা গুলো মনে পড়ছে। আসলেই তো ঠিক বলেছে রুপা। মার্কেটে গেলাম একটা নীল রংয়ের শাড়ি কিনলাম আর চুড়ি কিনলাম রুপার জন্য। ইচ্ছে ছিলো ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে দেওয়ার কিন্তু আসলে এইটা ঠিক না। মা-বাবার জন্য কিছু নিলাম। তাই আজই নিয়ে আসলাম। বাসায় যেয়ে দরজা নক করলাম। মা দরজা খুললো।

_আব্বা কই মা?
_তোর আব্বা তো রুমেই আছে। কেনো কি হয়েছে?
_নাহ এমনি রুমে আসো তাহলে।

মায়ের জন্য একটা শাড়ি এবং বাবার জন্য একটা পাঞ্জাবী এনেছিলাম। তাদেরকে দিলাম এবং বললাম পরে দেখো ঠিক আছে কিনা। মা-বাবা অনেক খুশি হয়েছে তাদের খুশি দেখে নিজের কাছে কেমন জানি অনেক ভাল ফিল হচ্ছিলো। আমার রুমে গেলাম গিয়ে দেখলাম রুপা রুমে নেই। রান্না ঘরে সামনে গেলাম। দেখি ঐ খানে।

_এই কি তুমি রান্না ঘরে কেনো? তোমাকে না বলেছি রান্না ঘরে আসতে না। আর কোন ভারি কাজ করবে না। তুমি আমার একটা কথাও শুনো নাহ।

_ভারি কাজ করছি না তো।
_হইছে এখন আসো।
_আর দুই মিনিট অপেক্ষা করো আমার জামাইটা।
_আচ্ছা ঠিক আছে আমার পাগলিটা।

নুডুলস রান্না করছে। রুপা জানে নুডুলসটা আমার অনেক পছন্দের কিন্তু রুপার ভাল লাগতো না। আমার জন্যই রান্না করেছে।

_জ্বী জামাই কাজ শেষ এখন চলেন।
_হাতটি ধরে রুমে আসলাম। চোখ বন্ধ করো।
_কেনো।
_আহা করোনা।
_আচ্ছা করছি। এখন তো বলো।
_হুমমম ঠিক আছে আমি না বলা পর্যন্ত চোখ খুলবেনা।
_আচ্ছা ঠিক আছে। তার হাতে চুড়ি পরিয়ে দিলাম।
_এইবার চোখ খুলো।
_ওয়াও কত্ত সুন্দর চুড়ি গুলো।
_ সত্যি? যাও শাড়িটা পরে আসো।
_শাড়িটাও আরো বেশি সুন্দর গো। কিন্তু আমি তো শাড়ি পড়তে জানিনা।
_ওহহহহ। এখন কি হবে তাহলে??
_তুমি পরিয়ে দাও। তাহলেই তো হয়।
_আচ্ছা। সত্যিই আমি পড়িয়ে দিবো??
_হুমম দাও।

আচ্ছা দাড়াও দিচ্ছি। আর হ্যা এখন আমার বউকে শাড়ি পরিয়ে দিবো। আর কিছুদিনের মধ্যেই বাবা হবো। সবাই দোয়া করবেন আমাদের জন্য। আর হ্যা ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবস যেটা আপনি মনে করছেন সেটা আসলে ঠিক না। যদি আপনি মুসলিম হন তাহলে কখনই এই দিন পালন করবেন না এই টা হারাম। আর সবসময় ভালবাসাটা কে পবিত্র রাখার চেষ্টা করবেন।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত