পিশাচ কাহিনি

পিশাচ কাহিনি

সেদিন আমি যে ঘটিনার সম্মুখীন হই তা আমার ধারনা কে ই পাল্টে দেয়। এর আগে ও অনেক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি কিন্তু এই ঘটনা ভুলবার নয়। ০৭-০৪-২০১৫ এর ঘটনা। সেদিন আমি খুবিই খুশি ছিলাম কারন হল ঢাকায় আমাদের নতুন বাড়ি বানানো হচ্ছিল। বাড়ি টা হচ্ছিল ৮তলা। আমি অবশ্য ঢাকার বাইরে থাকতাম তাই সেখানে তেমন যাওয়া হতনা। আমাদের নতুন বাড়ির সুবাদে সেখানে যাই। ফ্ল্যাট গুল নতুন ছিল তাই অনেক কাজ বাকি ছিল। শুধু ১ম তলায় আমার পরিবার থাকত। তো আমি যখন যাই খুবই এক্সাইটেড ছিলাম। সেদিন যেতে যেতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায়। আমি ভাবলাম সেই বাসায় গিয়ে সব গুলো ফ্ল্যাট ঘুরে দেখব কিন্তু সন্ধ্যা হওয়াতে কেউ যেতে দিতে চায়নি। বল্ল যে নতুন বাড়ি আর সন্ধ্যা যেকোন সমস্যা হতে পারে এখন যেতে হবেনা। আমি এসব বিশ্যাস করতাম না। তখন ভাবলাম তাদের কে না জানিয়ে যাব। যেই ভাবা সেই কাজ, আমি একটি টর্চ নিয়ে বের হলাম কারন তখন ফ্ল্যাট গুলতে বিদ্যুত দেওয়া হয়নাই তাই অন্ধকার।

আমি ফ্ল্যাট এর উপরে উঠছি আর টর্চ মেরে দেখছি কোথায় কি আছে। দেখতে দেখতে আমি যখন শেষ তলায় উঠলাম তখন আমার কেমন অসাভাবিক লাগতে শুরু করল আর ভয় লাগতে শুরু করল যদিও এসব বিশ্যাস করতাম না তারপর ও এক অজানা ভয় কাজ করতে শুরু করে। আমি ব্যালকুনি তে টর্চ মেরে দেখছিলাম হঠাত মনে হল কেউ একজন আমার পিছন দিক দিয়ে রুমে ঢুকল। আবছা আলতে আমি ষ্পস্ট দেখতে পেলাম। আমি সাথে সাথে জিজ্ঞেস করলাম কে ওখানে কিন্তু কোন সাড়া পাইনি। আমি ভাবলাম হয়ত আমার কাজিন রা আমাকে ভয় দেখানোর জন্য এসব করছে। আমি ভয়ে ভয়ে টর্চ নিয়ে রুমের দিকে এগুতে থাকি রুমে ঢুকে দেখলাম কেউ নেই। তখন আমার আরো বেশী ভয় করতে লাগল। আমি ৩-৪ বার আমার কাজিনের নাম ধরে ডাকি কিন্তু কোন জবাব পেলাম না। পরক্ষনেই মনে হল কেউ আবার ছাদের দিকে উঠে গেল। আমি হাতে টর্চ নিয়ে ছাদে গেলাম টর্চ এর আলো পড়তেই দেখলাম আমার কাজিনের মত কেউ দাড়িয়ে আছে ছাদের কোনায় আমি তার দিকে পা বাড়াতে ই এক মুহুর্তের জন্য হঠাত টর্চ বন্ধ হয়ে আবার জলে উঠে সেখানে আলো পরতেই দেখি সে নাই। ভাবলাম হয়ত ভয় দেখানোর জন্য লুকিয়ে আছে। আশেপাশের বিল্ডিং এর আবছা আলো পড়ছে ছাদে সে যদি পালিয়ে যায় তবে তাকে দেখার কথা কারন যতটুকু আলো পরছিল তাতে কেউ যদি নড়াচড়া করে বুঝা যাবে, কিন্তু না হঠাত যেন মিলে গল। আমি যুক্তি তে হার মেনে আরো ভয় পেয়ে যাই। আমি ভাবলাম যার্নি করছি তাই হয়ত ক্লান্তি তে আজেবাজে এসব কল্পনা করছি।

আমি ভাবলাম বিশ্রাম নিলে ঠিক হয়ে যাবে। আমি চলে যাওয়ার জন্য নিচে নামছি যখন ছাদ থেকে শিড়ি বেয়ে ওই রুমের কাছে চলে এলাম তখন একটা শব্দ শুনতে পাই গোঙানোর মত মনে হচ্ছে কেউ গোঙাচ্ছে আর কুড়মুড় শব্দ হচ্ছে আমি ভাবলাম হয়ত কোন বিড়াল হবে ইদুর মারার জন্য এমন করছে আমি টর্চ মেরে রুমে ঢুকতেই যা দেখলাম তাতে মনে হয়েছিল আমার কলিজা ফেটে মরে যাব। দেখলাম একজন মহিলার মত চুল গুলো উশকো খুশকো, পরনে সাদা ড্রেস, চেহারা ছিল বিশ্রি আগুনে পুড়ালে যেমন হয় ঠিক তেমন, চেহারা থেকে চামড়া ও মাংস পচে গলে ঝুলে আছে আর সেখান থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। দেখলাম সে নিজের হাতের মাংস ও হাড় সে নিজে চিবিয়ে খাচ্ছে আমি টর্চ মেরে যখন দেখালাম তখন সে আমার দিকে ঘুরে বিশ্রি একটা হাসি দিয়ে তার সেই খাওয়া হাতটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিল। তার খাওয়া হাত দিয়ে রক্তের শ্রোত বইছিল, হাতের মাংস গুল ছিরে ঝুলছে। আমি তখন ভয়ে নিথর হয়ে গেলাম আমি চিতকার করতে চাচ্ছিলাম প্রান পনে কিন্তু আমার গলতে যেন কোন শব্দই আসছিলনা মনে হচ্ছিল আমার পা অবশ হয়ে গেছে আমি পালাতে ও পারছিলাম না চিতকার ও করতে পারছিলাম না।

তখন আমি জ্ঞান হারাই, যখন জ্ঞান ফিরে দেখলাম আমি আমার আম্মার রুমে। আমি জিজ্ঞাস করাতে তারা বলল আমার চিতকার শুনে তারা উপরে গিয়ে দেখে আমি অজ্ঞান অবস্থায় ওই রুমের দরজার সামনে পড়ে ছিলাম সেখান থেকে আমাকে নিয়ে আসা হয়। আমাকে জিজ্ঞাস করা হলে আমি তাদের ঘটনা টা শেয়ার করি। তখন দাদা বলল যে পাশের বাসার এক লোক কালো জাদু চর্চা করে তার কাছে নাকি এসব খারাপ জিনিস রা আসে আর এসব অন্ধকার জায়গায় ঘুরে বেরায় আর সুযোগ পেলেই মানুষ কে ভয় দেখিয়ে ক্ষতি করে। এর পর থেকে সন্ধ্যা তো দুরের কথা আমি দিনের বেলায় ও ছাদে যেতাম না যদিও মিলাদ পড়ানোর পর আর কোন সমস্যা হয় নাই। আজও সেই মুহুর্তের কথা মনে পড়লে গা শিউড়ে উঠে।

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত