এর মানে কী

এর মানে কী

মার্চের ১৩ তারিখ রাতের কথা। সেদিন ছিল বাবা-মায়ের ২০তম বিবাহবার্ষিকী

বিশেষ দিন মানেই হল বিশেষ আয়োজন। একসাথে জীবনের ২০টা বছর পার করার খুশিতে, রাতের খাবারটা আমরা একসাথে রেস্টুরেন্টে খাবো ঠিক করলাম। সন্ধ্যা হতেই তাই আমার বোনের আর তর সইলো না। ফোনের পর ফোন করে আমাকে অস্থির তো করলোই, এমনকি আমার বাড়ি ফেরার অপেক্ষা না করেই তিনজন রেস্টুরেন্টে চলে গেল। ৫টার সময় বাড়ি ফিরে দেখি টেবিলের ওপর একটা চিরকুট রাখা। আর তাতে লেখা, “৭টার মধ্যে রেস্টুরেন্টে চলে আসিস, নয়তো বা তুই বাদ!”

আমাকে রেখেই চলে গেল ভেবে মেজাজটা এমনিতে চড়ে ছিল। তার ওপর এই চিরকুট! “কিন্তু আমাকে একটা ফোন কল কেন করলো না, কিছুই বুঝলাম না!” যাই হোক রেডি হতে শুরু করলাম। ঘড়িতে তখন ৫টা ৩৫ বাজে। ফোনে একটা ম্যাসেজ আসলো। ম্যাসেজটা খুলতেই দেখি এলোমেলো শব্দে কী যেন লেখা, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম মায়ের নাম্বার থেকে এসেছে। কী উল্টাপাল্টা লিখেছে এইসব বলতে বলতেই দেখি লেখা ‘বাঁচাও, আমাদেরকে বাঁচাও’। লেখার মাঝে কোনও স্পেস নেই, কিন্তু আছে কয়েকটা সংখ্যা। সাথে সাথে ফোন দিলাম আমি। কিন্তু মা ফোন ধরলো না।

বাসা থেকে বের হওয়ার তাড়া ছিল, মনে হয় আমার সাথে মজা করছে এইভেবে ফোনটা রেখে দিলাম টেবিলের উপর। ঠিক তার মিনিট পাঁচেক পর আবার একটা ম্যাসেজ আসলো। এইবার বাবার ফোন থেকে। এবারও এলোমেলো শব্দে লেখা, ‘প্লিজ আমাদের বাঁচাও, প্লিজ!’ এইবার ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম। এক মুহূর্ত আর দেরি না করে, বাইকের চাবি নিয়ে এক দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম। ২০-২৫ মিনিট পরের কথা, রাস্তায় বিশাল জ্যাম। এদিকে বাসার কেউ ফোন ধরছে না। হঠাৎ শুনতে পেলাম সামনে নাকি অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে তাই এই জ্যাম। বাইকটা রাস্তার পাশে রেখে হাঁটা দিলাম সামনে। একি! অ্যাক্সিডেন্ট করে গাড়ি পড়ে আছে। দুমড়ে-মুচড়ে থাকা গাড়িটার নাম্বারের উপর চোখ পড়তেই হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। গাড়িটা যে আমাদের! ভিতরে রক্তাত তিনটা লাশ পড়ে আছে। আশেপাশের মানুষ জানালো ৫টা ৩০ এর দিকে অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে, বেঁচে ছিল না কেউ! কিন্তু এর মিনিট পাঁচেক পরেই আমার ফোনে এসেছিল ম্যাসেজ! তবে কী তা আত্মার আকুতি ছিল, নাকি অন্যকিছু

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত