বাসর ঘরে বউয়ের পিটানি

বাসর ঘরে বউয়ের পিটানি

ছোটবেলা থেকেই আমরা ৫ বন্ধু একটা জিনিস বারবার শপথ করছি যে আমরা পাচজন একসাথে বিয়ে করবো আর বাসর রাতে বউ পিটাবো। এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা। তাই আমরা কেও প্রেম করিনাই। কারন যদি প্রেম করি তাহলে কেও একজন ছেকা খাবে তখন আমাদের ইচ্ছা পুরন হবেনা।তাই কেও প্রেম করিনাই। দির্ঘ ২৬ বছর যাবত সিংগেল আছি। আব্বু আম্মু বিয়েরর জন্য তাড়া দিতেই রাজি হয়ে গেলাম। ৫ বন্ধুর একসাথে বিয়ে। একজায়গায়ই বিয়ে হবে। মজার ব্যাপার হলো মেয়েরাও নাকি ৫ বান্ধবি তাই এক জায়গায় ই বিয়ে। খুশি মনেই রওনা দিলাম ৫ বন্ধু।রাফি,মাফি,সাফি,রবি আর আমি সানভি। মেয়গুলার নামগুলাও জোস,

– রাফির বউয়ের নাম সকিনা।
– মাফির টার জরিনা।
– সাফির বউয়ের নাম কমলা।
– রবির বউয়ের নাম সাবিনা।

আর আমার বউয়ের নাম আনহা। চিটিং চিটিং চিটিং। সবার বউয়ের নাম এতো ভালো আর আমারটারর নাম আদিম যুগের মেয়েদের নাম কেনো? এইগুলা কিন্তু ঠিক না। যাই হোক বিয়েটা ঠিকঠাক মতোই হলো। এবার বাসর ঘরে ঢুকার পালা। আমি বীরের মতো হয়ে রুমে ঢুকলাম। বউ এসে সালাম করলো, আমি বললাম

– তোমার স্থান আমার বুকে নয় বউ আমার পায়ে। মেয়েটা আবার বিছানায় গিয়ে বসলো। আমি গিয়ে ঘোমটা খুলে দেখলাম। এক্কারে ফুরির নাগাল দেখতে। আমি বউয়ের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলাম এতো সুন্দর একটা বউ মারাটা কি ঠিক হবে? আবার ভাবলাম প্রতিজ্ঞা যখন করছি পালন তো করতেই হবে। তাই বউকে বললাম,

– বউ বলো তুমি কি চাও।(আমি)
– আমি যা চাইবো দিবেন?(বউ)
– হুমম বলো কি চাও।(আমি)
– আমার খুব ইচ্ছা ছিলে বাসর রাতে বর পিটাবো।আপনি কিন্তু যা চাইবো তাই দিবেন বলছেন। তাহলে এবার দেন।(বউ)
– বউ এইডা তুমি কি কইলা।আমি নিজেও এই প্রতিজ্ঞা করছি।(আমি)
– তাহলে এবার কি করবো?(বউ)
– উপায় একটা আছে।(আমি)
– কি উপায়?(বউ)
– আগে তুমি আমারে মারো তারপর আমি তোমাকে মারবো।(আমি)
– আফনে এগ্লা কিতা কন।আফনে আমার জামাই আপনি আগে মারেন তারপর আমি।(বউ) হালার চাইছিলাম কি আর পাইলাম কি।বাসর রাতে মনে হয় এবার বউয়ের পিটানি খাইতে হয়।

বউয়ের দিকে তাকিয়ে দেখি বউটা আমার মায়া পরির মতো। মায়ায় পইড়া গেছি তাই আস্তে করে কয়টা থাপ্পড় মারলাম বউয়ের গালে। এবার বউয়ের পালা। বউ মনে হয় আস্তেই মারবো। কিন্তু বউ এবার উঠে গেলো বিছানা থেকে। তারপর তার ব্যাগ থেকে একটা দড়ি বের করলো। আমি কিছু বুঝার আগেই আমাকে বিছানার সাথে বেধে ফেললো। আমি নড়াচড়া করতে পারতাছি না। বউ আমার মুখে টেপ মেরে দিলো। এইবার একটা লাঠি বের করে শুরু করলো পিটানি।

ওরে আব্বারে ওরে বাবারে আম্মারে আমারে বাচারে। ওরে আল্লাহ আমারে বাচাও। ও মা ও আব্বা তোমার পোলারে মাইরা ফালাইলো রে আব্বা আমারে বাচাও। চিৎকার করতাছি কিন্তু মুখে টেপ মারা তাই কিছু শোনা যাচ্ছেনা। হঠাৎ বউ থেমে গেলো। ভাবলাম তার মাইর দেওয়া শেষ হইছে। শরিরটা বিছানায় ছেড়ে দিয়ে বউয়ের দিকে তাকালাম। বউ দেহি আবার ব্যাগ থেকে একটা জুসের বোতল বের করলো। দেখছেন বউ আমার লক্ষি আছে। আমার জন্য জুস ও রিয়ে আসছে।। বউ আমার মুখটা খুলে দিলো তারপর কিছুটা জুস আমাকে খাইয়ে দিয়ে কিছুটা নিজে খেলো তারপর আমার পিটাতে শুরু করলো।

– সোনা বউ আমার মাফ কইরা দেও আর জিবনেও তোমাকে মারবোনা। বউ ছাইড়া
দেও। ও বউ বউগো। চিৎকার করে কাদতে লাগলাম। সাউন্ড প্রুফ রুমটা এর জন্যই বানাইছিলাম যাতে শব্দ বাইরে না যায়।আজ এই রুমটাই আমার মরার জন্য দায়ি। মাইর খাইতে খাইতে হাত পা অবশ হয়ে গেছে। বন্ধুদের কথা ভাবতেই কষ্ট হতে লাগলো। না জানি ওদের কি অবস্থা। আল্লাহ একটা দিন আর বাচাইয়া রাইখো এর শোধ আমি নিবো। আমি আস্তে কইরা দুইটা থাপ্পড় দিছি এর জন্য আমারে কত্ত মারলো। আল্লাহ এতো নিষ্ঠুর বউ কেনো দিলা আমারে।

মাইর খাইতে খাইতে অজ্ঞান হয়ে গেলাম। সকালে জ্ঞান ফিরতেই খেয়াল করলাম হাত পা প্রচন্ড ব্যাথা। সারা শরির ব্যাথায় চিনচিন করতাছে। জাগায় জাগায় রক্ত জমাট বাধছে। আমি এই শরির নিয়া বাইরে কেমনে যাবো। বউয়ের দিকে তাকাইয়া দেহি বউ আরামে ঘুমাইতাছে। পাশে দেখি জুসের বোতলটা পড়ে আছে। শরিরে শক্তি দরকার। জুসটুকু খেয়ে ফেললাম। হাত পা খোলা পাইয়া বাথরুমে দৌড় লাগালাম। গোসল শেষ করে রুমে এসে সারা শরিরে মুভ স্প্রে মেরে ব্যাথা কমালাম। সকাল সকাল ডাক্তারের ঘরে যেতেই ডাক্তার বললো,

– ব্যাথার ট্যাবলেট লাগবে তাইতো?

এই বেটা ডাক্তার কেমনে জানলো? হাই পাওয়ারের ব্যাথার ট্যাবলেট কিনলাম। দুইটা ওইখানেই খেয়ে বাসায় ফিরলাম। অনেকটাই সুস্থ লাগছে নিজেকে। পথে দেখা হয়ে গেলো চার বন্ধুর সাথে।

– কি বন্ধু কই যাও?(আমি)
– ডাক্তারের ঘরে।
– বন্ধু তোমরাও মাইর খাইছো?
– হ বিছানার সাথে বাইন্দা পিটাইছে।
– বন্ধু এর শোধ নিতে হইবো।
– কেমনে?
– কক্সবাজার যামু তারপর দেহামু মজা কারে কয়।
– আইচ্ছা বন্ধু তহনকারডা তহন দেহা যাইবো এহন ডাক্তারের কাছে যাওয়া লাগবো।

– আইচ্ছা যাও। ওই ওরে ধইরা নি।ওরে মনে হয় বেশি মারছে রুমে ঢুইকা দেহি বউ আমারর হাসে আমি মনে মনে কইতাছি,

– আহো ভাতিজা আহো আর মাত্র কয়টা দিন।

৭ দিন পর হানিমুনে গেলাম ৫ বন্ধু। কক্সবাজার। আহা বউরে এইবার পিটামু। প্রথম রাতেই ৫ বন্ধু সেইরকম প্রস্তুতি নিয়ে রুমে ঢুকলাম।বউরে জড়িয়ে ধরলাম। তারপর বিছানায় ফেলে দিয়ে কৌশলে হাত পা বেধে ফেললাম। এরপর শুরু করলাম পিটানি। বউ আর কি মারছে তার দ্বিগুন মারলাম বউরে তারপরও খালি মারতেও ইচ্ছা করে। বউরে ৪ টা ব্যাথার ট্যাবলেট খাওয়াইয়া বললাম,

– বউ বাসর রাতে সেই মারছিলা আজকে আমি মেরে শোধ নিলাম। যা হইছে সব ভুইলা যাও।
– বউ কিছু বললোনা কিন্তু বুঝতে পারলাম মনে মনে বলতাছে টাংগাইলা পোলার সাথে বেশি ভাব নিছিলাম তাই আজ এই অবস্থা। পরের দিন বউ নিয়া বাইরে বের হলাম পাচ বন্ধু। বউ হাটতে পারেনা তাই ধরে ধরে নিয়ে গেলাম। ম্যানেজার জিজ্ঞেস করলো,

– কি হইছে?
– এগ্লা প্রতিবন্দি।(আমি)

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
ফ্যান্টাসি
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত