ব্রেকাপ অতঃপর বিয়ে

ব্রেকাপ অতঃপর বিয়ে

–তোমার সাথে ব্রেকাপ
– Ok ব্রেকাপ!!
–কোনদিন আর আমার সাথে দেখা করবা না।
– ok করবো না।
— একদম নেকামো করবা না হুমম।
– Ok করবো না!!
— সত্যেই কিন্তু আজকে ব্রেকাপ।
-সেটা আমিও জানি!!
–কিভাবে?
-বলবোনা!!
–কেন বলবা না?
-এমনি?
–বলতেই হবে কিভাবে বোঝলে।
-যদি না বলি?
–খুন করবো।

-পারবে তো খুন করতে?
–হুমম ১০০ বার পারবো।
-তবে খুন করো?
–আগে বলে নাও, কিভাবে বোঝলে আজ ব্রেকাপ করবো।
-না মানে তুমি রেগে গেলেই সবসময় ব্রেকাপ করো। গত ৭ মাস যাবৎ কম হলেও ২০০০ হাজার বার ব্রেকাপ করছো।
–তা যাই হোক আজকে একদম সত্য সত্যেইকরে ফেলেছি!!
-পুরাতন?
-কি?
-এ ডাইলগ টা!!
–তুমি তোমার ডাযলগ নিয়া থাকো আমিচললাম।
-আচ্ছা যাও, রাতে ফোন বন্ধ থাকবে কিন্তু।
— কেন বন্ধ থাকবে কেন?
– যেহেতু ব্রেকাপ হয়ে গেছে তাহলে ফোন দিয়ে কি করবা?
–আচ্ছা ঠিক আছে,ফোন বন্ধ করে রাখ আর না রাখ তাতে আমার কিছু আসে যায় না, আমার কাছে একদম ফোন দিবে না বলে দিলাম হুমম।

— রেগে যাচ্ছ কেন?
– কই না তো!!
— তাহলে দারিয়ে অাছো কেন যাও?
-হুমম যাবই তো যেহেতু ব্রেকাপ।
-এই দারাও?
–কি?
-কফির বিল টা দিয়ে যাও?
–আমি দিবো কেন?
-আজ যেহেতু ব্রেকাপ করে দিছো সেই হেতু তোমার বিল তুমি দিবে, আমার টা আমি।
–আচ্ছা মনে যেন থাকে।
-থাকবে না।
–কেন?
-সেটা আমার বেপার!!
–আচছা।
-হুম!!
–আমি গেলাম?
-যাও আটকিয়ে রাখছে কে?
–আটকালে সমস্যা কি?
-ব্রেকাপ যেহেতু।।

–তো কি হইছে।।
-অধিকার নাই আমার?
–ব্রেকাপ আমি করছি, তুমি তো করো নাই।?
-আমিও করে দিছি
–মানে?
-মানেরকি আছে আমিও ব্রেকাপ করেদিছি।
–তারমানে অন্যজনের সাথে তুমি প্রেম করো?
-সমস্যা কি যেহেতু আমাদের ব্রকাপ।
–না একদম না,আমি ছাড়া তুমি কাওকে ভালবাসতে পারবে না হুমম।
-কেন, বাধা দিবে কে?
–আমি দিবো।
-কিভাবে দিবে।
–তোমায় খুন করে ফেলবো, তোমার জীবনে শুধু পাখি আর অন্য কোন মেয়ে আসতে পারে না।।
-লাইফ টা আমার, আমি প্রেম কররবোকি না সেটা আমার বিষয়।
–রাগ তুলবে না কিন্তু?
-রাগ হচ্ছে কেন?
–আমার সামনে অন্যমেয়ের নাম বলবে না।

-কেন বলবো না? এইযে মহারানী চোখে পানি কেন?
:- তাতে তোমার সমস্যা কি?
-সমস্যা নাই তবে কান্নাকাটি আমার
একদম ভাল্লাগে না।
–আমার ইচ্ছা আমি কাঁদবো।।
-আচ্ছা তুমি কান্নাঁকাটি করো, আমার খোদা লাগছে।।
–খেয়ে নাও মানা করছে কে?
-টাকা তো নাই?
–কত্ত লাগবে?
-৫০ টাকা।
–এ নাও।

– টাকাটা কালকে ফেক্সি করে পাঠিয়ে দিবো।
–লাগবে না।
-কেন?
— চলো আমার সাথে?
– কোথায়?
–কাজী অফিসে।।
-সেখানে কেন?
–বিয়ে করবো?
-কাকে,, নতুন কেউ আছে নাকি?
–না, তকে করবো?
-আমাকে বিয়ে, এখন?
–হ্যা, সমস্যা কোন?
-না মানে
— কোন মানে বোঝিনা আমি, আজ আমায় বিয়ে করতে হবে। তুমার জীবনে আমি কাওকে আসতে দিবো না।
-আমি যাবো না।।
–তুই যাবি তর ঘার যাবে।

অতঃপর জোর করেই কাজী অফিস নিয়ে বিয়ে করে ফেল্ল। আমি তো মহা বিপদে পরলাম। আব্বা যদি জানতে পারে আমি বিয়ে করছি তাহলে আর রক্ষা নাই।

–এই কি ভাবছো?
-বাসায় গেলে আব্বা তো আমারে ১২ টা বাজাবে।
–আমি আছি তো?
-সেটা তো বড় সমস্যা।
–মানে?
-বাপে যদি জানে আমার কি হাল করবে ভাবতে পারছো।
–সেটা বড় কথা না, কথা হলো এখন আমার সাথে যেতে হবে তোমাদের বাড়ি।
-কি আর করার যেতে তো হবেই, বেচেঁ থাকলে মসজিদে ৩ কেজি বাতাসা দিবো।

আফাতত বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছি, আর মনে মনে চিন্তা করতেছি কি করবো। এমন সময় পাখি আমার শার্টের কলার ধরে গেইটের ভিতরে ঢোকালো। আমি তো ভয়ে প্রায় হাফ মরে গেছি। ভিতরে ঢোকতেই দেখি আব্বা সামনে বসে আছে আর হাতে পুরনো এক বন্ধুক। কোন কথা না বলে পাখির হাতটা হালকা জাটকি দিয়ে দিলাম এক দৌড়। এমন দৌড় আগে কোন দিন দিছি মনে পরেছে না। যদি এখন দৌর প্রতিযোগিতা হতো আমি নিশ্চিত “উসান বোল্ট ” কে পিছনে ফেলে আমি বিজয়ি হতাম। হাফাতে হাফাতে এক দোকানের সামনে এসে থামলাম। মনে মনে বললাম আজ আমার বাসায় আমার ঠাই নেই। চিন্তাও হচ্ছে,, পাখি কে তো রেখে আসলাম তার কি হবে।

–ধেত্ত নিজে বাচঁলে বাপের নাম।

সে কি করবে সেটা সেই জানে। অনেক টা সময় বসে বসে চিন্তা করতেছি। বাসায় যাবো কি করে,, এ দিকে খোদাও লাগছে টাকাও নেই,, সন্ধা হইতে আর বেশি সময়ও নেই। এমন সময় পলাশের ফোন।

-হ্যালো দোস্ত কই তুই?
–কেন রে বিড়ি খাওয়ার টাকা নাই নাকি।
-আরে না,, তুই নাকি বিয়ে করছিস?
–হ, তাতে তর কি?
– কিছু না, কই তুই?
–চান্দের দেশে হানিমুনে আছি ডিসার্টাব করিস না দেখ
– তুই মর শালা।
–দোস্ত মরেই গেছি।
-বাসায় আয়।
–আসতেছি দোয়া করিস,, বেচে গেলে সিগারেটের টাকা সব আজকে আমি দিবো।

অতপর বাসার উদ্যশে রওনা দিলাম। হাটছি আর হাটছি বাসার সামনে গেইট থেকেই একটা উকি দিলাম। যা দেখলাম সেটা কল্পনাও করি নাই। দেখি আব্বা, আম্মু, ছোট বোন,আর আমার পাখি হাসা হাসি করতেছে, সাথে চা ও খাচ্ছে। ব্যাপর টা ঠিক কি বোঝতে পারছি না। এমন সময় আব্বার ডাক.

— শুভ এদিকে আয়?
-এই কাম হইছে দেখে ফেলেছে আব্বা।ভয়ে ভয়ে এগিয়ে গিয়ে বল্লাম জ্বি আব্বা?

–কই থাকিস?
-না আব্বা মানে আসলে,,
— হইছে আর মানে মানে করতে হবে না।
– জ্বি আব্বা?
— এই নে টাকা বাজার থেকে বাজারকরে নিয়ে আয়।
-এখন বাজার কেন?
— তর শশুর বাড়ি থেকে মানুষ আসবে খেতে দিতে হবে না।
-আমার শশুুর বাড়ি মানে।
— বিয়ে করেছিস আর শশুুর বাড়ি চিনিস না।
–ওহ তাই তো।
– যা এক্ষনি যা।
– হ্যা বাবা যাচ্ছি। পাখির দিকে একবার

তাকালাম দেখি সে হাসতেছে। তাহলে কি বাবা বিয়ে টা মেনে নিয়েছে। কেমন মেয়েরে মাইরি ৩ ঘন্টায় আমার পুরা ফ্যামিলি কে পটিয়ে নিয়েছে। কি আর করার যাই বাজার করতে হবে,শশুুর আব্বা নাকি আসবে।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত