ভালবাসা প্লাস নতুন একটা পরিচয়

ভালবাসা প্লাস নতুন একটা পরিচয়

সকাল সকাল কোন সালা মুখে পানি দিলরে।
ও সরি আমি আপনারে দেখতে পাই নাই একটা
মেয়ে বলল।
-তা দেখবেন ক্যান বড় লোক বাবার আদরের দুলালী না দেখবেন ক্যামনে।
– তো আপনি এই খানে শুয়ে আছেন ক্যান, এটা কী ঘুমানোর জায়গা । (মেয়ে)
– ওকে ওকে ঠিক আছে, দূর ঘুমটাই নষ্ট।
কী আর করার আছে, এইটা তো আর বাবার
হোটেল না যে আরাম ছে ঘুমানো যাবে।

এই না না আপনারা আবার ভাইবেন না যে
হোটের এর বারান্দাই ঘুমাইছি।
আমি তো ভাই স্টেশন এ ঘুমাই আছি,
বাপ মা গত হইছে সেই কবে।
এতদিন কাকুর ঘাড়ে চরে খাইছিলাম,
সেইটা ও বন্ধ হইয়া গেছে।
তাই ঢাকাই যাচ্ছি দেখি কপালডা বড় হয় নাকি সেই উদ্দেশ্যে।

আপন বলতে ছিল একটা গিটার সেটা বিক্রি করছি গত রাতে ৭৭৫ টাকা দিয়া।
বলে না বিপদ আসলে চারিদিকে দিয়া আসে,
সালা হারামি কাকু কম্পিউটারটা ও নিতে দেই
নাই।
ও হ্যা নামটা তো বলি নাই, আমি সাহরিয়া,
ঢাকাই যামু খালি ভাড়াটা আছে।
আহা ফাটাফাটি খিদা লাগছে কাল রাত থেইকা স্টেশন এ শুয়ে আছি।
কী যে করি ভাড়া ৪৮০ টাকা, খামু কী যাইতাম কেমনে।
শুনছিলাম নায়ক রাজ্জাক নাকি আগে কুলি ছিল, দূর আমার আবার কে আছে তাই এত্ত
লজ্জা পাইয়া লাভ নাই।
– ওইতো একটা লোক অনেক গুলো ব্যাগ নিয়া এইদিক ওইদিক তাকাইতেছে, যা সাহরিয়া কাজে লাইগা পর, আমার পিচ্চি ব্যাগটা ঘাড়ে নিয়া, লোকটার সামনে গিয়া কইলাম।
– স্যার আপনার ব্যাগ গুলো আমি নিয়া গিয়া দিতাছি।

– না না বাবা তুমি নিবা ক্যান আমরা কুলি ডাকতেছি।(লোকটার বউ)
– না ম্যাডাম মনে করের আমি সে রকমই।
– তোমারে দেখেতো তেমন মনে হচ্ছে না। (লোকটা)।
– আচ্ছা এখন কথা বাদ দেন ট্রেন ছেরে দিবে, বলে ব্যাগ গুলো নিয়া গেলাম, গিয়ে দেখি ওই
পানি ফেলা মেয়েটা বসে আছে।
ওই উঠেন এই খানে স্যার ম্যাম বসবে,
– ওই আপনি কে হ্যা এইটা আমার সিট (মেয়ে)।
– কীইইইই হইছেরে রিয়া (ম্যাম)
– দেখ না মা ওই ছেলেটা বলছে, এই খানে নাকি ওর ম্যাডাম আর স্যার বসবে।
– আমি বুঝতে পারিনাই ওনি আপনার মা,সব ব্যাগ নিয়ে আসলাম। এর মধ্যে ট্রেন ছেরে দিছে। দূর টিকেট টা ও করা হল না।

টাকা চাইতে ও সরম লাগছে, তাই বললাম
স্যার আমি গেলাম।
– এই দাঁড়াও,, তুমি কই থাক। (ম্যাম)
-আসলে ম্যাম,,,, আমি মানে।
– মা ও স্টেশন এ শুয়ে ছিল। (রিয়া)
– কীইইইই,,,, স্টেশন মানে (স্যার)।
তারপর সব কিছু খুলে বললাম।
– তো ঢাকাই কই যাবা থাকবা কই কিছু ঠিক
করছ। (স্যার)
– না,,,,, আমি রাজ্জাক এর মতো স্টেশনে কুলি হয়ে থাকতে থাকতে নায়ক হয়ে যাব।
সবাই তো হেঁসে হেঁসে শেষ। রিয়া মেয়েটা ভালই কী সুন্দর করে হাঁসে।
-তো পড়া শুনা করছ কত দূর (ম্যাম)

– আমি ইন্টার পাস করছি এই একমাস আগে ।
– ওহহহ তার মানে রিয়ার সাথে,, (ম্যাম)
– আচ্ছা তোমার জিপিএ কত। (রিয়া)
– আমার ৪.০০,,, হি হি হি। সারাদিন ঘুরে খাইছি
কেমনে রেজাল্ট হইব, জানতাম নাকি এমন ভাবে বাড়ি ছারতে হইব।
আচ্ছা তোমার রেজাল্ট কত।
– আমি গোল্ডেন পাইছি (রিয়া)
– আচ্ছা তুমি কী করবা ঢাকাই গিয়ে। (স্যার)
– জানি না স্যার আগে যাই কিছু একটা হইবই।

– আচ্ছা শোন স্যার স্যার করো না আঙ্কেল বলবা এই বার থেকে। (আঙ্কেল)
– আচ্ছা আঙ্কেল।
– আচ্ছা তুমি কী কী পারো (আন্টি)
– আমি ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ এর সকল সমস্যার সমাধান করতে পারি, ও হ্যা গেম খেলতে পারি আর রুবিক্স কিউব ১ মিনিটে
মিলাইতে পারি।
-সবাইতো হা করে আছে আমার দিকে।
– কীইইইই এই সব দিয়ে কী করবা, করে খাবার মতো কী জানো (আঙ্কেল)
– আসলে আঙ্কেল আগে কোনদিন করে খাই নাই তো তাই তাই কিচ্ছু জানি না।
– হুমমমমমমম ভালই (রিয়া)
– তো টিকেট কাটছ নাকি কাটার সময়ই পাও নাই (আন্টি)।

– না মানে আন্টি কাঁটা হয় নাই, মোটেই ৭৫০ টা পকেট এ আছে, তাও আবার প্রিয় গিটারটা বেঁচে দিয়া।
– তার মানে তুমি গিটার ও বাঁজাতে পার, (রিয়া)
– হুমমমমমমম, এইটা তো আমার প্রতিদিনের কাজ ছিল। একি রুবিক্স কিউব তুমি মিলাতে পার।
– না না অনেক দিন থেকে চেষ্টা করছি পারছিই না। (রিয়া)
– আমি পারি দাও।
– এই নাও দেখি কেমন পার।(রিয়া)
– হা হা এইটা তো আমার কোন ব্যাপারই না।
– এমা এত তারাতারি কেমনে করলে, (রিয়া)
– ভাল কাজ পারি না তো তাই সব আজাইরা কাজ ভালপারি।

-মা আমার ফোনটার পাসওয়ার্ড কেমন খুলছে না, এখন কী হবে।
– পাসওয়ার্ড হি হি এই ব্যাপার, দেখি ফোনটা।
– ওয়াও এইটা কেমনে করলে আমাকে শিখাও না একটু। (রিয়া)
– না মানে এই খানে কেমনে হবে।
-ও হ্যা তোমার তোমার নামটাই তো শোনা হল না
কী নাম তোমার (আন্টি)
– আমার নাম সাহরিয়া আন্টি।
– আচ্ছা তোমার তো কোন থাকার জায়গা নাই
আর আমাদের ও বাসাই কোন ছেলে নাই, আমার আফিসের কাজে বাসাই থাকা ও হয় না।
তুমি একটু বাজার করলা আর রিয়া কে ও সব শিখাইলা, এতে কত টাকা মাসে দিতে হবে বল।(আঙ্কেল)
– ছি ছি আঙ্কেল টাকা কেন দিতে হবে দুই বেলা দুই মুঠো খাইতে দিয়েন তা হলেই হবে।

– আচ্ছা সাহরিয়া তোমার বাবা মা কেমনে মারা
গেছে (আন্টি)
– জানি না আন্টি সবাই বলে ব্যাস আক্সিডেন্ট এ নাকি।
– মা তুমি ও দেখছ না ওর মন খারাপ, (রিয়া)
-আচ্ছা বাবা তুমি কী কিছু খেয়েছ (আন্টি)
– না মানে আন্টি।
– আচ্ছা থাক আর কিছু বলতে হবে না, রিয়া মা
ওকে কেক আর জুস দে,, মুখটা কেমন শুকিয়ে
ফেলেছে।
– এই নাও ধরো খেয়ে নাও বাবু (রিয়া)
-একিরে আমি সোজা বাবু হয়ে গেলাম,
হি হি আর যাই হোক থাকা খাওয়া ফ্রি।

ওরে বাবারে কত্ত বড় বাড়ি ১৮ বছর এর লাইফ
এ জীবনে ও দেখিনি।
আচ্ছা রিয়া এইটা তোমাদের বাড়ি।
-হুমমমমমমম, কেন।
– না মানে এমনি, মনে মনে ভাবছি সালা
কোন মোরগ এইটার মালিক হইব আল্লাই
জানে।
– ওই কী ভাবছ,,, (রিয়া)
– না না কিছু না।

– সাহরিয়া এই দিকে আয়তো বাবা, একটু হেল্প কর এই গুলো একটু ভেতরে নিয়ে যা। (আন্টি)
-হুমমমমমমম আন্টি।
– তোকে কত কষ্ট দিচ্ছিরে বাবা (আঙ্কেল)
না না আঙ্কেল আপনারা কত ভাল একটা
ছেলেকে জানেন না চিনিন না নিজের বাড়িতের
জায়গা দিলেন,, আমার নিজের বলতে কেউ
নাই কিন্তুু এমন কাউকে পাব ভাবিনি।
(কেঁদে ফেলছি)
– আরে কাঁদছ কেন আজকে থেকে আমাদের
কে নিজের মতো দেখবা। (আন্টি)
– হুমমমমমমম।

– রিয়া,,, মা ওকে ঘরটা দেখিয়ে দে তো।
– এই দিকে আস পিচ্চি বাবু হি হি (রিয়া)
– এত বড় রুম জীবনে দেখিনি।
– এই যে মি.পিচ্চি খেতে এসো, (রিয়া)।
– ওরে ব্যাস এতো কিছু, কোনটা খাব আর না খাব বুঝতে পারছিলাম না।
খাওয়া শেষে ছাঁদা চলে গেলাম একা একা বসে
আছি।
হঠাৎ রিয়া কই থেকে একটা গিটার নিয়ে আসল
আরে এটাতো আমার কই পাইলা এইটা তো আমি।
– তুমি যখন গিটারটা নিয়ে ওই দোকানে গেছিলা
আমি তোমাকে দেখছিলাম।
দোকান থেকে বের হবার পর কেমন জানি লাগল তোমার মুখটা,বুঝতে পারলাম বিপদে না
পড়লে কেউ গিটার বিক্রি করে না, তাই কিনে
ফেল্লাম, আর সকালে ও ইচ্ছে করেই তোমার মুখে পানি দিছিলাম। (রিয়া)
– কীইইইই? কত দিয়ে গিটারটা কিনছ।

– ১২৫০ টাকা। (রিয়া)
– ও মা গো। সালা ৫ মিনিটে ৫০০ লাভ করছে।
– আচ্ছা ওই সব বাদ দাও একটা গান শোনাও
দেখি। (রিয়া)।
– গিটার টা আমার হাতে নিয়ে গান গাইতে লাগলাম।
( একটা গোপন কথা ছিল বলবার
বন্ধু সময় হবে কী তোমার।
একবার শুনে ভুলে যেও বার বার
ভুলেও কাউকে বলো না আবার)
– ওয়াও তুমি যেমন কিউট তোমার গান
গাওয়াটা ও অনেক কিউট। হি হি হি
– বলেই রিয়া দৌড়ে চলে গেল।

রিয়া দৌঁড় দিয়ে ছাঁদ থেকে নেমে গেল
আর আমি হা করে তাকাই আছি।
দূর আমি হা কইরা আছি ক্যান মশা
ঢুকব তো আবার..হি হি।
না এখন আর থাকা যাইব না আমার
আবার অনেক ভূতের ভয়, কোনদিন
দেখি নাই কিন্তুু লাগে আর কী।
ঘরে গেলাম শুয়ে পড়ছি, আহা এত্ত
নরম ক্যান লাগে না এখন ঘুমানো লাগবে।
ওমা আমি বাইক চালাইতেছি আহা
কী আনন্দ আকাশে মাটিতে, বাইক চালাইতেছি তো তাই মাটিতে আনন্দ হি হি,,
– সাহরিয়া এই কী করছিস হাত, পা উপরে তুলে
(আন্টি)

– ওহহহ সপ্নে বাইক চালাইতেছিলাম, তাই তো
বলি এই ৪”কপালের মালিকরে আবার কে
বাইক কিন্না দিব।
না না কিছু না আন্টি এমনি।
– হুমমমম তারাতারি উঁঠে খেতে আয়।
– আচ্ছা যাচ্ছি, খাবার টেবিলে আসলাম কত্ত
খাওন মজা আর মজা। হি হি
– কীইইইই পিচ্চি বাবুটার ঘুম ভাংছে (রিয়া)
– না আর সহ্য হচ্ছে না,,, আমার ঝগড়া করার
রুপটা বের করতে হইব। হুমমমমমমম ভংছে
পেত্নী বুড়ি।

– মা দেখ সাহরিয়া আমারে পেত্নী বলছে।
– হুমমমমমমম ঠিক বলছে।সাহরিয়া বাবা খেয়ে একটু বাজারে যেতে পারবি। (আন্টি)
– হুমমমমমমম আন্টি আপনি খালি বলেন কী কী লাগবে আমি মিনিটের মধ্যে সব টাটকা সবজি এনে দিচ্ছি।
– ওলে বাবা পিচ্চি পোলা দেখি সব পারে (রিয়া)
– তোমারে খালি একবার বাগে পাই পেত্নী পুরো লবণ দিয়ে মাখো মাখো করে খাইয়া ফালামু।
– সাহরিয়া এইনে টাকা আর ধর লিষ্ট (আন্টি)
– মা আমি ও যাব বাজারে (রিয়া)
– আচ্ছা যা কিন্তুু কোন বেয়াদবি করবি না।
– ওকে হি হি হি চলো পিচ্চি বাবু।
– ওই তোরে আমি,, কেমনডা লাগে কন পিচ্চি বলুক ভালা কথা আবার বাবু ক্যান লাগানো লাগবে।
– এই যে পিচ্চি বাজার এই দিকে,, আচ্ছা পিচ্চি তোমার কোন ‘গফ’ নাই।

– হুমমমমমমম ছিল এখন ৫ পোলার মা হইছে,
আর কিছু।
-না আর কিছু না,, (রিয়া)
– মামা লাউ কত করে।
– ৫০ টাকা।
– কীইইইই এই লাউ ৫০ টাকা, কেমন যানি আবার শক্ত শক্ত ৩০ টাকা দেই।
– না হবে না।
– আচ্ছা যান ৩৫ টাকা,,
– মামা ধরেন তো ৫০ টাকা ওরে দিয়েন না, (রিয়া)
– যাক বাবা, করো খরচ বাবার টাকা আছে কী আর করবা।
এই ভাবে সব কিছুতে ব্যাগরা ঘটাইয়া দিতেছিল, কোন রকমে বাজার শেষ হল আবার সব কিছু আমিই বহন করতেছি, কেমনডা লাগে কন।

বাসাই আইসা আবার বানাই বানাই বলছে ওই না গেলে নাকি হতই না।
কী মেয়েরে বাবা, জীবনে এমন মেয়ে দেখি নাই।

দুপুরে খেয়ে ঘুমাই গেছিলাম হঠাৎ আআআআআআআ কারো চিৎকার শুনে লাফ দিয়া উঠলাম।
বাইরে এসে দেখি কেউ নেই, ছাঁদে হাঁসা হাঁসির
শব্দ শুনে উপরে গেলাম।
ও মা গো এত্ত মেয়ে এক পাশে সব আন্টি
আর এক দিকে সব রিয়া মানে আমাদের
বয়সের হবে।
আপনারা কিছু মনে কইরেন না আবার সবাই রিয়াদের বাসার ভাড়াটে।
আমাকে দেখতে পেয়ে আন্টি সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল।
চলে আসছিলাম হঠাৎ রিয়ার ডাক এই পিচ্চি।
পিছনে তাকালাম।

– খুব নাকি রুবিক্স কিউব মিলাতে পার, আজকে
বাজি হয়ে যাবে কে হারে আর কে জিতে।
৫০০ টাকা করে। (রিয়া)
– আসলে আমার কাছে তো টাকা নাই।
– আন্টি বলল আমি সাহরিয়ার টাকা দিব।
– আচ্ছা ঠিক আছে এই মালিহা আয় তো
দেখি আমাদের কে হারাই (রিয়া)
– সব আন্টিরা ও আসল।

– প্রথমে সেই মালিহার পালা ১মিনিট ৩০ সেকেন্ড লাগল তার।
– আমি তো মনে মনে হাঁসছি আমার খুব বেশি হলে ১ মিনিট ১০ সেকেন্ড লাগে।
এবার আমার পালা আমার মোট ১ মিনিট লাগল।
সবার মুখ কালো হয়ে গেল,
চলে আসছিলাম আবার ডাক পড়ল।
– একটাতে জিতেছ বলে সব পার তাই না, এই রকি কই তুই ছাঁদে আয় তো। (রিয়া)
– কাকে যেন ফোন করল আর একটা মোরগের মতো ছেরে আসল গিটার হাতে।
– এবার হেরে দেখাও চান্দু (রিয়া)
– রকি শুরু কর, (রিয়া)
– কী যানি কী রাপ একটা গান করল সব তো মাথার উপর দিয়া গেল।
সবাই তো কী হাত তালি দিতেছে, শুধু আন্টি ছারা।

মনে মনে ভাবলাম হারলে চলবে না।
– কী এইবার তুমি শুরু করো (রিয়া)।
– দেখলাম আমার গিটারটা ছাদের এক কোনে পরে আছে গিটার টা নিলাম। আর গাইতে লাগলাম…….
(কেনও ভাব ছেরে যাব তোমায়
ছেরে গেলে তোমায় পাব কোথায়।
তোমাকে নিয়ে জীবন আর
জীবন তো হয় না ‘দু’বার।
তুমি আমার বসুন্ধরা,
তুমি আমার বাঁচা মরা,
তুমি আমার রঙ্গিন আসা,
তুমি আমার ভালবাসি,)
গানটা শেষ সবাই তো কোন কথা বলছে
আমি গিটার টা রেখে চলে আসলাম।

শুয়ে শুয়ে গল্প লেখছি, হঠাৎ রিয়া পেত্নীর আগমন।
– কী কর।(রিয়া)
– কিছু না একটা টিকটিকি পানিতে পড়ে গেছে
তাকে উদ্ধার করছি।
– ওই কী করচ বলো। (রিয়া)
– কিছু না গল্প লেখি।
– তোমার গল্প কোন হাদারাম এরা পড়ে শুনি। (রিয়া)
– ওই শোন আমাকে যা বলার বলবা কিন্তুু আমার পাঠক দের কিছু বলবা না। ওনারা
তোমার মতো না অনেক ভালা।

– হইছে হইছে আমার কম্পিউটার এ গেমস লেখা যাতেছে না চলে দেখ কী হইছে। (রিয়া)
– হুমমমমমমম চলো।
ওই এইটা কী করছ পুরো সিষ্টেমই তো ফেলে দিছ।
– কি আমি কিছু ফেলে দেই নাই সব তো লাগানোই আছে। (রিয়া)
– দূর পাগলি সব সিষ্টেম হ্যাং হয়ে গেছে,
তোমার কাছে উইনডোজ ডিক্স আছে।
– দূর থাকো তুমি, আব্বু আব্বু এইটা হবে না
নতুন একটা কম্পিউটার লাগবে। (রিয়া)
– না আঙ্কের ৩০ টাকা হলেই আবার ১ বছর চলে যাবে।

– রিয়া তোরে না ১ মাস আগেই না নিয়ে দিলাম
প্রতি মাসে মাসে লাগে কম্পিউটার (আন্টি)
– আব্বু দেখ মা কেমন করছে।
– না মা কালকেই নতুন নিয়ে দিব। (আঙ্কের)
– আঙ্কের ৩০ টাকা হবে আপনার কাছে, (আমি)
– এই নাও ধরো ৫০০ টাকা।
– আঙ্কের না ৩০ টাকা থাকলে দেন।
টাকাটা নিয়ে আসছিলাম রিয়া ও পিছ ধরল
ওই ও যাবে।
– রাস্থাই হাঁটছি সোডিয়াম বাতির আলোতে চাঁদ দেখতে তেমন ভাল লাগছে না। আমাদের খোলা মাঠে অনেক ভাল লাগে।
রিয়া পাশে আছে।

– আচ্ছা রিয়া জানো তুমি যেমন এতো টাকা নষ্ট করো না একবার ভাব, কেউ হয়তো ৫ টাকার জন্য না খেয়ে আছে, আমি কত না খেয়ে থাকছি জানো, অনেক রাতে ওই স্টেশনে ও ঘুমাইছি জানো, বাবা মা ছিল না, এই বেলা পাইতাম ওই বেলা পাইতাম না, আচ্ছা রিয়া তোমার বাবা হয়ত আমাকে তোমাদের বাসাই আশ্রয় দিয়েছে
না হলে আজ ও হয়তো না খেয়ে থাকতাম।
রিয়া একবার ভাব তোমার সাথে একটা এমন
একটা ছেলে আছে যার আপন কেউ নাই,
তবু ও কত্ত হাঁসি মুখে আছে। আর তুমি এমন সামান্য কারনেই রাগ করলা।
আচ্ছা চলো আইসক্রিম খাবা.
– হুমমমমমমম খাব।

– আমার কাছে কিন্তুু ৩০ টাকা আছে ১৫ টাকা
দামের থেকে বেশি দামের আনতে পারব না
– আচ্ছা যাও আনো (রিয়া)
– ধরো এই নাও খাও।
আচ্ছা চলো বাড়ির দিকে যাই.
– কেন ডিক্স নিবা না (রিয়া)
– না আমার ব্যাগে আছে একটা ওইটাই হবে।
– তা হলে এই খানে আনলা ক্যান। তোমার রাগটা ভাঙ্গানোর জন্য। আচ্ছা আমাকে তোমার সহ্য হয় না তাই না রিয়া। তুমি বললে আমি চলে যাব, আমি যানি আমি থাকলে তোমার বিরক্ত হচ্ছে । আচ্ছা কালকেই চলে যাব নাও।
– ওই আমি একবার ও ওই কথা বলছি খালি এতো বুঝ কেন একটা চর দিমু পিচ্চি।
দুই জনেই হাঁসছি।

– সাহরিয়া আর একটা গান শুনানা পিলিজ (রিয়া)।
– আচ্ছা ওকে শুনো পাগলি.
(আমার রাতের যত তারা
সব ভালবাসায় ভরা..
আমার আছে বিশাল আকাশ
বইছে শ্রাবণ ধারা…)
এমন দুষ্টুমি করতে করতে কেটে গেল ১৫ দিন।
বলে না কুকুরের পেটে ঘি সয় না,, আমার বেলায় উল্টো ৪” কপালে সুখ সয় না।

হঠাৎ রিয়ার বিয়ে ঠিক হলো ছেলে বিশাল বড়
লোক আমেরিকা থাকে।

যাক ওর ভাল জায়গায় বিয়ে হবে তাই তো আমি চাই। বিয়ের সব দায়িত্ব আমার উপরে
সব ভালই চলছে। কিন্তুু রিয়া কেমন মন মরা
কেমন লাগছে মেয়েটাকে।
আমার ও খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তুু যেই মানুষ দুইটা সব দিল তাদের সাথে কেমনে বেইমানি করি।
বিয়ে আগের দিন রাতে রিয়া শুধু একটা কথা বলল। কিছু বলার আছে তোমার।। আমি কান্নাটা ভেতরে রেখে বললাম আমারে ভুইলা যেও না যে পাগলি,,, হি হি হি। রিয়া দৌড়ে চলে গেল। সেদিন রাতে খুব কাঁদছি।
বুকে কষ্ট নিয়ে সব ঠিক ঠাক চলছিল।

উল্টা পাল্টা ঘটনা ঘটল রিয়াকে যখন কবুল বলতে বলা হল।
আমি সামনেই ছিলাম, সব কিছু ফেলে দিয়ে আমার দিকে কে যেন দৌড়ে আসছে।
হায় হায় এটা তো রিয়া, এসেই আমাকে জরিয়ে ধরল আর বলল ঐ ইডিয়ট আমি তোরে ভালবাসি জানস না, আমি তোরে ছারা কেমনে থাকমু, কেন কিছু বলিস নাই। রিয়া এটা হয় না
আমার না আছে বাবা, মা না আছে থাকার জায়গা আর না আছে টাকা,
– আমি কিছু চাই না তোরে হলেই আমার হবে (রিয়া).
হঠাৎ রিয়ার বাবা আসল আর ঠাসসসসসসস ২ টা চর দিছে।
মাথা নিচে দিয়ে আছি।

– আমাদের নুন খেয়ে আমাদের মেয়েই কাঁদাও ইডিয়েট, একবার বলতা, আমার মেয়েটার সুখই আমার কাছে সব। সারাটা জীবন মেয়েটারে আমার কাঁদতে হত। কিন্তুু আঙ্কেল আমার তো কিছু নাই।
আর একবার আঙ্কের বললে আরো একটা চর খাবে। বাবা বলবা।
কিন্তুু আমার তো কিছুই নাই আন্টি আবার চর ঠাসসসসসস।
ওনারে বাবা বলছ আর আমারে আন্টি।
– বাবা মা আমার পিচ্চিটারে এত্ত চর মারছ।
সবাই তো হেঁসে হেঁসে শেষ।

অতপর বিয়েটা হয়েই গেল।

আহা সুন্দরি বউ + এত্ত বড় বাড়ি ভাবতেই পারছিনা।
বাসরঘরে বসে আছি আমি বউ আসছেই না।
দূর ভাললাগে না।
ওই তো বউ আসছে দৌড়ে গিয়া বউরে জরাই ধরছি। ওই ছার কী করছ
ছাড়াছাড়ি বাদ আগে তিনটা পাপ্পি দাও।। কীইইইই জোরেই না চর দিছে।।।।

তারপর তো আর কী হয়ে গের আর কী হি হি হি…..

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত