খাদক

খাদক

দীর্ঘ ৫ দিন ধরে ফেইজবুকে চ্যটিং করে একটা মেয়েকে পটাই, ১০ দিনের মাথায় মেয়েটা দেখা করতে চায়। ও একটা পার্কে দেখা করতে বলে। ওর কথামতো সেখানে যাই। যেই জায়গায় দেখা করতে বলে সেখানে গিয়ে বসি। ১০ মিনিট, ২০মিনিট, ৩০ মিনিট এমন করে সময় পার হতে থাকে, মাগার মাইয়ার কোন খবর নাই। শেষে ফোন দেই,

–হ্যালো আফা,
–কে বলছেন?
–আফনার ফেমিক কইতাছি।
–মামুন?
–জি আফা।
–তুমি কোন ভাষা কথা বলছো? আর আমি তোমার আপু হই?
–হেইডা আফনার না জানলেও ছলবো। এহন কন আফনে কোনাই?
–জানু আমিতো এখনো পার্লারে আছি। আর ২০ মিনিট প্লিজ,
–আইচ্ছা আইচ্ছা, যলদি করি আইয়েন আফা।
–আবারো আফা?
–চরি আপু,
–উফ অসহ্য।
–যলদি আয় ফইন্নি।

বলেই ফোন কেটে দেই। ৪০ মিনিট পরও জনাব আফার খবর নাই। বিরক্ত হয়ে ফুচকা দোকানে যাই  মাএ ফুচকা নিলাম, এমন সময় ফোন।

–জানু, কই তুমি?
–(উফ, খাওনের সময় ডিস্টাব)হা বলো জানু
–আমি চলে আসছি, কোথায় তুমি?
–(খাওয়ার সময় আইলি কেন) জানু আমিতো হাটতে হাটতে পার্কের শেষ মাথায় চলে আসছি।
–আমি আসছি।
–টুট টুট টুট(ফইন্নি ঘুইরা আয়, এই ফাকে আমি খাইয়া লই। তোরে ভাগ দিমু না) কিছুক্ষন পর আবার।
–হ্যালো জানু
–হা বলো
–কই তুমি? পাচ্ছি নাতো?
–কোথায় তুমি?
–পার্কের শেষ মাথায়।
–ধুর, আমিতো পার্কের সামনের দিকে,, তুমি আবার ওইদিকে গেলা কেনো? তোমাকে কষ্ট করে যেতে বলছিলাম?
–আচ্ছা সরি, তুমি ওখানেই থাকো, আমি আবার আসতেছি।
–তোমাকে কিভাবে চিনবো?
–আমি কালো+সাদা ড্রেস পড়া।
–আচ্ছা আসো।

৫ মিনিট পর, একটা মেয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসতেছে। আল্লাহ দিলে কোন অংশে কম নাই, অাস্ত একটা কুমড়ো পটাস। এত্তো মোডা এইডা দিয়া আমি কিতা করাম? কম হলেও ৬০-৬৫ এর কম হবে না।

–তুমি মামুন না?
–আমি? না হ্যা, না মানে হ্যা।
–কি না হ্যা করতেছো? ঠিক করে বলো।
–আমি মাম মামুন।
–যাক, অবশেষে তোমাকে পেলাম।
–হুম
–জানো? ওইদিকের ছেলেগুলো আমাকে অনেক জ্বালাচ্ছিলো। শিশ বাজাচ্ছিলো।
–তোমারে জ্বালাইছে?
–হুম, আসলে ওদের কি দোষ দিবো বলোতো, সুন্দরি মেয়ে দেখলে তো সবাই একটু চান্স নিতে চায়, কিন্তু আমিতো আর সবার মতো না যে ওদের চান্স দিবো। চলো, ওদিকে যাই।
–(হায়রে মাইয়া, ঢপ মারার জায়গা পাছ না, কোন পোলা তোরে জ্বালাইবো?)

আমারে টাইনা টাইনা একটা দামি হোটেলে ঢুকায়। ঢুকার আগেই বুচ্ছি আজকে আমারে আধমরা কইরা বাইর করবো। মাইয়া যেই অর্ডার দিলো, আমিতো পুরা হ্যাং। মাইয়ার যেই বডি, বুইজা গেছি এই খাবারে আমার ভাগ নাই। আমার মতো ৫ জনের খাবার ওই হাতিটা একাই সাবাড় করে। খালি পেটে আমার দেমাক কাম করে না।

–ওই ওয়াটার ভাই, ইমুরা আও, ইমুরা আও।
–আহ, কি হচ্ছে এটা, সুন্দর ভাবে ডাকো।
–ওহ, আচ্ছা ডাকতেছি, এক্সকিউজ মি, ওই ওয়াটার ভাই, ইমুরা আওতো, ইমুরা আও।
–আবার? ওয়াটার কি? ওটা ওয়েটার হবে, আর ইমুরা নয়, এদিকে আসো হবে।
–জ্বি বলুন সার, কিছু লাগবে?
–ও আসছো, সস আছে?
–জি সার,
–যাও ভাই একটা নিয়া আসো, আর হা, ৩ টাকা দামের টা।
–ওকে সার, একটু পর,
–এই নিন সার,
–থ্যাংক্স
–জানু, এতো কিছু থাকতে সস নিলা কেন?
–মন চাইলো তাই, তুমি খাও।
–ওকে জানু, সো সুইট।

সস খাচ্ছি আর ভাবছি ওর হাত থেকে কিভাবে বাচবো। আইডিয়া টেবিলের নিচে মোবাইলে নিয়ে এলার্ম দিয়ে দেই,  মোবাইলের রিংটোন টা এলার্ম টোন দিয়ে সেভ করি।

–জানু, আর কিছু লাগবে?
–না থাক, তুমি বিল দিতে পারবে না। আমি তোমার কথা ভাবি, এতো নিষ্ঠুর নই আমি। তুমি অনেক লাকি,
–কিভাবে?
–এইযে আমার মতো একটা সুন্দরি তোমাকে ভালোসেছে।
–(আহারে ফহিন্নি, তোর মুখে এখন এক গ্লাস পানি মারলে পুরা হোটেলটাই অন্ধকার হই যাইবো)
–কি হলো চুপ কেনো? আমি ঠিক বলছি না?
–একদম ঠিক বলছো, আমিতো ধন্য হয়ে গেছি।
–তাই?
–হুম

একটুপর মোবাইলে এলার্মটা বেজে উঠলো। এলার্মটা কেটে দিয়ে ফোন সাইলেন্ট করে কানে লাগাই,  (ফোনের বিপরীত পাশে কেউ ছিলো না)

–হ্যালো
–হ্যা আমি মামুন, কিন্তু আপনি কে?
–আরে দোস্ত তুই? এতোদিন পর মনে পড়লো?
–কিহ? কবে?
–১০ মিনিট ওয়েট কর। আমি এক্ষুনি আসছি,
–ওকে ওকে,,
–জানু, তুমি খেয়েদেয়ে চলে যেও, আমি একটু হাসপাতালে যাচ্ছি।
–আরে, বিল টা দিয়ে যাও,
–আমার টাকাগুলা লাগবো, বন্ধুর মা অসুস্থ,
–তাতে কি? তুমি বিল দিয়া যাও।
–আজ না, কাল খাওয়ামু তোমারে।
–কাল তো খাওয়াবাই, আজকের বিলটা দিয়া যাও।
–কি বললাম বুঝোনাই?
–বুঝতে চাই না
–এই নিন সার, আপনাদের বিল।
–দেখি,হাহ, বেশিনা, ২,৫০০ টাকা মাত্র।
–হুম, দিয়া দাও।
–ওয়েটার,,
–জ্বি সার।

–কে অর্ডার দিছে?
–মেডাম দিয়েছে।
–আহ, মেডাম না। ওর নাম রিতা।
–জ্বি উনি অর্ডার দিছেন।
–তাহলে হিসেব অনুযায়ি বিলটা কার কাছে চাইবে?
–ওনার কাছে।
–তাহলে আমার কাছে কেরে? সামনের দিকে আগাই যাও।
–ওই, আমার কাছে না, ওর কাছে যাও, ও আমার বি এফ।
–তোমার টেহা তুমি দেও।
–তোমার সাথে ব্রেকাপ করে দিবো কিন্তু। যলদি টাকা দাও।
–কোন টাকা দিমু না।
–তাইলে ব্রেকাপ।

–ওয়েটার, আমার বিল কত জানি হইছে?
–এইতো আমার জানুটা কতো ভালো, খালি দুষ্টমি করে। দাও টাকাটা।
–ওয়েটার?
–জ্বি সার, আপনার ৩ টাকা হইছে।
–৩ টাকা? তাহলে টাকা দিবানা?
–এই কুমড়ো পটাস, তোর লগে কি আমার খাওয়া-খায়ি নিয়া সম্পর্ক? যে বিল দেই নাই বলে ব্রেকাপ করছত।
–তুই তো ফকির, আমার অন্য বি এফ গুলা সবাই বড়লোক।
–তোর আরো বি এফ আছে?
–হুম, আমার পেছনে তাদের রোজ ১০ হাজার কইরা খরছ হয়।
–দেখি পিছন সাইট টা দেখিতো।
–কিহ? অসভ্য, কেনো দেখাবো?
–তোর পিছনে এতো টাকা খরছ হয়, একটু দেখবো না?
–না, আমার জন্য আরো কতো ছেলে পাগল, রোজ ১০-১২ টার উপরে প্রপোজ পাই।
–ইস,, কেমনে যে মেজাজটা কন্ট্রোলে রাখছি, এতো মিথ্যা কছ কিল্লাই? মেজাজ গরম করিস না।
–কি করবি?

–ওখান থেকে একটা সস এনে টুক করে খেয়ে নেবো।
–যাই করো, বিলটা দিয়ে যাওনা।
–যা ভাগ ফইন্নি, তোরে দেইখাই বুচ্ছি তুই কোন গোডাউনের প্রোডাক্ট। দুরে গিয়া মর।
–সব পোলাই এমন।
–হুম, ওয়েটার, এই নাও আমার ৩ টাকা, ও টাকা না দিলে বাইন্ধা পিডাইবা।
–এহ পিডাইবো, এই নাও টাকা, ইস, আগে জানলে এতো টাকা ভুলেও খাইতাম না। কতোগুলা টাকা চলে গেলো।
–বুঝ মজা, আর কোন পোলারে ঠকাইবি?
–দেইখা নিমু তোরে।
–এহনো গেছত,
–যামু না, কি করবি?
–থাক তুই, মুটকি কোনহান কার।
–ওই পোলা, তুই মোডা।
–যা ভাগ ফইন্নি।

বলতে পারেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ খাদকের নাম কি? পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ খাদক হলো মেয়ে। একজন বিএফ গার্ল ফ্রেন্ডকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার আগে ভাবে তার গার্লফ্রেন্ড কে কি খাওয়াবে। সর্বপ্রথম সে টাকা জোগাড় করে, কারন সে এক খবিসের(মেয়ে) পাল্লায় পড়ছে। যারা খুদা লাগুক আর না লাগুক, খালি খাইতেই থাকে। আপনি বিয়া করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিছেন? প্রথমে আপনার বাবা-মা বলবে বিয়া করে বউরে খাওয়াবি কি? বর্তমানে পৃথিবীর “শ্রেষ্ঠ খাদক” হল ‘মেয়েরা’ । কথা তো ঠিক, শ্রেষ্ট খাদক হলো মেয়ে, একটা মেয়ের বাবা মাও চিন্তা করে, এই ছেলের হাতে আমার মেয়েকে তুলে দিলে, আমার মেয়েকে ঠিক মত খাওয়াতে পারবে কিনা, সুতারাং বুজা যায়, শ্রেষ্ট খাদক করে মেয়ের পিতা মাতাই মেয়ে গড়ে তুলেন। হালার এই মেয়ে নামের প্রানীটা কি সব খায়? মাইয়া গুলা আসলেই ফহিন্নি।

গল্পের বিষয়:
ফ্যান্টাসি
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত