ভাগ্য

ভাগ্য

-ভাইয়া ৫০টা টাকা দে তো।
-কেন কি হইল আবার? টাকা লাগে কেন?
-আরে চকলেট কিনা লাগবে।দে না বেশি কথা না বলে।
-এতো চকলেট খাওয়া ভালো না।তাই দিব না।
-আরে আমার জন্য না।ওই যে আমার বন্ধু রুহি আছে না,ওর আজকে জন্মদিন,তাই ওর জন্য চকলেট কিনব।
-ও রুহির জন্য? এই নে।
-ধন্যবাদ ভাইয়া কিন্তু বুঝলাম না যখন রুহির নাম না বলে চাইলাম তখন দিলি না আর রুহির নাম বলার সাথে সাথে দিয়ে দিলি যে?
-ওই বেশি পাকনা হইছিস,তাই না? দ্বারা দেখাচ্ছি মজা।
ওই দ্বারা কই পালাশ?
-বুঝি সব বুঝি। রুহির সাথে লাইন মারা হচ্ছে তাই না? দারা সব আম্মুকে বলে দিব। দেখিস।
-যা যা বল।দেখি আম্মু কাকে বিশ্বাস করে।

ও আমার কথা বলতে বলতে আপনাদের কথা তো ভুলেই গেছি।।আমি ফারহান,ক্লাস ইন্টার ১ম বর্ষে পড়ি। আর ও আমার বোন তানহা,এইবার ৮এ উঠলো। আর ওর একাতা মিষ্টি বন্ধু আছে নাম রুহি।।আমার ওকে খুব ভাল লাগে।কিন্তু রুহি তো আমাকে বড় ভাইয়ের চোখে দেখে ওকে কিভাবে বলি যে রুহি আমি তোমায় ভালবাসি??তাই আর বলাও হয় না। আজ রুহির জন্মদিন কিন্তু আমাকে তো ইনভাইটও করলো না। তাই রাগ করে বসে আছি বাসায়,হটাৎ পিছন থেকে কেও এসে আমার চোখ দুটো ধরলো। আমি ভাবলাম হয়তো তানহা,কারণও প্রায়ই এমন করে। তাই,

-ওই তানহা ছাড়তো।ভাল্লাগতাছে না।
-কেন কি হয়েছে আমার আদরের ভাইয়াটার? (রুহি)
-কে? (একটু অবাক হয়ে।কারণ আমি ভাবছিলাম তানহা কিন্তু এইটা তানহার গলার সুর না।)
-আমি ইনভাইট করি নাই দেখে রাগ করছো ভাইয়া?
-না।(আর বুঝতে বাকি রইলো না যে এইটা রুহি।ত)
-তাহলে এই খানে এইভাবে বসে আছ কেনো?
-এমনেই।
-না চলো আমার সাথে।
-না বলছি না।
-ভাইয়া আর কাহিনি করিস না।চলে আয়(তানহা)
-তোর বন্ধুর birthday party তুই যা,আমি কি করবো।
-ও তাই বুঝি? আমি তোমার কিছুই হই না বুঝি?
-আমি কি তা বলছি?
-তাহলে?
-তোমার জন্মদিন এর অনুষ্ঠান ওইকখানে তুমার বন্ধুদের মাঝে আমি গিয়া কি করবো?
-আমি যাইতে বলছি চলো।
-না যাবো না।
-ওকে তাহলে আমিও যাব না।
-আজব বেপার তো! তোমার জন্মদিনের অনুষ্ঠান আর তুমিই যাবে না?
-না, তোমায় ছাড়া আমি যাব না।
-আচ্ছা চলো।

কি আর করার চলে গেলাম কিন্তু মনে মনে খুশিই হলাম। তারপর অনুষ্ঠান এ অনেক মজা করে বাসায় আসলাম।তারপর ঘুমিয়ে পরলাম। তারপর জীবন আগের মতই চলতে থাকল। কিন্তু আমিতো আর থাকতে পারলাম না। রুহি কে খুব ভালবেসে ফেলেছি।।তাই ওকে বলা ছাড়া থাকে পারলাম না। ২ বছর অপেক্ষার পর আর সহ্য হচ্ছে না।আমার ইন্টার জীবন শেষ এবং রুহি এই বার ১০ম শ্রেণিতে উঠলো। আজ ওকে আমি আমার ভালবাসার কথা। তাই রুহিকে ফোন দিলাম,

-হেলো রুহি?
-জি ভাইয়া? কিছু বলবেন?
-আমার সাথে কালকে একটু দেখা করতে পারবে?
-হে পারবো। কয়টায়?
-সকাল ৮টায়।
-আচ্ছা।
তারপরের দিন সকাল এ…
-হাই রুহি
-কি বলবা তারাতারি বলো।
-রুহি আমি তুমায় ভালবাসি।।অনেক অনেক বেশি। ২ বছর ধরে তুমার জন্যে অপেক্ষা করছি আর পারব না।তাই বলে দিলাম।
-কি? ফাউযলামি পাইছেন?
-মানে?
-তোদের মতো ছেলেদের আমার ভালো মতো চিনা আছে,বড় লোক ঘরের মেয়ে দেখার সাথে সাথে তাকে প্রেমএর জালে ফাসাতে মন চায়।
-রুহি দয়া করে এমন করে বলো না।আমি তুমায় খুব ভালবাসি।

-সর তোর ভালোবাসা নিয়ে এইখান থেকে। এবং তকে যেন আর আমার সামনে দেখি না।
কি আর করার।মনের মধ্যে অনেক কষ্ট নিয়ে বাসায় আসলাম।বাসায় এসেই বেগ গুছিয়ে চলে আসলাম মামার বাড়ি।সেখানে থাকলে তো এউহির সামনে পরবো।এবং রুহি তো ওর সামনে যাতে না জাই তাই চলে আসলাম। মামার বাড়ি থেকেই পরা লেখা শেষ করে এখন একটা প্রাইভেট কম্পানিতে চাকরি করছি। মাসে বেতন প্রায় ৪০হাজার এর কাছাকাছি। অনেক সুখেই আছি।কিন্তু এখন্ব রুহি কে খুব মিস করি।শুনেছি আমি বাড়ি থেকে চলে আসার পর নাকি রুহিরাও ওদের বাসা ছেড়ে চলে গেছে। এবং ওর ফোন নাম্বার টাও বন্ধ। কি আর করার শত সুখের মাঝেও দুঃখ আমায় ছাড়লো না। তাই আগের মতো কস্টেই দিন কাটাচ্ছিলাম। এখন আমার সব আছে,গাড়ি বাড়ি সব কিন্তু নেই শুধু আমার ভালবাসা। যাই হোক ভাগ্য কে মেনে নিয়ে চলতে থাকলাম। কিছু দিন পর,
অফিসে বসে বসে একটা প্রজেক্ট তৈরি করছিলাম হটাৎ একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসলো,আমি কয়েকবার ফোন্টা কেটে দিলাম। কিন্তু অনেক বার যখন ওই নাম্বার কল আসছিল। ভাব্লাম হয়তো কোন দরকারে ফোন দিছে তাই রিসিভ করলাম,

-হেলো কে?
-ফারহান?
-জি।কিন্তু আপনি কে?
-আমি রুহি।
-(নামটা শুনেই মনের ভিতর পুরনো কথা গুলা মনে অরে গেল)…
-কি কথা বলবা না?
-হে বলো শুনতেছি।
-আমার সাথে দেখা করতে পারবা?
-হুম্ম।কখন??
-কালকে বিকাল ৪টায়।জয়নুল আবেদিন পার্কএ।
-ওকে।

তারপর ও ফোন টা রেখে দিলো। ওর সাথে কথাবলার পর থেকে আমি কেমন জানি হয়ে গেলাম। কাজে মন বসছে না।তাই বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে খাওয়া শেষ করে রুমে চলে আসলাম। পুরনো সব কথা মনে করতে করতে কখন জ ঘুমিয়ে গেলাম বুঝলামই না।তারপর। সকালে উঠে খাওয়া দাওয়া করে একটা মার্কেট এ চলে গেলাম রুহির জন্যে একটা গিফট কিনতে। তারপর গিফট কিনতে কিনতে ৩টা বেজে গেল কারণ সহজে আমার কিছু পছন্দই হল না।তারপর গিফট সহ একটা ফুলের তোরা নিয়ে ওর সাথে দেখা করতে গেলাম। গিয়ে দেখি রুহি দারিয়ে আছে।

গিয়ে অর সাথে অনেক কথা বললাম। তা থেকে জানতে পারলাম ওর বিয়ে হতে চলেছে কিন্তু ওর বাবার ব্যবসায় লস হওয়ায় এখন বিয়েটা হচ্ছে না কারণ যৌতুক দিতে পারছে না। তাই আমার থেকে সাহায্য চাইতে আসছে। আমি ভাবছিলাম ও হতো আমায় প্রপোজ করবে কিন্তু তার কিছুই হলো না। রউহউহি আমাকে ওর বিয়ের কার্ড ধরিয়ে দিলো। আমি রুহিকে গিফট এবং তোরা টা দিয়ে ওর বিয়ের কার্ডটা নিয়া কাজের বাহানা দেখিয়ে দ্রুত চলে আসলাম।কারন আমার খুব কান্না পাচ্ছিলো। আমি ভাবছিলাম ও হয়তো আমায় প্রপোজ করবে তার কিছুই হলোনা।আমি দৌরে অনেক দূর চলে আসছি। অনেক বিষ্টি পরা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই বিষ্টির পানিতে আমার চোখের পানিও মুছে গেছে। কিন্তু হটাৎ পিছন থেকে একটা আওয়াজ ভেসে আসলো,

-এখন আমায় এতাও ভালবাস?
পিছনে ঘুরে দেখি রুহি কাদতে কাদতে বলছে।
-হুম।(আমি)
-তো আমায় খুজার চেষ্টা করনি কেন??
-তুমি তো আমার মতো গরিব ছেলেকে ভালবাসতে না তাই।

-একটা চর মারব। আমি তুমায় খুব ভালবাসি। আসলে অইদিন যদি আমি তুমায় এত কিছু না বলতাম তাহলে কি আজ তুমি এত কিছু হতে পারতে? আমি চাই নি যে আমার জন্যে তুমার ভবিষ্যৎ নষ্ট হোক তাই অই রকম করি।

-এখন আমায় ভালবাসবা??
-চকলেত খাওয়াবা তাহলে করব??
-কতো খাবা??যা চাবা তাই দিব।
-তাই??
-হুম্ম
-তাহ্লে আমাদের লাভ স্টোরি শুরু করি??
-কিন্তু এই কার্ড??
-খুলে দেখ কার নাম..

কার্ডটা খুলেই দেখি তাত আমার নাম।।আমি তো পুরাই অবাক।।তারপর রুহিকে জরিয়ে ধরলাম এবং মনে মনে ভাবতে লাগলাম কি ভাগ্য আমার।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত