ভিন্ন রকম ভালোবাসা

ভিন্ন রকম ভালোবাসা

আজ আমার ইউানিভার্সিটির প্রথম দিন। তাই হোস্টেল থেকে বেড়িয়ে রাস্তায় হাটছি। হঠাৎ একটা মেয়ে পিছন থেকে এসেই আমার সাথে ধাক্কা খেয়েই মাটিতে পরে গেলো।

আমি : Sorry .. আমি বুঝতে পারিনি।

মেয়ে : মেয়েদের দেখলেই ধাক্কা খাইতে মন চায় না। ছেসরা ছেলে কোথাকার। বলেই একটা থাপ্পর মারলো আমার গালে।

এই শুন আর কোন দিন যদি আমার আশে পাশেও তোকে দেখি না। তোর খবর আছে বলে দিলাম।

আমি : আ…আ..আমি তো…

মেয়ে : আর একটা শব্দ করবি তো। তোর খবর আছে।

আমি আর কিছু বললাম না। মেয়েটা চলে গেলো। আমি আর ভার্সিটিতে গেলাম না। হোস্টলে চলে আসলাম। এই প্রথম কোন মেয়ে আমার গালে থাপ্পর মারলো। খুব খারাপ লাগছে। ওহ আমার নামটা তো এখনও বললাম না। আমার নাম সোহান। পরের দিন ভার্সিটিতে গেলাম। গিয়ে দেখি সেই মেয়েটা। আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম। আমি দাড়িয়ে না থেকে ক্লাসে চলে গেলাম। স্যার লেকচার দিচ্ছে আমি মনোযোগ সহকারে শুনছি। ঘন্টা পরার পর স্যার চলে গেলেন। আমি ভার্সিটির গেইট থেকে বের হবো এমন সময়। কয়েকটা ছেলে লাঠি নিয়ে আমার সামনে দাড়ালো।

আমি : এ…এই ভাবে… র….রাস্তা আটকিয়ে রাখছেন কেনো।

বলতে না বলতে আমাকে ছেলে গুলো মারতে শুরু করলো আমি মাটিতে লুটিয়ে পরলাম। ছেলে গুলো আমাকে মারার পর একটা ছেলে আমাকে এসে বললো। সালা আমার বোনের সাথে ধাক্কা খাও না। এই চল’রে। আমি মাটিতে পরে কাঁদতে লাগলাম।কি এমন করলাম । আমি তো কিছুই করলাম না। মেয়েটা এসে তো আমার সাথে ধাক্কা খেলো। আমাকে কয়েকটা ছেলে মিলে হসপিটালে নিয়ে আসলো। আমি হসপিটালের বেডে শুয়ে আছি এমন সময় ফয়সাল ভাই আসলো। ফয়সাল ভাই আমাকে হোস্টেলে থাকতে দিয়েছিল।

ফয়সাল ভাই : কেমন অবস্হা পায়ের। ভালো না ব্যাথা করছে এখনও।

আমি : না ভাই ভালোই।

ফয়সাল ভাই : তোর গ্রামের বাড়ীতে কে কে আছে।

আমি : আমি ছোট বোন আর অসুস্থ বাবা আর মা।

ফয়সাল ভাই : তোর বড় ভাই নাই।

আমি : আছেই কিন্তু আলাদা থাকে ওনারা।

ফয়সাল ভাই : তোর আম্মুর মোবাইল নাম্বারটা বলল।

আমি : ভাই আম্মার কাছে প্লিজ এই সব বলবেন না। তাহলে আম্মা বলবে বাড়ীতে চলে যেতে । আম্মা মারা মারি পছন্দ করে না।

ফয়সাল ভাই: ওহ আচ্ছা। আমি যাই হ্যা তুই কোনো চিন্তা করবি না।

আর শুন তোকে যে মারছে না। ও আমাদের কলেজের প্রেসিডেন্ট। ওর বোনের সাথে তুই কথা বলিস না আর কেমন।

আমি : ঠিক আছে ভাই।

ফয়সাল ভাই চলে গেলো আমি হসপিটালে রয়ে গেলাম। কয়েক দিন পর আমি ভার্সিটিতে গেলাম। ভার্সিটিতে ঢুকতে না ঢুকতেই। সেই মেয়েটা ডাক দিলো। ওই ছেসরা পোলা এই দিকে আয়। মেয়েটারর সাথে মেয়ে গুলা হাসতে লাগলো। আমি ওদের কাছে গেলাম।

আমি : জ্বী বলেন।

মেয়ে : কি’রে কেমন খাইলি ওই দিনের ধুলাই।

আমি :…

মেয়ে : ওই ছেসরা কথা বলছিস না কেন।

আমি :..

মেয়ে : যা ক্লাসে যা।

আমি : জ্বী… ।

মেয়েটার সাথের মেয়ে গুলা হাসতে লাগলো। আমি মাথাটা নিচু করে ক্লাসে চলে আসলাম। স্যার লেকচার দিচ্ছে এমন সময় আমাকে দাড় করালো।

এই ছেলে দাড়াও।

আমি : জ্বী স্যার…..।

স্যার : ক্লাসে তো আমার লেকচার ভালো শুনছ। কি ভাবছিলে বাহিরের দিকে তাকিয়ে।

আমি : জ্বী স্যার….।

স্যার : বাসায় কোথায় তোমার।

আমি : স্যার কু…কুমিল্লা…।

(পাঠক:পরিচিত এলাকা তাই লিখলাম)

স্যার : গ্রাম থেকে এসেছ নাকি।

আমি : জ্বী স্যার।

স্যার : এই জন্যই তোমার এই অবস্থা , ক্লাস এত অমনোযোগ থাকলে আর তোমাকে ক্লাস করতে হবে না ।

আমি : জ্বী…।

স্যার : হুম বসো।

আমি : বসে পরলাম।

ক্লাস শেষ হওয়ার পর।

মেয়েটা আমার কাছে এসে বললো। কি’রে ছেসরা কি’রে ফকিন্নির পোলা। ক্লাসে এত ভাব লস কেন।

আমি : কই না তো।

আমার শাটের কলারে ধরে বললো। মিথ্যা কথা বলবি না বুঝলি। আমি সব দেখি।

আমি :জ…জ্বী।

আমি হোস্টেল চলে আসলাম।

রুবেল : কি’রে সোহান তোকে নাকি আজ সাদিয়া তোর শাটের কলারে দরছে।

আমি : ওই মেয়েটার নাম কি সাদিয়া।

রুবেল : হ্যা, কেনো তুই আজ জানলি।

আমি : হ্যা।

রুবেল : তুই আসলেই একটা বলদ।

এই বলে রুবেল চলে গেলো। রুবেল আমার ক্লাস মিট। পরের দিন আমি ভার্সিটিতে গেলাম। ক্যাম্পাসে হাটছি আবার সেই মেয়েটার ডাক মানে সাদিয়ার ডাক। ওই ছেসরা এই দিকে আয়।আমি মাথাটা নিচু করে বললাম জ্বী বলেন।। সাদিয়া বললো কই যাস।

আমি : এই দিকেই যাচ্ছিলাম

সাদিয়া বলল চল ওই দিকটাই যাই। আমি সাদিয়ার সাথে হাটতে লাগলাম। হঠাৎ সাদিয়া আমার পিঠে হাত রাখলো । আর হাটতে হাটতে বলতে লাগলো তোর চশমাটা তো খুব সুন্দর’রে।

আমি : জ্বী ধন্যবাদ..।

সাদিয়া : রাখ তোর ধন্যবাদ যা ক্লাসে যা।

আমি ক্লাসে আসছি দেখলাম সবাই আমাকে দেখে হাসছে। আমি বুঝতে পারলাম না। ক্লাসে ঢুকা মাএ সবাই হাসতে লাগলো এবং আমার কাছে এসে চিল্লাতে লাগলো আর বলতে লাগলো ছেসরা , ছেসরা।এমন সময় স্যার আসলো, এখানে তোমার এই ভাবে চিল্লাছ কেনো। সবাই স্তব্ধ হয়ে গেলো। স্যার আমার পিঠ থেকে একটা পেপার নিলেন। আমি বুঝতে পারলাম না আমার পিঠে পেপার কোথা থেকে আসলো। স্যার বললো সোহান এই সব কি। নিজের পিঠে পেপার লাগিয়ে সবাই’কে বলছ তুমি যে তুমি ছেসরা। তোকে জেনো ওই নামে সবাই ডাকে।

আমি : স্যার আ..আমি।

স্যার : চুপ কর।। তোমার কি লজ্জা করে না।

আমি মাথাটি নিচু করে মরার গাছের মত দাড়িয়ে রইলাম। আমি অনুভব করলাম আমার চোখ দিয়ে জল পরছে । স্যার আমার ওপর পেপারটা ছুরে ফেলে দিয়ে চলে যায়। আমি ক্লাসে বসে কাঁদতে লাগলাম। এমন সময় সিয়াম আর অপু আসলো। দোস্ত কাঁদিস না।

আমি : দোস্ত আমি এমন কেনো করবো বলল।

সিয়াম : আমি জানি এই কাজটা সাদিয়াকে ছাড়া আর কেউ করবে না।

আমিও বুঝতে পারলাম যে সাদিয়া , এই কাজটা করছে। পরের দিন আমি, সিয়াম, অপু ক্লাসে যাচ্ছি। এমন সময় সাদিয়া পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললো।

সাদিয়া : কি’রে সোহান, আমার দেওয়া নামটা নাকি তুই সবাই’কে বলতে বলছিস। তাও আবার নিজের পিঠে পেপার লাগিয়ে।

ওর সাথের ছেলে মেয়ে গুলা হাসতে লাগলো। আমি কিছু না বলেই সিয়াম আর অপু’কে নিয়ে ক্লাসে চলে আসলাম। ক্লাস শেষ হলে আমি হোস্টেল চলে আসি।

সিয়াম : ওই সোহান রেডি হস না কেন । ভার্সিটিতে যাবি না।

আমি : নাহ, তোরা যা আমি যামু না।

অপু : কেনো যাবি না।

প্রত্যেক দিন ওই প্রেসিডেন্টের বোন আমার সাথে কি করে তোরা দেখছ না, সাদিয়া প্রতিটা দিন আমার সাথে কি কি করে । মেয়েটা আমার সাথে আজ দুই মাস ধরে যেই ভাবে আঠার মতো লেগে আছে। যেনো মনে হয় আমি ওর একমাত্র আসামি।

সিয়াম : ওই সব কথা বাদ দে তো, আর চল ভার্সিটিতে যাবি।

আমি : সত্যিই যাবো।

অপু : যাবি না মানে কি, চল বলছি।

ওদের সাথে ভাসিটিতে আসার পর তৃতীয় তলাই হাটছি এমন সময়। সাদিয়া দ্বিতীয় তলাই নামছিল এমন আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে বলতে লাগলো কি’রে ছেসরা । যেই শিরিতে পা দিলো ওমনি পা হচকিয়ে, পরে গেলো আর শিরিতে গরিয়ে গরিয়ে সোজা দেওয়ালে গিয়া ধাক্কা খেলো। আমি দৌড়ে শিরি দিয়ে নেমে যাই সাদিয়ার কাছে। গিয়ে দেখি ওর মাথা থেকে অনেক বাঝে ভাবে রক্ত পরতে লাগছে। ওর তখন জ্ঞেন ছিল না । আমি আমার গায়ের শার্ট’টা খুলে ওর কপালে বেদে দেই এবং আমি ওকে নিয়ে হসপিটালে নিয়ে আসি।

আমি : ডাক্তার সাহেব সাদিয়া…

ডাক্তার : ওর অবস্থা এত একটা ভালো , আর হ্যা সাদিয়ার শরীর থেকে ওনেক রক্ত বেরিয়ে গেছে এখন অনেক রক্তের প্রয়োজন।

আমি : আমি সাদিয়া’কে রক্ত দিবো ডাক্তার সাহেব,

ডাক্তার : আপনার শরীরের রক্ত কি O নেগেটিভ।

আমি : হ্যা আমার রক্ত O নেগেটিভ।

ডাক্তার : তাহলে তো হয়েই গেলো। তাহলে আসুনআমার সাথে,

রক্ত দেওয়ার পর আমি ডাক্তার কে বললাম ডাক্তার সাহেব একটা কথা বলার ছিল,

ডাক্তার : হ্যা বলুন।

আমি : আমি যে সাদিয়া’কে রক্ত দিলাম, এই সব কথা আপনি কাউ’কে বলবেন না।

ডাক্তার : কেনো বলবো না, আপনি তো ওকে নতুন জীবন দিলেন। একমাএ আপনাকে ছাড়া তো আর কাউ’কে ওনার বিপদের সময় দেখতে পেলাম না।

আমি : প্লিজ ডাক্তার সাহেব আপনি বলবেন না। প্লিজ….।

ডাক্তার : ওকে।

ডাক্তার সাহেব সাদিয়ার কেবিনে চলে গেলো আর আমি বাহিরে বসে আছি এমন সময় সাদিয়ার ভাই ও তার পরিবারের সবাই আসলো আমি তাদের কে দেখেই লুকিয়ে হসপিটাল থেকে চলে আসি। হোস্টলে আসার পর সিয়াম বললো কিরে এতো দেড়ি করে আসলি যে।

আমি : সাদিয়ার অবস্থা খুব খারাপ ছিল, ওর রক্তের প্রয়োজন ছিল, তাই

অপু : তাই আর কি তুই ওকে রক্ত দিয়েছিস। তাই তো।

ওরা আমার সাথে রেগে কথা গুলো বলছিল।

আমি : হ্যা ,

সিয়াম এসে আমার মাথা ওর হাত দিয়ে ওর মুখের দিকে ধরে বলল তুই কি’রে ভাই হ্যা। যে মেয়েটা ভাসিটিতে তোকে প্রতিটি দিন লজ্জা অপমান করতো, আর তুই সালা সেই মেয়েটাকে রক্ত দিয়ে আসলি। অপু বলে ওঠল ওর মাথা ঠিক নাই। সিয়াম বললো তুই কি ভাবছিস ও সুস্থ হলে তোকে আর অপমান করবে না। অপু বললো আরো বেশি করে করবে বুঝলি কারন তোর শরীরের রক্ত পেয়ে আরো শক্ত শালি হচ্ছে।

আমি : কি সব বলছিস না তোরা।

সিয়াম তোকে বোঝানো যাবে না’রে দোস্ত,

আমি : প্লিজ ভাই এবার একটু থাম। দেখ একটা মেয়ে আমার সামনে শিরি থেখে পরে মাথা ফেটে গেলো এবং জ্ঞান হাড়িয়ে ফেললো আর আমি তাকে সাহায্য করবো না, সেটা কি করে হয় বলল।

অপু : তোমাকে যে সবার সামনে অপমান করে প্রত্যেকটা দিন। কই একদিন তো বলে না সোহান আমার ভুল হইছে আমি এমন কাজ করবো না।

আমি : আরে বাদ’দে তো ওই সব কথা।

সিয়াম বললো চল অপু আমরা যাই ওর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। ওরা চলে গেলো, আমি চেয়ার থেকে ওঠে খাটে গিয়ে শুয়ে পরলাম। কয়েক দিন পর সাদিয়া ভাসিটিতে আসলো। আমি অপু, সিয়াম মিলে ক্যাম্পাসে বসে আছি। এমন সময় সাদিয়া আসলো আর বললো।

সাদিয়া : কি’রে ছেসরা আমি ভাসিটিতে নাই বলে। ভাসিটিতে নাকি নেতা গিরি দেখাস।

আমি কথা বলবো এমন সময় সিয়াম দাড়িয়ে বললো। ছিঃ ছিঃ সাদিয়া তোমার লজ্জা বলতে কিছু না।

আমি : সিয়াম তুই ওকে কিছু বলবি না। বসে পর বলছি।

সিয়াম : সোহান তুই চুপ থাক অনেক হইছে আর না। এই যে মিসেস সাদিয়া আপনি না ওরে ছেসরা বলেন ফকিন্নির বাচ্চা বলেন। আপনার লজ্জা করে না যে। সেই ফকিন্নির পোলার রক্ত শরীরে বহন করতে। ওকে তো আপনি প্রতিটা দিন অপমান করতেন ছেসরা ফকিন্নির পোলা বলে গালি দিতেন কিন্তু সোহান কিন্তু কোনো দিন আপনার প্রতি একটাও প্রতিবাদ করে না। সামান্য আপনার সাথে ধাক্কা লাগার কারনে আপনি ওকে অনেক বকা দিয়েছে এবং ওই দিন থাপ্পর ও দেন তারপর ভাসিটিতে আসার পর, আপনি আপনার আদরের ভাইয়াকে দিয়ে ওকে অনেক মাইর খাওয়ান কিন্তু ও কোন দিন কাউ’কে মুখ ফুটে বলে নাই সেই কষ্টের কথা। আসলে ওর মনটা না অনেক বড় যা আপনাদের মত বড় লোকের কাছে নেই। আমি দেখলাম সাদিয়া মাথাটা নিচু করে দাড়িয়ে আছে। আর পুরা ভাসিটির ছেলে মেয়েরা আমাদের দৃশ্য দেখছে।

আমি : সিয়াম অনেক হইছে এবার থাম।

অপু বললো কি হইছে হ্যা তুই ওরে ওইদিন হসপিটালে নিয়া গেলি ওরে রক্ত দিলি কিন্তু ওই সময় তো ওর পাশে ওর কোন বন্ধু ছিলো না এবং ওর পরিবারও ছিল না। একমাএ ছিল কে এই ছেসরা , ফকিন্নির পোলা। অপু কাঁদতে কাঁদতে বললো ওই ছেসরা ত..তরে না বলছিলাম। ওরে সাহায্য করবি তো , ও তোর রক্তের শক্তি পেয়ে তোকে আবার অপমান করবে। দেখলি তো তার চাক্ষুষ প্রমান।

আমি : হুম হইছে ওকে অনেক অপমান করছিস। এবার চল ক্লাসে চল।

আমি সাদিয়ার সামনে দাড়িয়ে বললাম।

আমি : Sorry আসলে ওরা দুই জন এমন ওই আপনি কিছু মনে করবেন না প্লিজ। আমি ওদের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি।

সাদিয়ে আমার মুখের দিকে তাকালো। আমি দেখলাম ওর এত সুন্দর চেহারাটা লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। আর ওর দুচোখ দিয়ে জল পরতে থাকলো। আমি আর কিছু বলার আগেই সাদিয়া ক্যাম্পাস থেকে চলে গেলো। আমিও ক্লাসে চলে আসলাম। ভাসিটি থেকে এসে হোস্টলে ওদের বোঝাতে লাগলাম ওরা যা করলো সাদিয়ার সাথে তা ঠিক হয়নি কিন্তু কে শুনে কার কথা । ওই দিনের পর সাদিয়া একটানা চার দিন ভাসিটিতে আসে নাই। সেদিন আমি ভাসিটিতে বসে আছি সিয়ামের সাথে অপু ওর গ্রামের বাড়ীতে চলে যায়। যার কারনে আমার দুজন মিলে বাদাম খেতে ছিলাম। হঠাৎ সাদিয়া আসলো আর বললো।

সাদিয়া : সোহান তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।

আমি দাড়িয়ে বললাম, হ্যা বলেন

সাদিয়া : এখানে না, একটু ওই দিকে আসবে।

হুম হ্যা চলুন, এই সিয়াম তুই একটু বসত আমি একটু আসছি। সিয়াম কিছু বললো না। আমি হাটছি সাদিয়াও হাটছে। সাদিয়া বললো সোহান আমি তোমাকে অনেক অপমান করছি এবং অনেক লজ্জাও দিয়েছি। আমাকে তুমি মাফ করে দিও।

আমি : আরে বাদ দেন তো ওই সব কথা। আমি কিছু মনে করি নাই। আপনি যখন আমাকে বকা বা লজ্জা দিতেন তখন আমি ভাবছিলাম আপনি সত্যিই পরির্বতন হবেন। আজ কিন্তু আপনি সত্যিই পরিবতন করতে পারছেন নিজেকে। আমি দেখলাম সাদিয়া চোখের জল মুচছে।

আমি : ওমা আপনি কাদছেন কেনো।

সাদিয়া : কই না তো।

আমি নেন বাদাম খান। সাদিয়া আমার হাত থেকে বাদাম নিতেই আমার হাতটা ওর হাতটাকে স্পশ করে। তখনি আমার বুকে জেনো দপ করে একটা শব্দ হলো। যে শব্দটা কোন দিন হয়নি। সাদিয়া আমার চোখে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে । আমি চোখ ঘুড়িয়ে নিলাম।তারপর সাদিয়ার সাথে আমার অনেক সময় ধরে কথা হয়। তারপর সাদিয়া চলে যায় আমিও হোস্টেলে চলে আসি।

দিন দিন সাদিয়ার সাথে আমার খুব ওই সময় দেওয়া হয়। একসময় সাদিয়া আমারর অনেক ভালো বন্ধুওও হয়ে যায়। আমি, সাদিয়া, সিয়াম, অপু এখন একসাথে অনেক আড্ডা দেই। একসাথে ভাসিটিতে যাই। একসাথে ক্যাম্পাসে আড্ডা দেওয়া। আমি কখনো বিশ্বাস করি নাই যে সাদিয়া আমাকে এক সেকেন্ডর জন্য দেখতে পারতো না। সেই সাদিয়া এখন আমার সাথে বসে বসে ববাদাম খায়, আড্ডা দেয়। এখন আমি ভাসিটি জীবনটা খুবই মজা করছি সাদিয়া আর সিয়াম, অপুদের সাথে। সেদিন ভাসিটিতে থেকে আসার পর আমি যখন হোস্টেলের বড় ভাইদের সাথে কথা বলছিলাম তখনি সাদিয়া কল দেয়। আমি মোবাইলটা রিভিব করলাম।

আমি : হ্যা বলো

সাদিয়া : তারাতারি পার্কে আয়।

আমি : ওকে আসছি। তুই একটু অপেক্ষা কর আমি এখনি আসছি।

সাদিয়া ফোনটা রেখে দিলো। আমি পার্কে চলে গেলাম। গিয়ে দেখি সাদিয়া দাড়িয়ে দাড়িয়ে আছে আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম। কি’রে এত জরুরী তলব করলি যে কি বলবি। সাদিয়া পার্কের রাস্তা দিয়ে হাটতে লাগলো আমিও ওর পিছু পিছু হাটতে লাগলাম।

সাদিয়া কিছু বলছে না।

আমি : কি’রে কথা বলছিস না কেনো।

সাদিয়া একটু পরে দাড়িয়ে বললো তুই কি আমাকে ভালোবাসিস। আমি কি বলবো বোঝতে পারছিলাম না।

সাদিয়া ; কি’রে ভালোবাসিস আমাকে।

আমি : নাহ।

সাদিয়া : তুই কাউ’কে ভালোবাসিস।

আমি : হ্যা।

সাদিয়া এদিক সেদিক কি জানি খুজতে লাগলো।

আমি : কি খুজছিস,

সাদিয়া : লাঠি।

আমি : কেনো।

সাদিয়া : তোর মাথায় বারি মারবো। আমাকে ভালো না বেসে অন্য কারো সাথে টাংক্কি মারা হচ্ছে তাই না দারা তুই।

আমি বুঝলাম পাগলী চেইতা গেছে। আমি দৌড় দিয়ে বলল এই না। একদম না। তুই কেমন বউ’রে হবু জামাই কে মারতে চাইছিস। সাদিয়া কান্না ভাব নিয়ে। বললো তাহলে এতক্ষণ যে বলছিলি তুই অন্য কাউকে ভালোবাসিস। আমি সাদিয়ার সামনে দাড়িয়ে বললাম। আর বোকা তোকে রাগাতে চাই ছিলাম। তুই রাগলে যে আমার খুব ভালো লাগে।

সাদিয়া : তাহলে এতদিন বলছিস নাই কেনো।

আমি : বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারি নাই।

সাদিয়া : এখন বলতে পারবি।

আমি সাদিয়ার চোখের জল গুলো মুছে দিয়ে। আমি সাদিয়ার হাত দুটো ধরে বললাম নাদিয়া আ….আ…।

সাদিয়া : হ্যা বলল।

আমি : পারছি না’তো।

আমি আবার সাদিয়ার হাতটা ধরে বললাম সাদিয়া আমি… তো..তোমাকে ভালোবাসি। ওর দুই হাতে আমি দুইটা কিস করলাম আর কি। সাদিয়াও হাসি দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে আর আমার দুই গালে ওর ঠোট দিয়ে কিস করতে লাগলো।

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত