সুখ চাঁদের চায়ের দোকান

সুখ চাঁদের চায়ের দোকান

আজ যে ঘটনা টা লিখলাম. এই কাহিনীটা ঘটেছে এই তো গত কুরবানি ঈদের পরেই। আমাদের ইয়াং পোলাপানদের আড্ডা খানা চাটমোহর অগ্রণী বাংক এর পিছনে একটু ফাকা জায়গাজমি,পাশেই একটা পুকুর আর তার আসে পাসে সব হিন্দুদের বসবাস। আর এই ফাকা যায়গা তেই সুখ চাদের চায়ের দোকান অবস্থিত। সবাই জানে যে হিন্দুদের বসবাস স্থানে নাকি এটা অটা ঘটে থাকে বা আজকাল আমরা লোক মুখে শুনে থাকি। কিন্তু আমরা সবাই তো ইয়াং পোলাপান আমাদের মধ্য এই জায়গায় সব সময় দেখা যেতো তখন – আতিক(আমি নিজে),বকুল ভাই,মিলন,গিয়াস ভাই,শাকিল,সুমন ভাই,সুজন ভাই,মাঝে মধ্য আমাদের পাসের গ্রামের রবিন ভাই,হারুন ভাইও এই জায়গাতে আসতো। আমাদের কাজ কাম নাই তাই সারাটা দিন এই সুখ চাদের চায়ের দোকানে চা খেয়ে সময় কাটাই আর হাসি তামাশার গল্প করি। ঈদ চলে গেছে তার পরেও আমাদের ঈদ কখনো ফুরায় না।

তো একদিন এই জায়গায় উল্লেখিত নামের সবাই আসছে তো সেদিন সবাই ব্রেঞ্চে বসে গল্প করছি তো রবিন আর হারুন ভাই কোথা থেকে যেনো বাইক নিয়ে হাফাতে হাফাতে আসলো আমাদের কাছে. এসেই সুখ চাঁদ কাকাকে বলছে ও কাকা তারাতারি এক মগ পানি দিয়ে যাও কইলজে জায় জায় অবস্থা । আমরা সবাই দেখে বললাম কি হয়েছে? সুখ চাঁদ কাকা পানি নিয়ে এসেই বলতেছে কিরে রবিন কুন ছেরির বারিত থাইক্যা এই ভরা সন্ধাত তারা খায়্যা আইলু। হারুন ভাই বলতেছে আরে কিছু না কাকা আপনি জান সবার জন্য চা বানান। সুখ চাঁদ কাকা সেখান থেকে চলে গেলো চা বানাতে । বকুল ভাই জিজ্ঞেসবাদ করলো রবিন ভাই তো কথাই বলতে পারছে না। সুমন ভাই বল্লো কিরে হারুন কি হয়েছে তখন হারুন ভাই বলতেছে আর ঘামছে আমি বললাম ভাই ঘামতেছেন কেনো? ভুত দেখছেন নাকি? বল্লো হ্যা হবে হয়তো

সবাই হাসাহাসি করতে লাগলাম.. ভুতের কথা শুনে শাকিল বাসায় চলে গেলো। তার পরে রবিন ভাইয়ের অবস্থা দেখে হাসি থামালাম সবাই পরে হারুন ভাই বলতেছে তাইলে শুনো। বাসা থেকে আমি আর রবিন বাইক নিয়ে এখানে আসার জন্য বের হলাম আস্তেছি খুব ধিরে ধিরে তখন বিকেল ৫ টা বেজে ১৭ মিনিট বোয়ালমারী এর মাঝ ব্রিজ এ এসে বাইক আর চলে না এখন কি করি টাংকি ঝাকিয়ে দেখি তেল আছে তবুও চলছে না প্লাগ টাও ঠিক আছে তবুও বিদ্যুৎ তৈরি হয় না…. দেখতে দেখতে সন্ধ্যার আজান দিয়ে দিলো আর তখনি প্যাডেল মারতেই বাইক স্টার্ট নিলো আমি রবিন কে বললাম বাইকে উঠতে আর তখনি

এক অজানা অচেনা কি অদ্ভুত বিস্রি চেহারার এক জন এসে বলতেছে এখন বেচে গেলি আল্লাহর নির্দেশে। কিন্তু তোদের আমি ছারবো না এটা দেখে দু জন ভয় পেয়ে যাই। আর রবিনের এই অবস্থা। বকুল ভাই বল্লো আচ্ছা বুঝলাম তোমাদের আজ বারি জাবার দরকার নেই তোমরা আজ আমাদের বাসাতেই থাকবা। এই বলে উঠতেই গিয়াস ভাই বলে ফেল্লো কিরে বকুল তোদের বাসায় না রাত্রে কে যেনো ঢিল ছুরে.. বকুল ভাই বলে এমনিতেই দুজন ভয় পেয়েছে আর তুই থামতো। গিয়াস ভাই আর সুজন ভাই বলতেছে সত্যি কথাই তো এদিকে সুখ চাঁদ কাকার চা বানানো শেষ কাকা এসে বলতেছে কিরে সবাই যে ভুত নিয়ে মজেছিস আজ তা তুরা কি জানিস (কাকা আমাদের সবার সাথে এভাবেই কথা বলতে ভালোবাসে) এই পুকুর পারের কাহিনী?

আমরা কেউ শুনতে চাইলাম না এদিকে ফট করে মিলন বলে ফেল্লো বলেন কাকা আমি আর আতিক শুনবো। আমরা বাধা দিলেও কাকা বলতোই (সে এক রোখা)

কাকা বলতে লাগ্লো তখন ১৯৮০ সাল তোদের অনেকেরেই জন্ম হয়নি তখন থেকে এই পুকুর আর তখন হিন্দুদের এই সকল জায়গা ছিলো কিছু মুসল্লিও ছিলো । একদিন এই পুকুরে সোনার নৌকা ভেসে উঠে। হিন্দুরা সহ মুসলিম রাও নৌকা ধরতে গেলে সবাইকে তলিয়ে নিয়ে যায়, তার পরের দিন টা তেই সবাই এই এলাকা ছেরে চলে যায়। গল্প বলতে বলতে রাত ১১:৩০ বেজে গেসে কাকা বল্লো তুরা কি থাকবি নাকি আমি বাসায় জাবো কাকা চলে গেলো আর বলে গেলো সবাই চলে যা অনেক রাত হয়েছে। সুমন ভাই কাকার সাথেই চলে গেলো.. গিয়াস ভাই আর সুজন ভাই এক সাথে চলে গেলো। বকুল ভাই রবিন ভাই আর হারুন ভাই বকুল ভাইদের বাসায় থাকবে তাই তারাও চলে যাবে.. আমি আর মিলন জিরো পয়েন্ট জেতে হবে আমি বাসা ভারা থাকি তো আমি আর মিলন ভাবতেছি ইস যদি সোনার নৌকা টা পেতাম তাই বসে রইলাম বকুল ভাই রবিন.হারুন ভাইকে বাসায় নিয়ে জাবার সময় রুচি হোটেলের সামনে জেতেই দমকা হাওয়া বয়ে যেতে লাগ্লো রবিন ভাই চিৎকার দিয়ে দিলো আমি আর মিলন সেখানে যাবার আগেই পুকুরের মধ্য থেকে কে যেনো বলে উঠলো কিরে তোরা কই জাস তোরা দুজনে না সোনার নৌকা নিবি.. আমি আর মিলন থমকে দারালাম অই দিকে আর কনো সারা শব্দ পেলাম না তাই পুকুর পারে দুজন দারিয়ে রইলাম আর বললাম কোথায় তুমি আর কে তুমি? ভেবেছো গল্প শুনেই কি আমরা ভয় পেয়েছি? যদি ভাবো তবে ভুল আমাদের ভয় দেখাতে পুকুরের অপর প্রান্তে তাকাতেই দেখি এক দল ঘোড়া এদিকে আসছে কিন্তু পা নেই মিলন কে বললাম মিলন তুই বসেক তো আমি আর মিলন বসে পরলাম আর বললাম…. ওকে দেখি ভয় দেখানো র জন্য আর কি করতে পারো দেখি আকাশ থেকে বৃষ্টি পরছে পানিতে চারিদিকে খুব ঝর হইতেছে কিন্তু আমাদের গা ভিজছে না। পরে দেখি এক ড্রাগন এসে আমাদের আগুন দিয়ে পুরিয়ে দেবার চেস্টা করছে কিন্তু সে কিছুই করতে পারছে না পুকুরের মধ্য তাকিয়ে দেখি সেই কাকার গল্পের সোনার নৌকা মিলন ধরতে যেতে চাইলে আমি বাধা দিলাম মিলন আমায় ধাক্কা দিলে মিলন কে আমি ঝাপ্টে ধরি মিলন আমার বাধা আর পেরুতে পারে না

পুকুর থেকে আমায় উদ্দেশ্য বলে কিরে প্রেম কুমার অকে বাধা দিলি কেনো? ওকে আস্তে দে তোরে আমি সুন্দরী রমনি দিবো অই যে পাসের পুকুরের ঘাটে স্লান করছে যা দেখে আয়… আমি আর মিলন বললাম চলতো দেখি
পাসের পুকুরে যেতে এক গলি দিয়ে যেতে হয় সেখানে এক বাগান আর হিন্দুরা পুজা করে । সেই গলি দিয়ে যেতেই দু পাসের ইট জেনো আমাদের আটকিয়ে দিলো এবার একটু ভয় পেলাম সামনে তাকাইলাম দেখি অসংখ্য রমনি স্লান করছে। আমাদের পিছন থেকে আকাশ ছোয়া এক ভয়ংকর মানুষ এসে দারালো আর সামনে দেখি সব কিছু অন্য রকম হয়ে গেছে রাত বেজে গেসে ৩:০৩ মিনিট

দুজনেই এবার সত্যি ভয় পেয়ে গেলাম মিলনের হাতে মেসের কাঠি ছিলো সেটা জালাতেই সব থেমে গেলো পরে সুখ চাদের চায়ের দোকানে আস্তেই আলো নিভে গেলো তখন দেখি আমাদের আসে পাসে সাপ.ব্যাঙ বাঘ ভাল্লুক সিংহ ভয়ংকর দৌত্য আর পুকুরের মাঝ খানে সোনার নৌকা। সবাই জেনো আমাদের কাছে ডাকছে কিন্তু কেউ আমাদের সামনে আস্তে পারছে না আর এভাবে ভোরের সুর্য্য দেখা দিলো। আমি আর মিলন সেখানেই বসে ছিলাম। সুখ চাঁদ কাকা সকালে এসে বলতেছে কিরে তুরা দুজন কি এখানেই ছিলি নাকি বল্লাম হ্যা এখানেই ছিলাম কাকাকে রাতের সব ঘটনা বললাম কাকা বল্লো আমি আগেই জানতাম এমন কিছু হবে একটা অনেক বছর পর। এই ঘরে আসার পর কিছুই হয়নি তাই না? বললাম এটাই এখন রহস্যময়

কাকা বল্লো সুনেক এই ঘরটা কতা দিয়ে বন্দি করা আচে তাই কিচু হয়নাই নালি তুরা দুজন আজ স্যাস হয়্যা গেলুনু এদিকে কিছুক্ষন পর রবিন ভাই আর হারুন ভাই আসলো বললাম কাল কি হইছিলো বল্লো রুচি হটেলের সামনে বাতাশ আর চামচিকার কানে বারি খেয়ে পরে বুঝতে পারলাম তাই বকুল দের বাসায় গিয়ে ঘুমালাম কিন্তু সেখানে আসলেই টিনের চালের উপর ঢিল ছুরে কে জেনো তিন জন থাকায় আর ভয় পাইনি । আমাদের কাহিনী টা বললাম সবাইকে এই সুনে রবিন ভাই আর হারুন ভাইকে সুখ চাদের চায়ের দোকানে বেশ কিছুদিন দেখা যায়নি।

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত