চন্দ্র কুমার শেষ পর্ব

চন্দ্র কুমার শেষ পর্ব

এর পর তারা দুজনে সেই মন্ত্রের আওয়াজ কে অনুসরন করতে লাগল। আওয়াজ অনুসরন করতে করতে তারা একটা তালা বন্ধ ঘরের সামনে পৌছাল।
ইরফান বলল,
ইরফান:-এই তালা বন্ধ ঘরের ভিতর কে আছে যে মন্ত্র পরছে। পরী:-তাই তো। এই পুরন রাজ বাড়িতে কে এই ব্যাক্তি।।
ইরফান:-আমাদের এই ঘরের ভিতর ঢুকতে হবে।
পরী:-হুম ঠিক চল এই তালা ভাংগা যাক।
এই বলে ইরফান সেই তালাটা ভাংতে লাগল। তালা আগের যুগের হওয়ায় ভাংতে খুব কষ্ট হচ্ছে ইরফানের। অনেক ক্ষন চেষ্টা করার পর ইরফান তালা ভাংতে সক্ষম হয়। এর পর তারা
সেই ঘরে ঢুকে। ঘরে ঢুকে তারা দেখে এক বৃদ্ধ আগুনের কুন্ডলির সামনে বসে মন্ত্র পরছে।
আর তার চার পাশে কয়েক টা বানর বিড়াল রয়েছে। বানর আর বিড়াল গুলা ইরফান আর পরীর
উপর আক্রমন করার চেষ্টা করে কিন্তু সেই লোকটি বাধা দেয়।
আর বলে,
লোকটি :-তোমরা কারা। এই পুরন রাজ বাড়িতে কি করছ।।
ইরফান:-আমরা এক অতি গুরুত্ব পুর্ন কাজে এসেছি।।
লোকটি :-কি এমন গুরুত্ব পুর্ন কাজ যা তোমাদের কে এখানে নিয়ে এসেছে।
ইরফান:-পৃথিবীতে এক দানব দেখা দিছে যাদের কে বলে মানুষ খেকো দানব।
আর তাদের শেষ করতে আমাদের এখানে আসা।
লোকটি :-তুমি শেষ করবে।
তুমি কি এই রাজ্যের তৃতীয় বংশ ধর।
ইরফান:-হুম কিন্তু আপনি কে।
ইরফানের কোথা শুনে লোকটি উঠে দারায় আর কান্না জারিত কন্ঠে বলে
লোকটি :- চন্দ্র বাবা তুই এসেছিস। আমি জানতাম তুই আসবি।।
ইরফান:-কিন্তু আপনি কে।
লোকটি :-আমাকে চিন্তে পারিস নি বাবা। আর চিনবি বা কি করে তোকে তো জন্মের পর পরেই নিয়ে
যাওয়া হয়েছে। আমি তোর সেই হতভাগ্য বাবা আলবদির। ইরফান লোকটির কথা শুনে থমকে যায়। ইরফান বিশ্বাস করতে পারে না যে এই লোকটি তার বাবা। কিন্তু লোকটি অনেক কিছুই বলে তার বিষয় যা ইরফান তার বাবা আজাদ সাহেবের কাছে শুনেছেন। এর পর ইরফান বিশ্বাস করে যে লোকটি তার বাবা।
ইরফান বলে,
ইরফান:-কিন্তু আপনি একা এই রাজ বাড়িতে এই তালা বন্ধ ঘরে কি ভাবে ছিলেন।
আলবদির :-সে অনেক কোথা বাবা। তার আগে তোমাকে সেই মানুষ খেকো দানবদের শেষ করতে হবে।
পূর্নতিথী আসতে বেশি দেরি নেই। কাল রাতের মধ্য প্রহরে সেই উপযুক্ত সময় মানুষ খেকো দানবদের শেষ করার।
ইরফান:-হ্যা আমাকে যা করার তারাতারি করতে হবে।
কিন্তু এই রাজ্যের সব চেয়ে বিশাল আকৃতির গাছ কোথায় রয়েছে আপনি কি জানেন।
আমাদের সেই গাছ খুজে বের করতে হবে।
আলবদির :-আমি তো জানি না। তোবে আমরা সবাই খুজে বের করতে পারি।
আমার এই সহচরাও পারবে(বানর আর বিড়ালদের দেখিয়ে বলেন)
ইরফান:-হুম আমার কাছে এই রাজ্যের ম্যাপ রয়েছে সেই ম্যাপ এর দ্বারা আমরা জংগলের দিকে
যেয়ে খুজে বের করতে পারব।
পরী:-কিন্তু এই রাতে কি করে খুজব ইরফান।
ইরফান:-কি করে খুজব জানি না তোবে খুজতে আমাদের হবে।
আলবদির :-তোমরা চিন্তা করনা তোমাদের কিছু হবে না। তোমরা উত্তর দিকে যাও আর আমার এই সহচর কয়েকটা থাকবে তোমাদের সাথে। আর আমি দক্ষিন দিকে যাই। এই বলে তারা যেতে লাগল।যাওয়ার আগে আলবদির ইরফান কে জরিয়ে ধরে আর কান্না করতে লাগে।।
ইরফান বলে,
ইরফান:-আপনি কান্না করবেন না।এখন সব ঠিক হয়ে যাবে।।
আলবদির :-হ্যা তাই যেন হয়। এই বলে ইরফান আর পরী উত্তর দিকের বনে যায় সাথে কয়েকটা বানর থাকে। আর আলবদির দক্ষিন দিকে যায়। পরী আর ইরফান উত্তর দিকে গিয়ে সেই বিশাল আকৃতির গাছ খুজতে লাগে।
খুজতে খুজতে পরী বলল,
পরী:-ইরফান আমরা যদিও সেই গাছ টি খুজে পাই তাহলে বুঝব কি করে যে এই গাছটি সব চেয়ে
বিশাল আকৃতির।
ইরফান:-হুম ঠিক কথা। কিন্তু পরী তুমি একটা জিনিস খেয়াল করেছ।
পরী:-কোন জিনিসটার কথা বলছ ইরফান।
ইরফান:-জংগলের গাছ গুল দেখ সব গাছ একি সাইজের।
আর আমরা খুজছি বিশাল আকৃতির গাছ।
পরী:-হুম তাই তো আমি তো খেয়ালি করি নাই।
কিন্তু আমরা তো অনেক্ষন খুজলাম কোথায় সেই গাছ।
ইরফান:-আমরা তো এই দিকে খুজছি আর এই দিকে নাও থাকতে পারে।
উনি যে আমাদের বিপরিত দিকে গেছেন উনি পেলেন কি না সেটা তো আমরা জানি না।
পরী:-হুম দেখা যাক কি হয়। এখন চল আমরা আরো ভালো করে পুর জংগল টা আরেক বার দেখি।

অন্য দিকে আলবদির দক্ষিন দিকের জংগলে সেই গাছটি খুজতে লাগল কিন্তু সেও কোথাও খুজে পেল না। সে আর তার সহচররা মিলে পুর জংগল তারাতারি খুজে শেষ করল কিন্তু কথাও পেল না গাছটি। গাছটি না পেয়ে আলবদির রাজ বাড়িতে ফিরে এল। এদিকে রাত প্রায় শেষের দিকে।
ইরফান আর পরী খুজতে খুজতে ক্লান্ত হয়ে পরে কিন্তু তারা সেই গাছটি খুজে পায় না। গাছটি খুজে না পেয়ে তারাও রাজবাড়ি তে চলে আসে। রাজবাড়ি তে এসে তারা দেখে আলবদিরও চলে এসেছে।
ইরফান বলে,
ইরফান:-আপনি কি গাছটি খুজে পেয়েছেন।
আলবদির :-না আমিও গাছটি খুজে পাইনি।
পরী:-এখন তাহলে আমরা খুজব কোথায়।
আলবদির :-আমরা তো উত্তর আর দক্ষিন দিকের জংগলে খুজেছি।
কিন্তু আমাদের রাজ বাড়ির পেছনে একটা জংগল রয়েছে। আগে সেইটা রাজ বাড়ির বাগান হিসেবে
ছিল কিন্তু এখন জংগলে পরিণত হয়েছে। সেই জংগলে খুজে দেখা যাক যদি সেই জংগলেই গাছটি থাকে।
ইরফান:-তাহলে আর দেরি কেন চলুন আমরা গিয়ে দেখি সেই জংগলে রয়েছে কি না সেই গাছটি।
এই বলে তারা সেই জংগলের দিকে যেতে লাগল। এদিকে দিনের আলো ফুটে উঠেছে। আজকে দিনের মধ্যে তাদের সেই গাছ খুজে বের করতে হবে। আজ রাতেই সেই পূর্নতিথী। তারা জংগলে গিয়ে গাছটি খুজতে লাগল। তারা জংগলে গিয়ে দেখল অনেক প্রকার গাছ রয়েছে।একেক টা গাছ একেক রকম।
তারা ভাবনার মধ্যে পরে যায় যে এই গাছ গুলর মধ্যে বিশাল আকৃতির গাছ কোনটা।তারা সারা দিন সেই গাছটি বের করার জন্য চেষ্টা করল কিন্তু কিছুতেই বুঝতে পারছে না কোন গাছটা সব গাছের চেয়ে বিশাল আকৃতির। এদিকে সেই সময় প্রায় ঘনিয়ে আসছে। ইরফান কি করবে কিছুই
বুঝতে পারে না। খুজতে খুজতে এক পর্যায় ইরফান দেখল তিনটে গাছ একই সারিতে আছে।তিনটে গাছের মধ্যে মাঝ খানেত গাছটি বেশ বড় ধরনের। আর সেই গাছের মধ্যে কিছু চিহ্ন রয়েছে।চিহ্ন গুল ঠিক তারার মত।চিহ্ন গুল চার পাশে গোল করে রয়েছে আর মাঝখানে রয়েছে একটি ত্রিভুজ।
ইরফান ভাবছে এই গাছের চিহ্ন গুল কিসের। আর গাছটিও তো বেশ বড়। কোথাও নয়তো এই
গাছটি সেই গাছ।।
ইরফান বলে উঠল,
ইরফান:-পরী দেখ এই চিহ্ন গুল আপনিও দেখুন এই চিহ্ন গুল কিসের।
পরী:-হুম তাই তো। এই চিহ্ন গুল কিসের।
আলবদির :-আমার মনে হয় এই সেই গাছ যার মধ্যে সেই মণি রয়েছে।
ইরফান:-আমারও মনে হচ্ছে যে এই গাছের মধ্যে রয়েছে মঙ্গোল মণি।
আলবদির :-কিন্তু কি ভাবে পাবে সেই মণি।
ইরফান:-এই মণি পেতে গেলে একটি ধাধার উত্তর জানতে লাগবে।।
পরী:-তুমি কি সেই ধাধার উত্তর জানতে পেরেছ ইরফান।
ইরফান:-আমি এখনো জানি না সেই ধাধার উত্তর।
আলবদির:-যা করার তারাতারি কর।
আর মাত্র কয়েক প্রহর বাকি রয়েছে সেই সময় শুরু হতে। আর ধাধাটা কিরকম।
ইরফান:-ধাধাটা হচ্ছে, তোমার মধ্যে আছে যা, সকল প্রানীর মধ্যে রয়েছে তা। পূর্নতিথীতে দিতে হবে।
সেই জিনিস দিলে তুমি পেয়ে যাবে মঙ্গোল মণি””””।।

আলবদির:-কি সেই জিনিস তোমার আর সব প্রাণীর মধ্যে আছে।
পরী:-কি হতে পারে আমারও তো মাথায় কিছুই আসছে না।
ইরফান:-আমাকে একটু ভাবতে দেও পরী আমি ঠিক বের করে ফেলব কি সেই জিনিস।
আলবদির:-যা ভাবার তারাতারি ভাব কারন আর বেশি সময় নেই। আর মাত্র তিন প্রহর রয়েছে। ইরফান ভাবতে লাগল জিনিসটা কি হতে পারে। আমার মধ্যে কি আছে যা প্রাণীদের মধ্যেও আছে।
এদিকে ইরফান অনেক্ষন ধরে ভাবছে।  আর বাতাস বইতে শুরু করেছে। ইরফানের ভাবনা শেষ
না হতে দেখে আলবদির চিৎকার দিয়ে বলে উঠে,
আলবদির:-তারাতারি কর চন্দ্র কুমার।
তোমার কাছেই সব তুমি যদি না পার তাহলে পৃথিবীর মানুষ রক্ষা পাবে না।
পরী:-ইরফান তারাতারি ভাব কি সেই জিনিস। হটাৎ করেই ইরফান চিৎকার দিয়ে বলে হুম আমি পেরেছি। আমি খুজে পেয়েছি সেই জিনিস।
আলবদির :-কি সেই জিনিস চন্দ্র কুমার।
ইরফান:-সেইটা পরে বলছি। এই বলে ইরফান তার ব্যাগ থেকে ছুরিটা বের করতে লাগল।
পরী:-ইরফান এই সময় তুমি ছুরি দিয়ে কি করবে। ইরফান যেন পরীর কথা শুনতেই পেল না।
ছুরিটা বের করেই ইরফান সেই গাছের কাছে এগিয়ে গেল। গাছের কাছে গিয়ে ইরফান।

গাছের কাছে গিয়ে ইরফান ছুরিটা দিয়ে নিজের সর্ব শক্তি দ্বারা নিজের বুকের মধ্যে আঘাত করে।
আর সেই আঘাতের কারনে ইরফানের বুকের রক্ত গিয়ে পরে গাছটির উপর।আর সাথে সাথে চার পাশে প্রবল বেগে বাতাস বইতে শুরু করে। আকাশের বিদ্যুৎ ঝলকাতে থাকে। ইরফান কে নিজের বুকে ছুরি ঢুকাতে দেখে পরী আর আলবদির চিৎকার দিয়ে উঠে।।

পরী বলে,
পরী:-ইরফান এ তুমি কি করছ। নিজের বুকের মাধ্যে ছুরি ঢুকিয়ে দিলে। পরীর কথা শুনে ইরফান
কিছুই বলে না। সে শুধু অপেক্ষা করতে থাকে মঙ্গোল মণির জন্য। এদিকে বাতাস আর বিদ্যুৎ এর ঝলকানি যেন বেরেই চলেছে। এক পর্যায় সেই গাছটিতে ফাটল ধরতে থাকে। ফাটল ধরতে দেখে
ইরফান গাছটির কাছ থেকে সরে এসে পরীর পাশে যায়। ইরফানের বুক থেকে প্রচুর রক্ত ঝরছে।
পরী বলে,
পরী:-এই কাজ তুমি কেন করলে ইরফান।
ইরফান :-কি করব বল আমার আর সব প্রাণীদের মধ্যে তো একটা জিনিসই মিল রয়েছে আর সেটা হল রক্ত।
তাই আমার বুকের মধ্যে ছুরি ঢুকিয়ে দিয়ে গাছের মধ্যে রক্ত দেই।
পরী:-এখন তোমার যদি কিছু হয়ে যায়।
ইরফান:-আমার উপর পৃথিবীর সবার রক্ষা করার দায়িত্ব রয়েছে।
আর এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি আমার জীবন দিতে হয় আমি তাতেও রাজি।
এরি মধ্যে আলবদির বলে চন্দ্র কুমার ওই দেখ গাছটির মাঝখানে কি একটা রয়েছে। আর জ্বল জ্বল করে জলছে। আমার মনে হয় এটাই সেই মঙ্গোল মণি। গাছটি ফেটে গিয়ে মণি বের হয়েছে। মণির আলোয় যেন পুর জংগল আলোকিত হয়ে আছে। আর সেই পূর্নতিথীর সময়ও ঘনিয়ে এসেছে। ইরফান অনেক কষ্ট করে হেটে মণির কাছে যায়। গিয়ে মণিটা নিজের হাতে তুলে নেয়। আর সাথে সাথে যেন
মণির আলো নিভে যায়। মণির আলো নিভে যাওয়াতে আবার জংগল অন্ধকার হয়ে যায়।আলবদির বলে,
আলবদির :-চন্দ্র কুমার এই মণি নিয়ে তোমাকে রাজ বাড়ির ছাদে উঠতে লাগবে। আর ছাদে গিয়ে সঠিক সময়ে মণিটা চাদের দিকে এগিয়ে ধরতে হবে। আর সেই সময় আসতে বেশি দেরি নেই।।
সময় শুরু হওয়া থেকে এক প্রহর থাকবে সেই সময় আর সেই এক প্রহরের মধ্যে তোমাকে তোমার কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে।
ইরফান:-হুম আমাকে যা করার তারাতারি করতে হবে। এই বলে ইরফান হাটতে লাগল কিন্তু বুকের ব্যাথায় কয়েক পা এগুতেই মাটিতে পরে যায়। পরী দৌড়ে গিয়ে ইরফানকে ধরে। পরী ইরফানকে জরিয়ে ধরে দাড় করায়। পরীকে ধরেই ইরফান রাজ বাড়ির দিকে যেতে থাকে। কিছু দুর যাওয়ার
পরেই তাদের সামনে অনেক গুল মানুষ খেকো দানব এসে দাড়ায়। কয়েকটা মানুষ খেকো দানব মানুষের রুপ নিয়ে বলে,
দানব:-চন্দ্র কুমার
এই মণি আমাদের দিয়ে দেও।
চন্দ্র কুমার(ইরফান):-না তোমরা এই মণি কখনোই পাবে না। এই মণি দিয়ে আমি তোমাদের শেষ করব।
দানব:-তুমি যদি এই মণি আমাদের না দেও তাহলে এখানে তোমাদের সবাইকে মরতে হবে।
পরী ইরফানকে বলে,
পরী:-ইরফান সেই ছুরিটা কথায়।
ইরফান :-কেনো তুমি ছুরি দিয়ে কি করবে।
পরী:-ইরফান আমি আর তোমার বাবা এই দানবদের আটকাচ্ছি তুমি মণি নিয়ে রাজবাড়ির ছাদে
যাও আর তোমার যা করার তুমি কর।
আলবদির :-হুম চন্দ্র কুমার তুমি যাও আমরা এদেরকে কিছুক্ষন আটকে রাখছি। আমি মন্ত্র দ্বারা অল্প
সময়ের জন্য এদের বস করে রাখছি আর এই অল্প সময়ের মধ্যে তোমার যা করার করতে হবে।
ইরফান:-আচ্ছা ঠিকাছে আমি যাচ্ছি।
পরী:-কিন্তু ইরফান তোমার এই অবস্তায় তুমি যেতে পারবে তো।
ইরফান:-আমাকে পারতেই হবে পরী আমাকে পারতেই হবে। সবাই যে আমার পথ চেয়ে বসে আছে।
আমি যে বাবাকে কথা দিছি। আমি আসছি পরী তুমি ঠিক মতো থেক। এই বলে ইরফান চলে যায়।
ইরফান পিছন পাশ দিয়ে ঘুরে চলে যায় রাজবাড়িতে। এদিকে পরী আর আলবদির সেই দানবদের সাথে মোকাবেলা করছে। পরী ছুরি নিয়ে দানবদের আঘাত করছে আর আলবদির চখ বন্ধ করে
মন্ত্র পরতে শুরু করে। একটু পর আলবদির চোখ খুলে আর মাটি থেকে এক মুঠ মাটি নিয়ে দানবদের
দিকে ছুরে মারে। আর সাথে সাথে সব দানব মাটিতে লুটিয়ে পরে। এই দেখে আলবদির আর পরী রাজবাড়ির দিকে যেতে শুরু করে। অন্য দিকে ইরফান অনেক কষ্টে রাজবাড়িতে পৌছায়।
রাজবাড়িতে পৌছেই সে ছাদে উঠতে থাকে। অনেক কষ্ট করে সিড়িতে পরে গিয়ে আঘাত পেয়ে পেয়ে
ছাদে উঠে ইরফান। আবার এদিকে আলবদির এর সব বস কেটে গিয়ে মানুষ খেকো দানবেরা রাজবাড়ির দিকে আসতে থাকে। দানবেরা বেশ বড় হওয়ায় খুব দ্রুত রাজ বাড়ির কাছাকাছি চলে আসে। দানবেরা যাওয়ার সময় পরী আর আলবদিরের উপর দিয়ে যায় আর তাতে করে তারা আহত  হয়। কিন্তু দানবেরা তাদেরকে আর কিছু না করে রাজবাড়ির ছাদের দিকে যায়। ইরফান কষ্ট করে দারিয়ে মণি টা নিজের হাতে নিয়ে চাদের দিকে বারিয়ে দিতে থাকে। কিন্তু তার হাত যেন উপরে উঠতে চায় না। নিজের শরিরে মনে হচ্ছে কোনো শক্তি নেই ইরফানের।দানবেরাও রাজবাড়ির
ছাদে গিয়ে পৌছায়। ছাদে গিয়ে ইরফানকে যেই মারতে যাবে আর ঠিক সেই সময়েই ইরফান মণি টা চাদের দিকে এগিয়ে দেয়।
আর সাথে সাথেআর সাথে চার পাশ থেকে সেই মানুষ খেকো দানবদের ভয়ংকর গর্জন শুনা যাচ্ছে।।মনে হচ্ছে সেই গর্জনের কারনে পুর আকাশ পাতাল এক করে ফেলবে।।ইরফান দেখে চার পাশে যেন আগুনের কুন্ডলি বের হচ্ছে।।সে দানবদের শরিরে আগুন ধরে পুরে পুরে যাচ্ছে।।ইরফানকে যেই দানব গুল মারতে গিয়েছিল ছাদে সে দানবেরা সেখানেই পুরে ছাই হয়ে যায়।।ইরফান এই সব দৃশ্য দেখতে থাকে।।ইরফান সেই মঙ্গোল মণি হাতে রেখেই ছাদের মধ্যে পরে যায়।।এদিকে পরী আর আলবদির আহত অবস্তায় রাজবাড়ির ছাদে যায় ছাদে গিয়ে তারা দেখে ইরফান পরে আছে।।পরী দৌরে গিয়ে ইরফানকে বুকে তুলে নেয়।।আর ইরফানকে ডাকতে থাকে,
পরী:-ইরফান এই ইরফান উঠ।।দেখ তোমার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।।তুমি পৃথিবীর সব মানুষ কে রক্ষা করেছ।।তোমার বাবাকে দেওয়া কথা তুমি রেখেছ।।তোমার দাদু, এর দেওয়া দায়িত্ব তুমি পালন করেছ।।
আলবদির:-চন্দ্র বাবা উঠ।। তোমাকে আমি সেই ছোট থাকতে অবহেলা করেছি আর কাছে পেয়েও হারাব এ হতে পারে না।।
কিন্তু ইরফান তাদের কথা শুনতেও পায় ননা।।আর উঠেও না।।তার নিথর দেহ পরে থাকে।।পরী ইরফানকে জরিয়ে ধরেই কাঁদতে থাকে।।আলবদির দেখে ইরফানের হাতে সেই মণি রয়েছে।।আলবদির সেই মণি টা হাতে তুলে নেয়।।আর ছাদের এক পাশে গিয়ে দাড়িয়ে থাকে।।হটাৎ করেই আলবদির দেখে চাদ দেখে এক সূক্ষ্ম আলোক রশ্মি এসে সেই মণির মধ্যে পরে আর সাথে সাথেই মণি থেকে এক ধোয়ার কুন্ডলি বের হয়।।আর সেই ধোয়ার কুন্ডলি থেকে একটি মেয়ে বের হয়।।মেয়েটি কে দেখে আলবদির ঘাবরে যায়।। আর বলে,
আলবদির :-তুমি কে।।এর কথা থেকে এলে।।
মেয়েটি :-আমি এই মণির ভিতোরের অংশ।।আমি এর মধ্যেই থাকি।।আমি অনেক বছর থেকে মণির মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলাম।।কিন্তু যখন এই মণি চাদের দিকে তুলে ধরা হয় আর চাদের আলো এই মণি তে পরে সাথে সাথে আমার ঘুম ভেংগে যায়।।আর সেই সাথে এই মণি যেই অশুভ শক্তির বিনাশ করার শক্তি রাখে সেই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে।।আর আমার জীবন ফিরে পাই।।
আলবদির:-কিন্তু এখন তোমার কি চাই।।
মেয়েটি :-আমার কিছু চাই না।।শুধু একটি কথা বলতে চাই আর সেটা হল এই মণি রক্ষা করার জন্য একজন আদর্শ সৎ মানুষ চাই।।আর আমার ঘুম ভেংগেছে তার মানে সে এখানেই রয়েছে।।তাই আমি তাকে কিছু কথা বলতে এসেছি।।
আলবদির মেয়েটিরর সামনে থেকে সরে গিয়ে ইরফানকে দেখিয়ে বলে,
আলবদির :-এই সেই সৎ আদর্শ মানুষ।।কিন্তু নিথর হয়ে পরে আছে।।সে কি করে এই মণি রক্ষা করবে।।
মেয়েটি একটা মৃদু হাসি দিয়ে বলে,
মেয়েটি :-আপনি কোনো চিন্তা করবেন না।।এরকম আদর্শ মানুষ এর কিছু হবে তাকে তার কর্তব্য পালন করতে হবে।।যতো দিন না এরকম আরেক জন আদর্শ মানুষ পৃথিবীতে জন্ম নিচ্ছে।।
এই বলে মেয়েটি চাদের দিকে হাত বারিয়ে দেয়।।আর চাদ থেকে একটি আলোক রশ্মি তার হাতে পরে আর সেই আলোক রশ্মি তার হাত থেকে ইরফানের বুকে দেয়।। ইরফানের বুকে দেওয়ার সাথে সাথে ইরফানের সেই ক্ষত ঠিক হয়ে যায়।।আর ইরফান ভালো হয়ে যায়।।ভালো হয়ে গিয়ে ইরফান উঠে বসে।।ইরফানকে উঠে বসতে দেখে পরী আর আলবদির খুব খুশি হয়।।পরী ইরফানকে জরিয়ে ধরে রাখে বুকের মধ্যে আর কাঁদতে থাকে।।ইরফান বলে,
ইরফান:-পরী ছার কি হচ্ছে বাবা আছে এখানে।।
পরী লজ্জা পেয়ে ছেরে দেয় ইরফানকে।।এর পর ইরফান উঠে গিয়ে ছাদের কিনারায় গিয়ে দারায়।।
তাকে আসতে দেখে মেয়েটি বলে,
মেয়েটি :-তোমার নাম কি তুমি কে সেইসব কিছু জানার দরকার নেই।।শুধু একটা কথা বলতে চাই এই মণি তুমি রক্ষা করতে পারবে।।আর তুমি যত দিন বেচে আছ তুমি রক্ষা করবে এই মণি।। তোমার পরে তোমার বংশ ধরের মধ্যে যে সৎ আদর্শ হবে তার হাতে তুলে দিবে এই মণি।। কিন্তু খেয়াল রেখ তোমার বংশ ধর দ্বারাই আবার এই মণি ধংশ হতে পারে।।মানে এই মণি যে লোভ করে হাতে নিয়ে চাদের দিকে বারাবে সাথে সাথেই আবার এক অন্য জন্তু পৃথিবীতে আসবে।।আর তোমার সেই বংশধরের মৃত্যু হবে।।
ইরফান:-আমি চেষ্টা করব আমার সঠিক ও আদর্শ বংশ ধর এর হাতে এই মণি তুলে দেওয়ার।।
মেয়েটি :-সাবধানে রাখবে এই মণি।। আর কোনো প্রয়োজন হলে আমাকে ডাকতে পার।।আর আমাকে ডাকার এক মাত্র উপায় রক্ত।।এক ফোটা রক্ত এই মণি তে পরলে আমি চলে আসব।।আর এই মণি যার হাতে থাকবে আমি তার কথা মত চলব।।সে যা বলবে তাই করব।।এখন আমি এই মণিরর ভেতোর ঢুকে গেলে এর পর থেকে আমি শুভ অশুভ কিছু জানব না।।তাই সাবধান।।
এই বলে মেয়েটি ধোয়ার কুন্ডলি হয়ে মণির মধ্যে ঢুকে যায়।।ইরফান বলে,
ইরফান:-আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করব এই মণি রক্ষা করতে অশুভ ছায়া থেকে।।
পরী:-ইরফান এখন আমরা কি করব।।চল আমরা ফিরে যাই।।
আলবদির :-কোথায় জাবে তোমরা এই রাজ্য ছেরে।।
ইরফান:-বাবা এই রাজ্যে কোননো মানুষ থাকে না রাজ্য পুর জংগলে ঘেরা জীব জানোয়ারে ভরা এখানে থাকা জাবে না।।আপনি আমাদের সাথে চলুন।।
আলবদির :-না বাবা আমি এই রাজ্য ছেরে যেতে পারব না।।
ইরফান:-আপনি গেলে আপনার প্রিয় বন্ধু অনেক খুশি হবে।।
আলবদির:-প্রিয় বন্ধু মানে আজাদ এর কথা বলছ।।
ইরফান:-হুম আপনি গেলে বাবা অনেক খুশি হবে।।
আলবদির:-তাহলে এই রাজ্য।।
ইরফান:-রাজ্য থাক আপনি চলুন।।যদি ভাগ্য আবার এই রাজ্যে আনে তাহলে আমরা নিশ্চই আসব।।
আলবদির:-ঠিকাছে বাবা তাহলে চল।।
এই বলে তারা রাতের মধ্যেই রোওনা দেয়।।সাথে আলবদির এর সহচররাও থাকে।।যেতে যেতে যখন জংগল শেষ হয় তোখন আলবদির তার সহচর দের ইশারার মাফহ্যমে বললে চলে যেতে আর সে আবার আসবে।।এই বলে চলে আসে তারা।।এর পর উত্তর এর দিকে এসে গাড়িতে করে রোওনা দেয় বাড়ির উদ্দ্যেশে।। তিন দিন পর তারা বাড়িতে পৌছায়।।বাড়িতে গিয়ে ইরফান চিৎকার দিয়ে আজাদ সাহেব মানে তার বাবা কে ডাকে,
ইরফান :-বাবা বাবা কোথায় তুমি দেখ তোমার ছেলে ফিরে এসেছে।।
ইরফানের ডাক শুনে আজাদ সাহেব ঘর থেকে বের হয়ে আসে আর ইরফানকে দেখে তার কাছে এসে জরিয়ে ধরে কান্না করে আর বলে,
আজাদ:-তোর কিছু হয়নি তো বাবা।।তুই ঠিক আছিস তো বাবা।।
ইরফান:-আমি ঠিকাছি বাবা আমার কিছু হয়নি।।
আজাদ:-পরী পরী কোথায় ওর কিছু হয়নি তো।।
বাহির থেকে এসে পরী বলে,
পরী :-আমার কিছু হয়নি আঙ্কেল আমি ঠিকাছি।।
ইরফান :-বাবা তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।।
আজাদ:-কিসের সারপ্রাইজ বাবা ইরফান।।
ইরফান দরজার দিকে তাকিয়ে বলে,
ইরফান:-আপনি ভিতরে আসুন বাবা।।
আজাদ:-ইরফান তুই কাকে বাবা বলছিস।।কে এসে,,,,
এরি মধ্যে আলবদির ভিতরে ঢুকে।।আলবদির কে দেখে আজাদ সাহেব চমকে যায়।।দৌড়ে গিয়ে আজাদ সাহেব আলআলবদির কে জরিয়ে ধরে।।আর বলে,
আজাদ:-আলবদির বন্ধু আমার তুই বেচে আছিস।।আর রাজ্যের সবাই ঠিকাছে।।তাহলে তো আমার বাবাও আছে।।
আলবদির :-নারে বন্ধু রাজ্যের কোনো মানুষ বেচে নেই।।আমি ভাগ্য ক্রমে বেচে আছি তাও একজনের কৃপায়।।
আজাদ:-কি ভাবে কি হল।।আর কার কৃপায় বেচে আছিস তুই।।
আলবদির:-সে অনেক কাহিনি।।না শুনলেও চলবে।।
ইরফান:-সব কাহিনি আমরা শুনব।।তোবে এখন নয়।।ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে তার পর।।
আজাদ:-হ্যা ঠিক কথা আগে ফ্রেশ খাওয়া দাওয়া তার পর।
পরী:-আঙ্কেল আমি তাহলে আসি।।আমার যা উদ্দ্যশ ছিল তা পুরন হয়ে গেছে।।
ইরফান :-চলে যাবে মানে কোথায় যাবে তুমি।।
আজাদ:-পরী তুমি কোথও যাবে না।।এখন থেকে আমরাই তোমার পরিবার।।
পরী:-কিন্তু আঙ্কেল আমি কার পরিচয়ে থাকব।।
ইরফান পরীর কথা শুনে তার বাবাকে বলে,
ইরফান:-বাবা আমি পরীকে ভালোবাসি ওকে আমি বিয়ে করব।।
আজাদ:-হুম আমার ছেলের তাহলে বুদ্ধি হয়েছে।।আর আমিও এই কথাই ভেবেছিলা।
আজাদ সাহেবের কথা শুনে পরী আর ইরফান দুজনেই লজ্জা পায়।।আর সেখান থেকে ঘরে চলে যায়।।এর পর তারা সবাই ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে টিভির সামনে টিভি দেখতে দেখতে গল্প করে আলবদির এর বেচে থাকার কাহিনি।।
আলবদির:-আজাদ তুই চন্দ্র কে রাজ্য থেকে নিয়ে আসার পর তোর বাবা এক অজানা অসুখে মারা যায় কেউ বলতে পারে না সেই অসুখ টার নাম কি।।শুধু তোর বাবা না রাজ্যে সব মারা যেতে থাকে সেই অসুখে।।আর সেই জন্য রাজ্য ছারতে থাকে সবাই।।এক সময় রাজ্য মানুষ শুন্য হয়ে পরে।।আমি তোখন নিঃসংজ্ঞ হয়ে পরি।।এর পর আমার ভুল আমি বুঝতে পারি।।এক সময় ঋষি এসে আমাকে সব বলে।।আর আমার বেচে থাকার জন্য উপায় বলে।।আর সেই উপায় মত আমি রাজ্যের এক ঘরে ধ্যান করে মন্ত্র দ্বারা আমি নিজেকে রক্ষা করি।।
আজাদ:-এই ভুল টা যদি আগে ধরতে পারতি তাহলে সবাই ভাল থাকতাম।।
ইরফান:-যা হবার হয়ে গেছে এখন আর বলে কি লাভ।।
এরি মধ্যে তারা টিভি তে দেখে খবরে বলছে,
আমরা পৃথিবীর মানুষরা যেই জন্তুকে নিয়ে সমস্যায় ছিলাম সেই জন্তু হটাৎই উধাও হয়ে যায়।।উধাও বলতে সব জন্তু অসাভাবিক ভাবে পুরে যায়।।আজকের খবর এই পর্যন্ত সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।।
এই কথা শুনে তারা সবাই হেসে উঠে।।
আজাদ:-যাক সব সমস্যা সমাধান।।
আলবদি:-আরেক টা সমস্যা রয়েই গেছে।।
ইরফান:-কি সমস্যা।।
আলবদির:-তোমার আর পরীর বিয়ে।।
এই কথা শুনতেই পরী আর ইরফান সেখাব থেকে উঠে ছাদে চলে যায়।।
ইরফান:-পরী আমাকে বিয়ে করবে তো।।আমায় ভালোবাসবে তো।।
পরী:-আমি তোমায় দেখার প্রথম থেকেই ভালোবাসি।।
এরপর পরী ইরফান কে জরিয়ে ধরে।।বাকিটা আপনাদের না জানলেও চলবে।।
বাই বাই টা টা।।
ভালো থাকবেন।।

আরো গল্প পড়তে লিংক এ ক্লিক করুন……

চন্দ্র কুমার পর্ব:- ১

চন্দ্র কুমার পর্ব:-২

চন্দ্র কুমার পর্ব :-৩

চন্দ্র কুমার পর্ব :-৪

চন্দ্র কুমার পর্ব :-৫

চন্দ্র কুমার পর্ব :-৬

চন্দ্র কুমার পর্ব :-৭

চন্দ্র কুমার পর্ব :-৮

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত