ঈর্ষান্বিত

ঈর্ষান্বিত

আফিয়াঃ কি করো?

রিফাতঃ কিছুনা এতদিন পর কি মনে করে ফোন দিলে?

আফিয়াঃ তোমার কথা খুব মনে পড়ছে।

রিফাতঃ মনে করার সময়ে মনে করলে না আর এখন কেনো মনে করো?

আফিয়াঃ আমি আমার ভুল বুঝতে পারছি আমাকে মাফ করে দাও।

রিফাতঃ এতদিন দূরে ছিলে দুইজনেই ভালোছিলাম এখন আবার নতুন করে কষ্ট পেতে চাইনা।

এই বলেই ফোনটা কেটে দেয় রিফাত।আফিয়া আর রিফাতের দেখা অত:পর সম্পর্ক হয় আরো এক বছর আগে। কিন্তু আফিয়ার একটু ভুল বুঝার জন্য আজকে তাদের সম্পর্ক শেষ।

আফিয়া আর রিফাতের একদিন দেখা করার কথা কিন্তু আফিয়ার আসতে দেড়ি হচ্ছিলো এমন সময় রিফাতের স্কুল জীবনের বান্ধবী নীলার সাথে দেখা হয় রিফাতের।বন্ধুত্ব এর খাতিরে ফুসকা খাওয়ার জন্য বলে।নীলাও না করেনা,মনে মনে রিফাতকে সেও যে পছন্দ করতো তাই।

নীলা একটা ফুসকা যখন মজা করেই রিফাতকে খাইয়ে দিচ্ছিলো তখন ই রিক্সায় বসে দেখে ফেলে আফিয়া।কিন্তু সে যে আসল কাহিনী তখন জানত না।রিক্সা থেকে নেমে রিফাতের কাছে এসে বলে এই তোমার ভালোবাসার নমুনা,জোড়ে এক চড় মারে রিফাতের গালে।রিফাত কিছুই বলেনা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে আফিয়ার চলে যাওয়ার দিকে।

নীলা বলে সরি দোস্ত আমার জন্য সব হয়েছে।রিফাত বলে না তোর জন্য না।যা হয়েছে আমার ভালোর জন্যই হয়েছে।আর আমি এমন একজন কে ভালোবাসছি যে কিনা এতটুকুতেই আমাকে সন্দেহ করে ছেড়ে চলে গেলো।অথচ আমাকে সত্যিকারের ভালোবাসলে আমাকে অন্তত একবার জিজ্ঞেস করত।যাক বাদ দে তুমি যাও আমিও যাবো।

ফুসকার বিল চুকিয়ে বাসার দিকে চলে যাচ্ছে রিফাত।পিছন থেকে নীলা বলে রিফাত নাম্বার কি তোর আগেরটাই আছে?রিফাত দূর থেকে হ্যা বলে।রিফাত আর নীলা দুইদিকে দুজন চলে যাচ্ছে।আর আফিয়ার মনের মাঝে সৃষ্টি হয় ঘৃণার।

প্রায় ৬মাস পর আফিয়া একদিন নীলাকে কলেজে দেখে অন্য একটি ছেলের সাথে বসা।আর সে তার খালাতো ভাই।আফিয়া অবাক হয়ে যায় সেইদিন দেখলো রিফাতের সাথে আর আজকে তার কাজিনের সাথে।আফিয়া নীলার কাছে গিয়ে নীলাকে ইচ্ছা মত বকা দিতে থাকে।নীলা তাকে সব খুলে বলে আফিয়ার কাজিনের সাথেই তার রিলেশন আর রিফাত শুধুই তার বন্ধু।

আফিয়া তার ভুল বুঝতে পারে আর সেই ভুল থেকেই ফোন দেয় রিফাতকে।কিন্তু ছেলেটাকে যে বড্ড কষ্ট দিয়ে ফেলেছে যার অভিমানে যে আর এখন রিফাত আফিয়ার নেই।আফিয়া চিন্তা করে কি ভাবে রিফাতকে ফিরিয়ে আনা যায়।নীলার সাথে কথা বলে নীলাই একমাত্র পারবে তাকে ফিরিয়ে দিতে।

নীলা রিফাতকে ফোন দিয়ে দেখা করতে বলে রিফাত যখন আসে এসে দেখে আফিয়াকে একটা ছেলে ফুসকা খাইয়ে দিচ্ছে।রিফাতের খারাপ লাগে তবুও আফিয়ার কাছে গিয়ে শুধু কংগ্রাচুলেশনস যানায়।আড়াল থেকে নীলা বের হয়ে বলে দোস্ত ও আমার বয়ফ্রেন্ড আর নীলার কাজিন।ওইদিন নীলার ও এমন দেখে খারাপ লেগেছিলো।

সত্যিকারের ভালোবাসলে এমন জেলাস ফিল হবেই।তা তুই আমি বা অন্য যে কেউ।আর একটা মেয়ে কখনো এই দৃশ্য দেখে সহ্য করার মত থাকেনা।যেই মেয়ে সত্যিকারের ভালোবাসে সে কখনো তার বয়ফ্রেন্ড কে ফোনে ওয়েটিং বা অন্য কোন মেয়ের সাথে কল্পনাও করতে পারেনা।

আর এমন দেখে যে যত রাগ করে অভিমান করে সে তত ভালোবাসে।যেমন আফিয়া তোকে ভালোবাসে আর তুই আফিয়াকে।নীলার বয়ফ্রেন্ড বলে উঠে শুধু মেয়েরা নয় ছেলেদের ও কষ্ট হয় তাদের গার্লফ্রেন্ডকে অন্য কারো সাথে কথা বলতে দেখলে।আর যার এই কষ্ট টুকু ফিল হয়না সে কখনো সত্যিকারের ভালোবাসেনা।

নীলা আফিয়া আর রিফাতের হাত মিলিয়ে দিয়ে নীলার বয়ফ্রেন্ডের হাত ধরে এগিয়ে যায়।রিফাত ও আফিয়াকে ফুসকা খাইয়ে দিচ্ছে নিজের হাতে যা দেখে আর কেউ ঈর্ষান্বিত হবেনা,ধরবে না আর একটি ভালোবাসার সম্পর্কের মাঝে ফাঁটল।

(সমাপ্ত)

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত