ভালবাসার অন্তরালে

ভালবাসার অন্তরালে

—আরে ইমরান আজকে হঠাৎ কোথা থেকে আসলি।

—কোথা থেকে মানে কলেজ থেকে আসলাম।

—কিরে ভাই তুই আবার কলেজে কবে থেকে আসা শুরু করলি ।

—এইতো আজকে থেকেই শুরু করলাম। তুই কোথা থেকে আসলি..?

—খুলনা গেছিলাম ছোট ফুফির বাসায় আগামী দিন থেকে তো কলেজে পরীক্ষা শুরু তাই আজকেই চলে আসলাম।

—ওহ ভালই করছো,তা তোরে এখন আর ফেসবুকে ঠিক মত দেখিনা কেন ..?

—আর বলিসনা ভাই ফোনটা নষ্ট হয়ে গেছে তাই ফেসবুকে আসিনা। তা এখনো বাটন দিয়ে ফেসবুকে চালাও নাকি স্মার্ট ফোন কিনছো।

—আর বলিসনা ভাই আব্বু একবার ফোন কেনার জন্য টাকা দিছিলো কিন্তু ইচ্ছা করে কিনি নাই । এখন টাকা চাইলে বলে ফোন কিন্তে টাকা দিতে পারবোনা। তাই এই winmax14i ব্যবহার করি ।
চল একটা সেলফি হয়ে যাক জাকারিয়া মানে আমার বন্ধু বল্ল এই ফোনে কি ভাবে সেলফি তুলবি..??

—আরে শালা এই ফোনের ক্যামেরা ঘুরানো যায়। ওকে ডান তুলে ফেল।

—সেলফি টা তোলা শেষ হতে না হতেই পাশাপাশি সিটে বসে থাকা মেয়েটি বলে উঠলো এই যুগে এখনো এই রকম পাগল আছে যে বাটন ফোন দিয়ে সেলফি তুলে ।

—আমি বল্লাম গরীব ঘরের ছেলেতো তাই স্মার্ট ফোন কেনার সামর্থ নেই।

—মেয়েটি বল্ল যদি সামর্থ না থাকে তাহলে সেলফি তোলার শখ আসে কোথা থেকে।

—আমি বল্লাম গরীব দের শখ থাকতে পারেনা ।

—মেয়েটি বল্ল পারে তবে যতটুক সামর্থ আছে ঠিক ততটুক শখ আর স্বপ্নকে সীমাবদ্ধ রাখতে হয়।

—এক কথায় দুই কথায় মেয়েটির সাথে তুমুল ঝগড়া শুরু হয়ে গেল ততক্ষণে বাস ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু আমার আর সেই মেয়েটির ঝগড়া অনবরত চলতেছে।

—পাশে থাকা এক মধ্য বয়স্ক লোক বলে উঠলো আল্লাহর ওয়াস্তে একটু চুপ কর তোমারা।

—আমি আর কিছু না বলে চুপ চাপ বসে রইলাম । এই বার আমার বন্ধু জাকারিয়া বলে উঠলো ভাই তোরেতো কখনো মেয়েদের সাথে ঝগড়া করতে দেখিনাই কিন্তু আজকে তোর কি হল।

—কি আর হবে কোটিপতি বাপের মেয়ের টাকার গরম টা একটু ঠান্ডা করতে চেয়েছিলাম কিন্তু ওই কাকার জন্য তা আর হলনা। শালার কোটিপতির বাচ্চারা কেন যে লোকাল বাসে উঠে আল্লাহ মাবুদ জানে ।

—আর চোঁখে মেয়েটির দিকে তাকাতেই দেখি সে আমার দিকে রাগী চোঁখে তাকিয়ে আছে যদি তার মধ্যে আধ্যাত্মিক শক্তি থাকতো তাহলে আমাকে সেই শক্তি দিয়ে ধ্বংস করে দিত।
কিন্তু আল্লাহ তাকে সেই শক্তি দেইনি তাই সে আমার কিছু করতে পারেনাই।

—হঠাৎই বাসের চাকা পামসার হয়ে গেল আর সেই সাথে শুরু হল যত্রি দের চিল্লা পাল্লা বাসের কন্ডাক্টর যানালো বাসে অতিরিক্ত কোন টায়ার না থাকায় এই টায়ার ঠিক করে অন্তে ১ ঘন্টা সময় লাগবে ।

—আমরা বাসের হাফ ভারা দিয়ে নেমে পরলাম। সেই সাথে মেয়েটিও নেমে পরলো তবে মেয়েটির সাথে আরো দুইটা মেয়ে আছে তাদের আমি চিনি তাদের বাসা আমাদের এলাকায় কিন্তু মেয়েটিকে আজকে প্রথম দেখলাম।

—জাকারিয়া কে জিজ্ঞেস করলাম ওই মেয়েকে চেনে কিনা জাকারিয়া বল্ল চিনি মানে ওর বাসা আমাদের এলাকায় । ওহ আপনাদের একটা কথা বলে রাখি জাকারিয়া আর আমাদের বাসা আমাদের ভিন্ন এলাকায় তবে জাকারিয়া তার নানার বাসায় থেকে লেখাপড়া করে ।

—তোদের এলাকা মানে ..?? আমাদের এলাকা মানে আমাদের বাড়ি যে এলাকায় ওই এলাকায় এমন কি ও সম্পর্কে আমার বোন হয়।

—আরে শালা এই কথা তুই আগে বলবিনা।

—বলার মত কোন সময় তুই দিয়েছিস ।

—দেইনি তো কি হয়েছে তুই চাইলেই বলতে পারতি।

—তবে আমাদের বাসা যে খানে বাস নষ্ট হয়েছে সেখান থেকে দুই কি. মি. দূরে আর জাকারিয়ার নিজ বাসা নয় কি. মি. দূরে তাই জাকারিয়া কে বল্লাম চল আজকে আমাদের বাসায় দুপুরে আমাদের বাসায় খাবি তার পর তোকে বিকেলে দিয়ে আসবো ।

—জাকারিয়া বল্ল না ভাই আমার বাসায় যেতেই হবে ।
এমন সময় সেই মেয়েটি বল্ল জাকারিয়া ভাই দারান জাকারিয়া দারালো আর আমি গুটি গুটি পায়ে হেঁটে চলছি সামনের দিকে।
তাদের মাঝে কি কথা হল তা আমি ঠিক জানিনা । জাকারিয়া আমাকে বল্ল ভাই দারা আমি গুটি গুটি পায়ের হাটা বন্ধ করে দিয়ে দাড়িয়ে গেলাম। জাকারিয়া আর ওই ঝগড়া ওয়ালি কোটিপতির মেয়ে দুজনেই আসলো।

—তার পর তিন জনে এক সাথেই হেঁটে আমাদের বাজার পর্যন্ত চলে আসলাম । তবে জাকারিয়া আর আমি অনেক কথাই বলেছি তবে মেয়েটি ছিল নির্বাক শ্রোতা।

—বাজারে এসে আমি বল্লাম কি আমার সাথে যাবি নাকি বাসায় যাবি জাকারিয়া বল্ল না ভাই বাসায় যাবো।

—আমি বল্লাম ওকে ঠিক আছে যা তাইলে আমি বাসায় যাবো।

—জাকারিয়া বল্ল ভাই দেখতো কোন রিক্সাশা পাশকিনা আমি বল্লাম এই দুপুরের সময় রিক্সাশা পাওয়া অসম্ভব ব্যাপার তবে ইজি বাইক বা নছিমন পেতে পারিস।

—সারা বাজার খুজলাম কিন্তু সোনার হরিন আর মিল্লনা যাও মিল্ল তা আবার সাপের মনির মত চাহিদা যা আমরা দিতে রাজিনা। বাদ্ধ হয়ে চলে আসলাম ব্রিজের উপরে।

—শেষ মেস আর কোন উপায়ান্ত না দেখে বল্লাম একটা কাজ করি আমি তোদের দিয়ে আসি।

—জাকারিয়া বল্ল কি ভাবে দিয়ে আসবি তোর প্লাটিনা তো বিক্রি করে দিলি।

—আমি বল্লাম তোর এত কথায় দরকার আছে যদি চাও তাহলে আমি দিয়ে আসি তুই একা হলে কখনো দিয়ে আসতাম না কিন্তু কোটিপতির মেয়ে এই ভরদুপুরে আমাদের এলাকায় এসে বিপদে পরেছে।
আমরা গরীবের সন্তান থাকতে তারা এই ভাবে কষ্ট পাবে রোদে পুরো চেহারার উজ্জলতা নষ্ট হবে এটা কি আমরা হতে দিতে পারি ।

—মেয়েটি বল্ল পারলে উপকার করেন না হলে চুপ থাকেন । এমনিতেই আজকে আপনার উপর মেজাজ গরম তার উপর আবার আপনি অসহ্য কর কথাবার্তা বলতেছেন।

—আমি বল্লাম অপেক্ষা কর আমি বাইক নিয়ে আসতে ছি।

—আমি আমার সদ্য কেনা Apache double toon বাইক নিয়ে তাদের সামনে হাজির ।
জাকারিয়া বল্ল তুই বাইক কবে কিনলি । গত দিন কিনছি তুই যাবি গেলে ওঠ আর না হলে আমি গেলাম।

—জাকারিয়া বাইকে উঠলো তবে মেয়েটি এখনো দাড়িয়ে আছে।

—জাকারিয়া কে বল্লাম সমস্যা কি ও যদি উঠে তাই তারাতারি উঠতে বল।

—জাকারিয়া বল্ল কিরে তানিসা উঠিস না কেন।
তানিসা কিছু না বলে চুপ চাপ বাইকে উঠলো।
জাকারিয়া আর তানিসার বাসা আমাদের এলাকা থেকে ৫ কি.মি. তাই যেতে বেশি সময় লাগলোনা।
তাদের নামিয়ে দিয়ে আসার সময় জাকারিয়া অনেক
বার বলেছিল দুপুরের খাবার আমাদের বাসায় খেয়ে যা
আমি বল্লাম নারে আমার যেতে হবে । এমন সময় তানিসা বল্ল ধন্যবাদ আপনাকে আর আমি দুঃখিত আপনার সাথে বাজে আচরন করার জন্য।

—আমি বল্লাম ঠিক আছে আমিও দুঃখিত আমার ব্যবহার এর জন্য। চলে আসলাম বাসায় এসে গোসল করে খেয়ে দিলাম এক ঘুম উঠে দেখি সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই।

—রাতে জাকারিয়া ফোন বল্ল সকালে কষ্ট করে আমাদের বাসায় এক বার আসতে পারবি।

—আমি বল্লাম কেন তুই চলে আয় আমি বাজারে থাকবো তুই আসলেই এক সাথে যাবো।

—জাকারিয়া বল্ল আচ্ছা ঠিক আছে।

—আজকেও বাইক বাজারে রেখে কয়েক জন বন্ধু মিলে বাসে করে কলেজে যাচ্ছি।
সত্যি বলতে বাসে চলতে আমার ভালই লাগে। তাই বাইক রেখে বাসে আসা যাওয়া করি।

—আজকে কলেজে একটি পরীক্ষা ছিল তাই বাস স্ট্যান্ডে আসতেই একটু দেরি হয়ে যায় বাস ধিরে ধিরে চলতে শুরু করেছে তাই যে যেভাবে পারছে উঠে পরছে তবে আমি বাসের ভিতরেই উঠছি কিন্তু সাথের ওরা ছাদে উঠেছে।

—আজকে বাসের ভিতরে অনেক চাপ তাই ঠেলতে ঠেলতে প্রায় পিছনের দিকে পাঠিয়ে দিল ।
এমন সময় একটা মেয়ে বলে উঠলো মেয়ে দেখলেই
পাশে ঘিসে তারা দে মনচায় চাপেন ওই দিকে অসভ্য পোলাপান মেয়েটার কথায় আমার মাথা টোটাল গরম তাই নিজে আর কনট্রোল করতে পারলাম না বলেই ফেল্লাম এতখন তো চাপলাম এখন আবার চাপতে হবে।

—মেয়েটি বল্ল ভদ্র ভাবে কথা বলেন ।

—আমি বল্লাম অভদ্রর মত কি বলছি আপনি বল্লেন
চাপতে তাই বল্লাম যে এত ক্ষন তো চাপলাম এখন আবার চাপতে হবে।

—মুরুব্বি টাইপের একটা লোক বলে উঠলো যেমন কুকুর তেমন মুগুর প্রতি দিন দেখি কলেজের মেয়ে গুলো বাসে উঠেই ছেলেদের সাথে ঝগড়া শুরু করে ।তোদের যদি নিজের ইচ্ছা মত চলতে ইচ্ছে করে তাহলে লোকাল বাসে কেন উঠিস রিক্সাশা করে চল্লেই তো পারিস।

—মেয়েটি আর কিছু বল্লনা চুপ চাপ দাড়িয়ে থাকলো।

—আমি একেবারে পিছনের ছয় সিট এর কাছে চলে গেলাম । এমন সময় তানিসা বলে উঠলো আমার পাশের একটা সিট খালি আছে চাইলে বসতে পারেন।
—আমি চুপ চাপ তার পাশে গিয়ে বসলাম।

—তানিসা নিজে থেকেই বল্ল কি দরকার বাইক থাকা সত্ত্বেও বাসে করে কলেজে আসার।

—আমি বল্লাম সত্যি বলতে আমি সাধারন মানুষের মত জীবন যাপন করতে পছন্দ করি। তাই বাসে করে আসি। তবে কাল থেকে আর বাসে করে আসবেনা ।

—তানিসা বল্ল তাই করেন কি দরকার আছে মানুষের সাথে ঝগড়া করার।

—বাস এত খনে চলে এসেছে আমার গন্তব্যে তাই তানিসা কে বল্লাম ভাল থাকেন আমি যাই।

—তানিসা বল্ল আচ্ছা ঠিক আছে।

—আমি বাস থেকে নেমে বাইক নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।

—এর পর অনেক দিন হয়ে গেছে আর বাসে করে কলেজে যাওয়া হয়নি। কি দরকার আছে এই সবের এখন বাইক নিয়েই ভাল আছি। যেমন খুশি তেমন চল
যায় কার সাথে কোন ঝগড়া নেই নেই কোন ঝামেলা।

—আজকে অনেক দিন পর সেই বাস-স্টপে আসলাম একটা বন্ধুকে বাসে উঠিয়ে দিতে।

—তখন দেখলাম যাত্রী ছাউনি এর কয়েক টা ছেলে আর মেয়ে তুমুল ভাবে ঝগড়া লেগেছে আমি দূর
থেকেই তাদের ঝগড়া দর্শন আর শ্রবোন করতে ছিলাম।

—এমন সময় পিছন থেকে কেউ একজন এসে বল্ল ইমরান ভাই কেমন আছেন।
পিছনে তাকাতেই দেখি তানিসা।

—হুম ভাল আছি তুমি কেমন আছো। তানিসা বল্ল এইতো ভালই আছি তা আজকে কি মনেকরে এইখানে । আমি বল্লাম এইতো একটা বন্ধুকে বাসে তুলে দিতে আসছিলাম ।

—তানিসা বল্ল একটা কথা বলবো যদি কিছু মনে না করেন।

—আমি বল্লাম আরে এত ভণিতা না করে বলেই ফেল।তানিসা বল্ল আপনার ফোন নাম্বারটা যদি দিতেন।
আমি বল্লাম ওকে এই নাও 017841542** ।

—তানিসা বল্ল ধন্যবাদ আপনাকে। এর মধ্যেই বাস চলে আসছে কিন্তু আজকে বাস এমনিতেই যাত্রীতে
সম্পূর্ন ভরপুর তাই তানিসা উঠতে পারলোনা।

—আমি নিজ থেকেই বল্লাম যদি কিছু মনে না করো তাহলে আমার সাথে আমাদের বাজার পর্যন্ত যেতে পারো। ওইখানে কিছু সময় অপেক্ষা করলেই এই বাস পৌঁছে যাবে। আর বাস তখন অনেক টাই খালি হয়ে যাবো তখন তুমি বাসে উঠে যাবো ।

—তানিসা কিছু সময় ওই ভাবেই দাড়িয়ে থাকলো তার পর কি জানি মনেকরে বল্ল ঠিক আছে।
তানিসা বাইকে উঠে বসলো আমি বাইক স্টার্ট করে
চলে আসলাম।

—আসার সময় তানিসা শুধু একটা কথাই জিজ্ঞেস করে ছিল আপনার gf আছে।

—আমি বল্লাম গরীব ঘরের ছেলেদের gf থাকতে নেই ।

—তানিসা বল্ল আপনি সত্যিই ভিন্ন ধরনের মানুষ।

—তানিসাকে বাসে তুলে দিয়ে আমি বাসায় চলে আসলাম ।

—সেইদিন বিকেলেই একটা কাজে মামার সাথে তানিসাদের এলাকায় গিয়ে ছিলাম কিন্তু আমি কল্পনা
করতেও পারিনাই মামার সাথে যাদের বাসায় গিয়েছিলাম ওইটা তানিসা দের বাসা।

—আমরা তানিসা দের বসার রুমে বসেছিল এমন সময় তানিসা রুমে এসে ঢুকলো আমাকে দেখে খানিকটা চমকে গেল । কিন্তু আমার সাথে কোন কথাই বল্লনা এমন একটা ভাব করলো মনেহয় আমি তার অপরিচিত। কিন্তু মামাকে ঠিক বল্ল কাকা কেমন আছে।

—মামা বল্ল এইতো মা আছি আরকি ভালোই ।
তোমার আব্বুকে একটু পাঠিয়ে দাও ।

—তানিসা বল্ল আপনারা বসেন আমি আব্বুকে ডেকে দিচ্ছি একথা বলেই তানিসা চলে গেল।

—কিছু সময় পরেই তানিসার আব্বু আসলো মামা তার সাথে তার প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলো শুরু করলো আর আমি আনমনে ফোন টিপেই যাচ্ছি।

—এমন সময় তানিসা আবার এই রুমে আসলো তবে সাথে করে নাস্তা নিয়ে আসছে।

—আমরা আমাদের কাজ শেরে চলে আসলাম।

—রাতের খাবার খেয়ে ফেসবুকে একটা গল্প পড়তে ছিলাম এমন সময় একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসলো।

—আমি রিসিভ করে সালাম দিলাম একটা মেয়ে কন্ঠ আমার সালামের উওর দিয়ে বল্ল কেমন আছেন।

—আমি বল্লাম জী ভাল তবে আপনাকে ঠিক চিন্তে পারলাম না।

—মেয়েটি বল্ল আমি তানিসা চিন্তে পারছেন ।

—আমি বল্লাম হুম চিন্তে পারছি।

—তানিসা বল্ল রাতের খাবার খেয়েছেন ।

—হুম খেয়েছি আপনি খেয়ে ছেন।

—তানিসা বল্ল এই মাত্র খেলাম।

—আমি বল্লাম ভাল তা কি মনেকরে ফোন দিয়েছেন ।

—তানিসা বল্ল কেন আপনাকে আমি ফোন দিতে পারিনা।

—আমি বল্লাম অবশ্যই পারো কেন পারবেনা ।

—এভাবেই আমাদের কথা চলতে থাকলো ।

—দেখতে দেখতে তানিসার সাথে কথা বলি আজকে প্রায় তিন মাস হতে চল্ল এই কয়েক মাসে তানিসাকে নিয়ে আমার মনের ভিতর একটা কল্পনার রাজ্যে তৈরি করেছি যদি এই কল্পনার নাম ভালবাসা হয় তাহলে আমি তানিসাকে ভালবাসি ।তবে আমি কখনো তানিসাকে আমার ভালবাসার কথা বলেনাই।

—আজকে তানিসা নিজে থেকেই বল্ল ইমরান তোমাকে আমি একটা কথা বলতে চাই। যদি তুমি কিছু মনে নাকর তাহলে আমি বলতে চাই।

—আমি বল্লাম আরে বলোতো তানিসা বল্ল তোমাকে আমি ভালবাসি।

—আমি বল্লাম আমিও তোমাকে ভালোবাসি তানিসা। বল্ল তাহলে তুমি আমাকে বলোনি কেন। আমি বল্লাম সত্যি বলতে কি কিছু কথা এমন থাকে যা বলতে হয়না আর হৃদয়ের কথা হৃদয় দিয়ে বুজে নিতে হয় আর এর নাম হল ভালবাসা।
—তানিসা বল্ল আমি এত কিছু জানতে চাইনা আমি চাই তোমার পাশে থেকে তোমাকে ভাল বাসতে।
আর তুমি কিন্তু এখনো আমাকে প্রপোজ করোনাই।

—তোমাকে আবার প্রপোজ ও করতে হবে।

—তানিসা বল্ল করতে হবে মানে এখনি করবা।

—আমি বল্লাম আমি তো কখনো কাউকে এর আগে প্রপোজ করিনাই তাই কি বলে প্রপোজ করে আমার ঠিক জানা নাই । আমি বলি কি প্রপোজ টাও তুমি করো প্লিজ ।

—তানিসা রাগী সূরে বল্ল আমার এত বাহানা পছন্দ না তাই এখনো বলছি আমাকে এখনি প্রপোজ করো ।

—বাদ্ধ হয়ে বল্লাম তানিসা তুমি কি আমার লিপজেল পাগলী হবে।

—তানিসা বল্ল হতে পারি। আমি বল্লাম হতে পারি মানেকি তুমি যদি আমাকে ভালোই বাসবে তাহলে হতে পারি একথা কখনোই বলতে না ।

—তানিসা বল্ল বেশি ফটর ফটর করবানা আমাকে কথার জ্বালে ফাঁসিয়ে এখন ফায়দা লুটছে ।
তুমি ভুলে যেওনা আমি এখন লিপজেল চোর
এর এক মাত্র ভালবাসার মানুষ তাই আমি ও
কিন্তু তোমাকে কথার জালে ফাসাবো।

—ওই তুমি আমাকে চোর কেন বল্লা …।
তো কি বলবো তোমাকে ..!! সবাই যা বলে
তার থেকে একটু ভিন্ন।

—তানিসা বল্ল সবাই কি বলে আমি জানিনা তুমি যদি একটু বলে দিতে …!!

–আমি তানিসার দুই ঘার আমার দু হাতে ধরে আসতে
আসতে তানিসার দিকে এগুতে লাগলাম ।

—তানিসা লজ্জায় চোঁখ বন্ধ করে ফেল্ল তানিসা চোখ খুল্ল আমি তার ভয়ার্ত চোখ দেখে নিজেই আতকে উঠলাম। তানিসা বল্ল তুমি এটা কি করলা।

—আমি বল্লাম কি করছি মানে। তানিসা বল্ল এটাতো হবার ছিলনা।

—আপনারা কি মনে করেছেন আমি তাকে কিস করেছি।

—আমি বলছি শুনোন তানিসাকে কিস না করে তার কানের কাছে মূখ নিয়ে আসতে করে বলছি আমাকে
আপনি করে বলবে।

—একে তো কিস করিনাই আর এত দিন তুমি করে বলছে আর আজকে তাকে আপনি করে বলতে বলছি
তাই এই কাহিনী ।

—তানিসা বল্ল ঠিক আছে আপনার যখন ইচ্ছা তখন আপনি করেই বলবো তবে শর্ত আছে।

—আমি বল্লাম কি শর্ত ..?? তানিসা বল্ল যখন সবার সামনে বসে আমরা কথা বলবো তখন আপনি ও আমাকে আপনি করে বলবেন।

—আমি বল্লাম এটা কোন শর্ত হল আমিতো ভেবেছিলাম তুমি অন্য কিছু বলবা।

—তানিসা বল্ল অন্য কিছু মানে ..?? আমি মনে করে ছিলাম তুমি বলবে যে তোমার সাথে যখনি দেখা হবে তখনি তুমি একটা কিস করতে বলবে।

—তানিসা বল্ল কিস করার সাহস আছে আপনার।

—আমি বল্লাম কি ভাবে বুজলে যে আমার কিস করার সাহস নেই। তানিসা বল্ল যদি কিস করার সাহস তাহলে একটু আগে আপনি ডাকার কথা বলতে না তখনি কিস করতা। তানিসার এ কথা বলতে দেরি আছে কিন্তু আমার কিস করতে দেরি নাই —তানিসা বল্ল কি করলা তুমি ।

—ওই আমি তোমার বয়সে বর তাই তুমি না আপনি করে বলবা।

—তানিসা বল্ল তোর বরর গুস্টি মারি প্রেম এর মধ্যে কোন ছোট বর নাই সব সমান হাফ হাফ।

—আমি বল্লাম সব যদি সমান সমান হয় তাহলে এখনি আমার কিস আমাকে ফেরোত দাও।

—তানিসা বল্ল পারবোনা.. দিতে ।আমি বল্লাম তোমাকে শেষ একটা সুযোগ দিলাম ভেবে দেখো
তানিসা বল্ল বলছিনা দিবোনা।

—আমি বাইক নিয়ে চলে আসলাম।

—বাসায় আসতে না আসতেই তানিসার ফোন রিসিভ করতে মধুর সূরে বল্ল কেমন আছেন।

—হুম ভাল আপনি কেমন আছেন ..?? তানিসা বল্ল ওই তুমি আপনি করে বলছো কেন । তো আপনি করে কেন বলবোনা তুমি নিয়ম কানুন মানতে না পারো কিন্তু আমি তো মানবো।

—তানিসা বল্ল প্লিজ আমাকে ভুল বুঝোনা আমি মজা করেই বলছিলাম কিন্তু তুমি তো রেগে গেলে।

—তোমার কাছে আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি । তিনি যা বলবে এখন থেকে তাই হবে কিন্তু শর্ত একটাই তুমি যদি ফোন দিয়ে বিশ মিনিট কথা বলো আমিও তোমাকে ঠিক বিশ মিনিট এর জন্য ফোন দিবো।

—তানিসা বল্ল প্লিজ এমন করে বলোনা..!!আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাই তুমি এমন করোনা ।

—তাহলে তুমি হাফ এর কথা কেন বল্লা হয়তো তোমার সাথে কোথায় গেলে সব সময় তুমি নিজে থেকেই খরচ দিয়ে দেও তার মানে এই নয় যে আমার কাছে টাকা থাকেনা ।

—তবে আজ থেকে আর কখনো তোমাকে কোন খরচ দিতে হবেনা আমিই দিয়ে দিবো হয়তো তোমরা আমাদের চাইতে অর্থ সম্পদ বেশি তবে মনের দিক থেকে নয় ।

—তানিসা বল্ল তোমার বলা শেষ হয়েছে তাহলে এই বার চুপ কর আর আমি কখনো এই সব বিষয় নিয়ে তোমাকে কিছু বলছি ।তুমি আর যদি কখনো এই সব বিষয় নিয়ে কথা বলো তাহলে সেদিন বুঝবে এই তানিসা কি এই আমি বলে রাখলাম আর কালকে সকালে আমাদের বাসা থেকে আমাকে নিনিয়ে যাবা
কোন অজুহাত দেখাবানা।

–তোমাদের বাসায় আসলে যদি তোমার পরিবার থেকে আমাদের আলাদা হতে বাদ্ধ করে । তানিসা বল্ল ওইটা তোমার না জানলেও চলবে।

—পরের দিন সকাল বলতে ১০ টার সময় চলে গেলাম তানিসার বাসায় দরজা নক করতেই তানিসার আব্বু খুলে দিল আমি তাকে সালাম দিলাম সে উওর দিয়ে বল্ল ভিতরে আসো। ভিতরে পৌঁছে আমি জ্ঞান হারানোর অবস্থা একি আব্বু আর মামা এখানে কেন।

—কম্পিত অবস্থায় একটা চেয়ারে বসলাম ।
আব্বু কিছু বল্ল না শুধু মামা বল্ল তলে তলে এত
দূর পৌঁছে গেছো আর আমরা কিছু জানলাম না।

—আমি চুপ চাপ বসেই রইলাম এর মধ্যেই তানিসা এসে বল্ল চলেন আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে
মামা বল্ল যা দেখ কি বলে।

—তানিসার রুমে ঢুকা মাত্রই তানিসা দরজা লক
করে দিয়ে এক প্রকার ঝাপিয়ে পড়লো আমার উপর তার লিপজেল মাখা গোলাপি ঠোঁটের অত্যাচার
প্রান হারানোর অবস্থা আমার এই ছোট্ট ঠোট দুটি।

—তানিসা আমাকে ছেড়ে দিয়ে বল্ল এই বার খুশি তুমি নাকি এখনো রাগ আছে।

—কিসের রাগ আর তোমার উপর আমি কখন রাগ করে ছিলাম । কেন মনে নেই কালকে আমাকে একা রেখেই চলে আসছিলাযে । আরে পাগলী ওইটা তো আভিমান। তানিসা বল্ল অভিমান হোক যা হোক
একটা হলেই হল।

—আচ্ছা তানিসা আব্বু আর মামা তোমাদের বাসায় কি ভাবে আসলো । কি ভাবে মানে তাদের আসতে বলা হয়েছে । কিন্তু কেন ..?? কেন মানে তোমার আর আমার বিয়ের কথাবার্তা পাকাপাকি করতে । মানে কি এত তারাতারি বিয়ে যেখানে আমি চলি আবআব্বুর টাকায় । তনিসা বল্ল আরে শুধু বিয়েটা হয়ে থাকবে আরে তোমার আমার কোন খরচ দিতে হবেনা ।

—আমি বল্লাম তুমি বল্লেই তো হবেনা আমার তখন একটা দায়িত্ব চলে আসবে। তানিসা বল্ল এত ভেবোনা দরকার পরলে তোমার খরচ ও আমি দেবো। কিন্তু তুমি আবার বিয়েতে অমত করোনা। অনেক কষ্টে আম্মুকে দিয়ে আব্বুকে রাজি করিয়ে ছি। আর তোমার বাসায় ও জানিয়েছি তবে সবটা তোমার আড়ালে করেছি যাতে তোমাকে চমকে দিতে পারি।
—আর তোমার বাসায় আরো কয়েক দিন আগেই আমাদের বিষয় জানানো হয়েছে।

—আব্বু প্রথম অমত করলেও পরে আম্মুর কথায় রাজি হয়েছে।

–কিনতু তোমার মাথায় বিয়ের ভূত কেন চাইলো।

আরে ভূত কি আর স্বাধে চেপেছে আব্বু আমার জন্য পাত্র দেখা শুরু করছিল তাই বাদ্ধ হয়ে আমাদের কথা বাসায় বলছি। তবে এনিয়ে আমাকে আব্বুর অনেক কথা শুন্তে হয়েছে কিন্তু আমি সবটাই হাসি মূকে সহ্য করে নিয়েছে তোমাকে আপন করে পাওয়ার জন্য এই বার বল তুমি কি বলবা ।

—কি আর বলবো আমি সবাই যা সিদ্ধান্ত নেবে ওইটাই মেনে নিবো শুধু তোমাকে আপন করে
পাওয়ার জন্য।

—তানিসা বল্ল চল তাহলে আমার দুজনেই বসার রুমে গেলাম । আব্বু বল্ল কালকে তোমাদের বিয়ে তবে এখন শুধু বিয়ে হয়ে থাকবে পরে আনুষ্ঠানিক ভাবে তানিসাকে আমাদের বাসায় নেওয়া হবে।

—আমি বল্লাম আপনারা যা সিদ্ধান্ত নেবেন ওইটাই মেনে নেবো । আব্বু বল্ল এখনতো মেনে নেবেই নাহলে যে তানিসাকে হারাতে হবে সব বুজি।

— আমরা চলে আসলাম বাসায় এসে দেখি ফুফিরা আন্টিরা আর মামিরা চলে আসছে আর কাকাদের বাসা আমাদের বাসা পাশাপাশি তাই তারা সময় মতো আসবে।

—এই প্রেম নিয়ে আমার কম কথা বলতে হয়নি এক এক জনের এক এক কথা কি ভাবে হল তো কে আগে প্রপোজ করছিল তাদের সবার কথার উওর দিতে দিতে আমি শেষ।

—সমস্থ জল্পনা কল্পনা শেষে আমরা বসে আছি তানিসা দের বাসায় । এই মাত্র কাজী শাহেব রুমে প্রবেশ করলো ।শুরু হয়েগেল আমাদের বিয়ের লেখা লেখি। এইমাত্র কাজী শাহেব আমাদের বিয়েটা সম্পর্ণ করলেন।

—যারা এসেছিল বিয়েতে সবাই চলে গেল নতুন বউ দেখতে শুধু এই বিবাহিত অধম আমি বসে আছি চুপটি করে।

—আমরা সবাই চলে আসলাম আমাদের বাসায় শুধু আসার সময় এক বার তানিসার সাথে কথা হয়েছিল।

—বাসায় এসে পরলাম মহা বিপদে এত সুন্দর মেয়ে কি ভাবে আমার প্রেমের জালে ফাঁসালা এই কথা সবাইকে বলতে হবে পাঠক পাঠিকা আপনার বলেন আমি ফাঁসিয়েছি না ফেঁসেছি।

—রাতে তানিসার ফোন রিসিভ করেই সালাম দিলাম তানিসা বল্ল বিয়ে হতে না হতেই ভুলে গেছ। আরে পাগলী ভুলবো কি করে মনে ঠিক আছে কিন্তু সবাই যে ভাবে প্রশ্ন করে যাচ্ছে কি ভাবে এই প্রেম হল তো কে প্রপোজ করছে উওর দিতে দিতে আমি শেষ । তানিসা বল্ল ঠিক আছে রাতে আবার ফোন দিবো তোমার দিতে হবেনা আর যত দিন আমি এই বাসায় আছি তোমার কোন টাকা খরচ করতে হবেনা সব আমি করবো ।

—আমি বল্লাম তুমি আবার টাকার গরম দেখাচ্ছ তানিসা বল্ল বেশি কেন বুজ এখন তোমার টাকা মানেই আমার টাকা তোমার যা কিছু আছে সব আমার আর আমার সব কিছু আমার। সত্যি বলছো তো । তানিসা বল্ল মিথ্যা কখন বলছি ওকে ঠিক আছে তাহলে একটা কথা বলি ।

—কি কথা আমার অনেক দিনের ইচ্ছা আমার বউ বাইক চালাবে আর আমি পিছনে বসবো ।

—তানিসা বল্ল ঠিক আছে কালকে তোমার ইচ্ছা পূরন করে দিবো । মানে কি তুমি বাইক চালাতে পপারো এত কথা তো বলতে পারবোনা কালকে দেখে নিও পারিনা পারি। এখন চুপ চাপ ঘুমিয়ে পর।

                                                           💝কিছু ভালবাসার শেষ এমনি হয়💝

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত