কৌতুহলতা ও যান্ত্রিকতা

প্রকৃতি সেই অপরুপ মুখ খানি চেয়ে চেয়ে দিন কাটাবার সময় কী কারো আছে? উত্তর আসবে হয়ত না।
কেননা আমার আর আগের মতো প্রকৃতিকে গভীর ভাবে দেখতে চাই না তাই বেরও হই না। কারণটা খুব সহজ। আজ আমরা যান্ত্রিকতার কবলে আটকে আছি। এই সংযুক্তিটা কেউ হয়ত আর ছুটাতে পারবে না। আমরা এখন বিনোদনের নতুন উৎসের দিকে ঝুকছি।কেননা প্রচলিত উৎসের পর্যাপ্ততা আগের মতো নেই। আর তাই নিজের ভালো-লাগার বিষয় সেখানেই তৈরি করছি। তাই আজ তেমন একটা দেখা যায় না দুরন্ত কিশোর-কিশোরীর ছুটাছুটি। হয়ত আর দেখাও যাবে না কখনও। আমরা এখন মডার্ন আর স্মার্ট দাবি করি তাও আবার যান্ত্রিকতার বিচারে। এসব ভাবনা আমাদের প্রকৃতির চির চেনা পথ থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে। তাইতো আমরা ফেইসবুক, গুগল প্লাস, টুইটার নিয়ে ব্যস্ত।এক সময় ছেলের মুখে মায়ের কাছে বায়না ছিল, “আম্মু কিছু টাকা হবে?”

“কেন” না বললেও মা বুঝতে কখনও দেরি করত না যে তার চঞ্চল আর দূরন্ত ছেলেটির বল বা খেলার সামগ্রী এর জন্য টাকা দরকার। কিন্তু এখন টাকার চাহিদার কারণ পরিবর্তন হয়েছে। আজ আর খেলাধুলার জন্য টাকা লাগে না। কেননা এখন আমরা খেলাধুলা থেকে অনেক দূরে। এর কারণ কী প্রযুক্তির সহজলভ্য? হয়ত উত্তরটা সবার জানা। আশেপাশে যখন প্রযুক্তির মাধ্যমকে সোর্স মনে করে ব্যাপক আলোচনা করা হয় তখন আলোচনায় চুপ থাকা ছেলেটিকে কৌতুহলী হতে হয়। দেখা দরকার নয় কী জিনিসটা কী? এভাবে আস্তে আস্তে কৌতুহলতা সবার মতো(যান্ত্রিক) হতে শেখায়। যার দুরুন ছেলোটিও সেই সোর্সের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আর এভাবেই ছেলেটি আলোচনার আলোচক হতে জড়িত হয় ফেইসবুক, টুইটারে। এর জন্য কী বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে দোষ দেওয়া যায়? ব্যক্তির কৌতুহল ও সামাজিক বিনোদনের উপাদানের অভাব মানুষকে এভাবে যান্ত্রিক করে তুলছে আর তাই পরিবর্তন আসে সমাজের। আর এই পরিবর্তিত সমাজকে আগের অবস্থানে হয়ত নেওয়া যাবে না তবে ব্যবহারটা কমিয়ে সামাজিকতায় মনোযোগী হওয়া যায়। তবেই বায়নায় আয়না পাওয়া যাবে।

গল্পের বিষয়:
জীবনের গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত