পেত্নীর প্রতিশোধ

পেত্নীর প্রতিশোধ

আরেফিন এই থানায় নতুন এস.আই হিসেবে জয়েন করেছে।আজ একটা ডেড বডি এসেছে এক্সিডেন্ট কেইস।লাশ টা দেখে চমকে উঠলো আরেফিন এতো তারানার ডেড বডি।তারানার প্রতি এতদিন ওর যা রাগ ছিল সেটা আজ এই মূহুর্ত থেকে কেমন জানি মায়ায় পরিনত হয়ে গেল।
কার উপর রাগ করবে?ওর ভালোবাসা আজ মৃত।কিন্তু কি হয়েছিল ওর?তারানার স্বামী অনেক ধনী পরিবারের সন্তান। কেইস রিপোর্টে আরেফিন দেখল গতকাল রাতে তারানা গাড়ি সহ গভীর খাদে পড়ে যায় আর ওর মৃত্যু হয়।আরেফিন তারানার লাশ টা দেখছিল আর ওর মনে হল তারানার বডির পাশে ধোয়ার মত কিছু যা ধিরে
ধিরে” ভুল সব ভুল ” এই লেখাতে রূপ নিল।তারানার লাশ দাফনের সময় ও দেখল আগরবাতির ধোয়া উপরে উঠে একটা বাক্যে পরিনত হল”বিশ্বাস করনা,সবই অভিনয়”
আরেফিন চারদিকে তাকাল কিন্তু কেউ কিছু দেখল বলে মনে হলনা কেবল তারানার স্বামী কাঁদছে।এরপর আরেফিন থানায় চলে আসল।রাতে ও বাড়ি চলে গেল,ঘুমানোর ট্রাই করল ঘুম আসলনা।এমন সময় ওর ফোনে মেসেজ এল’আমি এক্সিডেন্টে মরিনি আমাকে মেরে ফেলা হয়েছে,তুমি প্রতিশোধ নিও’আরেফিন হতব্ম হয়ে গেল।

সাথে সাথে আবার ইনবক্স চেক করল না কিছু নেই,ও ভাবল সব মনের ভুল।কিন্তু ও দেখল ওরসামনে ধোয়ার মত কিছু একটা লিখে যাচ্ছে আমার স্বামী প্রতিরাতে মদ খেয়ে আমার উপর অত্যাচার করত দিন দিন যা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল তারপর একদিন ও ব্যাবসার কাজে বাইরে যাচ্ছে বলে চলে গেল এল কয়েকদিন পর কিন্তু ওর অত্যাচার আরো বেড়ে গেল।এরপর আমি জানতে পারি ওর আগে একটা অ্যাফেয়ার ছিল আর মেয়েটাকে এই ঘরেই ওর স্বামী খুন করে,মেয়েটা প্রেগনেন্ট ছিল।
বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল তাই ওকে মেরে ফেলা হয়।তারানা এসব জানতে পারে ওই মৃত মেয়েটার বান্ধবি মনিকার কাছ থেকে,ওকে ফোন করে সব জানায় মনিকা।একদিন মার খেতে খেতে তারানা বলে ফেলে ওর স্বামীর কুকির্তীর কথা যা শুনে ওর স্বামী চমকে ওঠে,কিন্তু ওটাই ছিল তারানার ভুল।ওকে মারার প্ল্যান করে ওর স্বাম।ওকে বাবার বাড়ি নিয়ে যাবার নাম করে নিয়ে যায় খাদের ধারে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে ওর অচেতন দেহটা গাড়ি সহ ফেলে দেয়া হয়।

পরদিন ওর ফোনে আবার মেসেজ”আমার স্বামীকে সেই খাদের কাছে ডেকে নিয়ে যাও,সাহায্য কর আমাকে” আরেফিন ভাবল কি করবে  ও,ফোন দিল তারানার স্বামীকে বলল তারানার মৃত্যুটা কোন এক্সিডেন্ট নয়,ও সব জানে তাই টাকা নিয়ে যেন খাদের কাছে চলে আসে ঠিক ছয়টায়” ওর স্বামীর মুখে একটা ক্রুর হাসি ফুটে উঠে।সন্ধ্যায় ও চলে আসে সেই জায়গায় একটু পর আসে তারানার স্বামী,এরপর আরেফিন এক নিঃশ্বাসে তার কুকির্তী গুলো বলে গেল যা শুনে তারানার স্বামী বলল সব জানো কিন্তু সেটা কাউকে বলার সুযোগ তো তুমি পাবেনা বলেই একটা পিস্তল বের করলো,আরেফিন কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুলির শব্দ পেল।ও দেখল একটা বুলেট ওর বুকের কাছে এসে থেমে গেছে,ওর আর বুলেটের মাঝে একটা ছায়া সে আর কেউ নয় তারানা! বুলেট ওর বুকে বিঁধল না।

তারানার স্বামীর চোখ যেন কোটর ছেড়ে বের হয়ে আসবে বিস্ময়ে। এরপর তারানা ধিরে ধিরে এগিয়ে যায় ওর স্বামীর দিকে,স্বামীর করা গুলির একটাও বিঁধতে পারেনা তারানাকে।ওর ছায়াটা স্বামীকে নিয়ে লাফিয়ে পরে গভীর খাদে। আরেফিন দেখে ধোয়ার রাশি গুলো লিখলো “ধন্যবাদ” পরদিন নিউজ আসলো তারানার
স্বামী বউয়ের শোকে সুইসাইড করেছ একই স্থানে।।

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত